মুন্সি ইকবাল

মুন্সি ইকবাল উচ্চ শিক্ষা মানুষের ভদ্রতার পরিচয় দেয়া না,আচরণই মানুষের ভদ্রতার পরিচয় দেয়! মুন্সি ইকবাল

সুন্দর ব্যবহার,যা কখনো অর্থের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণমুন্সি ইকবালআমরা সবাই জানি, জীবন চলার পথে অর্থের গুরুত্ব অবিশ্বাস্য...
12/09/2025

সুন্দর ব্যবহার,যা কখনো অর্থের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ

মুন্সি ইকবাল

আমরা সবাই জানি, জীবন চলার পথে অর্থের গুরুত্ব অবিশ্বাস্যভাবে বড়, তবে কখনো কখনো তা আমাদের আবেগ, সম্পর্ক, বা সৌজন্যকে প্রতিস্থাপন করতে পারে না। সুন্দর ব্যবহার এমন এক সঞ্চয়, যা কখনো হারায় না। যখন অন্যের প্রতি সদয়, সম্মানজনক ও স্নেহপূর্ণ আচরণ করা হয়, তখন তা না শুধু আমাদের জীবনকে সুন্দর করে, বরং অন্যের মনেও স্থায়ী প্রভাব ফেলে।

অর্থের সীমাবদ্ধতা বা সময়ের খারাপ পরিস্থিতি আসতে পারে, কিন্তু সুন্দর ব্যবহার কখনো হারিয়ে যায় না। এটি মানুষের মধ্যে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা এবং একটি গভীর সম্পর্ক তৈরি করতে সহায়তা করে। আপনি যখন কোনো মানুষকে হাসিমুখে বা আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধা জানান, তখন সেটা তার কাছে মধুর স্মৃতিতে পরিণত হয়।

আমাদের চারপাশে যারা সদয়, সহানুভূতিশীল এবং শ্রদ্ধাশীল, তারা সত্যি অর্থের থেকেও বেশি কিছু উপহার দেয়। তাদের ব্যবহার তাদের জীবনকে সহজ করে তোলে, আর তাদের কাছাকাছি থাকা মানুষের জীবনও স্পর্শ করে।

অতএব, যখন কোনো দ্বন্দ্ব বা সমস্যার সম্মুখীন হই, তখন মনে রাখতে হবে- সুন্দর ব্যবহারই আমাদের জীবনে শান্তি, সুখ এবং সম্পর্কের অমূল্য সম্পদ এনে দিতে পারে। এটি শুধু অন্যকে ভালোবাসতে সহায়তা করে না, বরং আমাদের নিজস্ব শান্তি এবং পরিপূর্ণতা অর্জনেও সাহায্য করে।

সুন্দর ব্যবহার কখনো ধ্বংস হয় না, এটি আমাদের জীবনের এমন এক সঞ্চয় যা সর্বদা আমাদের সঙ্গে থাকে। তাই, চলুন, প্রতিদিন আমাদের ছোট ছোট আচরণে সৌজন্য এবং সদাচার প্রদর্শন করি। কারণ, সত্যিকারের সুখ এবং শান্তি আমাদের ব্যবহারেই নিহিত থাকে।

#সুন্দর_ব্যবহার #মানুষ_মুল্যবান #শান্তি #ভালোবাসা #মানবতা

চিন্তা নয়, চেষ্টাই হোক নির্ভরতার পথমুন্সি ইকবালজীবনে চলার পথে আমরা প্রায়ই হতাশ হয়ে যাই। কখনো পড়ালেখায় ভালো ফল হয় না, কখন...
11/09/2025

চিন্তা নয়, চেষ্টাই হোক নির্ভরতার পথ

মুন্সি ইকবাল

জীবনে চলার পথে আমরা প্রায়ই হতাশ হয়ে যাই। কখনো পড়ালেখায় ভালো ফল হয় না, কখনো চাকরির ইন্টারভিউ ভালো যায় না, আবার কখনো জীবনের বিশেষ মানুষটি আমাদের সঙ্গে থাকে না। তখন মনে হয়, বুঝি সব শেষ হয়ে গেল। মন ভেঙে যায়, চোখের কোনে পানি জমে। অনেকেই তখন প্রশ্ন করে বসি-"আল্লাহ কেন আমার সঙ্গে এমন করলেন?"

