¤ ভেজা সন্ধ্যাঁ অঝোর বৃষ্টি ¤

¤ ভেজা সন্ধ্যাঁ অঝোর বৃষ্টি ¤ আমরা ভালোবাসার আবেগ প্রকাশ করি এবং কমেডি রিলস ভিডিও আপলোড করি, যা মানুষের মুখে হাসি আনে এবং তাদের মন ভালো করে।
(1)

02/06/2025
⛔ভালোবাসার অন্তিম যুদ্ধ⛔📌 "ভালোবাসা কখনো মরে না, মরে মানুষ… কিন্তু কিছু মানুষ, মৃত্যুকেও ভালোবাসার নামে জয় করে।"ছবিটার ম...
02/06/2025

⛔ভালোবাসার অন্তিম যুদ্ধ⛔

📌 "ভালোবাসা কখনো মরে না, মরে মানুষ… কিন্তু কিছু মানুষ, মৃত্যুকেও ভালোবাসার নামে জয় করে।"

ছবিটার মতো এক দুপুরে, জানালার ছায়া ভেঙে দুটো শরীর জড়িয়ে ধরেছিল একে অপরকে। ফুল উড়ছিল ঘরের বাতাসে। চারপাশে যেন সময় থেমে গিয়েছিল।
নাম ছিল ছেলেটির — নাফিস। মেয়েটি — জারা।
তারা শুধু প্রেমে পড়েনি, তারা পরস্পরের ছায়া হয়ে উঠেছিল।

ছ'বছরের প্রেম। কাঁদা-মাটি-আকাশ পেরিয়ে, সব ভুল বোঝাবুঝি ঠেলে তারা পৌঁছেছিল এক সিদ্ধান্তে— এবার পরিবারকে জানানো হবে।
সেই মুহূর্তেই তারা জানত না, এই ঘোষণাটাই হবে তাদের জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর ভুল।

জারার পরিবার প্রথমেই প্রতিবাদ করলো।
"ছেলেটা কার? কী চাকরি করে? কোনো জমি আছে? কে তার বাবা?"
তাদের চোখে ভালোবাসা ছিল না, ছিল জাত, পদবী, অর্থ আর আত্মগর্ব।
প্রতিদিন জারার কান্না, মা-বাবার গালাগাল, আর রাতের নিঃশ্বাস ভেঙে যাওয়া কষ্ট।

একদিন রাতে জারার বাবা বলে ওঠেন:

> "এই ছেলেটা যেন ওর জীবনে আর না আসে। তাকে হারিয়ে দিতে পারলে, মেয়েও ঠিক হয়ে যাবে।"

এক কালো রাতে, নারায়ণগঞ্জের এক পুরনো বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় জারার চিরুনি, জামার একটি ছেঁড়া অংশ আর একটি সাদা কবজ।
ওই রাতে গ্রামের এক ‘মোল্লা’ নাকি বলেছিল:

> "তোমরা চোখে দেখতে পাবে না, কিন্তু ওর ভেতরের ভালোবাসা একে একে পঁচে যাবে।"

এরপর থেকেই নাফিসের মধ্যে শুরু হয় বদল।
সে রাতে ঘুমাতে পারত না। আয়নার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে চোখ লাল হতো।
মাঝরাতে চিৎকার করে বলত—
"ও কে? কে আমার মাথার ভেতর কথা বলে!"

তার কণ্ঠস্বর বদলে যেতে লাগলো।
জারা ফোন করলে সে বলে—

> "তুই কে? আমি তোকে চিনিনা। আর ফোন দিবি না!"

নাফিসের মা একদিন সকালে ছেলেকে কাঁদতে কাঁদতে দেখতে পান—সে নিজের হাত দিয়ে নিজেকে আঁচড়াচ্ছে।
বাথরুমে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে বলছে:

> "আমার মাথার ভেতর কেউ বলছে, ওকে মেরে ফেল, ও তোমার সর্বনাশ করবে..."

তাকে ঢাকায়, চট্টগ্রামে, এমনকি ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথাও ওঠে।
কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না।

শেষমেশ, এক পুরনো ফার্মেসির দোকানে বসে থাকা এক বৃদ্ধ বলেন:

> "যশোরের কবিরাজ কবিরুল হকের কাছে যাও। জাদু হলে একমাত্র সে-ই ভাঙতে পারবে। কিন্তু তার কাছে যেতে হলে, ভালোবাসাটা এখনো বেঁচে থাকতে হবে!"

তিনদিন ধরে রুকিয়া চলে।
চারিদিকে কালো ধোঁয়া, দরজায় তালা, বাতাসে সূরা বাক্বারার ধ্বনি, আর নাফিসের শরীরে ভয়ানক নড়াচড়া।
চতুর্থ দিনে, কবিরাজ বললেন—

> "মেয়েটির পরিবারের কেউ এ কাজ করেছে। তাকে এক সপ্তাহ সময় দিলে, ছেলেটা মরেও যেতে পারে। আজ রাতে আমি সেই জাদুর উৎসের পেছনে যাবো।"

:

> "তুই জানিস না, কেমন ঘৃণা ঢুকানো হয়েছে আমার রক্তে। আমি ওর মুখও দেখতে পারবো না!"

আর তখনই কবিরাজ চিৎকার করে শুরু করেন—

> "আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম!"
"আল্লাহু আকবার! আল্লাহু আকবার!"

ঘরে কাঁচ ভেঙে পড়ে। বাতি নিভে যায়। এক ভয়ানক ঝাঁকুনি দিয়ে নাফিস পড়ে যায় নিস্তেজ।
সকাল হতেই সে কাঁদতে কাঁদতে বলে:

> "আমি জারাকে ফিরে চাই… আমাকে নিয়ে চল…"

নাফিস একদিন বিকেলে দাঁড়িয়ে ছিল সেই ফুলে ভরা ঘরে।
হাতে ছিল একটি চিঠি।
সেই চিঠিতে শুধু লেখা ছিল:

> "তোমাকে ফিরিয়ে আনতে হলে, আমাকে হারিয়ে ফেলতে হতো। এখন আমি সব জানি। এখন আমি তোমার।"

জারা এসে দাঁড়ায় দরজায়।
তার চোখে জল, হাতে কাবিননামা।

তারা বিয়ে করে— পরিবারকে বাদ দিয়েই।
তারা চলে যায় এক নতুন শহরে।
তারা সেই ঘরে আবার ফুল ছিটিয়ে দেয়, যেন প্রতিটি ফুল বলে—

> "ভালোবাসা সত্য হলে, কোনো জাদু তাকে শেষ করতে পারে না।"

এই গল্পটা কি আপনার হৃদয় নাড়িয়ে দিয়েছে?
ভালোবাসা ও ভয় যদি একসাথে হয়, মানুষ কতদূর যেতে পারে—আপনার মতামত লিখুন কমেন্টে।
শেয়ার করুন এই গল্প, সেই মানুষটিকে, যাকে আপনি সব ঝড়ের মধ্যেও আঁকড়ে ধরতে চান। ❤️

#ভালোবাসা #ভয়ংকরভালোবাসা #কালোজাদু #রুকিয়া #ভূতের_কাহিনী #সত্য_ভিত্তিক_রোমান্স #ভাইরালগল্প

⛔ শেষ চালান ⛔মো. জাহিদুল ইসলাম রুমিবাসা: পশ্চিম দেওভোগ,  চরখোলা, শীতলক্ষ্যা নদীর পাশ, নারায়ণগঞ্জ।জায়গাটির নাম চরখোলা। শ...
26/05/2025

⛔ শেষ চালান ⛔
মো. জাহিদুল ইসলাম রুমি
বাসা: পশ্চিম দেওভোগ, চরখোলা, শীতলক্ষ্যা নদীর পাশ, নারায়ণগঞ্জ।

জায়গাটির নাম চরখোলা। শীতলক্ষ্যার পাড় ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল এক পুরনো গোডাউন। এক সময় এখানে পোশাক শিল্পের বিশাল চালান আসত—মালিক ছিলেন "সুলতান গ্রুপ"-এর মো. শওকত আলী, যিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন ২০০৪ সালে। তারপর থেকে গোডাউনটা বন্ধ। গায়ে ভাঙা ভাঙা ইট, ছাদে গজিয়ে ওঠা গাছ, আর দরজায় বিশাল তালা—সব মিলিয়ে যেন একটা জমে থাকা অভিশাপ।

২০২3 সালের ডিসেম্বর।
শীতকাল, কুয়াশায় ঢাকা শহর। হঠাৎ একদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় কিছু ছেলেপেলে নদীর ঘাটে ফিশিং করতে গিয়ে দেখতে পায় গোডাউনের পেছনের দেয়াল ভেঙে গেছে। কৌতূহলে তারা ভেতরে ঢোকে।

কিন্তু ঢোকার পর একটা বিশ্রী গন্ধে তাদের মন খারাপ হয়ে যায়। একটি ছেলে, নাম তানভীর, মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে সামনে এগোতেই দেখতে পায় মাটিতে একটা কাঠের বাক্স। খুলে দেখে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসে আধা-গলা একটা মানুষের হাড়গোড়!

