রায়ান রহমান রাজা

রায়ান রহমান রাজা পৃথিবীর সব সম্পর্কের শেষ আছে, কিন্তু বান্দার সাথে আল্লাহর সম্পর্কের কোন শেষ নাই

রাত তখন গভীর। শহরের প্রান্তে ধ্বংসস্তূপের মতো পড়ে থাকা ওয়্যারহাউসটায় এখনো আগুন ধুঁকছে। মাটিতে ছড়িয়ে আছে ভাঙা কাঁচ, রক্তে...
24/09/2025

রাত তখন গভীর। শহরের প্রান্তে ধ্বংসস্তূপের মতো পড়ে থাকা ওয়্যারহাউসটায় এখনো আগুন ধুঁকছে। মাটিতে ছড়িয়ে আছে ভাঙা কাঁচ, রক্তের দাগ আর বন্দুকের খোসা। বাতাস ভারী—যেন মৃত্যু নিজেই এখানে শ্বাস নিচ্ছে।

ভিক্রম আর অমর টিম নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে। তাদের মনে হচ্ছে যুদ্ধ শেষ, কিন্তু সত্যিটা ভেতরে ভেতরে কাঁটার মতো বিঁধে আছে—এটা সমাপ্তি নয়।

ঠিক তখনই বাইরের অন্ধকার চিরে ভেসে এলো ইঞ্জিনের গর্জন। একসাথে পাঁচ-ছয়টা কালো SUV এসে দাঁড়াল ওয়্যারহাউসের সামনে। হেডলাইটের আলোয় ভেসে উঠল ধুলো আর ধোঁয়ার আস্তর। দরজা খুলে নামল কালো পোশাকে সশস্ত্র লোকজন। তাদের পদক্ষেপ একসাথে—যেন সেনাদল, কিন্তু আরও ভীতিকর। সবশেষে, ধীরে ধীরে, নামল সে।

Draven।

কালো লেদারের লং কোট তার হাঁটুর নিচে নেমে এসেছে। ভেতরে কালো শার্ট, গলায় রুপালি চেইন, আর হাতে কালো চামড়ার গ্লাভস। এক হাতে ধোঁয়া ওঠা সিগারেট, অন্য হাতে চকচকে সিলভার রিভলভার। হাঁটার সময় কোটের ভেতর থেকে মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে বাঁ পাশে বাঁধা ছুরি—ধারালো, ঝলমলে।

সে গাড়ির দরজার পাশে থামল, ধীরে ধীরে সিগারেটটা ঠোঁটে রাখল। লাইটার জ্বালাল—অন্ধকারে সেই শিখা যেন শয়তানের চোখের মতো ঝলকে উঠল। ধোঁয়া ছাড়ল ধীর ভঙ্গিতে, আর প্রতিটি ধোঁয়ার পাক যেন কক্ষের ভেতরে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিচ্ছে।

Draven ভেতরে প্রবেশ করল। তার জুতার শব্দ ফাঁকা ওয়্যারহাউস জুড়ে প্রতিধ্বনিত হলো—টক… টক… টক…।
কেউ নড়ল না, কেউ নিশ্বাস ফেলল না।

সে থেমে চারপাশে তাকাল। সিগারেটের শেষ টান দিল, তারপর মাটিতে ফেলে দিল জ্বলন্ত টুকরোটা। বুটের তলায় পিষে বলল ঠান্ডা কণ্ঠে—

“স্যান্ডহানাম শুধু শুরু ছিল… আমি এসেছি শেষ করতে।”

সে চেয়ারে বসল রাজসিক ভঙ্গিতে। বন্দুকটা টেবিলে রাখল, ছুরিটা আঙুলে ঘুরাতে লাগল খেলনার মতো, কিন্তু তার দৃষ্টিতে এমন এক বিষাক্ত হুমকি, যা মৃত্যুকেও ভীত করতে পারে। রবিন তাকিয়ে রইল। এক মুহূর্তেই সে বুঝে গেল—যে অন্ধকার তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে, তাকে পরাজিত করা যুদ্ধ নয়, বরং দুঃস্বপ্ন।

ওয়্যারহাউসের বাইরে তখনো গাড়িগুলোর ইঞ্জিন চালু, আর লোকজন সজাগ দাঁড়িয়ে। পুরো পরিবেশ চেপে ধরেছে এক নিঃশব্দ সন্ত্রাস।

Draven এসেছে। খেলা এখনই শুরু হলো।

গল্প :- গেম অফ পাওয়ার (পর্ব - ২)লিখা:- RAJA Bhuiyan. (মি.440)ড্রাগন চতুরে বক্স অফিস গরম। কনকনে ঠান্ডার প্রকোপে নিশ্চুপ র...
23/09/2025

গল্প :- গেম অফ পাওয়ার (পর্ব - ২)
লিখা:- RAJA Bhuiyan. (মি.440)

ড্রাগন চতুরে বক্স অফিস গরম। কনকনে ঠান্ডার প্রকোপে নিশ্চুপ রুমটা হয়ে উঠেছে চিত্তাকর্ষক। শব্দ দূষিত রুমে ঘরোয়া চিকিৎসা চলছে এক মানব পথিকের। বাম হাতের বাহু থেকে এতক্ষণ অনাগল রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল, মিস্টার আরিফের চিকিৎসায় বর্তমানে রক্ত পড়া বন্ধ হলেও ব্যাথার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। পিস্তলের বুলেট খত বিক্ষত করে দিয়েছে আগন্তুকের বাহুটা। সে ব্যাথায় চিৎকার শুরু করে দিয়েছে। গরম রৌদ্রে কুকুর যেমন পাগলামি করে। আগন্তুক ঠিক তেমনই ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে পরিত্যক্ত এই রুমটাতে। আশেপাশে বসে রয়েছে আরো তিনজন কোর্ট পরা পুরুষ। তিনজনের সামনে বিদেশি ব্রেন্ডের ও-ই স্কি ঠোঁটে সিগারেট, মস্তিষ্কের চিন্তা চেহারায় এনে কালো মেঘের ন্যায় ধারণ করেছে। মূলত তাদের চিন্তা আহত আগন্তুককে নিয়ে। সবাই আন্ডারগ্রাউন্ডের একেকটা ডন। হঠাৎ করেই একজন পুলিশের কবল থেকে বেঁচে ফিরেছে। সেটা আর কেউ না এই আহত আগন্তুক, নাম তার রিবণ।....

রিবণ ব্যান্ডেজের উপর আধা গ্লাস মদ ঢেলে গ্লাসটা ছুঁড়ে ফেলে, পরক্ষণেই কাঁচের গ্লাসটা টুকরো টুকরো হয়ে গেলো। সবাই সেদিকে তাকলো। মিস্টার আরিফ এসে নিজের চেয়ারে বসলো, টেবিলের উপর থেকে নিজের পছন্দের সিগারেটটা নিয়ে ঠোঁটে লাগালো। সিগারেটের স্বাধ নিতে নিতে তিনি বলে উঠলো -

- পুলিশ রিবণ পর্যন্ত চলে গিয়েছে। আমাদের টার্গেট করতে তাদের বেশি সময় লাগবে না। আমি বেশ চিন্তিত, আমার এত বছরের নাম ডাম সুনাম অর্জন, সব শেষ হয়ে যাবে। (আরিফ)

শব্দ করে কাঁশলো, পাশের চেয়ারে বসে থাকা নাজিম সাহেব। কপালে তার চিন্তার ছাপ। মষ্তিষ্কে বারেবার ঘুরপাক খাচ্ছে কিছুক্ষণ আগে কল করা আগন্তুকের কথাটা “ শিয়াল কুকুরের জঙ্গলে রাজা শুধু নেউল-ই হতে পারে, আর বাঘের রাজত্বে একমাত্র সিংহ-ই রাজা। আমি কে সেটা ভাবার মতো সময় আপনার হাতে নেই। রিবণকে যেহেতু পুলিশ একবার টার্গেট করে ফেলেছে, সেহেতু এক এক করে সবার আসল চেহারা চলে আসবে মিডিয়ায়। রিবণ দ্বিতীয়বার ঐ মেয়ে অফিসারের সামনে পড়লে তার আর রক্ষা নেই৷ রিবণের মাধ্যমে আপনাদের খুঁজে বের করবে পুলিশ। কুকুর যতক্ষণ মালিকের কথা শুনবে ততক্ষণ মালিকের কাছে কুকুর ভালো। যখন হাড্ডি ফেলার পরেও কুকুর চুপচাপ থাকে তাহলে..... হিহিহিহি, কি করা উচিত সেটা আর আমি না বলি। ”

লাস্ট কথাটা আগন্তুক হেঁসে বলে কলটা কেটে দেয়। নাজিম সাহেবকে আগন্তুকের শেষ কথাটা বেশ ভাবনায় ফেলে দিয়েছে। তিনি নিজের আসল মন্তব্য প্রকাশ না করে, মুহুর্তটা জমানোর জন্য সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে বল্লো -

- রানিং দশ বছর ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সরকার আমাকে রেখেছে। পার্টির মধ্যে ভালো খারাপ মিলিয়ে সব লোক রয়েছে, আমি আমার খারাপ কর্মগুলো কখনো কারো সামনে আনি নি। একবার যদি পুলিশ মিডিয়ার সামনে সব প্রকাশ করে তাহলে সব শেষ। পার্লামেন্টে আমার স্থান বলতে চেয়ার শূন্য। (নাজিম)

