Yusra & Mom

Yusra & Mom In a world where you can be anything, be honest.

19/06/2025

Allah please heal the part of me that i can't discuss with anyone 💔❤️‍🩹

একদম সত্যি😑😑
16/06/2025

একদম সত্যি😑😑

১২তেই পরে আছি আমি🥲
14/06/2025

১২তেই পরে আছি আমি🥲

খাওয়া-দাওয়ার জন্য দাওয়াত দেয়া একটি ভুল প্রথা।দাওয়াত হবে ঘুমের জন্য। রুম টেম্পারেচার হবে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সাউন্ডপ্রুফ ...
12/06/2025

খাওয়া-দাওয়ার জন্য দাওয়াত দেয়া একটি ভুল প্রথা।
দাওয়াত হবে ঘুমের জন্য।

রুম টেম্পারেচার হবে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সাউন্ডপ্রুফ রুমে থাকবে আধো আলো আধো অন্ধকারাছন্ন পরিবেশ! সাথে আরামদায়ক বিছানা, বালিশ আর কম্বল।

টেবিলে কয়েক রকম বালিশ আর কম্বল সাজানো থাকবে। দাওয়াতী লজ্জা লজ্জা কন্ঠে বলবেন, 'কিছুই আয়োজন করতে পারিনি। কম্বল কোনটা নেবেন বলেন!' পাশ থেকে অন্য কেউ অনুরোধের সুরে বলবেন,
'আরেক পিস বালিশ দেই?'

ঘন্টা কয়েক ঘুমিয়ে বিদায় নেয়ার সময় দাওয়াতী মন খারাপ করে বলবে, ''আপনি তো দেখি কিছুই ঘুমালেন না। পরের বার আসলে কিন্তু অবশ্যই নাক ডাকতে হবে😌

©

একমত মায়েরা?🙃

রান্নার একটা গ্রুপে একজন আপু পোস্ট দিছে...আগামীকালকে জীবনে প্রথমবারের মত তাকে 5 কেজি বিফ রান্না করতে হবে, রাত্রে গেস্ট খ...
08/06/2025

রান্নার একটা গ্রুপে একজন আপু পোস্ট দিছে...
আগামীকালকে জীবনে প্রথমবারের মত তাকে 5 কেজি বিফ রান্না করতে হবে, রাত্রে গেস্ট খাবে।। ইন লস রা সব সময় বলে রান্না ভালো না ওনার, মুখে দেওয়া যায় না। ভয়ে ওনার হাত পা কাপতেছে। কেও যেন একটু মশলার পরিমাণ টা বলে দেয় আর বলে দেয় কিভাবে কি করবে।

সেই পোস্টের কমেন্টস চেক করতে গিয়ে দেখি একদম অজানা অপরিচিত কিছু মানুষ এসে একদম পরিমাণ থেকে শুরু করে প্রসেসিং এরও ডিটেইলস লিখে দিয়ে গেছে। অনেকে আবার এটাও বলে গেছে "রান্না আল্লাহ'র নাম নিয়ে করে ফেলবেন, কুরবানির গোশত এমনেই মজা হয়।"

আবার অনেকে লিখসেন "রান্নায় যারা দোষ ধরে তারা ভালো হলেও দোষ ধরবে, আপনি ভয় পাবেন না। নিজের মতো করে রান্না করে ফেলুন।"

বিয়ে কেন টিকে না এটা নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে। তবে বিয়ে কেন টিকে এই প্রশ্ন আসলেই আমার মনে হয় বিয়ে টিকে এইসব মানুষগুলার জন্য যারা যেকোনো সিচুয়েশনে কোনো জাজমেন্ট ছাড়াই নিজেদের জায়গা থেকে যতোটুকু পারে হেল্প করার ট্রাই করে। যেন দুইটা মানুষ একসাথে থেকে যেতে পারে।

প্রথমবারের মতো ৫কেজি গোশত রান্না, প্রথমবারের মতো দশজনের দাওয়াত, প্রথমবারের মতো ৩০ জনের দাওয়াত, প্রথম প্রেগন্যান্সি, এগুলো সবই একেকটা মাইলস্টোন যেটা বিয়ের পর আপনি একসময় পার করেই ফেলবেন।

আল্লাহ চাইলে একসময় হয়তো আপনি এসব ম্যানেজ করার ক্ষেত্রে এতোই পটু হয়ে যাবেন যে পাঁচ কেজি গোশত রান্না আপনার বাঁ হাতের খেল হয়ে যাবে।
কিন্তু আপনার মনে গেঁথে থাকবে কে এই জার্নিটা আপনার জন্য সহজ করেছিলো আর কে কঠিন করেছিলো।

কে আপনাকে পেঁয়াজ সব ব্লেন্ড করে ফেলার জন্য কথা শুনিয়েছিলো, আর কে আপনার আড়ালে রান্নাটা চেখে দেখেছিলো, এরপর আপনার অজান্তেই লবণটা এডজাস্ট করে দিয়েছে যেন আপনাকে সবার সামনে বিব্রত হতে না হয়।

প্রেগন্যান্ট অবস্থায় কে আপনাকে সবার সামনে খেতে দেখে ডাক দিয়েছিলো, আর কে আপনার জন্য দুটো ডিম, এক গ্লাস দুধ আলাদা করে রেখে দিয়েছিলো, আপনি এসব কখনোই ভুলবেন না। আপনার হয়তো তাদের প্রতি কোনো ক্ষোভ থাকবেনা, কিন্তু আপনার সাবকনশাসে এই দিনগুলো, এই মানুষগুলো একদম ট্যাটুর মতো ছাপা হয়ে যাবে আমৃত্যু।

আমার অত্যন্ত পছন্দের একটা দুয়া হচ্ছে, " May my Lord make things easy for you. Just like you made things easy for me."

