28/03/2025
🇧🇩✍️ ড. ইউনুস বনাম ব্যর্থ নয়া বন্দোবস্ত 🇧🇩✍️
✍️ড. আহমাদ আবদুল্লাহ ছাকিব
⬛কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক, আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ।
⬛চেয়ারম্যান, হাদীছ ফাউণ্ডেশন শিক্ষা বোর্ড।
....... ড. ইউনুস বনাম ব্যর্থ নয়া বন্দোবস্ত........
🔰🖋️ ড. ইউনুসের গতকালের ভাষণের পর দেশের অধিকাংশ মানুষ আফসোস করে বলছেন, স্বাধীনতার পর দেশের কোন রাষ্ট্রপ্রধানের কাছ থেকে এমন নিঃস্বার্থ ও জনদরদী আওয়াজ আমরা শুনিনি। দূর্ভাগ্য বেশীদিন আমরা তাকে পাব না। কেননা সবাই জানেন, প্রচলিত নির্বাচনের মাধ্যমে অন্ততপক্ষে এমন নীতিবান মানুষগুলো কোনদিনই দায়িত্বে আসতে পারবেন না, যতই তিনি যোগ্য হন না কেন, এমনকি জনগণ চাইলেও নয়। দিনশেষে দূর্নীতিবাজ, সুবিধাবাদী, রক্ষক নামের ভক্ষকরাই ক্ষমতায় আসবে-এটাই যেন অবধারিত নিয়তি। একথা সবাই জানেন, সবাই বোঝেন, সবাই আফসোস করেন; কিন্তু কেউ সত্য কথা মুখ খুলে বলতে চান না। সবাই যেন কোন এক অজানা মানসিক দাসত্বের নিগড়ে বন্দী, যে দাসত্বের শৃংখল ভেঙে মুক্ত আওয়াজে কেউ এ কথা বলতে পারছে না যে, এমন কি কোন সিস্টেম নেই যার মাধ্যমে এমন সৎ মানুষগুলোকে নেতৃত্বে রাখা যায়! নির্বাচনের বিকল্প কি কিছু হতে পারে না!
🔰🖋️ সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিবও বললেন, নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। কারণ, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রে যেতে হবে। গণতন্ত্র ছাড়া আর কোনো পদ্ধতি আছে, যাতে জনগণের কল্যাণ হতে পারে? যে গণতন্ত্র শুরু থেকেই স্বয়ং সেক্যুলারদের কাছে মুর্খের শাসন হিসাবে প্রমাণিত, সে গণতন্ত্রই তার কাছে মুক্তির সনদ! এটা ছাড়া জনগণের জন্য কল্যাণকর আর কোন পদ্ধতির কথা তিনি জানেন না! অথচ একজন মুসলিম হিসাবে তিনি যদি ইসলামী খেলাফত নামক রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা সামান্য হলেও জানতেন, তাহলে তাকে এই কথা বলতে হত না। জনগণের সরকারের নামে তথাকথিত গণতন্ত্র নামক মরীচিকার পিছনে ছুটতে হত না।
🇧🇩🖋️ মূলতঃ ড. ইউনুস যে পদ্ধতিতে ক্ষমতায় এসেছেন, এটাই ইসলামী খেলাফতের নেতৃত্ব নির্বাচন ব্যবস্থা, যাতে কোন প্রচলিত পপুলার ভোটের নির্বাচন নেই। বরং আছে যোগ্য নির্বাচক কমিটির মাধ্যমে, জনমতের ভিত্তিতে যোগ্য নেতৃত্ব মনোনায়নের ব্যবস্থা। যার জন্য দল লাগে না, প্রার্থী লাগে না, শোডাউন লাগে না, ক্যাডার লাগে না, ছলচাতুরী লাগে না। লাগে কেবল যোগ্যতা ও সততা। আমরা যদি ইসলামের এই নেতৃত্ব নির্বাচন ব্যবস্থাটুকুও কমপক্ষে নিতাম, তাহলে দেশটা কখনও কোন দস্যু, লুটেরা রাজনীতিবিদের হাতে যেত না!
🔰🖋️ দূর্ভাগ্যজনকভাবে সবকিছু বোঝার পরও এদেশের রাজনীতিবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সুশীল সমাজ, সমন্বয়ক কেউ-ই এ বিষয়ে কোন কথা তুলবে না। সবজায়গায় মেরিটোক্রাসির কথা বললেও জাতীয় নেতৃত্বের ক্ষেত্রে মেরিটোক্রাসির কথা কেউ বলবে না। সংবিধান, নির্বাচন সংস্কারের জন্য হাজারো মতামত আসলেও ইসলামী খেলাফতের এই শান্তিপূর্ণ ও যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন ব্যবস্থাকে সবাই উপেক্ষা করে যাবে। কেননা তাতে যে কারো ব্যক্তিস্বার্থ হাছিলের সুযোগ নেই! নেই কোন সুবিধাবাদের জায়গা। ফলে এই জায়গায় শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবার মুখে কুলুপ আঁটা। বছরের পর বছর আয়নাঘরের যুলুম সহ্য করবে, তবুও ভালো; কিন্তু ইসলামের কথা মুখে আনা যাবে না। নিজেদের স্বেচ্ছাচারিতা বজায় রাখতে ইসলামের এই চিরকল্যাণকর বিধানকে মৌলবাদ আখ্যা দিয়ে যে কোন মূল্যে আলোচনার বাইরে রাখবে। যেই সমন্বয়কদের প্রতি আমরা এত আশা রেখেছিলাম, তারাও এখন হাটা শুরু করেছে সেই একই পথে।
🇧🇩🖋️ ৫ই আগস্টের পর এদেশের রাজনীতিতে যুগান্তকারী পরিবর্তনের যে স্বপ্ন দেখা হচ্ছিল তা ইতিমধ্যে ফিঁকে হয়ে গেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর চূড়ান্ত নীতিহীনতা আর সমন্বয়কদের সমন্বয়হীনতা সবকিছুকে লেজেগবরে করে ফেলেছে। এমতবস্থায় সংস্কারের আলাপগুলো ফের অর্থহীন হয়ে পড়েছে। ইসলামপন্থীদের মধ্যেও কোন প্রকৃত সংস্কারের আওয়াজ নেই। ইসলামী খেলাফত না হোক, অন্তুতঃ ইসলামী নেতৃত্ব নির্বাচন পদ্ধতি বাস্তবায়নের আলাপটুকু অন্তত তুলতে পারতেন। কিছু না পারলেও ড. ইউনুস সরকারের স্থায়িত্বের পক্ষে কথা বলতে পারতেন। কিন্তু না, গড্ডালিকা প্রবাহে সবাই গা ভাসিয়ে চলেছেন। নিজ নিজ আখের গোছানো ছাড়া জাতীয় স্বার্থ নিয়ে ভাববার সময় কারো নেই। ফলে সংস্কারের যাত্রা আবারো এক অনিশ্চিত গন্তব্যের পথে। অবিমৃশ্যকারিতার পথে। নতুন আরেক যুলুমশাহী বন্দোবস্তের পথে। এই চক্র থেকে বের হওয়ার যেন কোন উপায় নেই এই হতভাগা জাতির।
🤲 আল্লাহ আমাদের হেফাযত করুন, সুমতি দান করুন। আমীন!🤲