দীর্ঘ এক নিশ্বাসের সঙ্গে বিষাদ ধোঁয়া গুলো আকাশ পানে ছেড়ে কথাটা শেষ করলেন তিনি। বিরণ এসে চেয়ার টেনে আরাম করে বসলো। মুটামুটি ডন ডন একটা ভাব তার মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। সে হুইস্কির বোতলে চুমুক দিয়ে আশেপাশে আরেকবার দেখলো। মাথার উপর হলদে আলোয় এসে কিছু পোকামাকড় জমেছে, রুমের এক কোণো ভাঙা চেয়ার পড়ে আছে, ঠিক তার অন্য পাশে একটা মৃত দেহ, অবশ্যই লাশটা একজন যুবক বয়সী পুরুষের। তার শরীর থেকে রক্ত বয়ে চলেছে, তাজা রক্ত! ঠিক যেন বিষাক্ত স্বাদ। বুকের মধ্যে পিস্তলের ৬ রাউন্ডে সবগুলো বুলেট ছড়িয়ে ছিটিয়ে লেগে আছে, মনে হয় ক্ষুদার্ত বাঘ তার শিকার করেছে তাও আবার বহু সময় পর। রিবণ কোমরে খুঁজে থাকা পিস্তলটা বের করে লম্বা টেবিলের উপর রাখে। সবার দৃষ্টি তখন পিস্তলের দিকে। রিবণ নাজিম সাহেবের কাছ থেকে লাইটার নিয়ে সিগারেট জ্বালালো। সিগারেটের গন্ধে পরিবেশটা আরেকটু গমগম হয়ে উঠলো। সবার আঙুলের ফাঁকে সিগারেট তখনই রিবণ বলে উঠলো -

- কারো মাথায় যদি আমাকে মেরে ফেলার ধান্দা থাকে তাহলে সেটা ঝেড়ে ফেলে দিতে পারেন। কারণ আমার বাঘ, কুকুর শিকার করে খাওয়ার মতো দূর দিন এখনো হয় নি।

চমকে উঠে নাজিম সাহেব, তার মস্তিষ্কে এতক্ষণ যা ঘুরপাক খাচ্ছিল সেটা বিরণ বুঝে গিয়েছে। তিনি জানেন রিবণ বুদ্ধিমান, তবে ঠান্ডা মাথার খেলোয়াড় সে নয়। এ জন্য তার মৃত্যু অনিবার্য। নাজিম সাহেব মাইন্ড গেম সেটআপ করলো, সময় নিয়ে সে রিবণ কে মারবে। এক এক করে গুটি পড়ে গেলেই তিনি হয়ে যাবেন আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন। কিন্তু সেই আগন্তুক থাকতে কী এটা সম্ভব !. নাজিম সাহেব রিবনের কথায় মনোনিবেশ করলো।

- পুলিশের টার্গেট আমি, সবাই ভয় থেকে মুক্ত থাকতে পারেন, আপনাদের পরিচয় কেউই জানবে না। তবে আমাকে সরিয়ে ফেলার কথা ভুলেও চিন্তা করবেন না। আমি মিথ্যা পছন্দ করি কিন্তু বেইমানি নই। (রিবণ)

সিগারেট শেষ। মাটিতে পা দিয়ে আগুনটা পিষে উঠে দাঁড়ায় রিবণ। সে তাকলো, নাজিম এবং আরিফের মধ্যে অবস্থান করা পুলিশ ডিআইজি মিজান সাহেবের দিকে। দুজনের চোখাচোখি হলে সঙ্গে সঙ্গে চোখের দৃষ্টি সরিয়ে ফেলে অন্য দিকে দুজন-ই। রিবণ উঠে দাঁড়াতেই মন্ত্রী এবং ডাক্তার সাহেব উঠে দাঁড়ালো, মিজান সাহেব নিজের জায়গায়-ই। রিবণ যেয়ে নাজিম সাহেবকে জড়িয়ে ধরলো। হঠাৎ করে রিবণের এমন কান্ডে বেশ অবাক হলো সবাই। নাজিম শুনতে পেলো -

- মায়ানমার থেকে আসা তিন কোটি টাকার মাল কোথায় সেটা বের করতে আমার বেশি সময় লাগবে না। আমি বাজিতে জিতা টাকা ছেড়ে আসতে পারি, কিন্তু ধান্দার টাকা না। ভয় নেই আপনার। পরের বার পার্লামেন্টে আপনি-ই থাকবেন। হিহিহিহি,, নিজেদের লোক যদি দু একটা রাজনৈতিতে না থাকে তাহলে তো ব্যবসা বানিজ্য করা যাবে না। (রিবণ)

“ আবার দেখা হবে। রক্তের খেলায় মেতেছেন কুকুরগুলো, বাঘের গর্জন তারা এখনো শুনে নি। বাঘ অলরেডি তৈরী হয়ে আছে!. আসি? সাবধানে মিস্টার আরিফ, ধন্যবাদ চিকিৎসার জন্য! ”

দেরি করলো না এক মুহুর্ত লম্বা পায়ে হেঁটে রুম থেকে বের হয়ে গেলো রিবণ। এইবার মিজান সাহেব উঠে দাঁড়ায়, রিবণ তার পিস্তল রেখে চলে গিয়েছে, তিনি সেটা হাতে নিয়ে দেখলো ম্যাগাজিনে একটা বুলেট মাত্র, বুলেটটা পেন্টের পকেটে রেখে, নাজিম সাহেবের পাশে এসে দাঁড়ালেন তিনি গাড়েঁ হাত রেখে বললো -

- চিন্তার কিছু নেই, গলায় মাছের কাটাঁ আটকে থাকলে গরম ভাত খেলে সেটা নেমে পেটে চলে যায়। যার জায়গা যেখানে তাকে সেখানেই যেতে হবে। রিবণ জানে না তার মৃত্যু অতি নিকটে। ডিপার্টমেন্টে তার ব্যপারে ছোটখাট পরিচিত হয়ে উঠেছে। তার নামে সুট ওয়ারেন্ট বের হয়েছে। ছোট ভুল দিয়েই তার মৃত্যু!. (মিজান)

নাজিম সাহেব স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে না। রিবণের চেযে মিজান সাহেবকে নিয়ে ওনার বেশি চিন্তা। ঠান্ডা মাথার এই মাইন্ড গেমার অত্যন্ত পরিষ্কার ভাবে নিজের জায়গা বদল করতে সক্ষম। ছোট খাটো একটা মিশনে ঝামেলা হয় রিবণের সাথে, এরপর থেকে দুজন নিজেদের সাথে কথা বলে না। এটাই নাজিম সাহেবের কাছে প্লাস পয়েন্ট হয়ে যায়। তিনজনকে নিয়ে তিনি মাইন্ড গেম খেলতে শুরু করে। তবে হঠাৎ এইভাবে রিবণের আসল পরিচয় পুলিশ পেয়ে যাবে ভাবতে পারে নি নাজিম। তবে কী এটা মিজানের কাজ, সে তো চায় না রিবণকে!.. কিন্তু সেটা কেন মিজান করবে? পরিচয় গোপনের ভয় তো তারও রয়েছে। তাহলে কে সেই অচেনা আগন্তুক? প্রশ্ন এখানেই!.

পাশ কাটিয়ে চলে গেলো মিজান। সিগারেট ফেলে গাড়ির চাবিটা নিয়ে নাজিমও বের হয়ে গেলো। পরিবেশ ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে। ষাট ওয়াডের বাল্বের নিচে আরিফ একা দাঁড়িয়ে আছে। মাফিয়া ছাড়াও তার আরেকটা পরিচয় রয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সনামধন্য ডাক্তার তিনি। রোগীকে যেমন সুস্থ করতে পারে, ঠিক তেমন ভাবে মানুষকে নির্দয়ভাবে মারতেও হাত কাপেঁ না তার। মোবাইল বের করে কাকে যেন একটা মেসেজ করলো সে। সাথে সাথে একটা কল আসলো, হাসি মুখে কথা বলতে বলতে বের হয়ে গেলো সে। নিস্তব্ধ রুমে পড়ে রইলো রক্তমাখা একটা দেহ। রক্তের গন্ধে স্বাদ নিতে চলে আসবে রাস্তার পাশে থাকা পাগলা কুকুরগুলো। শকুনের দল পাশাপাশি ঝগড়া করে মাংসের টুকরো নিয়ে উড়াল দিবে আকাশ পানে।......