কিন্তু একটু থেমে, শান্তভাবে যদি ভাবা যায়-আল্লাহ কি আমাদের ক্ষতিটাই চান? নিশ্চয় না। তিনি তো আমাদের রব, যিনি আমাদের ভালোবাসেন সত্তর মা থেকেও বেশি। তাহলে কেন কিছু জিনিস আমরা চাইলে পাই না? এর পেছনে লুকিয়ে থাকে এক মহান পরিকল্পনা-যা আমাদের চোখে দেখা যায় না, কিন্তু আমাদের ভবিষ্যতের জন্য অনেক ভালো।

আমরা ছোট্ট একটি চিত্র কল্পনা করতে পারি-এক শিশু মাটিতে বসে খেলনা গাড়ি চাইছে, কিন্তু তার মা জানেন সেই খেলনায় ধারালো অংশ আছে, যা শিশুটির ক্ষতি করতে পারে। মা তাকে না দিয়ে অন্য একটি নিরাপদ খেলনা দেন। শিশুটি তখন কাঁদে, রাগ করে, হয়তো ভাবে মা তাকে ভালোবাসে না। অথচ বাস্তবে মা-ই তাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে, তাই তার ভালোর জন্যই সে খেলনাটি দেয়নি।

আমাদের জীবনের ঘটনাগুলিও অনেকটা তেমনই। আল্লাহ যখন আমাদের কিছু দেন না, তখন হয়তো তিনি আমাদের রক্ষা করছেন এমন কোনো বিপদ থেকে, যা আমরা বুঝতে পারছি না। আবার কখনো তিনি আমাদের দেরিতে দিচ্ছেন, কারণ হয়তো সেটি পাওয়ার জন্য আমাদের প্রস্তুত হওয়া দরকার। আমরা চাই এই মুহূর্তে, কিন্তু আল্লাহ জানেন কোন সময়টা আমাদের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।

আল্লাহর ওপর ভরসা করাটা খুব সহজ কথা নয়, বিশেষ করে যখন আমরা কঠিন সময় পার করছি। কিন্তু বিশ্বাস করুন, সেই মানুষটি কখনোই একা নয়, যে আল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে চলে। চেষ্টার মধ্যে থাকাটা আমাদের দায়িত্ব। ফলাফল আল্লাহর হাতে। চেষ্টা ছাড়াই যদি শুধু চিন্তায় ডুবে থাকি, তাহলে আমরা কেবল নিজের মনটাই ভাঙবো।

আজকে আপনি যে কাজটা পেতে চাচ্ছেন, হয়তো সেটা না পাওয়াটাই আপনার জন্য বরকতের। হয়তো যে সম্পর্কটি ভেঙে গেছে, তা থেকে আল্লাহ আপনাকে রক্ষা করেছেন এক দীর্ঘ দুঃখের জীবন থেকে। হয়তো আপনি এখন যা হারিয়েছেন, তার চেয়েও বহুগুণ ভালো কিছু অপেক্ষা করছে আপনার জন্য-ঠিক আল্লাহর নির্ধারিত সময়ে।

এই বিশ্বাসটুকু রাখুন-আল্লাহর পরিকল্পনা সবসময় আমাদের স্বপ্নের থেকেও উত্তম। তাই চিন্তায় নয়, থাকুন চেষ্টায়। যখন আপনি চেষ্টা করে যাবেন, আর মনে রাখবেন যে আপনার দোয়ার মালিক সবকিছুর মালিক-তখন আর হতাশা আপনাকে গ্রাস করতে পারবে না। তখনই আপনি হবেন সেই মানুষ, যার বিশ্বাস পাহাড়ের চেয়েও দৃঢ়।