পুলিশ আসে। তদন্তে নামে নারায়ণগঞ্জ ডিবি।
শুরুর দিকেই নিশ্চিত হওয়া যায়, এটি কোনো প্রাণীর নয়—মানবদেহের হাড়, আর তা ন্যূনতম ১০ বছরের পুরোনো।

তদন্ত চলাকালীন উঠে আসে পুরোনো এক মামলা—শওকত আলী নিখোঁজ মামলা (২০০৪/নরায়ণ/গ.উ.৬৭)। জানা যায়, সুলতান গ্রুপ একসময় বিশাল ব্যবসা করত, কিন্তু ২০০৪ সালের মার্চ মাসে হঠাৎ এক রাতে গোডাউনের সব মালামাল লোড হয়ে একটি বড় চালান যায় চট্টগ্রাম বন্দরের দিকে। এরপর থেকেই মালিক নিখোঁজ। মামলা হয়, কিন্তু কোনো ক্লু মেলেনি।

তবে একটি অদ্ভুত তথ্য উঠে আসে—সেদিন রাত ৩টার সময়, গোডাউনের সিসিটিভি ফিডে কয়েক সেকেন্ডের জন্য দেখা গিয়েছিল কিছু মুখঢাকা লোক এক বৃদ্ধ লোককে বেঁধে নিয়ে যাচ্ছে। এরপরই বিদ্যুৎ চলে যায়।

সেই ভিডিও পুলিশ ফাঁড়ির কেউই আর খুঁজে পায়নি—কারণ পুরো ফাইলই হঠাৎ করে সার্ভার থেকে "ডিলিট" হয়ে যায়।

তদন্তকারী অফিসার মাজহারুল হক, ৪৮ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা এক চৌকস মানুষ, নিজের ইনস্টিংক অনুসরণ করে গোডাউনের ভেতরে এক পুরনো লোহার শেলফ সরিয়ে ফেলেন। নিচে খুঁজে পান কংক্রিট দিয়ে ঢালাই করা মেঝে—যেখানে একটা ঢাকনা রাখা ছিল।

সেই ঢাকনা খুলতেই উঠে আসে নিচের গোপন ঘর। ছোট একটা বদ্ধ কক্ষ, দেয়ালে কিছু জংধরা শিকল, আর ফ্লোরে শুকনো রক্তের দাগ। চারদিকে ছড়িয়ে থাকা পুরনো জামাকাপড়, ব্যাগ, হাড়—সব মিলিয়ে মনে হচ্ছিল, এখানে অনেককে বন্দি রাখা হত।

এবং দেয়ালে লেখা একটা শব্দ পাওয়া যায়—"শেষ চালান: ১২ জন"। তার নিচে: "বিক্রি: KL-সাবাহ"

KL মানে কুয়ালালামপুর।
অর্থাৎ, মানুষ পাচারের লিংক।

তদন্ত হঠাৎ নাটকীয় মোড় নেয় যখন ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এক মহিলা থানায় আসে, নাম রেজিয়া বেগম। সে দাবি করে, তার ভাই, কুমিল্লা থেকে ঢাকায় কাজ করতে এসে নিখোঁজ হয়েছিল ২০০৪ সালের মার্চ মাসে। তার ভাইয়ের ছবি আর পুলিশ পাওয়া পুরনো জামার ছবি মিলিয়ে যায়!

রেজিয়া বেগম আরও জানায়, তার ভাই তাকে ফোন করেছিল সেই রাতে, বলেছিল—“আপা, আমারে নিয়ে যাইতেছে বড়লোকদের দেশে, কিন্তু মনটা ভালো লাগতেছে না।”

এরপর তার ফোন বন্ধ।

ডিবির তদন্তে উঠে আসে, সুলতান গ্রুপ ছিল আদতে একটি মানবপাচারকারী চক্র, যারা মিথ্যা চাকরির প্রলোভনে দরিদ্র যুবকদের এনে এই গোডাউনে আটকে রাখত। তারপর তাদের অবৈধভাবে দেশের বাইরে পাচার করত, কেউ কেউ মাঝপথেই মারা যেত।

তাদের মরদেহ রাখা হতো এই গোপন ঘরে—পরে নদীতে ফেলে দেওয়া হতো। শওকত আলী যখন এই কাজ থেকে পিছিয়ে আসতে চায়, তখন তার নিজের সঙ্গীরাই তাকে খুন করে এই গোপন কক্ষে মাটিচাপা দেয়।

দেখা যায়, খুনের রাতেই এক চালান ছিল ১২ জন যুবকের। যারা "শেষ চালান" হিসেবে চিহ্নিত।

গল্প এখানেই শেষ নয়।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, প্রতি বছরের মার্চ মাসে, ঠিক সেই রাতে—গোডাউনের ভেতর থেকে ভেসে আসে মানুষের গোঙানি আর চিৎকার।

Noted: ❌ This story is protected under copyright law. Unauthorized copying, posting, or sharing may result in DMCA takedown, legal action, and Facebook account penalties. Content is tracked digitally—violations will be reported and penalized ❌

⛔ আয়াত ভ্রষ্ট ⛔✍️পাঠিয়েছেন  রিজভী চৌধুরী,নীলফামারী✍️নামটা তার ছিল মাওলানা ফরহাদুল হক। পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এক গ্রামে বড় ...
25/05/2025

⛔ আয়াত ভ্রষ্ট ⛔
✍️পাঠিয়েছেন রিজভী চৌধুরী,নীলফামারী✍️

নামটা তার ছিল মাওলানা ফরহাদুল হক। পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এক গ্রামে বড় হয়েছেন, কিন্তু কোরআন হিফজ শেষ করার পর চলে যান ঢাকার উত্তরা এলাকায়, একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করতে। সুন্নতি লেবাস, গম্ভীর চেহারা, আর মুখে সর্বক্ষণ কোরআনের আয়াত—লোকজন তাকে এক কথায় “হুজুরদের হুজুর” বলত। তিনি নিয়মিত রুকাইয়া করতেন। অনেক জ্বিনের রোগীকেই ঠিক করে তুলেছেন বলে এলাকার লোকজনের বিশ্বাস।

একদিন গভীর রাতে মোবাইলে কল আসে। অপর প্রান্ত থেকে এক নারীকণ্ঠ কাঁদতে কাঁদতে বলে,
“হুজুর, আমার ভাইটা আর ঠিক নাই… ডাক্তাররা কইছে শরীরে কিছু নাই, কিন্তু ও একা একা কোরআনের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলে... রাতে গলায় পুরুষ কণ্ঠে কথা কয়, অথচ ও তো ছেলে!”