আপনি হেল্প করেন বা না করেন, একদিন সবাই সবকিছু ফিগার আউট করে নিবেই। কিন্তু সেদিন পিছে ফিরে আপনার দিকে আঙ্গুল তাক করে যেন সে বলতে না পারে, "কেন আমার জন্যে আপনি আরেকটু সহজ হলেন না? কেন আমাকে একটু ভালোবাসলেন না?"
-- শামসুন নাহার প্রিয়া

05/06/2025

আমরা আবার মাস্ক পরার দিকে ফিরে যাচ্ছি। COVID-Omicron XBB অতীতের থেকে আলাদা কারণ এটি মারাত্মক এবং সনাক্ত করা সহজ নয়, তাই সকলকে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। রাজশাহীতে নতুন ভাবে ৯ জনের করোনা শনাক্ত!

১. নতুন COVID-Omicron XBB এর লক্ষণগুলি হল:

i). কাশি নেই।
ii). জ্বর নেই।
বেশিরভাগ লক্ষণগুলি নিম্নরূপ।

iii). জয়েন্টে ব্যথা।

iv). মাথাব্যথা।
v). গলা ব্যথা।

vi). পিঠে ব্যথা।

vii). নিউমোনিয়া।

viii). ক্ষুধা নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে।

২. এছাড়াও, COVID-Omicron XBB ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ৫ গুণ বেশি বিষাক্ত এবং এর মৃত্যুর হারও বেশি।

৩. খুব অল্প সময়ের মধ্যে লক্ষণগুলি অত্যন্ত তীব্র হয়ে উঠবে এবং স্পষ্ট লক্ষণগুলির অনুপস্থিতিতেও পরিবর্তন ঘটবে।

৪. তাই আপনাকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।

* এই রূপটি নাসোফ্যারিঞ্জিয়াল অঞ্চলে পাওয়া যায়নি, এবং তুলনামূলকভাবে অল্প সময়ের মধ্যে এটি সরাসরি ফুসফুসের "জানালা" প্রভাবিত করে এবং নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখাতে শুরু করে।

৫. COVID-OmicronXBB-তে সংক্রামিত অল্প সংখ্যক রোগীকে জ্বর-মুক্ত এবং ব্যথা-মুক্ত হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, তবে এক্স-রেতে হালকা নিউমোনিয়া দেখা যায়। এছাড়াও, নাকের গহ্বরের মধ্য দিয়ে তুলার সোয়াব পরীক্ষা করে COVID-Omicron XBB নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এবং নাসোফ্যারিঞ্জিয়াল পরীক্ষার সময় মিথ্যা নেতিবাচক পরীক্ষার উদাহরণ বাড়ছে। তাই এই ভাইরাসটি খুবই ধূর্ত। এর ফলে, ভাইরাসটি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে পড়ে, সরাসরি মানুষের ফুসফুসকে সংক্রামিত করে, ভাইরাল নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে এবং তীব্র শ্বাসকষ্টের সমস্যা সৃষ্টি করে। এটি ব্যাখ্যা করে যে কেন COVID-Omicron XBB এত সংক্রামক এবং মারাত্মক হয়ে উঠেছে। *

৬. যতটা সম্ভব জনাকীর্ণ স্থান এড়িয়ে চলুন, খোলা জায়গায় এমনকি ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন, মাস্কের উপযুক্ত স্তর পরুন এবং লক্ষণ ছাড়া কাশি বা হাঁচি না দিলে ঘন ঘন হাত ধুয়ে নিন।

এই COVID-Omicron XBB "WAVE" প্রথম COVID-19 মহামারীর চেয়েও মারাত্মক।
* অতএব, বিচক্ষণ, বৈচিত্র্যময় এবং নিবিড় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।

নিরাপদ থাকার জন্য বাইরে বের হওয়ার সময় মাস্ক পরতে ভুলবেন না।

©

৫ এবং ৬ জুন আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত আপনি নিজেকে ঘরে বন্দি করে ফেলেন৷ আরাফার দিন৷ দোয়া কবুলের দিন৷ ইচ্ছা মতো দোয়া করতে থা...
04/06/2025

৫ এবং ৬ জুন আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত আপনি নিজেকে ঘরে বন্দি করে ফেলেন৷ আরাফার দিন৷ দোয়া কবুলের দিন৷ ইচ্ছা মতো দোয়া করতে থাকেন৷ হালাল যা কিছু আছে সব চান আল্লাহর কাছে৷ জুতার ফিতাটা হইলেও চান৷ একটা কথা মনে রাখবেন, আল্লাহ ছাড়া এই দুনিয়াতে আপনার কেউ নাই৷ আপনার কেউ আছে ভাবতেছেন৷ কালকে হয়তো সে নাও থাকতে পারে৷

কাজেই দিল খুলে দোয়া করেন৷
আরাফার দিনের দোয়া হচ্ছে সব থেকে বড় দোয়া৷ দোয়া কবুলের দিন৷ যার যা ইচ্ছা এই দিনে চেয়ে নেন৷ এমনো হতে পারে সামনের আরাফায় আপনি নাও থাকতে পারেন৷

আর বেশি করে পড়বেন, 'লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়াহদাহু লা-শারিকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইইং ক্বদীর৷’

এমন কোনো নবী রাসুল নাই যে এই দোয়াটা পড়ে নাই৷ এটা হচ্ছে শ্রেষ্ঠ দোয়া৷ নিজের প্রয়োজনীয় কিছু চাওয়ার আগে মাস্ট এই দোয়া ২০-৩০ বার পড়ে নিয়েন৷ এর বেশি পড়লে আরো ভালো৷ যত পড়া যায় এই দোয়া৷

বাসে থাকেন, রিক্সায় থাকেন যেখানে খুশি থাকেন ওয়াশরুম ব্যতীত, মনে মনে অই দোয়াটা পড়তে থাকবেন৷

আরাফার দিনের এই কয়েক ঘন্টা কাজে লাগালে আপনার লাইফ চেঞ্জ হয়ে যেতে পারে৷ আজ থেকে, এখন থেকেই দোয়া শুরু করে দেন...।

~ রাব্বানী মাশায়েখ পনি

তুমি আমার পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর উপহার। তোমার ছোট্ট হাসিতে আমার সমস্ত কষ্ট হারিয়ে যায়। 💙👩‍👧
01/06/2025