চলুন, প্রতিদিনের জীবনযুদ্ধে আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে সামনে এগিয়ে যাই। প্রত্যেকটি দুঃসময় পেরিয়ে আলোর দিকে এগিয়ে যাই। আর প্রতিটি কাজে বলি-ইনশা’আল্লাহ।

বৃহস্পতিবার ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

#চিন্তানয়চেষ্টা #আল্লাহরপরিকল্পনা #ইনশাআল্লাহ

শিক্ষিত সমাজের নীরব মূর্খতামুন্সি ইকবালসমাজে সমস্যা তৈরি করে কারা-এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে আমরা সাধারণত আঙুল তুলি অশ...
07/09/2025

শিক্ষিত সমাজের নীরব মূর্খতা

মুন্সি ইকবাল

সমাজে সমস্যা তৈরি করে কারা-এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে আমরা সাধারণত আঙুল তুলি অশিক্ষিত, গোঁড়া, অথবা তথাকথিত মূর্খদের দিকে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সমাজের গভীর ক্ষয় ধীরে ধীরে ঘটে এমন এক শ্রেণির কারণে, যারা শিক্ষিত, সচেতন, সভ্যতার আলোয় আলোকিত, অথচ আচরণে কখনো কখনো এমন দায়িত্বহীনতা ও আত্মকেন্দ্রিকতা প্রকাশ করে যা অজ্ঞদের চেয়েও ভয়ানক পরিণতি ডেকে আনে।

শিক্ষা মানুষকে শুধু ডিগ্রি বা চাকরি পাওয়ার মাধ্যম নয়, বরং এটি নৈতিকতা, দায়িত্ববোধ, ও মানবিক বোধ জাগ্রত করার একটি উপায়। কিন্তু আজকের সমাজে আমরা দেখতে পাই, উচ্চশিক্ষিত মানুষরাও অনেক সময় এমন সব সিদ্ধান্ত নেয় বা এমনভাবে নিরবতা পালন করে, যা পুরো সমাজকে গভীর সংকটে ফেলতে পারে।

ধরা যাক-কোনো একটি অন্যায় ঘটছে সমাজের চোখের সামনে। একজন শিক্ষিত ব্যক্তি জানেন সেটি অন্যায়, জানেন এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। তবুও তিনি চুপ থাকেন, ভাবেন "আমি একা কি পারি?" কিংবা, "আমার ক্ষতি না হলে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই।" এই নীরবতাই কিন্তু এক ধরনের মূর্খতা। আর এই শিক্ষিত মূর্খতা অনেক সময় অশিক্ষিতের সরলতাকেও হার মানায়।

বড় বড় দুর্নীতি, প্রশাসনিক অনিয়ম, সামাজিক বৈষম্য-এসব কি কেবল অশিক্ষিতদের কারণে হয়? বাস্তবতা হলো, এই অন্যায়ের পেছনে নীরব সমর্থন থাকে শিক্ষিতদের একটি বড় অংশের। তারা হয়তো নিজের সুবিধা আদায়ের জন্য, কিংবা সমস্যায় না জড়ানোর আশঙ্কায় মুখ বন্ধ রাখেন। এই ‘নেই দেখা, নেই শোনা’ সংস্কৃতি আমাদের সমাজে গভীর শিকড় গেড়ে ফেলেছে।

আবার কিছু শিক্ষিত মানুষ কখনো কখনো নিজেদের জ্ঞানের ভ্রান্ত অহংকারে অন্ধ হয়ে ওঠেন। তারা মনে করেন, ‘আমি যা জানি তাই ঠিক’, অন্যদের শোনা বা বোঝার প্রয়োজন নেই। এই আত্মতুষ্টিই জন্ম দেয় এক ধরণের একচোখা দৃষ্টিভঙ্গি, যেখানে ভিন্নমত গ্রহণযোগ্যতা হারায়। ফলে সমাজে মতের বৈচিত্র্য, বিতর্কের সৌন্দর্য এবং যৌক্তিক চিন্তার জায়গাগুলো সংকুচিত হয়ে আসে।