।।

গভীর রাতের অন্ধকারে চন্দ্র বিলাস! কিছু প্রেমিক রয়েছে যারা নিজের ভালোবাসার মানুষকে পাশে নিয়ে উপভোগ করে! আবার কিছু কিছু প্রেমিক রয়েছে যাদেরকে আমরা ব্যর্থ প্রেমিক হিসেবে চিনি. যারা নিজেদের ভালোবাসার মানুষকে ছাড়াই নিকোটিনের ধূসর ধোঁয়ার সাথে চন্দ্র বিলাস উপভোগ ভালোবাসে।

রাত বাজে দুইটা বেজে সাতাশ মিনিট. আজমাইন সাহেব তৃতীয়বারে মতো নিজের হাত ঘরির দিকে তাকালো। গুনে গুনে উনিশ মিনিট যাবত তিনি দাঁড়িয়ে আছেন কালো কালারের একটা ব্রিফকেস হাতে। ভিতরে রয়েছে অবশ্য বাইশ ত্রিশ হাজার মার্কিন ডলার। যদি আমরা বাংলা টাকায় কনভার্ট করতে চাই তাহলে অ্যামাউন্ট দাঁড়াবে প্রায় সাতাশ লাখ টাকা।

নির্জন রাস্তার এক পাশে পার্কিং করা মার্সিডিজের ডিঁকিতে হেলান দিয়ে কোনো এক অজানা আগন্তুকের অপেক্ষা করছেন আজমাইন সাহেব। ওনার থেকে কিছু দূরের ল্যাম্পোস্টটা একবার জ্বলছে তো আরেকবার নিভে যাচ্ছে। তবে আশেপাশের বাল্ব থেকে ভালোই আলোতে আচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে দূরগামী রাস্তাটা। মাথার উপরে খেজুর গাছের ডালে ছড়িয়ে থাকা চিরি চিরি লম্বা আকৃতির পাতা বেয়ে কিছুক্ষণ পর পর টিপটাপ করে পানি বেয়ে পড়ছে। গভীর রাতের নির্জন রাস্তার পাশে এমন আওয়াজ সত্যিই মনের মধ্যে ভয় তুলে দেয়। আজমাইন সাহেব ভয় পাচ্ছে. যদি কোনো ডাকাত দল হামলা দিয়ে ওনার টাকা গুলো নিয়ে চলে যায়! বিষয়টা মাথায় আসতেই তিনি ব্রিফকেসটি ডিঁকির উপর রেখে চেক করে নিলো সব ঠিক আছে কী না?...

ডলার গুলো ঠিকঠাক-ই আছে। তিনি টেনশন দূর করার জন্য পাঁচ টাকা মূল্যের হলিউড সিগারেট জ্বালিয়ে লম্বা টান দিতে দিতে মোবাইলটা বের করে লোকেশন থেকে নিজের অবস্থানটা দেখে নিলো - “ সাভার মৌচাক ”।...

সময় আর কাটছে না. দেখতে দেখতে দুইটা চল্লিশ বেজে গেলো কিন্তু আগন্তুকের আগমনের কোনো হদিস পাওয়া গেল না। আজমাইন সাহেব বিনোদন নেওয়ার জন্য tiktok ভিডিও গুলো দেখা শুরু করলো তবুও যেন তার ভালো লাগছে না, অপেক্ষা করতে ওনার বড্ড বিরক্ত লাগে। কিন্তু ওনার বিরক্তের মূল্য যে পারসোনাল ভাবে কারো নেই। তিনি ভাবলেন চলেই যাবে.. মোবাইলটা অফ করে যেতেই না পিছনে ঘুরবো তখন-ই শুনা গেলো বাইকের ঝিঁঝি শব্দ। মুহুর্তের মধ্যে আজমাইন সাহেবের বিরক্তিকর চেহারাটা হাসিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেলো। তিনি গাড়িতে হেলান না দিয়ে সামান্য এগিয়ে যায়। ততক্ষণ লাল কালারের বাইকটা এসে থামে ওনার অবস্থান থেকে কিছুটা দূরে।..

ডেনিম জ্যাকেটের ভিতর সাদা কালারের চ্যাক শার্ট, ব্রাইট কালারের ব্লো জিন্সের সাথে সাদা স্ন্যাকার। আগন্তুকের মুখটা দেখে বিপাকে পড়ে যায় আজমাইন সাহেব। আগন্তুক বিষয়টি উপভোগ করে মৃদু হাসলো এবং শান্ত কন্ঠে পরিবেশের সাথে মিল রেখে বল্লো -

- আমি রিবণ। আপনার ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই।

মোটা স্বরের কন্ঠ, পুরুষ কে পুরুষের মতোই লাগছে। চব্বিশ, পঁচিশ বছরের রিবণ নামের তাগড়া যুবককে বেশ ভালোই লাগলো আজমাইন সাহেবের। কিন্তু ওনি বুঝতে পারলেন না যে রিবণ নামের ছেলেটা কী ভাবছে ওনার ব্যপারে! (নেগেটিভ or পজিটিভ)?

- আমি আজমাইন হোসেন.. Form!

আজমাইন সাহেব নিজ পরিচয় দেওয়ার আগেই রিবণ বলে উঠে -

- আপনার নাম.. পজিশন.. ধন-দৌলত, পরিবার এবং এটাও জানি যে বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও আপনার রয়েছে দুইটা গার্লফ্রেন্ড। আপনার একটাই মেয়ে সেও আবার ওকালতি নিয়ে পড়াশোনা করছে। (রিবণ)

দু'মিনিটের জন্য আজমাইন সাহেব ভাবনায় পড়ে গেলো। ওনার ব্যপারে সব জানে ছেলেটা তারমানে এখানে কী উদ্দেশ্যে আসা সেটাও নিশ্চয়ই জানে!. কাজটা তাড়াতাড়ি শেষ করাই ভালো? মনে মনে চিন্তা করতে থাকা আজমাইন সাহেবকে চমকে দিয়ে রিবণ আবারও শান্ত কন্ঠ হাসি দিয়ে বল্লো -

- আমাকে নিয়ে প্যারা খাওয়ার প্রয়োজন নেই। হাতের সিগারেটটা শেষ করুন। কম দামি সিগারেটের স্মেইল আমার ভালো লাগে না। (রিবণ)

সাথে সাথে ঢিল মেরে দূরে ফেলে দিল অর্ধ পুড়া সিগারেটটা। আগন্তুক রাস্তায় পড়ে থাকা অবশিষ্ট সিগারেট থেকে বের হয়ে আকাশ পানে উড়ে যাওয়া ধূসর কালারের ধোঁয়ার দিকে তাকিয়ে বল্লো -

- আপনার মেয়ে একটা ছেলেকে ভালোবাসে! সেটা কী আপনি জানেন? (রিবণ)

চমকে উঠে আজমাইন সাহেব। মুহুর্তের মধ্যে ওনার চোয়ালের দাঁত গুলো শক্ত হয়ে এক হয়ে যায়। আগন্তুকের প্রতি ওনি কী রাগ করবে নাকি শান্ত হয়ে জিজ্ঞেস করবে কিছুই বুঝতে পারছে না!. আজমাইন সাহেব যতোই উথালপাতাল চলাফেরা করুক না কেন, ওনি ওনার মেয়েকে নিজের জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসে।.. তিনি শান্ত কন্ঠ জিজ্ঞেস করলো -

- ছেলেটা কে?
- যদি বলি আমি-ই সেই ছেলেটা. হিহিহিহি. কিছু মনে করবেন না তো? (রিবণ)
- আমি সিরিয়াস আমার মেয়েকে নিয়ে। (আজমাইন)
- আমিও তো সিরিয়াসলি বলছি। (রিবণ)
- কিন্তু!..
- কেন? আমার সাথে কী আপনার মেয়ের বিয়ে দিবেন না? (রিবণ)
- দেখো প্রতিটি বাবা চায় তার মেয়ে যেন সুখে থাকে। আর সুখে থাকার জন্য ভালো মানুষের প্রয়োজন। (আজমাইন)
- তাহলে কী আমি খারাপ মানুষ!. (রিবন)
- আসলে আমি তা বলি নি। (আজমাইন)
- আচ্ছা আমি আপনার মেয়ের সাথে রিলেশন করি না। আমাকে চুপ করিয়ে দিতে পারলেও তাকে তো চুপ করিয়ে দিতে পারবেন না.... শকুনের চোখ তার শিকারে পড়ে গিয়েছে.. অপেক্ষা মাত্র ছুঁয়ে যাওয়ার. হিহিহিহি...

(চলবে)

বিকেলের শেষ সময়, সন্ধ্যা হয়-হয় অবস্থা । এখনো হয় নি। আকাশ কিছুটা মেঘালা আকৃতি ধারণ করেছে। মস্ত বড়ো  ঘরের ভেতর অন্ধকার চির...
23/09/2025

বিকেলের শেষ সময়, সন্ধ্যা হয়-হয় অবস্থা । এখনো হয় নি। আকাশ কিছুটা মেঘালা আকৃতি ধারণ করেছে। মস্ত বড়ো ঘরের ভেতর অন্ধকার চিরস্থায়ী হয়ে রয়েছে। আমাদের সমাজে একটি বাক্য বেশ প্রচলিত আছে যে সন্ধ্যা লগ্নে ঘর অন্ধকার থাকা অলক্ষণ। আমি আবার এইসব লক্ষণ-অলক্ষণ বিচার করে চলাফেরা করি না। জানালার সামনে বই হাতে ইজি চেয়ারের উপর আরাম করে বসে আছি অনেকক্ষণ যাবত। এখন চেয়ার ছেড়ে উঠতে আলস্য লাগছে । আমি যদি এখানে আরাম করে বসে থাকি তাহলে কেউ এসে যে আমার রুমের আলো জ্বালিয়ে দিবে তেমন কেউ নেই। খানিকটা অস্বস্তির মধ্যেও রয়েছে তবে কারণ টা অন্ধকার নয়। আমার থেকে কিছু দূরে অবস্থান করা তরুণীকে নিয়ে। মাথা থেকে পা পর্যন্ত বোরকায় ঢাকা। দূর আকাশ থেকে প্রতিফলিত অস্পষ্ট আলোয় কিছুটা বুঝা যাচ্ছে যে মেয়েটা নীল কালারের বোরকা পরিধান করেছে। হালকা অন্ধকারে কিছু কিছু আলো দৃশ্যমান হয় কালো আকারে।