হুজুর একটু বিরক্ত হলেও রাজি হন। ঠিক করা হয় পরদিন ফজরের নামাজের পর রোগীর বাসায় যাবেন।
বাসাটি ছিল তুরাগের ধোলাইপাড়ে। ছোট একতলা বাড়ি। বাড়ির মধ্যে থমথমে পরিবেশ—আলো নেই, শুধু রোগীর মায়ের চোখে অদ্ভুত ভয়।

রোগীর নাম—সাইফ। বয়স আঠারো। দেখতে স্বাভাবিক, তবে চোখে যেন কিছু নেই। বসে আছে কোণায় চুপচাপ।

হুজুর বসলেন, তারপরে সুরা বাকারার প্রথম আয়াত পড়া শুরু করলেন।
আয়াত পঠনের তৃতীয় মিনিটেই ছেলেটা হঠাৎ হেসে উঠল—
“এইটা তো পুরান, হুজুর… আর কিছু শিখেন নাই নাকি?”
কণ্ঠটা ছিল একেবারে পরিণত, রুক্ষ এবং ধীরে ধীরে কেমন যেন অন্যরকম হয়ে উঠছিল।

হুজুর থেমে গেলেন। তারপর বললেন,
“তুই যদি শয়তান হস, কোরআনের শক্তির সামনে টিকতে পারবি না। এখন থেকে সূরা ফাতহ আর আয়াতুল কুরসি পড়া শুরু করতেছি…”

ছেলেটা আবার কথা বলে, কিন্তু এবার জিহ্বা একটু কাঁপে—
“এই আয়াতগুলা তো আমার মুখস্থ… হুজুর, মনে নাই? আপনেই তো পড়াইছেন তখন…”

হুজুর স্তব্ধ। কারণ কেউ জানে না, তিনি ২০০৯ সালে একবার এক রুকাইয়ার সময় ভয়াবহ ভুল করেছিলেন—তখন এক রোগীকে আয়াত পড়াতে গিয়ে তিনি এক আয়াত ভুল উচ্চারণ করেছিলেন। সেদিন রোগী চিৎকার করে বলে উঠেছিল, “এই আয়াত ভুল... তুই তো ফাতেহা শেষ করিস নাই!”

এটা তার জীবনের লজ্জাজনক ঘটনা। কারও মুখে এই কথা শুনে হুজুরের শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল।

ছেলেটা হাসল। চোখের ভেতর এক ধরনের আলো, যেটা চোখ না, বরং গর্ত মনে হয়।
সে বলল,
“আপনার ভুল আয়াতই আমাকে ছাড়পত্র দিছিল... এখন আপনি যদি আবার ভুল করেন, এইবার আমি ছাড়মু না।”

হুজুর হঠাৎ দেখতে পেলেন—তার হাত কাঁপছে। তিনি আয়াতুল কুরসি পড়া বন্ধ করে দিলেন।
চুপ করে ছেলেটার চোখের দিকে তাকালেন।
মনে হলো, চোখের পেছনে অন্য কিছু আছে। যেন আয়াত ঢুকতে পারছে না, উল্টো প্রতিধ্বনির মতো ফেরত আসছে।

হুজুর দরকারি বইপত্র বের করলেন। এবার তিনি কোরআনের এক বিশেষ আয়াত শুরু করলেন যেটা অত্যন্ত জটিল।
কিন্তু পড়তে গিয়ে জিভ আটকে গেল—একটা শব্দ তিনি উচ্চারণ করতে পারছেন না। যেন কেউ তার গলা চেপে ধরেছে।

ছেলেটা বলল,
“শব্দটা বলুন, হুজুর। বলেন তো—‘মাফ’ আর ‘গাফফার’-এর মাঝে পার্থক্য কী?”

হুজুর এবার দাঁড়িয়ে গেলেন। তিনি বাকি পরিবারের লোকজনকে চিৎকার করে বললেন,
“তোমরা সবাই বাইরে যাও, দরজা বন্ধ করো!”

সবাই চলে গেল। কিন্তু দরজা যখন বন্ধ হলো, ঘরের বাতাসে ঠান্ডা একটা সোঁদা গন্ধ ছড়িয়ে গেল।

ঘড়ির কাঁটা তখন রাত ৩টা বাজায়। হুজুর কোরআন খুলে তীব্র গলায় আয়াত পড়া শুরু করেন—
কিন্তু এবার সাইফ বলতে শুরু করে,
“এই আয়াত আমি পড়তাম প্রতিরাতে... সেই সময় আপনি ঘরে ছিলেন, মনে নাই?”
“কোন ঘর?”—হুজুর গলা কাঁপিয়ে বলে।
ছেলেটা বলে—
“চাটগাঁর মাদ্রাসা… ২০০৬ সালে… আপনি যাকে ‘পাগল’ কইয়া মাদ্রাসা থেকে বের করছিলেন… আমি সেই... আমি এখন আপনার আয়াত ফিরাইতেছি... ঠিক আগের মতো... ভুল করে বলেন, দেখি কী হয়।”

হুজুর কাঁপতে কাঁপতে বললেন,
“তুই কে?”

ছেলেটা তখন ঠান্ডা স্বরে বলল,
“আমি ‘আয়াত ভ্রষ্ট’। আমি সেই ভুলে জন্মাইছি, যে ভুল তুই একবার করছিস। আমি তোর ভুলের ফসল।”

তারপর ছেলেটা মুখ খুলে ফেলে এমন এক আওয়াজ করে, যা কোনো মানুষের নয়, কোনো পশুরও নয়।
হুজুর আয়াত পড়া শুরু করতেই চোখের সামনে কোরআনের পৃষ্ঠাগুলো অদ্ভুতভাবে ফাঁকা হয়ে যায়।
তিনি পৃষ্ঠার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারেন—আয়াতগুলো উল্টো হয়ে গেছে! শব্দগুলো আয়নার মতোন উল্টো।

তারপর পেছন থেকে একটি কণ্ঠ আসে—
“তোকে কে কইছে রুকাইয়া করতে? তুই তো নিজেই শয়তানের আয়াতে ভুল করছিস…”

হুজুর পড়ে যান। শরীর অবশ হয়ে আসে। এক অদ্ভুত অন্ধকার ঘিরে ধরে তাঁকে।
আর কিছু মনে থাকে না।

---

পরদিন সকাল
লোকজন এসে দেখে, হুজুর মেঝেতে পড়ে আছেন। নিঃশ্বাস চলছে, কিন্তু মুখ দিয়ে শুধু একটিই শব্দ উচ্চারিত হচ্ছে বারবার—
“আল-মুউ'জাতাইন... আল-মুউ'জাতাইন...”

কিন্তু কোরআনের শেষ দুই সূরার আয়াতগুলো তিনি উল্টোভাবে বলছেন।

তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মাথার স্ক্যান রিপোর্টে কিছুই পাওয়া যায় না, অথচ তিনি আয়াত উল্টো পড়ে যান। এখনো পর্যন্ত তিনি সঠিকভাবে কোনো আয়াত উচ্চারণ করতে পারেন না।

কেউ আর তার কাছে রুকাইয়া করাতে আসে না। লোকজন এখন বলে—
“যে কোরআনের ভুল একবার উচ্চারণ করে, সে নিজেই একদিন ‘ভ্রষ্ট আয়াতের’ বন্দি হয়ে যায়…”

🎉 Facebook recognized me for starting engaging conversations and producing inspiring content among my audience and peers...
21/05/2025

🎉 Facebook recognized me for starting engaging conversations and producing inspiring content among my audience and peers!

🔴❤️তুমি আমার দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসা❤️🔴 রোদেলা দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। পাখির কিচিরমিচির আর বাতাসে ভেসে আসা নরম ...
20/05/2025

🔴❤️তুমি আমার দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসা❤️🔴

রোদেলা দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। পাখির কিচিরমিচির আর বাতাসে ভেসে আসা নরম রোদ যেন প্রেমের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।

তিথি—একজন প্রাণবন্ত, হাসিখুশি মেয়ে। মুখে সবসময় দুষ্টু হাসি, কিন্তু মনটা ভীষণ নরম। সেদিন লাইব্রেরির সামনে হঠাৎ ধাক্কা খায় একজন ছেলের সাথে— “তুমি কি চোখে কম দেখো? সামনে না দেখে হাঁটছো কেন?” – “আমি তো সোজা হাঁটছিলাম, তুমিই তো হঠাৎ উড়ে এলে!”