অথচ একটি সুস্থ, সচেতন সমাজ গড়ে ওঠে তখনই, যখন শিক্ষিত মানুষরা তাদের শিক্ষা শুধু নিজের উন্নতির জন্য নয়, বরং চারপাশের আলোকিত পরিবর্তনের জন্য ব্যবহার করেন। তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন, দুর্বলদের পাশে দাঁড়ান, এবং সমাজে সত্য ও ন্যায়ের বার্তা ছড়িয়ে দেন।

শিক্ষিতরা যদি নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, সমাজে যা ঘটছে তাতে উদাসীন থাকেন, তাহলে তাদের শিক্ষা আর অশিক্ষার মাঝে তেমন পার্থক্য থাকে না। তখনই সমাজে জন্ম নেয় বিভ্রান্তি, অব্যবস্থা, এবং নৈতিক দুর্বলতা-যা অদূরে এক বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দেয়।

তাই আজ প্রয়োজন, শিক্ষিত মানুষদের নিজেদের বিবেকের দরজাগুলো খুলে দেওয়া। তাদের আচরণে যেন প্রতিফলিত হয় সত্যিকার জ্ঞান, মানবতা এবং দায়িত্বশীলতা। তাহলেই সমাজ পাবে প্রকৃত আলোকিত পথপ্রদর্শক, যারা শুধু জানেনই না-ব্যবহার করতেও জানেন।

সমাজ কখনো মূর্খদের দ্বারা ধ্বংস হয় না। বরং তা ধ্বংস হয় তখনই, যখন শিক্ষিতরা ভুল সময়ে চুপ থাকেন, অথবা জেনে-শুনেও ভুল পথে পা বাড়ান।

৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শ্রীপুর,গাজীপুর


#শিক্ষাহোকদায়িত্বপূর্ণ


07/09/2025

নুরু মিয়া (৯৫) কি বলে শুনুন

06/09/2025

ধৈর্য ধরো, আল্লাহ তোমার জন্য যা ঠিক রেখেছেন, তা ঠিক সময়েই আসবে-ইনশা'আল্লাহ

মুন্সি ইকবাল

আমরা সবাই জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে এমন একটা সময়ের মুখোমুখি হই, যখন মনে হয়-আর কুলিয়ে উঠা যাচ্ছে না। দোয়া করছি, কিন্তু মনে হচ্ছে, কোনো উত্তর আসছে না। পরিশ্রম করছি, কিন্তু ফল মিলছে না। বুকের ভেতর জমে থাকা কষ্টগুলো কাউকে বলার মতো ভাষা খুঁজে পাই না।

এই সময়টাতেই আসে "ধৈর্য" নামক এক কঠিন কিন্তু সুন্দর পরীক্ষা। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন-
"নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।" (সূরা আল-বাক্বারা: ১৫৩)

এখন প্রশ্ন হলো, আমরা কি সত্যিই ধৈর্য ধরে থাকতে পারি? নাকি অস্থির হয়ে পড়ি, অভিযোগ করি, কেন আমি? কেন এখনো না?
অথচ আমরা জানি না-আমাদের দেরি মানেই ব্যর্থতা না, বরং হয়তো দেরির মাঝেই লুকিয়ে আছে আমাদের জন্য শ্রেষ্ঠ কোনো নিয়ামত।

ধৈর্য মানে নিঃশব্দে সব কিছু মেনে নেওয়া নয়। বরং ধৈর্য মানে হচ্ছে, নিজের চেষ্টাটা চালিয়ে যাওয়া, দোয়া করে যাওয়া, এবং পুরোপুরি বিশ্বাস রাখা যে-

আল্লাহ আমাকে নিরাশ করবেন না।
তিনি আমাকে সেইটাই দিবেন, যেটা আমার জন্য উত্তম।
যেটা আমি চাই, হয়তো সেটা আমার জন্য ভালো না। কিন্তু তিনি জানেন, আমি জানি না।

