27/07/2025
বর্তমান বাংলাদেশে কনটেন্ট ক্রিয়েশনের নামে যখন বস্তা পচা ভিডিও দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ভোরে গিয়েছে । একের পর এক ক্রিয়েটরা যখন নিজেকে দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করছেন হাসির পাত্র বা জোকার হিসেবে । ঠিক সেই মুহূর্তে বাংলাদেশে এমন কিছু কন্টেন ক্রিয়েটর রয়েছে । যারা কোন ঢাকঢোল পিটানো ছাড়াই বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়াতে আধিপত্য বিস্তার করেছেন । সেই সাথে জিতে নিয়েছেন লাখো ভক্তের মন । প্রিয় দর্শক বন্ধুরা আপনারা কি বলতে পারবেন এইসব ক্রিয়েটর কারা ?
যদি বলতে না পারেন তবে সমস্যা নেই আমরা এমনই তিনজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর নিয়ে আলোচনা করব আজকের ভিডিওতে । বাংলাদেশে কেবলমাত্র এই তিনজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটরই আছেন যাদের কোন হেটার নেই । তাদের প্রত্যেকটি দর্শকই তাদের ওয়েল উইশার । কনটেন্ট ক্রিয়েশনের শুরু থেকে আজ অব্দি তাদেরকে নিয়ে কখনো কোনদিন কোন কন্ট্রভারসি তৈরি হয়নি ।
আমাদের আজকের ভিডিওতে প্রথমে যার সম্পর্কে জানব তিনি হচ্ছেন রিপন ভিডিও
তিনি কথা বললে প্রতিটি লাইন হয়ে যায় কবিতা । ছন্দে ছন্দে কথা বলার তার এই গুণ তাকে খ্যাতিত দিয়েছেই তার সাধারণ জীবন যাপন মানুষকে করেছে আকৃষ্ট । সস্তা সব কন্টেন্টের ভিড়ে রিপন মিয়ার ভিডিও মানুষকে আনন্দ দেয় । যেখানে থাকে না মানুষকে জোর করে হাসানোর কোন প্রচেষ্টা থাকে না অতিরঞ্জিত বা মশলাদার কথা ছড়াছড়ি । আর ঠিক এই কারণেই তার ভুলভাল ইংরেজিও মানুষ হাসিমুখেই গ্রহণ করে নেয় । রিপন মিয়া পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি । পড়াশোনা করেছেন তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত । আমার যতদূর মনে পড়ে রিপন মিয়াকে প্রথম আমরা সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখতে পাই ২০১৭ -১৮ সালের তখন তার দু একটা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছিল । তার ছন্দ ছন্দে কথা বলার সেই সব ভিডিও দিয়ে বাংলাদেশের একজন বড় ইউটিউবার প্রথম হিরন তার ইউটিউবে একটি গান বানিয়ে আপলোড দেয় । এবং সেই ভিডিওতে মেলে মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ সেখান থেকে বিস্তর পরিচিতি লাভ করেন রিপন মিয়া । এরপর দীর্ঘ সময় তাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে আর দেখা যায়নি । তবে বছর দুয়েক আগে হুট করি তিনি আবার সোশ্যাল মিডিয়াতে ফিরে আসেন । এবং তার ছন্দে ছন্দে কথা বলার ভিডিও গুলো আপলোড দিতে থাকেন যা দেখার পর মানুষ রীতিমত অবাক হয়ে যায় । যে ভিডিওগুলো রিপন মিয়ার দর্শকরা এমনভাবে গ্রহণ করে নিয়েছে যে রাতারাতি পুরো বাংলাদেশে তাকে খ্যাতিয়ে নিয়েছে । সোশ্যাল মিডিয়াতে রিপন মিয়াকে নিয়ে এত পজিটিভ রিভিউ এর কারণ হচ্ছে তার সহজ সরল জীবন যাপন এবং তার সহজ সরল কথা বলার স্টাইল । যাতে বিন্দু পরিমাণও কৃত্তিমত্তার ছোঁয়া নেই