তুমি আমার পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর উপহার। তোমার ছোট্ট হাসিতে আমার সমস্ত কষ্ট হারিয়ে যায়। 💙👩‍👧

বিশ্বকে কাঁদিয়ে বিদায় নিয়েছিল ওমায়রা। দিয়ে গিয়েছিল ইতিহাসের সবথেকে মর্মান্তিক ছবিটি১৯৮৫ সালের ১৩ নভেম্বর। কলম্বিয়ার মফঃস...
30/05/2025

বিশ্বকে কাঁদিয়ে বিদায় নিয়েছিল ওমায়রা।
দিয়ে গিয়েছিল ইতিহাসের সবথেকে মর্মান্তিক ছবিটি
১৯৮৫ সালের ১৩ নভেম্বর। কলম্বিয়ার মফঃস্বল শহর আর্মেরোর (Armero) আকাশ সকাল থেকেই ছিল মেঘলা। ঝেঁপে বৃষ্টি আসছিল মাঝে মাঝে। তখন বিকেল চারটে। বাবা আলভেরো ও ভাই আলভেইরোর সঙ্গে জমি থেকে তুলে আনা ধান গোলায় তুলছিল তেরো বছরের ফুটফুটে বালিকা ওমায়রা স্যাঞ্চেজ (Omayra Sánchez)।
মা মারিয়া আলেইডা গিয়েছিলেন বাড়ি থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে থাকা কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায়। সেখানে তিনি নার্সের কাজ করেন।
হঠাৎ পশ্চিম দিক থেকে ভেসে এসেছিল ‘গুম’ ‘গুম’ আওয়াজ। চমকে উঠেছিল ওমায়রা। মেঘ ডাকার আওয়াজ ভেবে আবার মন দিয়েছিল কাজে। সব ধান গোলায় তুলে বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে বাড়িতে ফিরে এসেছিল ওমায়রা। কাকিমা মারিয়া আডেলার সঙ্গে রাতের খাবার তৈরির তোড়জোড় শুরু করেছিল।
যে শব্দকে মেঘের আওয়াজ ভেবেছিল ওমায়রা, আসলে সেটি ৭৯ বছর পর জেগে ওঠা নেভাডো ডেল রুইজ আগ্নেয়গিরির ( ১৭৫০০ ফুট) আড়মোড়া ভাঙার আওয়াজ। যে আগ্নেয়গিরিকে স্থানীয়রা চেনেন ‘ঘুমন্ত সিংহ’ নামে। ১৯৮৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসেও একবার উশখুশ করে উঠেছিল নেভাডো ডেল রুইজ আগ্নেয়গিরি। কলম্বিয়ার ইন্সটিটিউট অফ মাইনিং অ্যান্ড জিওলজি অক্টোবর মাসেই বানিয়ে দিয়েছিল আসন্ন ভয়াবহ বিপর্যয়ের একটি ম্যাপ। সেই ম্যাপে বলাও হয়েছিল সবথেকে ক্ষতিগ্রস্থ হতে চলেছে ওমায়রাদের আর্মেরো শহর। কান দেয়নি কলম্বিয়া সরকার।
ঘড়িতে তখন রাত ৯.০৯
বিকট আওয়াজে কেঁপে উঠেছিল আশেপাশের প্রায় একশো কিলোমিটার এলাকা। এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছিল আর্মেরো শহর থেকে মাত্র ৪৮ কিলোমিটার দূরে থাকা নেভাডো ডেল রুইজের তুষারাচ্ছাদিত চূড়া। আ, গ্নেয়গিরির জ্বা,লামুখ থেকে বেরিয়ে এসেছিল উ,ত্তপ্ত লা,ভার স্রোত। লাল ছাইয়ে ঢেকে গিয়েছিল আকাশ।
ফুট*ন্ত লাভার উত্তা*পে গ*লে গিয়েছিল আ*গ্নেয়গিরির চুড়ায় থাকা বরফ ও পাদদেশে থাকা হিমবাহগুলি। বিশাল জলরাশি তিনটে সর্বগ্রাসী ঢেউ তুলে, ঘন্টায় বাইশ কিলোমিটার গতিতে ছুটে চলেছিল গুয়ালি নদীর খাত ধরে। সঙ্গে নিয়ে চলেছিল হাজার হাজার বোল্ডার, পাথর, গাছ ও কাদা। ঢেউগুলি ছুটে চলেছিল চোদ্দটি জনপদের দিকে। প্রথম ও সবচেয়ে ভ*য়ঙ্কর আক্রমণটি হেনেছিল সামনে থাকা আর্মেরো শহরের ওপর।
কোটি কোটি টন কাদা, গাছ ও পাথর নিয়ে আসা প্রথম ঢেউটি, আ*ঘাত হানার তিরিশ মিনিট আগেই অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল আর্মেরো। শহরবাসীদের কানে আসছিল রক্তজল করে দেওয়া কিছু আওয়াজ।
কিন্তু কী হচ্ছে, কেউ কিছু বুঝতে পারছিল না। তাই টর্চ নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসেছিল হাজার হাজার মানুষ। বাবা, ভাই ও কাকিমার সঙ্গে বাড়ির ছাদে উঠে পড়েছিল ওমায়রা। অন্ধকারে জোনাকির মত ছোটাছুটি করতে থাকা টর্চগুলি ছাড়া অন্য কিছু নজরে আসছিল না ওমায়রার।
হঠাৎ একই সঙ্গে নিভে গিয়েছিল কয়েক হাজার টর্চ। আর্ত চিৎকার ভেসে এসেছিল চারদিক থেকে। শহরবাসীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই, আর্মেরোকে আঘাত করেছিল পাথর, গাছের গুঁড়ি বয়ে আনা কাদার প্রথম ঢেউটি। ওমায়রাদের বাড়ির ছাদের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কুড়ি ফুট উচ্চতার ঢেউটি ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল ওমায়রার বাবা ও ভাইকে।
ভে*ঙে পড়া ছাদের বিম ও লোহার কাঠামোয় আটকে গিয়েছিল ওমায়রা ও কাকিমা আলেইডা। ওমায়রাকে বুকে আঁকড়ে ধরে ছিলেন কাকিমা। কিন্তু কাদার ঢেউ ক্রমশ গিলে নিতে শুরু করেছিল কাকিমাকে। কাদার স্রোতের নিচে তলিয়ে যেতে যেতে দুই হাত দিয়ে কাকিমা ধরে ফেলেছিলেন ওমায়রার পা দু’টি। ঘটনার আকস্মিকতায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল ওমায়রা।
বৃষ্টি শুরু হয়েছিল আবার। বৃষ্টির ছাট গায়ে লাগায় জ্ঞান ফিরে এসেছিল ওমায়রার। সে বুঝতে পেরেছিল, থিকথিকে কাদার মধ্যে গলা অবধি ডুবে আছে। কাদার নিচে কোথাও আটকে গিয়েছে হাত পা। চারদিকে থেকে ভেসে আসছিল আর্তনাদ। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে সে সব আ*র্তনাদও আর শোনা যাচ্ছিল না। বিধ্বস্ত আর্মেরোর বুকে নেমে এসেছিল শ্মশানের নীরবতা। সত্যিই আর্মেরো তখন মৃত্যুপুরী। কাদার নিচে শেষ ঘুমে ঘুমিয়ে পড়েছিল প্রায় পঁচিশ হাজার আর্মেরোবাসী।