তুমি যদি ধৈর্য ধরো, তুমি যদি আল্লাহর উপর ভরসা করো, তাহলে দেখবে-সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। হয়তো সময় লাগবে, হয়তো পথটা কঠিন হবে, কিন্তু শেষে তুমি হাসবে। আর বলবে, "আলহামদুলিল্লাহ, আমি অপেক্ষা করেছিলাম।"

প্রতিটি কষ্ট, প্রতিটি দেরি, প্রতিটি অশ্রু-সবকিছুর পেছনেই কোনো না কোনো হিকমত আছে। হয়তো এই কষ্টগুলোই তোমাকে আরও শক্তিশালী বানাচ্ছে, হয়তো এই দেরিটাই তোমার জন্য অনেক বড় বিপদ থেকে রক্ষা করছে।

কখনো হাল ছেড়ো না। আল্লাহ তোমাকে ঠিক সময়েই দিবেন। শুধু তুমি যেন প্রস্তুত থাকো। যেন তোমার বিশ্বাসে ঘাটতি না আসে।
আল্লাহ সব দেখেন, সব জানেন। তুমি যখন রাতে চুপচাপ কাঁদো, সেটাও তিনি দেখেন। তুমি যখন কারো সাথে না বলে শুধু তাঁর কাছে মুখ খুলো-তিনি শুনেন।
তুমি একা নও। আল্লাহ তোমার সাথে আছেন। সবসময়।

তাই দোয়া করো, বিশ্বাস রাখো, আর ধৈর্য ধরো।
যে জিনিসটা তুমি পাওনি এখনো, হয়তো সেটা দিয়ে আল্লাহ তোমার জন্য কিছু বড় কিছু বানাচ্ছেন।

তোমার জন্য যা ভালো, আল্লাহ সেটাই দিবেন-ঠিক সময়েই।
- ইনশা’আল্লাহ

#ধৈর্য #তাওয়াক্কুল #আল্লাহর_উপর_ভরসা
#আলহামদুলিল্লাহ #ইনশাআল্লাহ


05/09/2025

সিজদায় ঝরা কান্না-এক আত্মিক প্রশান্তির গল্প

মুন্সি ইকবাল

রাত যত গভীর হয়, চারপাশ তত নিস্তব্ধ হয়ে আসে। মনে হয়, গোটা পৃথিবী থেমে গেছে। অথচ কিছু কিছু হৃদয় ঠিক তখনই অস্থির হয়ে ওঠে। না বলা কষ্ট, অপূর্ণ ইচ্ছা, ভুলে থাকা স্বপ্নগুলো মাথা তোলে। মন চায়, কারও সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হোক। কিন্তু এমন একজন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন, যিনি নিঃশব্দে শুনবেন।

ঠিক তখনই সিজদা হয়ে ওঠে একান্ত আশ্রয়। এই একটি জায়গা, যেখানে আপনি সমস্ত মুখোশ খুলে দিতে পারেন। সিজদায় পড়ে যখন চোখের জল ঝরে-তা আর সাধারণ কান্না থাকে না। তা হয়ে ওঠে এক নিরব ভাষা, যাকে শব্দে প্রকাশ করা যায় না। সেই মুহূর্তে মনে হয়, কেউ একজন শুনছেন, বুঝছেন-এই বিশ্বাসই মনের ভার কিছুটা কমিয়ে দেয়।

আমরা অনেকেই এমন রাতের মুখোমুখি হই, যখন দুশ্চিন্তা, ব্যর্থতা আর হতাশা একসঙ্গে এসে বুকের ভেতর ভার হয়ে বসে থাকে। কারও সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার উপায় থাকে না, বরং মনে হয়, বললেও কেউ বুঝবে না। এই নির্জনতায় সিজদা যেন একমাত্র ঠিকানা, যেখানে প্রশ্ন নেই, বিচার নেই-শুধু শ্রবণ আছে, করুণা আছে।