ছেলেটির নাম—আরিব। শান্ত, স্মার্ট, একটু রাগী, কিন্তু ভিতরে গভীর ভালোবাসার সাগর লুকানো। শুরু থেকেই তাদের মধ্যে যেন অদ্ভুত এক টান ছিল, তবে সেটা ঝগড়ার রঙে।

ক্লাসে প্রতিদিন দেখা হতো। একে অপরকে খোঁচানো যেন রুটিন হয়ে গিয়েছিল। আরিব সবসময় তিথির কলম নিয়ে লুকিয়ে রাখত, তিথি কখনো আরিবের ব্যাগে চকোলেট রেখে দিত—যা পরে পিঁপড়ার আক্রমণে শেষ হতো। তাদের ঝগড়ার মধ্যেও বন্ধুত্ব গড়ে উঠছিল—যেখানে ভালোবাসার অদৃশ্য সুর বেজে চলেছিল।

একদিন ভারি বৃষ্টি হচ্ছিল। তিথি ভিজে ভিজে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎই আরিব একটি ছাতা নিয়ে হাজির— – “চলো, ভিজে গেলে জ্বর হবে।” – “তুমি এত কেয়ারিং কেন হঠাৎ?” – “কারণ... আমি তোমাকে ভালোবাসি।”

তিথির মুখে লজ্জা, চোখে জল, আর ঠোঁটে দুষ্টু হাসি— – “আমিও। কিন্তু শর্ত আছে, ঝগড়া বন্ধ করতে পারবে না!” – “দুষ্টুমি তোমার প্রিয়, তাই তো?” – “আর তুমি আমার দুষ্টু ভালোবাসা!”

তাদের প্রেম চলতে লাগল। কখনো ঘুরতে যাওয়া, একসাথে আইসক্রিম খাওয়া, কখনো ঝগড়া, অভিমান, আবার মিলন। একদিন হঠাৎ তিথির মা অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তিথি ভীষণ চিন্তিত, ভেঙে পড়েছিল। তখন আরিবই ছিল তার পাশে— রাত জেগে পাশে থাকা, প্রতিদিন হাসপাতালে যাওয়া—আরিব প্রমাণ করে দিল, ভালোবাসা শুধু হাসি নয়, দুঃখেও হাতে হাত রাখার নাম।

সকল বাধা পেরিয়ে অবশেষে তারা বিয়ে করল। বিয়ের দিন তিথি বলল— – “আজ থেকে প্রতিদিন দুষ্টামি করবে তো?” – “প্রতিদিন নয়... সারাজীবন করব!”

তাদের সংসারেও ছিল দুষ্টু ঝগড়া, মিষ্টি অভিমান, গভীর প্রেম আর এক অদ্ভুত বন্ধুত্ব। তিথি যখন রেগে যেত, আরিব তাকে কবিতা লিখে শান্ত করত। আরিবের মন খারাপ হলে তিথি ভাজা খিচুড়ি বানিয়ে হাসি ফিরিয়ে দিত।

দুষ্টু ভালোবাসা চিরকাল বছর কেটে যায়। একদিন রাতে বারান্দায় বসে তিথি বলে— – “ভালোবাসা কি শুধু একে অপরকে চুমু খাওয়া বা ভালোবাসি বলা?” আরিব হেসে বলে— – “ভালোবাসা মানে হলো, প্রতিদিন তোমার মুখের রাগী ভঙ্গি দেখে হাসা, আর প্রতি রাতে তোমার পাশে ঘুমিয়ে পড়া। তুমি আমার দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসা।”

গল্পটি শুধু প্রেমের নয়, এটি সেই সম্পর্কের গল্প যেখানে হাসি-কান্না, রাগ-অনুরাগ, এবং এক চিরন্তন বন্ধনের ছবি আঁকা হয়েছে—যেখানে ভালোবাসা মানে প্রতিদিন একটু একটু করে একে অপরকে ভালো রাখা।

⛔ভালোবাসার বদলে জ্বীনের ফতোয়া⛔ভালোবাসা কি সবকিছুর ঊর্ধ্বে? নাকি সমাজ আর পরিবারের শাসনে চাপা পড়ে যায় হৃদয়ের সত্য? মিথিলা...
20/05/2025

⛔ভালোবাসার বদলে জ্বীনের ফতোয়া⛔

ভালোবাসা কি সবকিছুর ঊর্ধ্বে? নাকি সমাজ আর পরিবারের শাসনে চাপা পড়ে যায় হৃদয়ের সত্য? মিথিলা আর সাদিক যখন প্রথম পরিচিত হয়, ওরা নিজেরাও জানত না এ সম্পর্ক একদিন এমন এক জায়গায় যাবে, যেখানে প্রেম নয়, জ্বীন শাসন করবে নিয়তি।

ঢাকার একটি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে প্রথম দেখা তাদের। চোখাচোখি, সেমিনার, গ্রুপ স্টাডি, তারপর একদিন চুপিচুপি খেয়াল—কেউ কারো নাম মুখে না আনলেও হৃদয়ে বসে গেছে। মিথিলা ছিল খুব ধর্মভীরু, রোজা-নামাজে অটল, আর সাদিক বরং একটু ঢিলেঢালা, কিন্তু ভীষণ আবেগপ্রবণ।

তাদের প্রেম চলেছিল নীরবে দুই বছর। কক্ষচুয়ায় আড়াল করে রাখা কথোপকথন, লাইব্রেরিতে একসাথে পড়া, মসজিদের পেছনে দাঁড়িয়ে কেবল একবার চোখে চোখ রাখা—সেইসব মুহূর্ত যেন একেকটা গল্প ছিল। তারা স্বপ্ন দেখত, বিয়ের, সংসারের, সন্তানদের নাম রাখারও। অথচ সব স্বপ্ন ধ্বংস হতে সময় লাগে না... কেবল একটা সত্য প্রকাশ্যে এলেই।

মিথিলার বাবা ছিলেন স্থানীয় এক মসজিদের মোতাওয়াল্লি। এলাকায় দারুণ প্রভাবশালী। একদিন কে যেন তার কানে তুলে দেয় মিথিলার প্রেমের কথা। বাড়িতে আগুন। মিথিলাকে শ্বাসরোধ করে জেরা করা হয়—“নামের মুসলিম হয়ে এই হারাম কাজ করছো?!” মিথিলা চুপ। কিছু বলেনি। কিন্তু তার চোখে অশ্রু ছিল না, ছিল বিদ্রোহ।

অন্যদিকে, সাদিকের বাড়িতে তার মা নালিশ করে—“এই মেয়েটা তোমার ঘর ভাঙবে। বংশ ডুবাবে।” সাদিক উত্তর দেয়নি, শুধু বলেছিল—“ভালোবাসলে কি হারাম হয়, আম্মু?”

দুই পরিবার যেন একসাথে এক ঘৃণার চুক্তি করল। শুধু ভালোবাসা থামানো নয়—দুই তরুণ প্রাণকে ভেঙে গুঁড়িয়ে ফেলার মতলব। মিথিলাকে বাসা বন্দি করা হয়, মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়, এমনকি তিলাওয়াতের ক্লাসে পাঠানো হয় যেন 'পরিশুদ্ধ' হয়। সাদিক পালিয়ে যায়, এক বন্ধুর বাসায় উঠে।

কিন্তু এক রাত, হঠাৎ মিথিলা তার ছোট বোনের মোবাইল থেকে সাদিককে একটা ম্যাসেজ পাঠায়—
“তুই থাকিস না, আমি আসছি।”

মধ্যরাতে ওরা দেখা করে। বাসা থেকে পালায়। গন্তব্য ঠিক করেছিল সাভার, এক বন্ধুর ফ্ল্যাটে। কিন্তু রিকশাওয়ালা ভুল করে নিয়ে যায় অন্য পথে—যেখানে জ্যোৎস্নার নিচে দাঁড়িয়ে থাকে এক পুরনো, ধ্বংসপ্রায় মাদ্রাসা।
মাদ্রাসাটির নাম নওরোজিয়া মাদ্রাসা, যার ইতিহাস সম্পর্কে কেউ খোলামেলা কথা বলে না।
শোনা যায়, সেখানে ষাট বছর আগে এক দারুণ আলেম প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন এক ছাত্রীর সঙ্গে। ধরা পড়লে তাকে ফতোয়া দেয়া হয়—“জীবিত থাকলে হারাম, মরলে মাফ।” তিনি সেদিন রাতেই গলায় দড়ি দেন... কোরআনের পাশে পড়ে ছিল তার আত্মহত্যার চিঠি—
“যারা প্রেম করে নামাজের আগে, তারা যেন জ্বীনের সামনে সিজদা করে চিরকাল।”