কাদার ওপর জমতে শুরু করেছিল বৃষ্টির পানি।সেই পানি ছুঁয়েছিল গলা অবধি কাদায় গেঁথে থাকা ওমায়রার চিবুক। পাগলের মত চিৎকার করতে শুরু করেছিল ওমায়রা, “ও বাবা তুমি কোথায়?”,”ভাইরে তুই কই?”,”কাকিমা তুমি কোথায়? আমাকে বাঁচাও আমি যে তলিয়ে যাচ্ছি কাকিমা।” একসময় পানি উঠে এসেছিল ওমায়রার নাকের কাছাকাছি। দুঃসাহসী ওমায়রা প্রায় অবিশ্বাস্যভাবে ডান হাতটা কাদা ও জঞ্জালের ভেতর থেকে মুক্ত করে নিয়েছিল। ডান হাত দিয়ে জঞ্জাল আঁকড়ে ভেসে থাকার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিল রাতভর। নির্মম রাত এগিয়ে চলেছিল এক আশা জাগানিয়া ভোরের দিকে।
১৪ নভেম্বর,১৯৮৫
দুর্ঘটনার প্রায় দশ ঘন্টা পরে এসেছিল রেডক্রসের উদ্ধারকারী দল। উদ্ধারের কাজে হাত লাগিয়েছিল, বেঁচে যাওয়া স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে। গোটা আর্মেরো জুড়ে ছড়িয়ে ছিল কাদায় গেঁ*থে যাওয়া হতভাগ্য শহরবাসীদের মৃ*ত দেহ। উদ্ধারকারী দলের গলার আওয়াজ পেয়ে, দেহের সর্বশক্তি একত্রিত করে ওমায়রা চিৎকার করে উঠেছিল, “আমাকে বাঁচাও”,”আমাকে বাঁচাও”।
মৃতের স্তুপে বালিকার গলার আওয়াজ পেয়ে চমকে উঠছিলেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা। তন্ন তন্ন করে খোঁজার পর দলটির এক সদস্য দেখতে পেয়েছিলেন ওমায়রাকে। হাত ধরে টেনে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। প্রবল যন্ত্রণায় আর্ত চিৎকার করে উঠেছিল ওমায়রা। উদ্ধারকারীরা বুঝতে পেরেছিলেন, ওমেইরার পা আটকে গিয়েছে কাদার নিচে।
সারাটা দিন ধরে ওমায়রাকে ঘিরে থাকা কাদা, পাথর, কাঠ, টালি ও কংক্রিটের ভাঙা টুকরো সরিয়েছিলেন উদ্ধারকারীরা। মুক্ত করে ফেলেছিলেন ওমায়রার বাম হাত ও কোমর। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও মুক্ত করা যায়নি পা দুটিকে। দেখা দিয়েছিল আর এক বিপত্তি। ওমায়রার চারপাশ থেকে জঞ্জাল সরানো মাত্রই গর্তটি ভরে যেতে শুরু করেছিল চারদিক থেকে ধেয়ে আসা পানিতে। আবার পানির নিচে তলিয়ে যেতে শুরু করেছিল ওমায়রা। তাকে ভাসিয়ে রাখার জন্য বুকের নিচে পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বাতাস ভরা টিউব। সামনে রাখা হয়েছিল লম্বা একটি ডাল। যাতে সে ডালটি ধরে ভেসে থাকতে পারে।
১৫ নভেম্বর, ১৯৮৫
দুর্ঘটনার ছত্রিশ ঘন্টা পর এক ডুবরী জলের নিচে গিয়েছিলেন। দেখেছিলেন এক শিউরে দেওয়া দৃশ্য। গলা অবধি পানিতে হাঁটু মুড়ে বসে আছে ওমায়রা। তার দুটি পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ পিষে দিয়েছে কংক্রিটের একটি বিম। পি*ষে যাওয়া পা দুটি চেপে ধরে আছেন এক মৃতা মহিলা (কাকিমা)। দ্রুত উঠে এসেছিল আতঙ্কিত ডুবরী।
ওয়াকি টকির মাধ্যমে উদ্ধারকারী দলটি বার বার একটি পাম্প ও গ্যাসকাটার পাঠানোর আবেদন জানিয়েছিল কলম্বিয়া সরকারের কাছে। কারণ বেলচা, স্ট্রেচার, গাঁইতি ছাড়া অন্য কোনও সরঞ্জাম ছিল না তাদের কাছে। হেলিকপ্টারে ঝুলিয়ে একটি বুলডোজার পাঠানোর আবেদনও করেছিল তারা। যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে আর্মেরোতে সেনা নামানোর কথাও বলেছিল উদ্ধারকারী দলটি। কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি অমানবিক কলম্বিয়া সরকার। কারণ কলম্বিয়ার সেনারা তখন এম-নাইন্টিন গেরিলাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছিল রাজধানী বোগাটার আশেপাশে।
জারি হয়েছিল মৃ*ত্যু পরোয়ানা
সব রকম চেষ্টা করেও ওমায়রাকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হওয়া রেড ক্রস নিয়েছিল এক অবিশ্বাস্য সিদ্ধান্ত। কাদার নিচে আটকে থাকা ওমায়রার পা দুটি অপারেশনের মাধ্যমে বাদ দিয়ে ওমেইরাকে তুলে আনা হবে। প্রায় একঘন্টা ধরে আলোচনা করেছিলেন চিকিৎসকেরা। তারপর উদ্ধারকারী দলের নেতাকে চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, কাদা পানির নিচে গিয়ে এই অপারেশন করা সম্ভব নয়। তাছাড়া অপারেশন করলে নারকীয় যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে বালিকাটিকে।অপারেশন করে বাঁচানো যাবে না ওমায়রাকে। বিষাক্ত পানির কারণে গ্যাংগ্রিন হবেই।
তার থেকে বরং ওমায়রাকে উপহার দেওয়া হোক স্বাভাবিক মৃ*ত্যু। পঞ্চাশ ঘন্টারও বেশি এক গলা কাদায় দাঁড়িয়ে আছে ফুটফুটে মেয়েটি। অস্বাভাবিক হারে কমতে শুরু করেছে তার শরীরের তাপমাত্রা। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। প্রকৃতি নিজেই ব্যথাহীন মৃ*ত্যু উপহার দেবে ওমায়রাকে। এই মর্মান্তিক সিদ্ধান্তই মেনে নিয়েছিলেন সবাই। যদিও তাঁরা জানতেন এক নির্মম ও যন্ত্রণাময় মৃত্যুই উপহার পেতে চলেছে ওমায়রা।