মেয়েটা এতক্ষণ বোরকার ভেতর থেকে কথা বলছিল, আমার থেকে বেশি দূরে তার অবস্থান নয়।নেকাবের ভেতর থেকে তার গলায় স্বর টা অস্পষ্ট হয়ে ভেসে আসছে আমার কানে। মেয়েদের গলার স্বর বিয়ের আগে এমনিতেই কতিপয় চিকন হয়ে থাকে৷ বিয়ের পর আবার গলার স্বর পরিবর্তন হয়ে মোটা কন্ঠে পরিনত হয়। এই সূত্র টা এখনো আমার মাথায় প্রতিসরিত করতে পারে নি।
গণিতের sin থিটা cos থিটা এবং tan থিটা এইগুলো আমার কাছে পানির ন্যায় সহজ মনে হলেও মেয়েদের সম্পর্কে জ্ঞান আমার একটু কম ই আছে৷ মেয়েদের সম্পর্কে জানার জন্য PHD করলেও মন্দ হয় না। যাক গে সেই সব কথা।

আমার দৃষ্টি যখন রক্তিম আকাশে, চেহারায় বিরক্তির প্রতিছবি বহন করছে তখনই মেয়েটা মুখের সামনের নেকাব টা তুলে ফেল্ল। মুহুর্তের মধ্যে আমার রূিদয়ে একটা প্রশান্তি ছড়িয়ে গেল। মনে হলো যে আশেপাশে বিদুৎ চমকে উঠেছে। এমন রূপবতী মেয়ে আমি খুব বেশি দেখেছি বলে মনে পড়ছে না। মাঝারি আকারের লম্বাটে মুখ। খাড়া নাক। লিপস্টিকের বিজ্ঞাপন হতে পারে এরকম পাতলা ঠোঁট! বড় বড় চোখ, চোখের পল্লব দীর্ঘ। তবে এই দীর্ঘ পল্লব যে নকলও নয়। সেটা আমি বেশ উপলব্ধি করতে পারছি। বর্তমান আধুনিক যুগের মেয়েরা নকল পল্লব চোখে পরে। কিন্তু এই মেয়েটার আচরণে আধুনিকতার ছুঁয়া একটু কম ই উদ্দেশ্যমান। তার বরফি কাটা চিবুক। ঠোঁটের ঠিক বাম পাশে কালো তিল দেখা যাচ্ছে। এটা কোন প্রকার কৃত্রিম তিল নয়, বাস্তবিক অর্থে সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক তিল।

- আমার নাম আলিফা। আলিফা রহমান রোহি। (আলিফা)

আমি মনে-মনে কয়েকবার বলে উঠলাম – আলিফা, আলিফা ।মুহুর্তের মধ্যে আমার তীর ভুরু সামান্য কুঁচকে গেল। কেন আমি মনে-মনে মেয়েটির নাম নিলাম! সেটাই বুঝতে পারলাম না। আমি কী মেয়েটির নাম মনে রাখার চেষ্টা করছি! কিন্তু কেন? দুবার প্রশ্নটা মাথায় ভিড় জমিয়েছে। তৃতীয় বার মনে হলো তার অস্বাভাবিক রূপ দেখে? পরক্ষণেই আবার মনে প্রশ্ন জাগলো যে কোন এক কুরূপা কালো মেয়ে যার চেহারায় মায়া নেই তেমন মেয়ে যদি তার নাম বলত তাহলে কী আমি তার নাম জপতাম মনে - মনে? প্রশ্নের উত্তর মিল্ল না। (রায়ান)

এইবার চিন্তা আসলো মেয়েটার নাম নিয়ে
“ আলিফা রহমান রোহি ” আলিফা অর্থ জানি যে, দয়াশীল, সহানুভূতিশীল, বন্ধুত্বপূর্ণ। রোহি শব্দের অর্থ? এটা জানা নেই আমার। মেয়ের নামের অর্থের সাথে কী বাস্তবিক ভাবে কোন মিল আছে? জানা নেই আমার তবে তার সাথে এইবার কথা বলা যেতে পারে। আমি একটু কেশে গলাটাকে পরিষ্কার করে নিলাম। (রায়ান)

- আলিফা নামটা কিন্তু বেশ জটিল। (রায়ান)

মেয়েটা মৃদুস্বরে হাসলো তবে সেই হাসির শব্দ তার কর্নদ্বয় পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল, আমার কান পর্যন্ত আসলো না তবে তার লজ্জা মাখা মৃদু হাসি কিছুক্ষণের জন্য তার সম্পর্কে ভাবিয়ে তুলেছে আমায়। মেয়েরা সাধারণত নিজের প্রশংসা শুনতে অধিক সাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এটার একটা জলজ্যান্ত প্রমাণ আমি পেয়েছি,,

গত তিন দিন আগে আমি যখন ক্লাস টপারের কাছে গিয়েছিলাম একটা বিষয় বুঝতে তখন সে আমাকে উৎকৃষ্ট করেছিল। ক্লাস টপার হচ্ছে মিম নামের সুন্দরী একটি মেয়ে। মেয়েটা যখন আমাকে পাত্তা দিল না তখনই আমার মনে পড়ল এই উক্তিটা- যে
“ কোন মেয়েকে নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসতে চাইলে তার প্রশংসা ভুরি ভুরি করুন ” আমি সময় নষ্ট না করে,, কিছুক্ষণ মিমের দিকে তাকিয়ে তার দেহের সমস্ত কিছুর উপর স্ক্যান করে সেটার বিবরণ বইয়ের ভাষায় দিতে শুরু করলাম। মিম কিছুক্ষণ বিরক্ত বোধ করলেও পরক্ষণে সে তার ফ্রেন্ড হওয়ার জন্য আমার দিকে তার নরম হাত টা এগিয়ে দিল। আমি সেইদিন ই বুঝতে পেরেছিলাম মেয়েরা নিজের প্রশংসা শুনতে বেশি মশগুল থাকে।

- আমার নামটা আপনার কাছে কেন জটিল মনে হলো সেটা কী জানতে পারি? (আলিফা)

মেয়েটার কথা শুনে যতদূর মনে হলো সে এতক্ষণ আমাকে নিয়েই ভেবেছিল,, আমার কথার মানে। কেন আমি তার সহজ সরল নামটাকে জটিল বানিয়েছি!

- শুনার ইচ্ছে থাকলে আমি প্রকাশ করতে পারি? (রায়ান)
- ইচ্ছে জেগেছে তাই জানতে চাই। (আলিফা)
- মানুষের নাম সাধারণত সহজ ভাষায় হয়ে থাকে যাতে করে ডাকতে বা উচ্চারণ করতে সুবিধা হয়৷ আপনার নামটাও ঠিক তেমনি সহজ কিন্তু..(রায়ান)
- কিন্তু কী? অর্ধেক বলে থেমে গেলেন কেন? (আলিফা)
- এত ব্যতি ব্যস্ত হচ্ছেন কেন? আমি বলব তো। প্রতিটি মানুষের নামের একটা না একটা অর্থ থেকেই থাকে, আপনার “ আলিফা ” নামের অর্থ হচ্ছে, দয়াশীল, সহানুভূতিশীল, বন্ধুত্বপূর্ণ এমনি কিছু। আসলে কী আপনার নামের অর্থের সাথে নিজের আচরণের কোন মিল আছে কী না জানা নেই আমার? (রায়ান)

মেয়েটা চুপ মেরে গেল। হঠাৎ আমার এই ব্যাচেলর বাসায় অচেনা আগন্তুকের আগমন তাও আবার সেটা একজন নারী। সময়টা কিন্তু সন্ধ্যা হয় হয়। এমনিতেই প্যারার মধ্যে আছি বাসা নিয়ে। এই শহরে হাতে গুনা কয়েকটা বাসা ছাড়া আর একটা বাসাও ব্যাচেলারদের ভাড়া দেওয়া হয় না। আমি অনেক কষ্টের পর বাসাটা ম্যানেজ করেছি। কিন্তু বাসায় থাকতে হলে বেশ কিছু রুলস আমায় মেনে চলতে হয়। তারমধ্যে একটা হলো মেয়ে নিয়ে কখনো বাসায় আসা যাবে না। সেটা নিজের বোন হলেও নয়। আমি এখন ভয়ে আছি একটাই যে বাড়িওয়ালা না জানি এই মেয়েকে আমার সাথে দেখে ফেলে। দেখতে না পারলেও খবর তার কাছে ঠিকই চলে যাবে। কেননা ওনার একটি মেয়ে রয়েছে। যে কি না ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে। তার টিউশনের দ্বায়িত্ব আমার উপর।

বাড়িওয়ালার মেয়েটার নাম হচ্ছে “ আনিসা জাহান ঋতু ”। সে আমার প্রতি কিছুটা আসক্ত। অল্প বয়সের মেয়েদের এই একটা রোগ লক্ষ্মণ করা যায়। নিজের উত্তেজনা কমাতে তারা একটা না একটা রিলেশন করেই থাকে। ঠিক তাই ঘটেছে ঋতুর সাথে,, মেয়েটা অতিরিক্ত পরিমাণে রোমান্টিক। ssc exam দেওয়ার আগ পর্যন্ত প্রেমের বাতাস তার দেহ এবং মন কোনটাই স্পর্শ করে নি। কিন্তু ইন্টারমিডিয়েটে পা রাখার সাথে সাথে তার মনের পাখা গজিয়েছে। যেখানে সেখানে উড়ে চলে যায় তবে স্থির হয়ে বসছে আমার রূিদয়ে। আমি তকে প্রাইভেট পড়াই physics subject । কিন্তু সে আমার কাছে থিউরি খুঁজে বায়োলজির। ব্যাপারটা হাস্যকর হলেও আমার কাছে এটা বেশ ভয়ংকর মনে হচ্ছিল।..