সেদিন রাতেই মিথিলা আর সাদিক সেই পরিত্যক্ত কক্ষে একসাথে রাত কাটায়। শরীরের নয়, হৃদয়ের বন্ধনে... তারা সিদ্ধান্ত নেয়—এ সমাজকে উপেক্ষা করেই তারা এক হবে।

কিন্তু সকালে পুলিশ হানা দেয়। কেউ খবর দিয়েছিল। মিথিলাকে বাড়ি ফিরিয়ে নেয়া হয়, অচেতন অবস্থায়। সাদিক পালিয়ে যায়। কেউ জানে না কোথায়। কিন্তু মিথিলার ভাষ্যমতে,
“ও আমাকে বলেছিল, ‘তুই আমার স্ত্রী... তোর শরীর নয়, আত্মা আমি নিয়ে নিলাম।’”

এরপর থেকেই অদ্ভুত কিছু শুরু হয়।

মিথিলার বাবা প্রতিদিন রাত ৩টায় ঘুম থেকে উঠে—কেউ তাকে নাম ধরে ডাকে, পুরুষ কণ্ঠে, কিন্তু ছাদের ওপরে। একদিন সে দোতলার বারান্দা থেকে পড়ে যায়, মাথা ফেটে মগজ বেরিয়ে আসে। ময়নাতদন্তে বলা হয়—নিজেই লাফ দিয়েছে।

সাদিকের মায়ের চোখ অন্ধ হয়ে যায়। ডাক্তার বলে—চোখে কিছু হয়নি, মস্তিষ্ক ‘আতঙ্কে বন্ধ’ হয়ে গেছে।

মিথিলা নিজে একদিন চিৎকার করে বলে ওঠে—“ছায়া ওর মতো! আমাকে স্পর্শ করে! আমি নামাজ পড়ি, কিন্তু সিজদার জায়গায় আগুন দেখি!”

এক আলেম এসে বাড়িতে রুকিয়া করেন। সেই রাতে, পুরো কোরআনের তেলাওয়াত চলাকালীন সময়, মিথিলার কণ্ঠ থেকে বের হয় পুরুষ কণ্ঠে আরবিতে কিছু শব্দ—“আমার নিয়তিকে কে ফতোয়া দেয়?”

তিন বছর পর, এখন মিথিলা একজন মানসিক হাসপাতালে ভর্তি। মুখে হাসি, চোখে গাঢ় কালি। কেউ জানে না, সে পাগল নাকি কেবল এক দুনিয়ার সঙ্গে অন্য দুনিয়ার সেতুবন্ধ।

কিন্তু এক নার্স বলে,
“রাতে একটা ছায়া এসে বসে ওর পায়ের কাছে। কেউ দেখতে পায় না, কিন্তু ও বলে—‘তুই তো বলেছিলি, তুই আমার হয়ে গেছিস।’”

ঘরের দেয়ালে এখন কেবল একটাই বাক্য লেখা... খোদায় লেখা নয়, ছায়া দিয়ে আঁকা—
“ভালোবাসা যদি ফতোয়া পায়, তবে ফতোয়াদার পাবে অভিশাপের জান্নাত।”

🎉 Facebook recognized me as a top rising creator this week!
20/05/2025

🎉 Facebook recognized me as a top rising creator this week!

🔴যাযাবর জীবন: নিঃশব্দ ছায়ার পদচিহ্ন🔴(একটি রহস্যঘেরা পুনর্জন্মের কাহিনি)পাহাড়, ঝরনা, ঘন জঙ্গল আর কুয়াশায় ঢাকা ছোট্ট গ...
19/05/2025

🔴যাযাবর জীবন: নিঃশব্দ ছায়ার পদচিহ্ন🔴
(একটি রহস্যঘেরা পুনর্জন্মের কাহিনি)

পাহাড়, ঝরনা, ঘন জঙ্গল আর কুয়াশায় ঢাকা ছোট্ট গ্রাম চন্দ্রগড়—যেখানে সূর্যও যেন দেরিতে ওঠে আর রাত যেন বেশি গভীর। এই গ্রামের নির্জন, মাটির রাস্তা ধরে একদিন হেঁটে আসে এক আগন্তুক। তার নাম কেউ জানে না, চোখে ঘুম নেই, কিন্তু ভেতরে লুকিয়ে আছে শতাব্দীর পুরনো ক্লান্তি।

পিঠে ঝোলা ব্যাগ, পায়ে ময়লা স্যান্ডেল, মুখে আধা পুড়ে যাওয়া দাড়ি। সে রাতে পঞ্চায়েত ভবনের পেছনে একটা পুরনো গাছতলায় ঘুমিয়ে পড়ে। গ্রামবাসীরা সকালে দেখে বলল, “ও যাযাবর… ওর কোনও ঠিকানা নেই।”

যাযাবরটি দিনভর নির্জনে বসে থাকে নদীর পাশে। কখনও মাটি খুঁটে, কখনও কেবল তাকিয়ে থাকে স্রোতের দিকে। রাত হলে পাহাড়ের দিক থেকে বাজ পড়ার মতো আওয়াজ শোনা যায়, আর কেউ যেন ফিসফিস করে বলে, “অভি… অভি…”

একদিন, গ্রামের স্কুল শিক্ষিকা মোহনা তার দিকে এগিয়ে এসে বলে, “এই গ্রামে আপনি কী খুঁজছেন?” যাযাবর হেসে উত্তর দেয়, “আমি নিজেকেই খুঁজছি। বহু বছর আগে আমি এখানেই সব হারিয়েছি।”

এক রাতে, যাযাবরকে দেখা যায় গুহার ভেতর ঢুকতে। সে ফিরে আসে রক্তাক্ত হাতে, কাঁধে ছোট্ট এক মেয়েশিশু। শিশুটিকে সে দিয়ে দেয় মোহনাকে। আর বলে, “ওর নাম রেখো... আলো। কারণ আমি অন্ধকার ছাড়া কিছু দিতে পারিনি।”

পরদিন পাহাড়ের গুহার ভেতর থেকে এক পুরনো রক্তমাখা চিঠি পাওয়া যায়— সেখানে লেখা ছিল: "আমি মরতে চাই না। কিন্তু অভি যদি না ফেরে, আমি আর বাঁচতে পারব না। আমি চাই না আমার সন্তান এই অভিশপ্ত পাহাড়ে জন্ম নিক।"

মোহনা যাযাবরের ব্যাগে এক প্রাচীন নোটবুক খুঁজে পায়। তাতে অদ্ভুত আঁকিবুকি, কিছু পুড়ে যাওয়া শব্দ—তবে সবচেয়ে বেশি ছিল একটি নামের পুনরাবৃত্তি— “স্নেহা… স্নেহা…”

মোহনার মনে সন্দেহ জাগে—এই লোক কি আসলেই একজন ঘুরে বেড়ানো পাগল, না কি তার অতীত এ গ্রামেই গেঁথে আছে?

রাতের পর রাত গ্রামে অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে থাকে। কেউ দরজা বন্ধ করে ঘুমোলে সকালে খোলা পায়। কেউ দেখে দরজার সামনে আগুনে পোড়া চিঠি পড়ে আছে, যেখানে লেখা— “তুমি ফিরেছো, অভি… কিন্তু আমি আর নেই।”

নদীর ধারে এক মেয়ের ছায়া দাঁড়িয়ে থাকে—তার চোখ নেই, কিন্তু চোখ দিয়ে রক্ত গড়ায়। সে শুধুই ডাকে, “আমাদের মেয়েকে ফিরিয়ে দাও, আমি অপেক্ষা করছি।”

এক বৃদ্ধা গ্রামের সবচেয়ে পুরনো বাসিন্দা। তিনি বলেন, “১৩ বছর আগে এক মেয়ে এখানে এসেছিল। তার নাম ছিল স্নেহা। তার প্রেমিক অভি ওকে ফেলে পালিয়ে গেছিল। মেয়েটি নদীতে ঝাঁপ দেয়, কিন্তু বাচ্চাটিকে কেউ খুঁজে পায়নি।”

গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করে, স্নেহার আত্মা আর শিশুটির অশরীরী ছায়া এখনো সেই গুহায় বাস করে।

এক রাতে গুহা থেকে আগুন জ্বলে ওঠে। আতঙ্কে মানুষ ছুটে আসে। যাযাবর দৌড়ে ঢুকে যায় ভিতরে। ভেতর থেকে চিৎকার ভেসে আসে— “তুমি ভালোবাসতেও পারোনি, মরতেও পারো না অভি!”

