
10/05/2025
আমার জিএফ যেদিন এক্সিডেন্ট করে মারা যায়, এর ঠিক এক ঘন্টা আগে আমি তাকে তার কোচিংয়ে দিয়ে এসেছিলাম বাইক দিয়ে। বারবার বলে এসেছিলাম বান্ধবীদের সাথে কোথাও যাওয়ার দরকার নেই, কোচিং শেষ করে বাসায় চলে যেয়ো। সে কথা শুনে নি, বান্ধবীর সাথে লং ড্রাইভে চলে গিয়েছিলো। আমাকে লুকিয়ে গিয়েছে এমন না, মেসেজ দিয়েছিলো। আমি যখন খবর পাই, তখন আমি বাথরুমে ছিলাম। আমার ছোট বোন কেঁদে কেঁদে এসে ডাক দিয়ে বললো ভাইয়া আপু নাকি এক্সিডেন্ট করছে, মেডিকেল নিয়ে আসছে, তুমি যাও তাড়াতাড়ি। আমার মাথায় তখন শ্যাম্পুর ফেনা, হাতের মগে পানি। সেই শ্যাম্পু নিয়েই আমি পাগলের মতো মেডিকেলের ইমার্জেন্সী বিভাগে যাই। গিয়ে দেখি সে বিছানায় পড়ে আছে৷ মাথার সাইড থেকে রক্তের একটা কালচে ধারা নাকের কাছে এসে নীল হয়ে গিয়েছে...পায়ের কাছটা ছেড়া অনেকখানি । কামিজে মাটি লাগানো, বিছানার নীচে তার স্যান্ডেল ফেলে রাখা। সেই সেন্ডেলের একটার ফিতা আবার ছিঁড়া ৷ অক্সিজেনের মাস্কটা মুখে অবহেলায় লাগানো,মস্তিষ্ক শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়া থামিয়ে দিয়েছে অনেক আগেই। হাতে আমার দেয়া কাচের চুড়ি পরে সে ঘুমাচ্ছে ! সেই চুড়ির বেশ কয়েকটা আবার ভাঙা । একটা চুড়ির এক পাশ তার ধবধবে সাদা হাতের ভিতর গেঁথে আছে। তার পরনে যেই জামা ছিলো সেইটা যেদিন কিনেছিলো সেইদিন আমরা একসাথে রিকশায় চড়েছিলাম। কতো হাজার হাজার বিষয় নিয়ে গল্প হয়েছিলো সেইদিন ! আমার চুল লম্বা কেনো এইটা নিয়ে এক ফাঁকে আবার ঝগড়াও হয়েছিলো। এই জামার কালার নিয়েও বিশাল ঝামেলা, তার এই কালার পছন্দ না কিন্তু আমার কাছে মেরুন কালারটা ভালো লাগে। আমি জোর করে তাকে এই কালার কিনিয়েছিলাম৷ কে জানতো এই কালারেই তাকে শেষবারের মতো দেখবো ! মানুষ মাঝেমধ্যে অনুভূতি শূন্য হয়ে যায়। আমার ক্ষেত্রে, আমি সেইদিনের পর থেকে অনুভূতি শূন্য হয়ে গিয়েছি। কাঁদতে কাঁদতে এখন আর চোখ বিরক্ত হয়ে পানি ফেলে না ৷ রাত নাই দিন নাই তার কবরের কাছে গিয়ে বসে থাকতাম একটা সময় । মানুষতো কতকিছুই ভুলে যায় , আমি কেনো তাকে ভুলতে পারি না ? প্রতিক্ষণ সেকেন্ডে সে যেনো মাথায় ঘুরে, তার কথা স্মৃতি পাগল করে তোলে আমাকে, মেডিকেলের স্ট্রেচারে শুয়ে থাকা তার ফ্যাকাসে চেহারা এখনো গভীর রাতে আমার ঘুম ভাঙিয়ে দেয় ......... (Real Story)
ভালোবাসার মানুষগুলো এভাবেই একা করে দিয়ে চলে যায় না ফেরার দেশে। আর একজন বেঁচে ও মরার মতো জীবন কাটায় তার স্মৃতি গুলো নিয়ে