ঋতুর কথা এখন মনে পড়েছে কারণ সে ছাঁদে দাঁড়িয়ে কারো সাথে ফোনে কথা বলছে। তার লক্ষ্য ঠিক আমার রুমের দিকে। কিন্তু অন্ধকার থাকায় আলিফাকে সে দেখতে পায় নি। যদি তার নজর কাড়ে মেয়েটার তাহলে বাসাটা ত্যাগ করতে হবে আমায়৷ অনেকক্ষণ হলো আলিফা কিছু বলছে না। সে আঙুল দিয়ে বোরকায় খুঁটি নাটি করছে। কিছু একটা বলতে চাচ্ছে সে, কিন্তু বলতে পারছে না। আমি বিষয় টা বুঝতে পেরে বলি -

- কোন বিষয় নিয়ে আপসেট থাকলে আমায় বলতে পারেন? আর যা বলার দ্রুত বলেন কেননা কিছুক্ষণ পর বাড়িওয়ালার মেয়েকে আবার পড়াতে হবে। (রায়ান)
- কীভাবে যে বলি? আপনি কী প্রতিদিন এই সময় মেয়েটাকে পড়ান? (আলিফা)
- মাগরিবের আজান শেষ হওয়ার সাথে সাথে সে চলে আসে কিন্তু পড়ানোর রুটিনে সময়টা একটু দেরিতে। (রায়ান)
- মনে হয় মেয়েটা আপনাকে পছন্দ করে! (আলিফা)
- হঠাৎ এমন বল্লেন যে? (রায়ান)
- আমি বেশ কিছুক্ষণ যাবত বিষয়টা লক্ষ্য যে মেয়েটা আপনার রুমের দিকে প্রায়শই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে। (আলিফা)

বলতে-বলতে মেয়েটি হাসল। রূপবতী মেয়েদের হাসি বেশিরভাগ সময়ই অসুন্দর হয়ে থাকে। দেখা যায় তাদের দাঁত খারাপ, কোথাও উচু তো আবার কোথাও নিচু। হাসির সময় দাঁতের মাড়ি বের হয়ে আসে, তখন দেখতে তাকে ভালো দেখায় না। আমি হুমায়ূন আহমেদের লিখা কোন এক বইয়ে পড়েছিলাম যে দীত-মাড়ি ঠিক থাকলে মানুষের হাসির শব্দ হয় কিন্তু সে হাসি কুৎসিত। প্রকৃতি কাউকে সবকিছু বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত নয় ।

তবে আলিফা নামের মেয়েটিকে প্রকৃতি সমস্ত কিছু দিয়েছে। মেয়েটির হাসি সুন্দর। হাসি শেষ হবার পরেও মেয়েটির চোখ সেই হাসি ধরে রাখার ক্ষমতা রাখে,, বিষয়টা সচরাচর কোন রূপবতী মেয়ের সাথে ঘটে না। আমি বিব্রত বোধ করলাম। মেয়েটা হাসছে কিন্তু সেটা ছোট একটা কারণের জন্য। আমি আস্তে করে বল্লাম -

- আমার মতো একজন ব্যাচেলর ছেলের রুমে আপনার মতো এমন এক রূপবতী মেয়েকে যদি বাড়িওয়ালা কিংবা তার মেয়ে দেখতে পারে তাহলে আজকে-ই আমার শেষ দিন হবে এই বাসায়। (রায়ান)
- হিহিহিহি.. আমি কী রূপবতী রাজকন্যা নাকি? (আলিফা)
- আমার কাছে তো তাই মনে হচ্ছে। তবে কী জানেন এই বাসায় আমার আর থাকা হচ্ছে না। (রায়ান)
- কেন কেন? (আলিফা)
- কারণ.. ঋতু এখনই পড়ার জন্য আসবে। সে যদি আমাদেরকে একই রুমে দেখে তাহলে বিশাল আকারের কেলেঙ্কারির হয়ে যাবে। আপনি যেই কাজে আমার কাছে এসেছেন সেটা বলে বিদেয় হন তো বাপু। তাহলেই আমি বাঁচি। (রায়ান)
- সত্যি বলতে আমার একটি বাসা প্রয়োজন। থাকার জন্য। (আলিফা)
- এখানে আমি কী করতে পারি আপনার জন্য? (রায়ান)
- তেমন কিছু না শুধু আপনার রুমে আমাকে থাকার জন্য একটু জায়গা করে দিবেন। এতটুকুই যথেষ্ট। (আলিফা)

মেয়েটার কথা শুনে আমার ভিষণ পরিমাণে হাসি পাচ্ছিলো। বলে কী সে? ওর সাথে রুম শেয়ার করার জন্য! যেখানে রুমে নারী প্রবেশ করানো নিষেধ সেখানে ওনাকে আমার রুমে জায়গা দিব? ভাবা যায়? মেয়েটা আমার উত্তরের অপেক্ষায় বসে আছে এটা তার চোখ দেখে বেশ বুঝতে পারলাম। আমি সময় নষ্ট না করে বলতে থাকলাম -

- যদি কারো মন খারাপ থাকে তাহলে আপনার এই আজব মার্কা কথা শুনে অবশ্যই হেসে ফেলবে। (রায়ান)
- হাসার মতো কোনো কথা তো আমি বলি নি? (আলিফা)
- আপনি কী বিবাহিতা নারী? দেখে তো মনে হচ্ছে না? (রায়ান)
- জি না আমি এখনো পাকাপোক্ত সিঙ্গেল আছি। (আলিফা)
- আমাকে দেখে কী আপনার বিবাহিত পুরুষ মনে হচ্ছে? (রায়ান)
- মনে তো হচ্ছে না, তবে এতটুকু বিশ্বাসের সাথে বলতে পারি যে আপনার গার্লফ্রেন্ডের অভাব নেই। (আলিফা)

রায়ান বিরক্তিকর চোখেমুখে উঠে দাঁড়ায়। মেয়েটার দিকে আরেকবার রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে, অগোছালো টেবিলের উপর থেকে নিজের মোবাইলটা হাতে নিলো। ছোট একটা মেসেজ এসেছে ইমেইল বক্সে। রায়ানের চোখ জোরা ছানাবড়া হয়ে গেলো মেসেজের সাথে সাদাকালো আলোকচিত্র আগন্তুকের ছবিটা দেখে।

“ তিনশো নিরানব্বই (৩৯৯) নাম্বার কমপ্লিট, চারশো নাম্বার টার্গেট পূরণ করার আগেই তোমার টিকেট কাটা হয়ে যাবে, শহরে অচেনা আগন্তুকের আগমন, আবহাওয়া ভালো যাচ্ছে না, মহানগর ঢাকা পুলিশ আমাদের ১৭ জন লোক ধরতে সক্ষম হয়েছে। তোমার আশপাশে বিপদ অপেক্ষা করছে। পিছনে না তাকিয়ে নিজ গন্তব্যে চলে আসো। life no long.... ”

পিস্তলে বুলেট লোড করার ভয়ংকর শব্দে রায়ান পিছনে ফিরে তাকালো। তাকে অবাক করলো আলিফা নামের অচেনা মেয়েটার কান্ডে। ব্ল্যাক ড্রাগন, এম-এট্টিন পিস্তল তাক করে, বোরকা পড়া মিষ্টি মেয়েটা ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। রায়ান অতিদ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছালো। কিছু না ভেবেই আলিফা ট্রিগারে চাপ দিলো, ফচাৎ করে একটা শব্দ হলো গরম বুলেট রায়ানের বাহু স্পর্শ করলো, আহ্ করে ব্যথায় কুকড়ে উঠলো রায়হান। কলিজা ফেটে তাজা রক্ত বের হওয়ার মতো মরণ যন্ত্রণা মুহূর্তের মধ্যেই অনুভব করলো সে। আলিফা রিলোড নিয়ে দ্বিতীয়বার ট্রিগারে চাপ দেওয়ার আগেই, টেবিলের উপর থেকে একটা বই তার দিকে ছূড়ে মারে রায়ান। মুটেও মিস হয় নি তার টার্গেট। আলিফার হাত থেকে পিস্তলটা পড়ে যাওয়ার সাথে সাথে রায়ান সেখান থেকে নিজেকে আত্নগোপন করার জন্য দৌড়ে ছাঁদ থেকে নিচে লাফ দিলো। “ ওহ্ শিট ” বলে আলিফাও রায়ানের পিছু নেয়, কিন্তু তার বৃথা চেষ্টায় রায়ানকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করলো। ততক্ষণে আলিফার চিৎকারে তার টিম ছুটে এলো। মোট তারা ৮ জন। আলিফা একা তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলো।

মূলত আলিফা হচ্ছে আন্ডারগ্রাউন্ডের একজন দ্বায়িত্ববান অফিসার, সে চিটাগং শহরে নিজের স্থায়িত্ব করেছে। বাংলাদেশের একজন ভয়ংকর খুনীকে গ্রেফতার করতে সে ঢাকায় এসেছে তার টিম নিয়ে। অনেক সংবাদ পত্রে এসেছে এই খুনী এই পর্যন্ত তিনশো আশির উপর খুন করেছে, প্রতিটি খুন একই স্টাইলে করা হয়েছে,.. খুনী খুন করার পর পাশে লিখে যায় “রিবণ ইস নট অ্যা গেম”। রিবণ হচ্ছে খুনীর আসল নাম। বর্তমানে সে যেখানে সেখানে নিজের নাম এবং পরিচয় গোপন রেখে বসবাস করছে।

“ রায়ান মানে রিবন? ” এটাই কী তাহলে রহস্য?..
..........