ওমায়রা জানত না তার মৃত্যু পরোয়ানায় সই হয়ে গিয়েছে। তাই বুঝি সে একবুক বাঁচার আশা নিয়ে গল্প শুরু করেছিল কলম্বিয়ার সাংবাদিক সান্টা মারিয়া বাররাগানের সঙ্গে। ওমেইরার পাশে সান্টা মারিয়া ঠায় বসেছিলেন, সেই ১৪ তারিখ সকাল থেকেই। তেরো বছরের বালিকাটির টিকে থাকার লড়াই দেখে ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলেন। টানা দুই দিন ধরে ওমেইরার সাথে গল্প করে, বালিকাটিকে অন্যমনস্ক রাখার চেষ্টা করে চলেছিলেন। মারিয়ার কাছে ওমায়রা খেতে চেয়েছিল মিষ্টি ও সফট ড্রিঙ্কস। অনেক দূর থেকে খাবার দুটি জোগাড় করে এনেছিলেন মারিয়া। মিটিয়েছিলেন ওমায়রার শেষ ইচ্ছা। এরই মাঝে ওমায়রার একটি ইন্টারভিউও নিয়েছিলেন সান্টা মারিয়া। যে ইন্টারভিউ থেকে বিশ্ব জেনেছিল ১৩ নভেম্বরের ভয়াবহ সেই রাতের কথা।
মৃত্যুকূপে জীবনের গান গাইছিল ওমায়রা (Omayra Sanchez)
গলা অবধি ডুবে থাকা ওমায়রা মারিয়াকে শুনিয়েছিল বেশ কয়েকটি গান।
যে গানগুলি সে শিখেছিল তার মায়ের কাছে। সূর্য ওঠার গান, সবুজ মাঠে সোনার ফসল ফলানোর গান। চোখে পানি চলে আসছিল মারিয়ার। তখনও বাঁচার আশা নিয়ে লড়তে থাকা ওমায়রা জানত না, তার জীবন সূর্য চিরতরে নিভিয়ে দিতে চলেছে তারই দেশের অমানবিক সরকার।
নির্মম মৃ*ত্যুর দিকে তাকে এক পা এক পা করে এগিয়ে দিচ্ছে বিবেকহীন সমাজ।
ফরাসি চিত্রসাংবাদিক ফ্র্যাঙ্ক ফোর্নিয়ার এসেছিলেন বোগোটায়। পাঁচ ঘন্টা গাড়ি চালিয়ে, আড়াই ঘন্টা পায়ে হেঁটে ওমায়রার কাছে পৌঁছেছিলেন, ১৫ নভেম্বর রাতে। শক্তিশালী টর্চের আলো ফেলে রাখা হয়েছিল ওমায়রার ওপর। সবাইকে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বার বার অনুরোধ করছিল ওমায়রা। সবাই তার পাশ থেকে সরে গেলে সে একটু ঘুমাতে পারবে।
সেদিন মাঝরাত থেকেই ভুল বকতে শুরু করেছিল ওমায়রা। জড়ানো গলায় সে বলেছিল, “দু’দিন আমি স্কুলে যাইনি। আমায় স্কুলে দিয়ে এসো। নাহলে অঙ্ক পরীক্ষা দিতে পারব না। একটা বছর নষ্ট হবে আমার।” ওমায়রার কথা শুনে, দূরে সরে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন মারিয়া। সবাই আবার ঘিরে ধরেছিল ওমায়রাকে। কেউ মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলেন। কেউ কেউ চুমু খাচ্ছিলেন জলে ভিজে কাগজের মত সাদা হয়ে যাওয়া ঠাণ্ডা হাত দুটিতে।
মুক্তি মুক্তি মুক্তি
১৬ তারিখ সকাল থেকেই ক্রমশ ঝিমিয়ে পড়ছিল ওমায়রা। হারিয়েছিল কথা বলার শক্তি। তবু বাঁচার আশা ছাড়েনি। তাই বুঝি বার বার ডান হাতটা এগিয়ে দিচ্ছিল মারিয়ার দিকে। যেন সে বলতে চাইছিল, শেষবারের মত আমায় টেনে তোলার চেষ্টা করো না। মারিয়া লক্ষ্য করেছিলেন, ওমায়রার টানা টানা চোখ দুটিতে র*ক্ত জমতে শুরু করেছে। মুখের রঙ দ্রুত কালচে বাদামী হতে শুরু করেছে।
ওমায়রার জীবনের অন্তিম মুহূর্তগুলি ক্যামেরায় ধরে রাখছিলেন চিত্রসাংবাদিক ফ্র্যাঙ্ক ফোর্নিয়ার। আপাতদৃষ্টিতে ঘটনাটি অমানবিক মনে হতে পারে। কিন্তু বর্বর কলম্বিয়া সরকারের মুখোশ খুলে দেওয়ার জন্য ক্যামেরা ছাড়া আর কোনও অস্ত্র ছিল না ফোর্নিয়ারের কাছে।
বেলা তখন দশটা। ওমায়রার মাথা পিছন দিকে হেলে গিয়েছিল। বড় বড় শ্বাস নিচ্ছিল ওমায়রা। রক্ত জমা চোখ দুটো ক্রমশ বন্ধ হয়ে আসছিল অসীম ক্লান্তিতে। সর্বশক্তি একত্রিত করে মৃ*ত্যুকূপ থেকে শেষবারের মত বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছিল ওমায়রা। শেষবারের মত চোখ খুলে, সুন্দর এই পৃথিবীটাকে দেখে নিতে চেয়েছিল। ওমায়রার শেষ চাউনিও ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন ফোর্নিয়ার। যে চাউনিতে ছিল অপরিসীম ঘৃণা।
এরপর কোঁকড়া কালো চুলে ভর্তি ওমায়রার মাথাটা ডুবে গিয়েছিল পানির ভেতর। কেবল নাক মুখ ও একটি চোখ দেখা যাচ্ছিল ওপর থেকে। তখন ঘড়িতে সকাল ১০.০৫। শেষ হয়েছিল দুঃসাহসী ওমায়রার টানা ষাট ঘণ্টার লড়াই। অমানুষিক যন্ত্রণা নিয়ে নিজেকে চিরতরে মুক্ত করে নিয়েছিল সে। ওমায়রা স্যাঞ্চেজের নিথর শরীর ঢেকে দেওয়া হয়েছিল নীল সাদা চাদর দিয়ে।
ফ্র্যাঙ্ক ফোর্নিয়ারের তোলা ওমায়রার শেষ ছবিটি দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল বিশ্ব। কলম্বিয়ার রাস্তায় রাস্তায় লক্ষ লক্ষ মানুষ তুলে ধরেছিলেন প্ল্যাকার্ড। সেগুলিতে লেখাছিল, “আ*গ্নেয়গিরি নয়, পঁচিশ হাজার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে অপদার্থ সরকার।”
ফুটফুটে ওমায়রা চির শান্তির দেশে চলে গিয়েছে সাইত্রিশ বছর আগে। কিন্তু জানেনকি, আজও সে উড়ে বেড়ায় পরিত্যক্ত আর্মেরো শহরের আনাচে কানাচে। ঝোপে ঝাড়ে। পরীর মত ডানা মেলে। হ্যাঁ কথাটা সত্যি।
২০২০ সালে পরিত্যক্ত আর্মেরো শহরে পাওয়া গিয়েছিল নতুন এক ঝিঁঝিপোকার প্রজাতি। ওমায়রাকে চিরকালের জন্য বাঁচিয়ে রাখতে, বিজ্ঞানীরা প্রজাতিটির নামের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন ওমায়রার নাম। নতুন প্রজাতিটির নাম রাখা হয়েছিল ‘গিগাগ্রিলাস ওমায়রাই‘। আজও হয়ত প্রতি সন্ধ্যায়, পরিত্যক্ত আর্মেরো শহরে, রাতজাগা ঝিঁঝিপোকা হয়ে, কান্না ভেজা গলায় ওমাইরা চিৎকার করে চলেছে,”ও বাবা তুমি কোথায়?”,”ভাইরে তুই কই?”,”কাকিমা তুমি কোথায়? আমাকে বাঁচাও আমি যে তলিয়ে যাচ্ছি কাকিমা ।

