28/05/2024
পৃথিবীতে সূর্যকে একবারই থামিয়ে রাখা হয়েছিলো
এই মাসজিদুল আকসার এলাকার পুরানো নাম হলো ইলিয়া। [৫] নতুন নাম হলো জেরুজালেম। এই এলাকায় একবার একজন নবীর সাথে কিছু খারাপ লোকের যুদ্ধ শুরু হয়। সেই নবীর নাম হলো ইউশা আলাইহিস সালাম।
তখনকার সময়ে সূর্য ডুবা থেকে নতুন দিন বা নতুন বার শুরু হতো। এখনও আরবী বা হিজরী সনে এভাবেই নতুন দিন গোণা হয়ে থাকে। এদিকে আবার শনিবার দিনটি ছিলো নবী ইউশা আলাইহিস সালামের জাতির জন্য পবিত্র দিন। সেদিন আবার নবী ইউশা আলাইহিস সালাম তাঁর জাতিকে নিয়ে যুদ্ধ করতে পারবেন না। তখন তিনি সূর্যকে বললেন, “তুমিও আদেশ পেয়েছো আর আমিও আদেশ পেয়েছি।” আর আল্লাহকে তিনি বললেন, “হে আল্লাহ, সূর্যকে থামিয়ে দিন।” তখন দয়াময় আল্লাহ সূর্যকে থামিয়ে দিলেন। ইউশা আলাইহিস সালাম যুদ্ধে জিতে গেলেন এরপর আবারও সূর্য চলা শুরু করলো। [৬]
এ বিষয়ে প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“ইউশা ইবনু নূন ছাড়া মানুষের ওপর সূর্যকে কখনোই থামিয়ে রাখা হয়নি। বায়তুল মাকদিসের দিকে তিনি রাতের বেলায় সফর করেছিলেন।” [৭]
পৃথিবীতে এই একবারই সূর্যকে থামিয়ে রাখা হয়েছিলো। [৮]
যুদ্ধে জেতার পর নবী ইউশা আলাইহিস সালাম গনীমতের মাল একসাথে মেলালেন। গনীমতের মাল হলো সেই মাল যেগুলো যুদ্ধে জেতার কারণে বিজয়ীরা লাভ করেছে। সেই সময়ে নিয়ম ছিলো এই গনীমতের মালগুলো আল্লাহর আদেশে আগুন এসে জ্বালিয়ে দিতো। তখন হলো কী আগুন তো এলো কিন্তু আগুন তা জ্বালিয়ে দিলো না। নবী ইউশা আলাইহিস সালাম তখন বললেন, “চোর তোমাদের মাঝেই আছে।” এরপর প্রতিটা দল হতে একজন নবী ইউশা আলাইহিস সালামের কাছে এসে হাতের ওপর হাত রেখে ওয়াদা করলো। এভাবে হাতে হাত দিয়ে ওয়াদা করার নাম হলো বায়আত। এরপর একজনের হাত নবী ইউশা আলাইহিস সালামের হাতে আটকে গেলো। তিনি বুঝে গেলেন যে চোর এই দলের মাঝেই রয়েছে। তখন তিনি বললেন, “চোর তোমাদের মাঝেই আছে। কাজেই তোমার দলের লোকেরা যেন আমার নিকট বায়আত করে।” এ সময় সেই দলের দু’ই জন বা তিন জন লোকের হাত ইউশা আলাইহিস সালামের হাতে আটকে গেলো। তখন তিনি বললেন, “চোর তোমাদের মাঝেই আছে।” সবশেষে তারা গরুর মাথা দেখতে যতোটুকু ততোটুকু সোনা নিয়ে এসে রেখে দিলো। এবার আগুন এসে সব জ্বালিয়ে দিলো। [৯]
তবে আমাদের শেষ নবী মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর উম্মাতের জন্য এই গনীমতের মাল হালাল করা হয়েছে। তারা এই মালকে নিজেদের কাজে লাগাতে পারবে। [১০]
[৫] আস-সহীহ, বুখারী, ১১৮৯
[৬] আস-সহীহ, বুখারী, ৩১২৪; সূরাতুল মায়িদাহঃ ২৬ নং আয়াতের অধীনে তাফসীরে ইবনু কাছীর
[৭] মুসনাদ, আহমাদ, ৮৩১৫; সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহাহ, আলবানী, ২২২৬; শুয়াইব আরনাঊতের মতে সনদ সহীহ এবং আলবানীর মতে জায়্যিদ (সুন্দর), উভয়ের মতেই বুখারীর শর্তে; আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া (দারুল ফিক্র), ইবনু কাছীর, ১/৩২৩; সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহাহ, আলবানী, ১/৩৯৯
[৮] আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া (দারুল ফিক্র), ইবনু কাছীর, ১/৩২৩; সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহাহ, আলবানী, ১/৩৯৯
[৯] আস-সহীহ, বুখারী, ৩১২৪
[১০] আস-সহীহ, বুখারী, ৩৩৫