পরদিন সকালের কুয়াশার ভেতর আগুন নিভে যায়। কিন্তু অভিকে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না।

শুধু গুহার পাশে পড়ে থাকে তার নোটবুক, এবার খোলা পাতায় লেখা— "আমি জীবনে যা খুঁজিনি, তাকেই হারিয়েছি। আজ সেই হারানোরা আমায় খুঁজে বেড়ায়। আমি আর ফিরব না।"

বছর দশেক পরে, মোহনার স্কুলে এক নতুন ছাত্রী আসে—নাম আলো। সে একদিন লাইব্রেরিতে সেই পুরনো বই "যাযাবর জীবন" পড়ে হঠাৎ কেঁদে ফেলে। মোহনা জিজ্ঞেস করে, “তুমি কাঁদলে কেন?” আলো ফিসফিস করে বলে, “এই কাহিনির যাযাবর আমার বাবা ছিলেন… আমি তারই ভুলের আলো।”

আলো বড় হয়ে লেখিকা হয়। তার প্রথম বইয়ের নাম রাখে—“যাযাবরের সন্তানের চোখে”। সেই বইয়ে সে লেখে—

"আমার বাবা একদিন হারিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার ছায়া আমার চুলে হাত বুলিয়ে গেছে। আমি তাকে দেখি প্রতিটি ভোরে, যখন বাতাস নিঃশব্দে আমার কানের পাশে ফিসফিস করে বলে— 'আমি তোর পাশে আছি…'"

কোনও কোনও মানুষ ইতিহাসে নাম রাখে না, কিন্তু তারা রেখে যায় কিছু পদচিহ্ন। যাযাবর ছিল তেমনই একজন—যে ভুল করেছিল, পালিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার আত্মত্যাগে redemption খুঁজে পেয়েছিল।

আর তার রেখে যাওয়া জীবন আজ শত মানুষের ভাবনায় এক নতুন প্রশ্ন তোলে— “ভুল করে ফেলে চলে যাওয়া মানুষ কি কখনও ফিরতে পারে?”

🔴একতরফা ভালোবাসা – নিঃশব্দের আর্তনাদ🔴নিশিতা—একটি নাম, যার পেছনে নেই কোনো পদবি, নেই কোনো পরিচিতি। জন্মেছিল রাস্তার পাশে ফ...
18/05/2025

🔴একতরফা ভালোবাসা – নিঃশব্দের আর্তনাদ🔴

নিশিতা—একটি নাম, যার পেছনে নেই কোনো পদবি, নেই কোনো পরিচিতি। জন্মেছিল রাস্তার পাশে ফেলে রাখা এক নবজাতক হিসেবে। পাথরঘাটার ‘মাটির আলো’ নামক একটি ছোট অনাথ আশ্রমে ঠাঁই হয় তার। তখন সে মাত্র দুই দিন বয়সী। আশ্রমের মায়েরা তাকে ভালোবাসতেন ঠিকই, কিন্তু কোনো এক বিশেষ মুহূর্তে পাশে দাঁড়ানোর মতো আপন কেউ ছিল না।

ছেলেবেলা কেটেছে নীরব নিঃশব্দে। ঈদের দিনেও তার গায়ে নতুন জামা থাকত, কিন্তু বুক ভরা আনন্দ থাকত না। সে শিখে গিয়েছিল—হাসি মুখের আড়ালে কান্না লুকাতে হয়, চাহিদা না জানিয়ে বেঁচে থাকতে হয়। নিশিতা নিজেকে ধীরে ধীরে বই আর আঁকার জগতে বন্দি করে ফেলে। পৃথিবীর কাছে সে ছিল এক মেয়ে—যার কেউ নেই, আর কারো কিছু হবারও ছিল না।

এক বর্ষার দিন, আশ্রমে এক যুবক এলেন—তাহসিন আহমেদ। কলেজের সমাজসেবা প্রকল্পের একজন সদস্য হিসেবে এসেছিলেন কিছু পাঠ্যপুস্তক ও কাপড় দিতে। হঠাৎই তার চোখে পড়ে একটি মেয়ে—সবাই যখন খেলায় মেতে, সে তখন এক কোণায় বসে অজান্তে জানালার বাইরে তাকিয়ে আছে।

তাহসিন এগিয়ে গেল, কথা বলল, কিন্তু মেয়েটির চোখে কিছু ছিল—একধরনের চুপচাপ আর্তনাদ, যা কেবল নিঃসঙ্গরাই বোঝে। নিশিতা সেই প্রথম কাউকে নিজের আঁকা ছবিগুলো দেখায়। তাহসিন প্রশংসা করে, তার বানানো কবিতাগুলো পড়ে শোনায়, তার পাশে বসে গল্প করে।

প্রতি শুক্রবার তাহসিন আসে, বই দেয়, হাসায়, মাঝে মাঝে নিজেই কেক এনে খাওয়ায়। এই বন্ধুত্ব, এই ছোট ছোট উপস্থিতি নিশিতার জন্য হয়ে ওঠে এক চিরন্তন আশ্রয়।

নিশিতা কখন যে তাহসিনকে ভালোবেসে ফেলেছে, তা নিজেও জানে না। কিন্তু ভালোবাসা তো বলে আসে না—সে তো নিঃশব্দেই হৃদয়ে বাসা বাঁধে।

তাহসিন যখন কথা বলত, নিশিতার হৃদয়ে ফুল ফুটত। সে চুপিচুপি তাহসিনের জন্য দোয়া করত, কাগজে কাগজে তাহসিনের মুখ আঁকত। এমনকি নিজের জমানো টাকায় একদিন তাহসিনের জন্য একটি কলমও কিনে রেখেছিল, যদিও সাহস হয়নি তাকে দিতে।

একবার নিজেই নিজের ডায়েরিতে লিখেছিল—“ভালোবাসা যদি বলার সাহস না পায়, তাহলে কি তা মিথ্যে হয়ে যায়? আমি তো তোমায় নিঃশব্দেই ভালোবেসেছি… নিঃশর্তভাবে।”

সবকিছু বদলে যায় এক বিকেলে। তাহসিন হঠাৎ তার আসা বন্ধ করে দেয়। ফোন করলেও উত্তর পায় না। খবর আসে—তাহসিন এখন অন্য একটি মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে। শহরের ধনী, আধুনিক, সাহসী মেয়ে—ইশরাত।

তাহসিন ভুলে গেছে সেই মেয়েটিকে, যে তার জন্য অপেক্ষা করত ঘণ্টার পর ঘণ্টা, যে চোখে স্বপ্ন বুনত শুধু তাহসিনের একটু হাসির জন্য।

এক সন্ধ্যায়, নিশিতা তাহসিনের জন্য একটি চিঠি লেখে। সাদা খামে রেখে দেয় তার পুরনো আঁকা ছবিগুলোর সঙ্গে-“ভালো থেকো তাহসিন। তোমার হাসি আমার কষ্টের চেয়েও বেশি প্রিয়। তুমি না জানলেও আমি তোমায় ভালোবেসেছি, নিঃশব্দে… নিঃস্বার্থে।”

বছরখানেক কেটে যায়। নিশিতা ধীরে ধীরে নিজেকে গড়ে তোলে। শহরের এক স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করে। আঁকার প্রতি ভালোবাসা থেকে শিশুদের শেখায়, সময় পেলেই আশ্রমে যায়।

এক বিকেল, আশ্রমের দরজায় একজন ক্লান্ত, ভগ্ন হৃদয়ের যুবক এসে দাঁড়ায়—তাহসিন।

সে এখন একা। ইশরাত তাকে ছেড়ে গেছে। মা মারা গেছেন, বাবার সাথে সম্পর্ক নেই। এই পৃথিবীতে হঠাৎ করেই কেউ নেই যাকে সে আপন বলে ডাকতে পারে। আর ঠিক তখনই সে ফিরে আসে সেই মেয়েটির কাছে, যার চোখে একসময় সে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা দেখেছিল।

তাহসিন বলল— “নিশু, আবার যদি বলি—তুমি কি আমায় একটু জায়গা দেবে তোমার জীবনে?”