সিজদায় কান্না কোনো দুর্বলতা নয়। বরং এটি এমন এক আত্মিক শক্তির প্রকাশ, যেখানে একজন মানুষ নিজেকে আল্লাহর সামনে ভেঙে দিয়ে আবার নিজেকে গড়ে তোলার সাহস পায়। এই কান্না আত্মাকে হালকা করে, প্রশান্ত করে।

জীবনের পথে আমরা সবাই কোনো না কোনো হারানোর অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যাই-কখনো প্রিয় মানুষ, কখনো স্বপ্ন, কখনো নিজের শান্তি। এই ব্যথা যদি চেপে রাখা হয়, তা আমাদের ভেতরে ভেতরে ক্ষয় করে। কিন্তু সেই কান্না যদি সিজদার মাটিতে ফেলে দেওয়া যায়, ইনশাআল্লাহ, তা একদিন কবুল হবেই। আল্লাহ কখনো বান্দার ডাকা শুনে ফিরে যান না।

এই অনুভূতির জন্য প্রয়োজন নেই কোনো উচ্চ আসন, বড় পরিচয় বা বাহ্যিক কিছু। প্রয়োজন শুধু কিছু নিঃসঙ্গ মুহূর্ত, কিছু নিঃশ্বাস, আর একটি সিজদা-যেখানে আপনি নিজেকে সঁপে দিতে পারেন।

আজ যারা চোখের জল লুকিয়ে রাখছেন, মনে রাখবেন-আপনার সেই কান্না যদি অন্তরের গভীর থেকে আসে, তবে নিশ্চয়ই তা আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য হবে। আপনি হবেন হালকা, সংযত, আর হয়তো সেই দিন থেকেই জীবন নতুনভাবে শুরু হবে।

ইনশাআল্লাহ।

শুক্রবার ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শ্রীপুর, গাজীপুর

05/09/2025

রি'জিক নিয়ে চি'ন্তা করবেন না-রি'জিক আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত

মুন্সি ইকবাল

মানুষ জন্ম থেকেই ভবিষ্যতের জন্য চিন্তিত। কী খাবো, কোথায় থাকবো, সন্তানদের কীভাবে বড় করবো-এই চিন্তাগুলো আমাদের মন থেকে কখনও যায় না। বিশেষ করে বর্তমান সময়ের অনিশ্চিত অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনেককে রি'জিক (রোজগার বা জীবিকার উপায়) নিয়ে দুশ্চিন্তায় ফেলছে। কিন্তু একজন মুমিনের উচিত, রি'জিক নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা না করে, আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুল রাখা।

আল্লাহ তায়ালা কুরআনে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন,
"আকাশে তোমাদের রিজিক রয়েছে এবং রয়েছে সে ওয়াদা, যা তোমাদেরকে দেয়া হয়েছে।"
- (সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত ২২)

এ আয়াত আমাদের নিশ্চিন্ত থাকার জন্য যথেষ্ট হওয়া উচিত। রি'জিক, অর্থ, চাকরি, ব্যবসা-এসব আমাদের পরিশ্রমের ফল নয়, বরং আল্লাহর কৃপায় নির্ধারিত এক নিয়ামত। তিনি যাকে চান, অল্প দিয়েও পরিপূর্ণতা দেন। আবার অনেককে বেশি দিয়েও অভাবগ্রস্ত করে রাখেন। আসল রহস্যটা হলো বরকতের মধ্যে, আর বরকত আসে আল্লাহর সন্তুষ্টি থেকে।

পাখির দিকে তাকান, সকালে তারা খালি পেটে বাসা ছেড়ে যায়, কিন্তু সন্ধ্যায় পেট ভরে ফিরে আসে। তারা রি'জিকের চিন্তায় ঘরবন্দি হয়ে পড়ে না। ঠিক তেমনিভাবে, আমাদেরও উচিত চেষ্টা করা, কিন্তু রি'জিকের বিষয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা না করা।

