07/03/2025
অবশেষে প্লেন উড়েছে✈️✈️
মানিকগন্জের এক তরুণ তুর্কী, যার নাম জুলহাস, সে একটা উড়োজাহাজ বানিয়েছে, যেটা মাটি থেকে শূন্যে উড়েছে।
জুলহাসকে অভিনন্দন। ✈️
এই ছেলেটার যে জিনিসটা ভালো লেগেছে, সেটা হচ্ছে তার কমনসেন্স।
এর আগে যারা হেলিকপ্টার বানিয়েছিলো, তারা তাদের বাড়ির উঠান থেকে বস্তুটা উড়ানোর চেষ্টা করেছিলো। ভাগ্যিস সেটা উড়ে নাই। উড়লে বাড়ির চালের উপর গিয়ে পড়তো, এবং বাড়িঘর ভেঙে এক কাণ্ড হতো। আরেক তরুণকে দেখেছিলাম, ইলেকট্রিক খাম্বার নিচে হেলিকপ্টার ফিট করতে। সৌভাগ্যক্রমে এটাও উড়ে নাই।
সে তুলনায় জুলহাস অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। সে তার বাহনটিকে টেস্ট ফ্লাইটের জন্য নদীর তীরে নিয়ে গেছে। এই কমনসেন্স বাঙালির মধ্যে অত্যন্ত দুর্লভ।
এর বাইরে জুলহাস যখন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছে, তখন সে উড়োজাহাজের ওজন, তার নিজের ওজন, পাখার দৈর্ঘ্য, ইঞ্জিনের হর্স পাওয়ার- এসব নিয়ে আলাপ তুলেছে। এতে বোঝা যায়, ন্যুনতম বৈজ্ঞানিক বোধ তার মধ্যে আছে।
এই বোধ থাকা জরুরি। ✈️
তবে জুলহাস এখন বিরাট বিপদের মধ্যে আছে। মুর্খ এবং একইসাথে দরিদ্র জাতিরা ভীষণ আবেগী হয়। এই অতি আবেগ বিপদ ডেকে আনে।
জুলহাসকে বলবো, মাথা ঠাণ্ডা রাখতে। গ্লাইডারের ক্ষেত্রে সেফটি মেজার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি উড়ানোর ক্ষেত্রে আবহাওয়া, বাতাসের গতিবেগ অনেক কিছু মাথায় রাখতে হয়। কাজেই আবেগী জাতি আপনাকে বলবে, আরও বেশি বানাও, আরও উড়াও। টিভি চ্যানেল, ইউটিউবাররা ভিড় জমাবে, বলবে আবার উড়ান। আমরা ভিডিও করবো।
আর উড়ানোর দরকার নাই, ভাই। একবার যদি উপর থেকে গোত্তা খেয়ে পড়েন, তাহলে হাড্ডিগুড্ডি ভাঙবে। এখন যারা লাইক আর লাভ দিচ্ছে, এই একই গ্রুপ তখন হা হা রিঅ্যাক্ট দেবে। আপনাকে হিরো আলম বানিয়ে দেবে। মিম বানাবে। কাজেই পাবলিকের কথায় নাচার দরকার নাই। মাথা ঠাণ্ডা রেখে সামনের দিকে আগান।
গ্রামের জমিতে সার দেয়া বা কীটনাশক ছড়ানো অনেক সময়সাপেক্ষ এবং শ্রমনিষ্ট কাজ। পারলে দেখেন, আপনার গ্লাইডারকে সেই কাজে লাগানো যায় কিনা। তবে সবকিছুর আগে নিজের পেশা ও চাকরির যত্ন নিন।
পাবলিকের ''হ ভাই, সাথে আছি- কথা শুনে জমিজামা বিক্রি করে বোয়িং বানাতে যাইয়েন না। রিয়েলিটি হচ্ছে, আপনি যদি একটা বোয়িং বানিয়েও ফেলেন, ওটা কেউ কিনবে না। এই ইন্ড্রাস্ট্রির ফান্ডা অন্যরকম।
আপনার যতটুকু কথাবার্তা শুনেছি, তাতে আপনাকে আক্কেলওয়ালা মানুষ মনে হয়েছে। কাজেই আপনি কোনো ভুল করবেন না বলেই আমার বিশ্বাস।
আপনার বাহন যখন আকাশে উড়লো, তখন আমি বুকের ভেতর থেকে একই সাথে আনন্দ ও গর্ব অনুভব করেছি। আমার মতো কোটি কোটি মানুষও একই অনুভূতি লাভ করেছে। এই মরা সময়ে আমাদের আনন্দের অনুভূতি দেবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ...✈️✈️