নিশিতা নরম গলায় বলল— “তুমি তো কখনই ছিলে না, যে ফিরে আসবে। আমি অপেক্ষা করেছিলাম, কিন্তু ফিরে যাওনি। তবুও তোমার জন্য আমি রাগ করিনি, কারণ ভালোবাসায় চাওয়া থাকে না, শুধু দেয়া থাকে।”

আজ নিশিতা শত এতিম শিশুর মা। তার ছোট একটি স্কুল আছে, নাম “নিঃশব্দ আশ্রয়।” প্রতি সন্ধ্যায় সে বাচ্চাদের গল্প শোনায়, ছবি আঁকতে শেখায়।একদিন এক শিশু তাকে জিজ্ঞেস করে— “আপু, আপনি কি কাউকে ভালোবেসেছিলেন?”

নিশিতা একটু চুপ করে। তার চোখে জল এসে যায়। তারপর মৃদু হেসে বলে— “ভালোবাসা মানে কাউকে পেয়ে রাখা নয়… ওকে ভালো রাখার দোয়া করা। আমি ভালোবেসেছিলাম একজনকে, নিঃশব্দে… এমনভাবে, যাতে তার কোনো দিন বোঝার দরকার হয়নি।”

ছোট ছোট মুখগুলো চুপ হয়ে যায়। বাতাস থমকে যায়। শিশুরা অনুভব করে—ভালোবাসা কাঁদে না, ভালোবাসা শুধু প্রার্থনা করে।

ভালোবাসা সবসময় প্রতিদানে আসে না। কিন্তু ভালোবাসার নিঃশব্দ ত্যাগের গল্পগুলো চিরকাল বেঁচে থাকে, অন্যদের হৃদয়ে, চোখের জলে…

⛔ মৃত প্রেমিকার ঘ্রাণ ⛔রুদ্র শিউলিকে কখনো ভালোবাসেনি, সে শিউলিকে পূজা করত।একটা নরম, নিঃশব্দ মেয়েকে দেখা দিয়েছিল এক দুপ...
18/05/2025

⛔ মৃত প্রেমিকার ঘ্রাণ ⛔

রুদ্র শিউলিকে কখনো ভালোবাসেনি, সে শিউলিকে পূজা করত।
একটা নরম, নিঃশব্দ মেয়েকে দেখা দিয়েছিল এক দুপুরের ক্লান্ত আলোয়—চোখে সারাজীবনের ঘুমহীনতা, ঠোঁটে ম্লান এক ছায়া হাসি।

শিউলি বলত, “তুমি যদি একদিন আমাকে ভুলে যাও, আমি নিজেকে মাটির নিচে টেনে নিয়ে যাব।”

রুদ্র হেসে বলত, “তোমার গন্ধটা আমি কোনোদিন ভুলব না—আতরের মতো, মৃত ফুলের মতো...”

তাদের ভালোবাসার গল্পটা স্বাভাবিক ছিল না। ওরা দেখা করত পুরনো ভগ্নপ্রায় এক বাড়িতে, যেখানে কাঁচ ভাঙা, দেয়ালের পেছনে আঁকা ছিল কোনও মৃত শিশুর ছবি। সে বাড়ির ঘরে একটা দরজা ছিল যা কখনো খোলা যেত না। শিউলি বলত, “ওটা খোলো না। ওখানে আমার দাদি ঘুমায়। তিনি কখনো মরে যাননি, শুধু ঘুমিয়ে আছেন।”

রুদ্র এটা ঠাট্টা বলে ভাবত। কিন্তু এরপর থেকেই ওদের মাঝে ভয়ের গন্ধ মিশতে শুরু করে।

একদিন হঠাৎ শিউলি নিখোঁজ হয়। রুদ্র শুধু জানত, সেই বন্ধ দরজার ওপাশ থেকে সেদিন সে একটা চিৎকার শুনেছিল। দরজার নিচ দিয়ে গড়িয়ে এসেছিল এক ফোঁটা আতরের মতো ঘন কালচে তরল। আর শিউলির রুমে পড়ে ছিল এক গোছা চুল… এক ঝাঁক পচা শিউলি ফুলের ভেতর।

তারপর দিনগুলো গেলো—নিরব, ঠান্ডা, অন্ধকার।
রুদ্রের জীবন থমকে গেল। তার ঘরভর্তি আতরের গন্ধ ভেসে বেড়ায়, অথচ কেউ ব্যবহার করেনি। মধ্যরাতে দরজার কড়া নড়ে। আয়নায় নিজেকে দেখতে গিয়ে সে দেখতে পায়—তার পেছনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে… মাথা নিচু, গা ভেজা, চোখের জায়গায় কেবল দুটো গর্ত, যেখানে শূন্যতা নয়, ঘৃণা, অভিমান আর অন্ধকার প্রেম জ্বলছে।

শিউলি বলল,
“তুমি আমাকে ভালোবাসোনি রুদ্র, তুমি আমাকে চাওনি, তুমি আমায় রেখে চলে গিয়েছিলে… এখন আমি তোমাকে ভালোবেসে খেয়ে ফেলতে এসেছি…”

এরপর থেকে শুরু হলো এক অদ্ভুত খেলা।
রুদ্র প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে গেলে তার গায়ে কে যেন হাত বুলায়, কিন্তু শরীর ঠান্ডা হয়ে যায় পাথরের মতো।
সে যেদিকে তাকায়, দেয়ালে শিউলির চুল ঝুলে থাকে, পায়ের কাছে মৃত পাখির মতো পড়ে থাকে শিউলির ছিন্ন কাপড়।
শিউলির গন্ধে সে পাগল হয়ে যায়, দিনরাত শুঁকে বেড়ায়—ঘর, জামাকাপড়, বিছানার চাদর, পুরনো চিঠি।
কিন্তু কিছুতেই সে গন্ধ আর স্থির থাকে না। শিউলির ঘ্রাণ এক অভিশাপ, যত গন্ধ সে খুঁজে ফেরে, তা শুধু মৃত্যু ডেকে আনে।

একদিন রাতে রুদ্রের ঘরের দেয়ালে রক্তে লেখা এক লাইন—
“ভালোবাসা যদি দেহ পায় না, তবে সে গন্ধ হয়, ঘ্রাণ হয়ে ঘুম কাড়ে।”

এরপর প্রতিদিন সকালে সে শরীরে দাগ নিয়ে উঠে—ঘাড়ে কামড়ের মতো, বুকে নখের আঁচড়।
সে অফিসে যায় না, খায় না, আয়নায় নিজের চোখেও তাকায় না। সে শুধুই শোনে—শিউলি হাঁটে, হাসে, কাঁদে আর তাকে ডাকে।
"আয় রুদ্র... এবার তুইও ঘুমা… আমার মতো…"

একদিন সকালে, প্রতিবেশীরা রুদ্রের ঘরে ঢুকে দেখে—

ঘরের সব কাঁচ ভাঙা, ছাদে রক্তে লেখা—
“সে আমাকে ফেলে গিয়েছিল… তাই আমি তাকে ঘ্রাণ হয়ে তার রক্তে ভিজে থাকলাম…”

রুদ্রের দেহ ঝুলে আছে সিলিং ফ্যান থেকে।
কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে, তার শরীরে একটি মেয়ের দেহ জড়ানো ছিল—কোনো কঙ্কালসার মৃত দেহ, যার চুল ছিল শিউলির মতো… এবং সে ঘরে গন্ধ ছিল—আতর, মৃত ফুল, আর পচা মাটির।