হাদীসে এসেছে,
"তোমরা যদি আল্লাহর উপর প্রকৃত তাওয়াক্কুল করতে, তবে তোমাদের রিজিক তিনি এমনভাবেই দিতেন, যেমন পাখিকে দেন-যে সকালে খালি পেটে বের হয় আর সন্ধ্যায় পূর্ণ পেটে ফিরে আসে।"
- (তিরমিজি)

এই হাদীস আমাদের শিক্ষা দেয়, চেষ্টা করতে হবে, কিন্তু মনকে শান্ত রাখতে হবে। রি'জিক আল্লাহর হাতে-তিনি কখন, কিভাবে, কোথা থেকে দিবেন, সেটা আমাদের জানা নেই। কিন্তু তিনি দিবেন, এটা তাঁর ওয়াদা।

আত্মবিশ্বাস নয়, ঈমানের জায়গায় রাখা উচিত আল্লাহর উপর বিশ্বাস।
আধুনিক সমাজে আত্মনির্ভরতার কথা বলে আমাদের শেখানো হয়-“নিজে নিজেই সব করতে হবে।” কিন্তু একজন মুমিন জানে, সে চেষ্টার দ্বারা নয়, বরং আল্লাহর রহমতেই সে সফল হয়। এই বিশ্বাসই তাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত রাখে।

রি'জিক নিয়ে অতিরিক্ত ভাবনা আমাদের অন্তরকে দুর্বল করে দেয়, ইবাদতে বিঘ্ন ঘটায়, এমনকি অনেক সময় হারাম পথেও নিয়ে যায়। তাই আমাদের উচিত, হালাল রি'জিকের জন্য চেষ্টা করা, আর ফলাফলের ভার আল্লাহর উপর ছেড়ে দেওয়া।

আজ যদি আপনার আয় কম হয়, তবুও হতাশ হবেন না। হয়ত আল্লাহ আপনাকে ধৈর্যের মাধ্যমে পরীক্ষা নিচ্ছেন। কাল হয়ত সেই রি'জিকই দ্বিগুণ হয়ে ফিরে আসবে। মনে রাখবেন-আল্লাহ কখনও তাঁর বান্দার হক নষ্ট করেন না।

আলহামদুলিল্লাহ, এমন এক রবের ইবাদত করি, যিনি আমাদের প্রয়োজন জানেন, মনের চাওয়া বোঝেন এবং সবচেয়ে উত্তম সময়ে, সবচেয়ে উত্তমভাবে আমাদের রি'জিক পৌঁছে দেন।

তাই প্রিয় ভাই ও বোনেরা, রি'জিক নিয়ে চি'ন্তা করবেন না। চিন্তা করুন, আপনি রি'জিকের হালাল পথে আছেন কিনা, আর আপনার রবের উপর ভরসা ঠিক আছে কিনা।

শুক্রবার ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শ্রীপুর, গাজীপুর

05/09/2025
11/08/2025

ধৈর্য মানুষকে ঠকায় না কভু,
ধৈর্য রাখে পথের রুক্ষতা রভু।
সহে সে দুঃখ, সহে ব্যথার ভার,
তবু আশা রাখে সুদিনের আপার।

ধৈর্য শেখায়-চুপে থাকতে যত,
সময় হলেই ফল আসে তত।
অস্থির হৃদয়ে বাজে না সুর,
ধৈর্যে গড়ে ওঠে বিজয়ের নূর।

চাইলে না-চাইলেও আসে যে ক্ষণ,
ধৈর্য ধরে রাখে সেই শ্রেষ্ঠ বন।
যে জন সহে, সে জন পায়,
সময় হলে সুখ তার দুয়ারে গায়।

তাই বলি আমি-ধৈর্য রাখো মন,
এ গুণেই গড়ে ওঠে সফল জীবন।
ধৈর্য নয় ঠকায়, দেয় আশার বারি,
শেষে সে তো দেয় সুখের ভারি।

মুন্সি ইকবাল, শ্রীপুর,গাজীপুর

Address

Gazipur
1740

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when মুন্সি ইকবাল posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category