চলবে

লেখক : রাজা ভূইয়া (মি.440)
গল্প : গেম অফ পাওয়ার
পাঠ : ০১

রাতের শহর নেমে এসেছে ঝড়ের রূপে। বজ্রপাতের ঝলকানিতে ভেসে ওঠে চারপাশ— একটা টেবিল, দুটো চেয়ার, আর মাথার উপরে দপদপে বাল্ব। ক...
14/09/2025

রাতের শহর নেমে এসেছে ঝড়ের রূপে। বজ্রপাতের ঝলকানিতে ভেসে ওঠে চারপাশ— একটা টেবিল, দুটো চেয়ার, আর মাথার উপরে দপদপে বাল্ব। কেউ বসে আছে ধোঁয়া ছেড়ে সিগারেট টানছে, কেউ দাঁড়িয়ে আছে ছায়ার আড়ালে।

হঠাৎ অন্ধকারে গম্ভীর কণ্ঠ—
“বিশ্বাসঘাতকতা একবার করলে শাস্তি মৃত্যু নয়…
বরং বারবার মৃত্যুর স্বাদ দেওয়া।”

চারদিক থমকে যায়। চোখে চোখ রাখা, ঠোঁটে বিষাক্ত হাসি— আর গুলির নল কপালের কাছে ঠেকানো।

অন্য প্রান্ত থেকে শোনা যায় ঠাণ্ডা গলায় আরেকটি কণ্ঠ—

“ক্ষমতা হাতে এলে শত্রু থাকে না, থাকে শুধু খেলোয়াড়।”

এক মুহূর্তে ঝড়ের শব্দ ঢেকে যায় রক্তের চিৎকারে। রাতের আকাশে উড়ে যায় গুলির শব্দ, বাতাসে মিশে যায় বিশ্বাসঘাতকতার গন্ধ। কেউ খুঁজছে নিজের হারানো ভালোবাসা, কেউ লুকাচ্ছে মায়ের চোখের রহস্য, আর কেউ অপেক্ষা করছে শেষ চালটা দেওয়ার— যা বদলে দেবে সব হিসেব।

শেষ রাতে সবাই এক জায়গায় দাঁড়াবে…
এবং এক ভয়ংকর হাসি ভেসে আসবে—
“আজকের খেলা আমি জিতব,
কিং একটাই হবে…

বাকিরা শুধু ইতিহাস।”

"গেম অফ পাওয়ার"

22/08/2025

বৃষ্টি নামলে নদী ভরে যায়। আজ আমায় যদি বন্দি করো, কাল শহর ভেসে যাবে আমার নামে। আমি রাজা আমি ই গ্যাংস্টার , হিহিহিহি

31/12/2024

2024 is the dark chapter of my life 🖤
this year I lost my father 💔
I love you so much baba ❤️‍🩹

28/12/2024

গভীর রাতে অন্ধকার শহরটা কঠিন ভয়ংকর। আলিফার মনে তোমার প্রতি বিশ্বাস জেগেছে, আশা করি তুমি তা ছিন্ন করবে না। তাকে বাঁচিয়ে রাখো, আমার শহরে এসেছে আমার সাথে মাইন্ড গেম খেলতে সে হয়তো জানে না আই এম অ্যা মাস্টার মাইন্ড গেমার।

17/07/2024

এত ভয়ংকর নিউজ ফিড আমি আমার লাইফে কোনো দিন দেখি নাই 💔🙂

13/07/2024

# গল্প :- KGF of Diamond City. 27
# লিখা :- RAJA Bhuiyan. (মি.440)
# পর্ব :- ২৭ ............

গল্পের লাস্টে সবাই চায় মেইন ভিলেনের সাথে নায়কের ফাইট। কিন্তু এই গল্পে না ছিল নায়ক আর না ছিল ভিলেন। অস্তিত্ব ছিল একটার-ই মাস্টার মাইন্ড দিয়ে অন্যের রাজ্য নিজের আওতায় এনে সেটাকে স্থাপন করা।...

ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। মাইন নং : 04 - বলা হয়ে থাকে KDF শহরের সূর্য নাকি সুস্পষ্ট। আর চার নং মাইন ছিল ঠিক পূর্ব দিকে। সূর্যের হলদে-সোনালি আভা ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। সেই আলোয় লক্ষ্যমান বেঁলে মাটিতে সুভা পাচ্ছে যোদ্ধের পোশাক পরিধান করা শত-শত যুদ্ধার লাশ। তাজা রক্তের স্রোতে ধূলিকণা গুলোও লাল আভা ধারণ করেছে। ডায়মন্ড সিটির চার নাম্বার বর্ডারে যুদ্ধাদের লাশ দাফন করার মতো জায়গা হচ্ছে না। যারা জীবিত রয়েছে তাদের মধ্যে থেকে নেতা নির্বাচিত হওয়া প্রধান যোদ্ধা অভিমুখী “ হায়দার ” ঝুলে আছে শিকলে বাঁধা লোহার আস্তরণে। তার সাথে রয়েছে আরো বেশ কিছু উপদেষ্টা, প্রধান সেনাপতি, সকালের অবস্থা প্রায় করুন। তাদেরকে চোখের ইশারায় পাহারা দিচ্ছে রাশমিন বাহিনীর কিছু সেনা সদস্য।...

ধূলিকণা আকাশ পানে উড়িয়ে, নির্বিঘ্নে সূর্যের তাল রেখা মিলিয়ে, ঘোড়া সাওয়ার হয়ে আসছে সমস্ত বীরদের বীর, যুদ্ধের ময়দানের সাহসী এক যুদ্ধা, যার টার্গেট কখনো মিস যায় না, ডায়মন্ড সিটির রাজা এবং একমাত্র রক্ষক “ কর্ণোয়েল রকি ”। হালকা বাদামীর সাথে ব্ল্যাক কালারের ঘোড়ার পিঠে চড়ে রক্ষণ বেগে সাহসী বীর, নিজের পছন্দের বন্দুক “ M1287 ” কাঁধে নিয়ে আসছে। চোখে মুখে নেই তার ভয়। মৃত্যুর জমের সাথে যেন তার আগেই দেখা হয়ে গেছে। মন এবং চোখ কোনোটায় নেই বিন্দু মাত্র ভয়!. বুক ভর্তি সাহস নিয়ে বীরের বেশে ঘোড়ার পিঠ থেকে নেমে দাঁড়ালো রকি। সূর্যের তাপ তার চোখ মুখ স্পর্শ করছে। সামান্য বিরক্ত নিয়ে সে কপাল থেকে হাত উঁচু করে সূর্যটা দেখার চেষ্টা করলো। সকালের ঝাঁঝালো সূর্যের তাপ যেন তার মাথাটায় রক্ত তুলে দিয়েছে৷ নিজের মাথাটা শান্ত করার জন্য একটা সিগারেট জ্বালাতে জ্বালাতে হায়দারের দিকে এগিয়ে গেল। বেশ উঁচুতে ঝুলে আছে হায়দার। রকি কথা বলতে চায় ওর সাথে। তাই সে চোখের ইশারায় একজন গার্ড কে নিচে নামাতে বল্লো। গার্ড ঠিক তাই করলো। এখন মোটামুটি সামনাসামনি রয়েছে দুজন কিন্তু দুজনের সিচুয়েশন আলাদা, একজনের ঠোঁট বেয়ে তাজা রক্ত ঝরার ছাপ, আরেকজনের ঠোঁট জ্বলন্ত সিগারেট।.. রকি মাটিতে পা ঘষতে ঘষতে ঠোঁট টান দিয়ে হাসলো। হায়দারের চোখে মুখে এসেছে রাগের আভা সে গলার স্বর চিকন করে বেশ জোরেই বল্লো
“ সেদিন ছেড়ে দিয়ে ভুল করেছিলাম তোকে! জানতাম না সাপের গর্তে ইদুর এসে হানা দিবে। তোকে সেদিনই মেরে দেওয়া উচিত ছিল বে**শ্যা মাগ**র পোলা.. ”