সেই রাতে যখন পুলিশ দেহ নামাতে গিয়েছিল, একজন অফিসার হঠাৎ পেছনে ঘুরে তাকায়, দেয়ালের পাশে বসে থাকা এক মেয়েকে দেখে। মেয়েটির ঠোঁটে ছিল রক্ত, আর সে বলেছিল,
“ভালোবাসলে শেষ করো… ফেলে যেও না…”

আজও সেই পুরনো বাড়িটাতে যারা ঢোকে, তারা দেখে দরজা খুলে গেছে—ভেতরে বালিশের পাশে একটা চুলের গোছা, একটা শুকনো হাত আর একগুচ্ছ আতরের শিশি, যেগুলো খুললেই ভেতর থেকে কোনো কথা নয়, কান্না ভেসে আসে…

🔴অপূর্ণ প্রেম: চিঠির শেষ লাইন🔴বর্ষার শেষ প্রান্তে হঠাৎ করেই সূর্যটা একটু একটু উঁকি দিতে শুরু করেছে। গ্রামের মেঠোপথের পাশ...
17/05/2025

🔴অপূর্ণ প্রেম: চিঠির শেষ লাইন🔴

বর্ষার শেষ প্রান্তে হঠাৎ করেই সূর্যটা একটু একটু উঁকি দিতে শুরু করেছে। গ্রামের মেঠোপথের পাশ দিয়ে ছায়া হয়ে দাঁড়িয়ে আছে অজস্র কৃষ্ণচূড়া গাছ, আর সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল শ্রাবন্তী—একটা পুরনো কাগজে মোড়া বই হাতে। চোখে ছিল শান্ত বিষণ্নতা, যেন কোনো হারিয়ে যাওয়া কবিতার শেষ চরণ।

আরিয়ান, একজন শহুরে স্থপতি, তখন সরকারি একটি পুরনো লাইব্রেরি পুনর্নির্মাণের কাজ নিয়ে প্রথমবারের মতো এসেছিল এ গ্রামে। শহরের কোলাহল থেকে এক ধাক্কায় অনেক দূরে আসা। গ্রীষ্মে যেন শীতল বাতাসের মতো তার সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল শ্রাবন্তী।

প্রথমদিনই লাইব্রেরিতে বই ঘাঁটতে গিয়ে সে দেখেছিল মেয়েটিকে—চুপচাপ, চোখে গভীর আলো, যেন একটা শতাব্দী পুরনো গল্প বলছে চোখের ভাষায়।

সেই প্রথম দিন আরিয়ান শুধু বলেছিল, "তুমি এখানে আসো রোজ?" শ্রাবন্তী মৃদু হেসেছিল। বলেছিল, "বইগুলো তো আর একা থাকে না, তাই আসি সঙ্গ দিতে।"

দিনগুলো কেটে যেতে লাগল। লাইব্রেরির বারান্দা হয়ে উঠল দু’জনের নীরব জগৎ। আরিয়ান তাকে শহরের কথা বলত, আধুনিক জীবনের ছুটে চলা, ক্যারিয়ার, বিল্ডিংয়ের নকশা। আর শ্রাবন্তী বলত, "প্রেমও একটা স্থাপত্য। ভিত যদি গভীর হয়, তবে কিছু না বলেও একটা সম্পর্ক মাথা তুলে দাঁড়ায়।"

সন্ধ্যায় পাখির ডাক আর ধানখেতের সুবাসে দুইজনের প্রেম জন্ম নিচ্ছিল চুপিচুপি। শহরের কৃত্রিমতার বাইরে এই প্রেমটা যেন নিঃশর্ত, নিঃশব্দ, অথচ গভীর।

প্রজেক্ট শেষ হল। যাবার আগে আরিয়ান চুপ করে শ্রাবন্তীর হাতে একটি চিঠি দিল। চোখের কোণে জল নিয়ে বলল— "তুমি থাকো, ঠিক এখানেই। আমি ফিরব, কথা দিলাম।"

চিঠির ভাঁজে শেষ লাইনে লেখা ছিল— "আমি ফিরে আসব… সব ফেলে… কেবল তোমার জন্য।"শ্রাবন্তীর চোখে জল ঝরছিল, কিন্তু ঠোঁটে তখনও সেই বিশ্বস্ত হাসি।

আরিয়ান শহরে ফিরে গিয়ে বাস্তবতার পাহাড়ে চাপা পড়ে গেল। বাবার হঠাৎ স্ট্রোক, ব্যবসার বিপর্যয়, মা'র আত্মহত্যার চেষ্টার মতো একের পর এক বিপর্যয় তার হৃদয়ের কথাকে গলা টিপে মেরে ফেলল।

তার ফোন, চিঠি—সব হারিয়ে গেল সময়ের অতলে। শ্রাবন্তী প্রতিদিন অপেক্ষা করত সেই পুরনো লাইব্রেরির বারান্দায়। নতুন শাড়ি, মাথায় বেনি, চোখে প্রশ্ন।

গ্রামের লোকজন হাসাহাসি করত, কেউ কেউ সহানুভূতিও দেখাত। কিন্তু শ্রাবন্তী শুধু বলত, "ও বলেছে ফিরবে... কথা দিয়েছে।"

পাঁচ বছর পর শহরের একটি প্রদর্শনীতে আরিয়ান হঠাৎ দেখে একটি ছবি— এক মেয়ে, ধুলোমাখা লাইব্রেরির বারান্দায়, চুপচাপ বসে। চোখে নদীর মতো দীর্ঘ প্রতীক্ষা।

ছবির নিচে লেখা— “প্রতীক্ষা”—শ্রাবন্তী ঘোষ।

হৃদয়টা যেন দপ করে উঠল। সব ছেড়ে ছুটে গেল গ্রামে। গিয়ে দেখে, সেই লাইব্রেরির বারান্দাটা এখনও আছে—একটু পুরনো, একটু ধ্বংসপ্রাপ্ত। কিন্তু শ্রাবন্তী?সে এখন চুপচাপ থাকে। কথা বলে না কারও সঙ্গে। সকাল-সন্ধ্যা বসে থাকে সেই পুরনো চেয়ারে।

আরিয়ান অনেক চেষ্টা করে, একদিন সে সামনে এসে দাঁড়ায়। শ্রাবন্তী মাথা তোলে, দেখে আরিয়ান।কোনো বিস্ময় নেই, কোনো অভিমান নেই, কেবল এক শীতল নীরবতা।

আরিয়ান কাঁপা কণ্ঠে বলে, "তুমি এখনও...?" শ্রাবন্তী চুপচাপ একটি চিঠি এগিয়ে দেয়।

শেষ লাইনে লেখা— "তুমি বলেছিলে তুমি আসবে। আমি অপেক্ষা করেছি—প্রথম বৃষ্টির ফোঁটা থেকে শেষ শরতের পাতা পড়া পর্যন্ত। আজ, আমি আর অপেক্ষা করতে পারি না। ভালোবাসা হয়তো থেকে যায়, কিন্তু প্রতীক্ষা শেষ হয়।"

আরিয়ান চিঠিটা বুকের মাঝে রেখে লাইব্রেরির মেঝেতে বসে পড়ে। তার চোখে জল। সে জানে, শ্রাবন্তী তাকে ভালোবাসে এখনো, কিন্তু সেই প্রেম আর কারও হাতে ধরা দেবে না। সেটি আজ শুধুই স্মৃতি। সেই লাইব্রেরির কোণে রাখা পুরনো বইয়ের মতো—জীবনের একটি অধ্যায়, ধুলোমাখা, তবু অমর।

একটি নতুন লাইব্রেরি তৈরি হয়েছে গ্রামের এক কোণে—নাম “প্রতীক্ষা পাঠাগার” দেয়ালের একটি কর্নারে ঝোলানো ছবির নিচে লেখা— “যে ভালোবাসা পূর্ণ হয় না, সে-ই হয়ত সবচেয়ে গভীর। সে থেকে যায় চিরকাল—নীরবে, নিভৃতে, হৃদয়ের এক কোণে।”

Address

Fulbaria

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when ¤ ভেজা সন্ধ্যাঁ অঝোর বৃষ্টি ¤ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to ¤ ভেজা সন্ধ্যাঁ অঝোর বৃষ্টি ¤:

Share