সংগৃহীত

আপনার স্ত্রী আগে এমন ছিলো না-না এত ক্লান্ত, না এত চুপচাপ,না এত বি'র'ক্ত।সময় আর আপনার আচরণই তাকে বদলে দিয়েছে।তিনি শুধু ...
18/05/2025

আপনার স্ত্রী আগে এমন ছিলো না-
না এত ক্লান্ত, না এত চুপচাপ,না এত বি'র'ক্ত।
সময় আর আপনার আচরণই তাকে বদলে দিয়েছে।

তিনি শুধু একজন স্ত্রী নয়,তিনি একজন মা।
যিনি সবার প্রয়োজন মেটাতে মেটাতে,নিজের প্রয়োজন হারিয়ে ফেলেছে।

যখন তিনি রাগ করে,কাঁ'দে,দূরে সরে যায়,
তা কেবলই ওই মুহূর্তের জন্য নয়!
তা হল দীর্ঘদিনের চা'প,অবহেলা আর ক্লান্তির ফল।

আপনি বলেন তিনি বদলে গেছে,
কিন্তু চিন্তা করে দেখেন-
তিনি আপনাদের সবার জন্য একটু একটু করে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছে।

তিনি নিখুঁত কিছু চায়না,তিনি শুধু পাশে একজন সঙ্গী চায়।
যে তাকে বুঝবে,ভালবাসবে আর সম্মান করবে।💜
তাই তার প্রতিক্রিয়া না দেখে,আগে নিজের আচরণটা দেখেন।
ভালোবাসা মানে একে অপরের পাশে থাকা,
দো'ষ খোঁজা নয়। ‼️

©সংগৃহীত

ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে সামনে একটা ট্রল এল, বাংলাদেশে নাকি মেয়েরা স্বামীরা ঘুমিয়ে থাকলে তাদের মানিব্যাগ থেকে টাকা সরায়। ...
08/10/2024

ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে সামনে একটা ট্রল এল, বাংলাদেশে নাকি মেয়েরা স্বামীরা ঘুমিয়ে থাকলে তাদের মানিব্যাগ থেকে টাকা সরায়। এটা পড়ার সাথে সাথেই মনে পড়ল গতকাল রাতে পিয়ালের মানিব্যাগ থেকে এক হাজার টাকার কচকচে নোট টা সরানোর কথা। বিছানার নিচে রেখেছিলাম, তোশকটা উল্টেই টাকাটা পেয়ে গেলাম।

ছেলেকে কোলে তুলে গোসল করাতে নিয়ে গেলাম। আধা গোসল করে গায়ে সাবান মেখে আর গায়ে পানি নিবেনা জেদ ধরল। এদিকে চুলায় ভাত বসানো, যখনই গায়ে পানি দিতে যাচ্ছি হাত পিছলে সরে যাচ্ছে। মেজাজটা খুব গরম হল দিলাম কষিয়ে দুইটা থাপ্পড়। কাঁদতে কাঁদতে ঠিকই গোসল সেরে বেরিয়ে এল। দুপুরে খাওয়াতে বসে বাঁধল আরেক বিপত্তি বলল মাছ দিয়ে খাবেনা,নিয়ে এলাম ডাল দিয়ে। দু গাল মুখে দিয়ে বলল ডাল দিয়েও সে খাবেনা প্রচন্ড বিরক্তি চেপে দুধ দিয়ে ভাত মেখে নিয়ে আসলাম। এবার সে দৌড়তে শুরু করল মিনিট পনের পেছনে ছুটে বাগে না পেয়ে প্লেট টা রেখে নিজে দু গাল খেয়ে নিলাম,ঘড়িতে তখন দুপুর চারটা। খেয়ে উঠতে উঠতে আসরের আজান পড়ল। বারান্দায় মেলে দেওয়া কাপড় গুলা ঘরে তুলে ভাজ করতে করতে হঠাৎ খেয়াল হল ছেলেটা গেল কই। বাথরুম, বারান্দা, ডাইনিং ঘুরে এসে দেখি সে সোফার এককোণায় দিব্বি গুটি সুটি দিয়ে ঘুম। কোলে তুলে এনে বিছানায় শুইয়ে দিলাম। এমন ক্ষুধা পেটে কিভাবে ঘুম পায় কি জানি। কপালের চুল গুলো সরিয়ে চুমু খেলাম, পিঠে আলতো করে হাত বুলিয়ে দিলাম। গোসলের সময় এমন রেগে গেলাম, কেন যে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনা, আর বাচ্চার গায়ে হাত তুলবনা এমন প্রতিজ্ঞা শত বারের মত করতে করতে কখন যেন ঘুমে তলিয়ে গেলাম।

রাতে পিয়াল বাড়িতে ফিরেই থমথমে মুখে জানতে চাইল আমার মানিব্যাগ থেকে টাকা সরিয়েছ?
আমি মন দিয়ে ছেলে খাওয়াতে লাগলাম আর টিভিতে সিরিয়াল দেখতে লাগলাম।

পিয়াল এবার একটু উঁচু গলায় বলল,কি বলছি কানে যাচ্ছেনা আমার মানিব্যাগ থেকে টাকা সরিয়েছ?

বললাম,হ্যাঁ। বুঝতেই যখন পারছ আবার জানতে চাইছ কেন?

পিয়াল অন্যদিনের তুলনায় আজ একটু বেশীই রেগে গেল, কেন অযথা এমন কর তোমার যা লাগে তা কি আমি কিনে দেইনা? তাহলে টাকা সরাও কেন?

আমি চুপ করে রইলাম।

পিয়াল রাতে খাবার খেয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়ল। থালাবাসন পরিস্কার করে, ছেলের খেলনা গুছিয়ে রেখে আমি ছেলেকে কোলে নিয়ে পায়চারী করতে লাগলাম। ঘুমতে তার মিনিমাম আরো তিরিশ মিনিট লাগবে। পিঠটা লেগে আসতে লাগল। ইচ্ছা হচ্ছিল বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ি। কিন্তু মন চাইলে কি আর তা হয়!
ছেলেকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বারান্দায় মোড়ায় এসে বসলাম। নিস্তব্ধ নগরীতে অন্ধকারে আলোর ঝলকানী যেন। বেশ হালকা বাতাস। আমি পিঠটা দেওয়ালে ঠেকিয়ে বসি।

আমি চারুলতা। নাহ্ আমি কারো গল্পের চারু নই আমাকে সবাই লতা বলেই জানে। স্কুল কলেজে বেশ জনপ্রিয় মুখ ছিলাম। পড়াশোনা শেষ করে বিয়ে। পিয়াল আর আমি দুজনেই চাকুরী করি তখন। ছিমছাম ছোট সাজানো সংসার। আমার ফোকাস তখন ক্যারিয়ারে। দুজনে সারাদিন অফিস করি দিন শেষে বাসায় ফিরে একসাথে ভাল সময় কাটাই, খাই দাই ঘুমাই ছুটির দিনে একটু আধটু এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াই। হাতে টাকা,সময় সবই আছে। সেই সাথে আছে মানুষের গন্জনা। সংসারে মন নাই, সন্তান নেওয়ার ইচ্ছা নেই হইহই করে নাকি আমি টাকার পেছনে ছুটছি। সময়ে অসময়ে পিয়ালও দু চারটা শুনিয়ে দেয় বেশ। আমারো মন কেমন করে ভাবি তাই তো এবার নতুন কেউ আসুক। তবে আমার যে তেমন ব্যাকআপ নেই। মা চলে গিয়েছেন বহু আগে, শাশুড়ী শয্যাশায়ী। পারবতো সবটা সামলাতে। আল্লাহর ইচ্ছায় এর মাঝেই আমি কনসিভ করি। পিয়াল তো খুশিতে অস্থির। অফিস থেকে ছুটি নিলাম। সারাটা দিন একা। দিনের বেলায় আমার সাথে থাকার জন্য একজন বয়স্ক মহিলাকে রাখা হল। দিন গুনে গুনে এক দিন আমি সত্যি সত্যিই মা হলাম। সব ভুলে সন্তানের প্রতি মন দিলাম। সময়ের সাথে অফিসের ছুটি ফুরিয়ে এল। পিয়ালের কাছে সে কথা তুলতেই বলা হল, চাকরি টা ছেড়ে দাও। কিন্তু আমি যে স্বাবলম্বী হঠাৎ এ সিদ্ধান্ত আমি মেনে নিতে পারলামনা। পিয়াল বোঝাল সে ভাল বেতনের চাকরি করে, আমার সব চাহিদা পূরনে সে সক্ষম। স্বামীর সম্পদে আমার হালাল হক আছে। আমি চাওয়া মাত্রই যখন সবটা পাব তখন আর চিন্তা কি। তাছাড়া সন্তান সবার আগে সন্তান কে স্যাক্রিফাইস করে ক্যারিয়ার নয়। আমিও মেনে নিলাম। নতুন মা আবেগে ভাসছি।