এখন যাকে নিয়ে আলোচনা করব তার নাম হচ্ছে নদীর নিব্রাস । নাদির নিব্রাশ নামে তাকে চিনতে না পারলেও নাদির অন দা গো কে চেনেনা এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই দুষ্কর ।২০১৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর ইউটিউবের পথযাত্রা শুরু করেন বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ইউটিউবার । নাদির যখন ইউটিউবিং শুরু করেন তখন বাংলাদেশের বস্তা পচা সব কন্টেন্ট নিয়ে হাজির হয়েছিল বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন ইউটিউবার । এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তাওহীদ আফ্রীদি , রাকিব হাসান , মাহসান স্বপ্নসহ আরো অনেকেই । এ সকল বস্তা পচা কনটেন্টের ভিড়ে তার কনটেন্ট গুলো ঠিকভাবে মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছিল না সেই সময়টাতে । এরপর আস্তে আস্তে নাদির এর ভিডিও মানুষ দেখা শুরু করল । এবং মানুষ বুঝতে শুরু করল এতদিন ব্লগিংয়ের নামে যে সকল আবর্জনা মানুষ দেখে আসছে । তা থেকে একেবারেই ভিন্ন নাদির এর ভ্লগিং ভিডিও গুলো ।যেখানে শো অফ না কনটেন্ট এর মানই মুখ্য বিষয় । একটা সময় মোস্ট আন্ডার এইটেট ইউটিউবার হিসেবে পরিচিতি থাকলেও । এখন বাংলাদেশের ভ্লগিং এ তার সমকক্ষ কেউ নেই ।
এখন যাকে নিয়ে আলোচনা করব তার জীবনধারাকে নিয়ে একটা সময় মানুষ বিরূপ মন্তব্য করলেও এখন সকলের ধারণাকে ভেঙ্গে দিয়ে সবার মনে জায়গা করে নিয়েছেন এই ব্যক্তি । বলছিলাম বিসমিল্লাহ এগ্রোর প্রতিষ্ঠাতা সাইফুল ইসলাম ভাইয়ের কথা । উচ্চশিক্ষা সম্পূর্ণে পর শহুরে চাকরি জীবন নয় বেছে নিয়েছিলেন কৃষি কাজকে এজন্য অবশ্য তার গ্রামের লোকেরা তাকে বলতো এত লেখাপড়া করে লাভ কি । যদি না খেতে খামারে কাজ করতে হয় । তখন থেকে মুখ বুজে নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য লড়ে গেছে সাইফুল ইসলাম । ব্যক্তিগত জীবনে প্রচুর ধার্মিক একজন ব্যক্তিত্ব তিনি । সাইফুল ইসলামের বাড়ি ফরিদপুর থাকলেও ছোট থেকেই শহরের এক মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন তিনি ।এক লাখ বিশ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করেছিলেন গরুর খামার তারপর হাসের খামার কোয়েল পাখি আবার মাছও চাষ করেন তিনি ।এছাড়াও বিভিন্ন জমি লিজ নিয়ে ধান ,গম্ ,কলাই সহ গাসও চাষ করেন তিনি ।
দুই বছরের মধ্যে তার আয় দারিয়েছে অর্ধ কোটি টাকা । তিনি দৈনন্দিন জীবনে যেসব কাজ সম্পাদন করেন সেসব কাজের ভিডিও ধারণ করেই সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড করেন তিনি ।তার জীবন ধারা এবং ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠে সেই সব ভিডিওতে যাতে বিন্দু পরিমাণে কৃতিমত্তার ছোঁয়া দেখা যায় না । একেবারেই সাধারণ জীবন যাপনের অভ্যস্ত এই লোকটি । আর যে কারণেই মানুষের ভালোবাসা পেয়ে যাচ্ছেন অফুরন্ত ।