কিছু দিন যেতে না যেতেই বুঝলাম একহাতে বাচ্চা সামলানো অতটা সহজ নয়। বাঁধা লোক পেলাম না। ছুটা বুয়া আসে দু ঘন্টার জন্য সারাদিন ছেলের পেছনে ছুটে,সংসার সামলে নিজের জন্য দু দন্ড সময় পাইনা। আর চাকরী! বেশ করেছি ছেড়েছি। সন্তানের জন্যই তো ছেড়েছি।

কিন্তু এই আমারই হঠাৎ হঠাৎ তালসামলাতে না পেরে মনে হয় এই সন্তানের জন্যই আমাকে আমার ক্যারিয়ার স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছে। ওর জন্যই আমার সব এলোমেলো হয়ে গেল। এখন আর আমি চাইলেও দুটো দিন বেড়িয়ে আসতে পারিনা। বেলা করে ঘুম থেকে উঠতে পারিনা। কি যে হয় মাঝে মাঝে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। আমার সব হতাশা রাগ ছেলেটার ওপর চাপিয়ে দেই। একটু বিরক্ত করলেই ওকে কষে দুটো মার দিয়ে নিজের রাগকে প্রশমিত করি। বাচ্চাটা আমার ভীষন দুষ্টু আসলেই কি শুধু আমার বাচ্চাটা দুষ্টু নাকি আসলেই আমি আমার ব্যর্থতার জন্য ওকে দায়ী করে এই সেই উছিলায় শাস্তি দেই।
নাহ্ আর ভাবতে পারিনা, দম বন্ধ হয়ে আসে।

আমার হাত শূন্য। এখন আর মাস শেষে হাত ভর্তি থাকেনা। চাইলেই আমি দু পয়সা বেহিসেবী খরচ করতে পারিনা,পারিনা কারো কাছে হাত না পেতে,কারো তোয়াক্কা না করে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে খরচ করতে। পিয়াল আমি চাওয়া মাত্রই সব দেয় সত্যি। তবে চাইলেই আমি ওকে না বলে দু পয়সা খরচ করার ক্ষমতা রাখিনা। ঐ যে আমি যে স্বাবলম্বী ছিলাম। আমার কোথায় যেন বাঁধে। এক দিন দু দিন টাকা না বলেই নিলাম, পিয়াল ও চেপে গেল। কিন্তু আজকাল আর মেনে নিতে পারেনা। গত পরশু হাজার খানেক টাকা চাইলাম। হ্যাঁ দরকারেই চেয়েছি কিন্তু আমার কেন টাকার দরকার এই কৈফিয়্যত দিয়ে প্রতিবার টাকাটা নিতে আমার ভাল লাগেনা। আবার আমি না বলে টাকা নিলে পিয়ালেরও সেটা ভাল লাগেনা। কি এক অদ্ভুত সংকট তাইনা?

বাংলাদেশের মেয়েরা স্বামী ঘুমিয়ে থাকলে মানিব্যাগ থেকে টাকা সরায়। আচ্ছা সরিয়ে এরা কি করে? নিশ্চয়ই আমার মত তারাও প্রয়োজনে,শখ পূরণে খরচ করে। আজ চাকুরীটা থাকলে কি আমার এটার দরকার পড়ত? হয়তবা না। অথচ আমার সেই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আমি মনের এক কোণে আক্ষেপকে কবর দিয়ে সংসারী হয়েছি,মা হয়েছি সব দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে একহাতে সবটা সামলাছি। স্বাবলম্বী সেই আমি বুঝি ঘরে বসে সবটুকু দিয়ে সংসার করাটাও এতটা সহজ নয়। মাঝে মাঝেই মনে হয় দিন শেষে আমি হেরে যাচ্ছি। কোন কাজ ঠিকঠাক না হলেই অযোগ্য খেতাব পাচ্ছি, সন্তানকে রুটিন মাফিক হাজার চেষ্টা করে খাওয়াতে ঘুম পাড়াতে না পারলেই মা হিসেবে পরাজিত হচ্ছি, দু চার পয়সা খরচের টাকা সরিয়ে কারো বিরক্তির কারনও হচ্ছি।

তবুও এমন ক্লান্তি শেষে মনে হয় বেশ আছি। আমিতো আমার দায়িত্বের সবটাই পালন করছি, নিজেকে বন্চিত করলেও সবার জন্য সবটা করার প্রচেষ্টাতো চালিয়ে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। প্রতিদান পাই বা না পাই প্রত্তুরেতো বলতে পারব তোমাদেরকে ভালবেসে আমি চারুলতা গৃহিনী হয়েছি। 🙂

💠সমাপ্ত

🖊তারানা_তাবাসসুম

সেই ছোট্ট আমিটাকে বড্ড মিস করি🥲🫠
23/01/2024

সেই ছোট্ট আমিটাকে বড্ড মিস করি🥲🫠

Address

Fulbaria

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Yusra & Mom posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share