হায়দার মনে হয় না কথাটা শেষ করতে পেরেছে এর আগেই রকির পিছনে থাকা রাশমিন বাহিনীর সকলে নিজেদের রাইফেল গুলো ঠিক করে গুলি করার পজিশন নিয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রিগারে চাপ দেওয়ার অনুমতি বাকী!.. রকি সিগারেটে লম্বা টান দিতে দিতে বল্লো -
“ আমার মা তোর মতো কাপুরুষের সাথে ঘাট পর্যন্ত যায় নি এটা আমি বিশ্বাস করি। আর জন্ম তো দিয়ে গেছে একটা সিংহ। আমি তোর সাথে কথা বলে সময় নষ্ট করতে চাই না কারণ আমার সময়ের মূল্য অনেক। তোর মুখ দিয়ে আরেকটা শব্দ উচ্চারণ হবে আর পিছন থেকে রাশমিন বাহিনীর রাইফেল থেকে শত-শত বুলেট। তুই হয়তো জানিস না মৃত্যু তোর নিকটে! ”

পিছন থেকে নিলয় জোরেই বলে উঠলো - ভাই আপনি just অনুমতি দিন, শালার কন্ঠনালীতে বুলেট পুঁতে দিই।

বাতাসের বেগে হাসলো হায়দার। রকি কিছুই বল্লো না। বন্দুকটা কাঁধ থেকে নামিয়ে পকেট থেকে বুলেটের প্যাকেজ গুলো লোড দিয়ে নিলো। এরপরই আগ্রহের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জিজ্ঞেস করলো - “ তুই যেন কী বলছিলি তখন? একটু আবার বল তো!. ” (রকি)

হায়দার ঢুক গিলে পূর্ব দিকের সূর্য থেকে আসা আলোকরশ্মির মুখপাতে তাকিয়ে বল্লো -

- আমি জানি “ আমি মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে আছি ” কিন্তু আমাকে শেষ করে তোর কোনো লাভ হবে না! কারণ হায়দারের দেহ মারা গেলেও তার মস্তিষ্ক মারা যাবে না। হাহাহাহা.. আমি মরার জন্য যেমন প্রস্তুত ঠিক তেমনই তোর KDF ধ্বংস করার জন্যও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। হাহাহাহাহা.. তুই সহ তোর সম্রাজ্য ধ্বংস হবি। (হায়দার)

হায়দারের বিছছিরি মার্কা হাসি ভালো লাগে নি রকির। রাগ তার মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। সে বন্দুক সোজা করে হায়দারের বাম পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ঝুলে থাকা কয়েদির বুক বরাবর গুলি ছুঁড়ে, বন্দুকের বুলেট রকির সাথে বেইমানি করলো না, বাম পাশের কয়েদি শেষ। এবার হায়দারের দিকে বন্দুক তাক করলো.. বেশকিছু সময় অতিবাহিত হলো কিন্তু হায়দারের চোখে মৃত্যুর ভয় দেখতে পেল না রকি। সিগারেটের ধোঁয়া বেরুচ্ছে, সূর্যের তীব্র আলো সেটা গ্রহণ করে নিচ্ছে, ঠিক তেমন করে পরপর দুটি বুলেট ডান পাশের কয়েদি গ্রহণ করে মৃত্যুর সাগরে পারি দিয়েছে। হায়দারের সঙ্গে থাকা দুই কয়েদির মৃত্যু সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। এইবার তো হায়দারের পালা! তার চোখে মুখে ভয়ের আভা নেই, বিষয়টি রকিকে হতাশ করেছে। সে বন্দুক মাটিতে ফেলে নিলয় কে ডাক দিল। মুহুর্তের মধ্যে নিলয় দৌড়ে আসে। রকি এইবার বলে -

- বেচারাকে আমি মারতে পারবো না। ওর চোখে আমি ভয় দেখতে পাচ্ছি না। এখন আমি কামনা করছি হায়দারের কঠিন মৃত্যু. ওরো এক পা আর এক হাত কেটে গাংচিলকে ছিটিয়ে দে। তার শরীরের পু** অঙ্গ কেটে আগুন লাগিয়ে দে, এরপর রক্তাক্ত দেহটা লাল মরিচের গুঁড়োয় ফেলে দিবি, তবুও যদি সে কষ্ট না পায় তাহলে গরম তেলে ছেড়ে দিবি। (রকি)

সিগারেটে লাস্ট টান মেরে রকি আর পিছন ফিরে তাকালো না। রকিকে এইভাবে চলে যেতে দেখে হায়দারের হাসতে হাসতে পেট খারাপ করার মতো অবস্থা। রকি তবুও কিছু বল্লো না। সে প্রায় ঘোড়ার কাছাকাছি চলে এসেছে। তখন ই হায়দার বলে উঠে -

- “ মায়ের দু*ধ খেয়ে থাকলে সামনে আয় আমাকে মার, আর যদি পরপুরুষের সঙ্গে থেকে তোর মা তোকে জন্ম দিয়ে রাস্তায় ফেলে চলে যায় তাহলে আমাকে না মেরে তুইও চলে যা। কি রে খানক** ছেলে কথা কানে যায় না!. পিছনে তাকা আমি তোর মার ভা**তার বলছি.. মাদার***দ. তোকে.... (হায়দার)

হায়দার আর একটা শব্দও উচ্চারণ করতে পারলো না, রকি সব কথা সহ্য করে নিল কিন্তু শেষ কথাটা তার পায়ের রক্ত মাথায় তুলে দিয়েছে। সে সেকেন্ডের মধ্যে কোমড়ে গুঁজে থাকা পিস্তল টা বের করে হায়দারের দিকে না তাকিয়ে ট্রিগারে চাপ মারে, পিস্তলের ম্যাগাজিন আগে থেকেই রিলোড দেওয়াই ছিল। গরম বুলেট সরাসরি হায়দারের কন্ঠ নালি স্পর্শ করেছে৷ তার গলা থেকে গলগল করে তাজা রক্ত বয়ে যাচ্ছে। রকি শেষ মুহুর্তে একটা কথা বলে ঘোড়ায় চড়ে.!

“ রকি এবং রকির KDF এর দিকে চোখ ফেলা মানে আগুনে পা পুরিয়ে ফেলা, i am the second god of this universal ” (রকি)

রকি আবাও বীরের বেশে নিজ মঞ্জিলের দিকে অগ্রসর হলো। পিছনে রয়ে যায় তার শত্রু পক্ষ, হয়তো কেউ মৃত নয়তো জীবিত।।...
.......

“ আমি আপনাকে আগেই বলেছিলাম। KDF এ যুগের পর যুগ রাজত্ব করার মতো শক্তি রকির-ই ছিল। আর ওর কারণে ই আবারও KDF ধ্বংস হওয়ার পথে!. ”
(রাজা)

দুহাজার তিন সাল শেষের দিকে ডিসেম্বরের শেষ নতুন বছরের নতুন মাস জানুয়ারি শুরু.. মধ্যে দিয়ে এক রাতের ব্যবধান “ ৩১ শে ডিসেম্বর ”। হঠাৎ করেই সরকার এই সিদ্ধান্তে এলো যে রকিকে আর কোনো ভাবে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব না। তার সাথে লড়াই করতে গেলে সিস্টেমের বাইরে এসে রুলস রেগুলেশন ভেঙ্গে, ক্রিমিনালদের ভাবনা চিন্তা করে তারপর যুদ্ধের ময়দানে যেতে হবে। এর জন্য সরকার জেল থেকে পুরোনো দক্ষ ক্রিমিনালদের সাহায্য নিয়ে রকির বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ ঘোষণা করলো। রকি সাবধানতার সাথে নিজের ফোর্স তৈরী করা শুরু করলো।

সরকার, নিজের পক্ষে নিয়েছে, আর্মি, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী। এদেরকে একত্রে বলা হয় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী। প্রধানমন্ত্রী আফরোজা সুলতানা মিশির একটাই বক্তব্য - “ রকির ব্যপারে না কেউ লিখতে পারবে আর না কেউ পড়তে পারবে!. তার নাম ইতিহাসের পাতায় থাকবে না। তাকে মারতে গেলে কেউ যদি বাঁধা দেয় তাহলে ওদেরও মেরে দাও, প্রয়োজন পড়লে রকির সাথে থাকা সবাইকে মেরে ফেল.। আমি সেনাবাহিনী প্রয়োগ করছি এবং মৃত্যুর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বাক্ষর করেছি, এশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রিমিনাল রকির উপর মৃত্যুর পরোয়ানা। ” (আফরোজা)

রকি সব জেনে গিয়েছে। আগে থেকে তার যা প্ল্যান ছিল সে অনুযায়ী তার জমা করা সমস্ত ডায়মন্ড এবং গোল্ড মায়ানমার থেকে আফ্রিকা পাঠিয়ে দিল। নিজের রাজ্য নতুন করে তৈরী করার জন্য আবারও এখানে আসতে হবে যার কারণে যুদ্ধের ময়দানে না যেয়ে অন্য পথ বেছে নিল রকি৷...

এক রাতে বিশ লক্ষের চেয়েও বেশি শ্রমিক মায়ানমারের বর্ডার ক্রস করে ভূটান এবং মায়ানমারে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। রকি নিজেকে লুকিয়ে রাখলো। চোখের সামনে তার KDF শহরটা, চাইলেও ছোঁয়ে দেখার সুযোগ নেই। নতুন রূপে ফিরে আসার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। মৃত্যু তার নিবেদ্য অবস্থান পরিবর্তন করলো...

অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রী আফরোজা সুলতানা মিশি রেডিওর সামনে বসে আছে, ওপাশ থেকে জোর গলায় শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় হুঙ্কার দিচ্ছে - “ ম্যাম বেসামরিক লোকজন এখানে একটাও নেই, মনে হচ্ছে রকি তাদের সবাইকে সুরক্ষিত স্থানে রেখে দিয়েছে। আপনাকে কিছুক্ষণ পর পর আপডেট দেওয়া হবে। ” (শ্যামল)

সেনাবাহিনীরা রকির প্রাসাদের কাছে এসেছে, ওপর থেকে অর্ডার এসেছে সম্ভব হলে রকিকে মৃত না জীবিত নিয়ে যেতে হবে। সশস্ত্র বাহিনী প্রাসাদে প্রবেশ করছে, প্রতিরোধের জন্য সাবধান অস্ত্র! তারা রকির ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে। দরজা লাগানো, কয়েকটা লাথি এবং স্টেনগান দিয়ে বারি মারে, দরজা খুলে যায়। ফোর্সেরা ভিতরে গেল। কিন্তু কোথাও রকির চিহ্নটাও খুঁজে পেল না। রুম একেবারে খালি, দেয়ালে ঝুলছে রকি এবং আলিয়ার বিয়ের ছবি। সেখানে উপস্থিত ছিল আলভি, সে একটা ফটো ফ্রেম নিয়ে নিল। রুমের সম্পূর্ণ ফ্লোর গোল্ডের এবং দেয়ালগুলো ডায়মন্ডের তৈরী।.. সবার মাথায় এখন একটা ই প্রশ্ন লক্ষ লক্ষ শ্রমিক নিয়ে রকি কোথায় গেছে?...
.............

পনেরো ঘন্টা পর রাত প্রায় বারোটার কাছাকাছি, বঙ্গোপসাগর থেকে রকি তার জানান দিচ্ছে। নৌবাহিনীর প্রধান তার বাহিনী প্রস্তুত করে, রকি বর্তমানে অবস্থান করছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সাবমেরিনে। যেখানে নৌবাহিনীদের প্রধান ক্যাম্প। সেখানে রকি কীভাবে? জেনারেল ওখানকার “ সিএনএস ” কে কল দিলে ফোন তুলেন পরিচিত কন্ঠ। এপাশ থেকে “ হ্যালো ক্যাপ্টেন ” উচ্চারণ হওয়ার সাথে সাথে ওপাশ থেকে “ সিএনএস ” এর ভয়কাতর কন্ঠ থেকে ভেসে এলো একটা-ই কথা -

“ জেনারেল!. আমরা বিপদে রয়েছি, আমার সাথে রয়েছে আরো ‘ তেপ্পান্ন জন ’ সবার মাথায় রকির লোকজন বন্দুক ঠেকিয়ে রেখেছে। আকাশ পথ থেকে রকির উপর হামলা করলে আমরা সবাই মারা যাব, আমাদের সাবমেরিন অতি দ্রুত বঙ্গোপসাগর পেরিয়ে খাগড়াছড়ির দিকে প্রভাবিত হবে। আপনি এ ব্যপারে আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্টকে জানান ”

জেনারেল সাথে সাথে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যপারটা জানায়। শ্যামল সাহেব ভেবে পায় না রকি কীভাবে কাজটা সম্পূর্ণ করে ফেলল? তিনি প্রধানমন্ত্রী আফরোজা সুলতানা মিশিকে জানালো। তিনিও চিন্তায় আসক্ত!. এখন একটাই পথ, আকাশ পথ থেকে রকি অবস্থান করা সাবমেরিনের উপর হামলা করা। কিন্তু সেটা করলে নিষ্পাপ দেশ রক্ষকরা মারা যাবে, এটা করা ঠিক হবে না। কিছুই ভেবে পায় না আফরোজা সুলতানা মিশি! এখন কী রকিকে রকির মতো থাকতে দিবে? নাকি, যুদ্ধ করবে!...

রাত যত গভীর হয় চিন্তা তত বেড়ে চলে। অবশেষে দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বুঝ পরামর্শ করে প্রধানমন্ত্রী আফরোজা সুলতানা মিশি এই সিদ্ধান্তে এলো যে রকির সাবমেরিনে আকাশ পথে হামলা করা হবে। দেশ যুদ্ধারা শক্রর কারণে শহীদ মর্যাদা লাভ করবে।...! যেই কথা সেই কাজ বিমানবাহিনীর প্রধান ক্যাপ্টেনকে অনুমতি দিয়ে দেওয়া হলো.. সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেলের মনে হলো প্রধানমন্ত্রীর ডিসিশনটি সঠিক নয়.. তবুও ওনার কিছু করার ছিল না.. হঠাৎ করেই আকাশ থেকে মিসাইল ছোঁড়া হলো... আর সবকিছু শেষ হওয়ার পথে.!
...............

এতটুকু বলে থামলো রাজা সাহেব.. গল্পটা এই পর্যায়ে এনে উপস্থিত অনেকের চোখে পানি নিয়ে এসেছে, মানুষ একজন ক্রিমিনালের জন্যও কান্না করতে বাধ্য। মিস্টার কামাল এক প্রকার জোর করেই সিগারেট জ্বালালেন, 'রকির ধ্বংস' ওনি যেন এটা মেনে নিতে পারছে না। জয়ন্তীকা দাসেরও মন খারাপ হয়ে গেল। কিছুই করার নেই গল্পটাই ছিল এমন!..

- তাহলে কী এখানেই শেষ রকির রাজত্ব!. (জয়ন্তীকা)

রাজা সাহেব চুপ করে আছেন, তার নিজেও খারাপ লাগছে, তিনি যখন এই কাহিনীটুকু লিখেন তখন তার কলম যেন চলছিল না। লাইফে প্রথম কোনো উপন্যাস লিখতে যেয়ে ওনার মন কেঁদেছে। কই আগে তো কতই গল্প, উপন্যাস লিখেছে কিন্তু কখনো তো এমন মনে হয় নি কান্না করা প্রয়োজন? তাহলে এই উপন্যাসের মধ্যে কী লুকিয়ে আছে!.

- কী হলো রাজা সাহেব! আপনি কিছু বলছেন না কেন? এরপর কী হয়েছিল? রকি কী শেষ! কিন্তু তার তো শেষ হওয়ার কথা ছিল না? সে তো সবাইকে আত্নবিশ্বাসী করে দিয়েছিল, তার মৃত্যুটা কল্পনা মাত্র। তাহলে কী হলো? (কামাল)

মিস্টার কামাল পাগলামো করা শুরু করে দিয়েছে। জবাব দেওয়ার জন্য রাজা সাহেব মুখ তুলে তাকায়, প্রথমেই বলে উঠলেন “ বনের মধ্যে অন্য প্রাণী কী সিংহের থেকে রাজত্ব কেঁড়ে নিতে পারে!. ” ব'লেই তিনি সামনে থাকা বইটি বন্ধ করে টেবিলে ছুঁড়ে মারে। নিঃশব্দে একটি সংবাদপত্রের অংশ জয়ন্তীকা দাস এবং কামাল সাহেবের উদ্দেশ্যে তুলে ধরে.. জয়ন্তীকা দাস স্থীর চোখে তাকিয়ে রইল।

“ সেদিন যে রকি বেঁচে গিয়েছিল এটা পরের দিন ব্রেকিং নিউজ হিসেবে “ প্রথম আলো ” পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এটার জলজ্যান্ত প্রমাণ হচ্ছে এই সংবাদপত্রের অংশ ” রাজা সাহেবের হাতে থাকা পত্রিকার অংশে ব্রেকিং নিউজ হিসেবে ঠিকই রয়েছে রকির বেঁচে যাওয়ার কথাটা!. জয়ন্তীকা দাস জবাব দিল না। রাজা সাহেব আবারও বল্লেন - 'ঘটনাটা চোখের সামনে না ঘটায় আমি অতটা ক্লিয়ার করে লিখতে পারি নি ' তবে সঠিক তথ্য অনুযায়ী আমি সেটা তুলে ধরেছি। -!
................

রাত প্রায় ১'টা বাজে। হুট করেই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নির্বাহী পরিচালক ‘ জনি লিভস্টোম ’ এ'র কল এলো প্রধানমন্ত্রী আফরোজা সুলতানা মিশির কাছে। এত রাতে নিজের পারসোনাল Whatsapp নাম্বারে জনি লিভস্টোমের কল আসার বেশ চমকে উঠে প্রধানমন্ত্রী। ওনার পাশের চেয়ারে বসা ছিল বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট। তাদের দুজনের মুখ হা' হয়ে গিয়েছে! প্রধানমন্ত্রী কল রিসিভ করেন ' তিনি হ্যালো বলার আগেই ঐ পাশ থেকে জনি লিভস্টোমের কড়া কন্ঠে ইংরেজিতে কিছু কথা শুনা গেল -

“ I am Johnny Livestorm, Executive Director of the United Nations Security Council from America. The largest diamond producing factory in Asia and other continents is called KDF. Which is located in Bangladesh. KDF is owned by a young man named by 'Rocky'. Suddenly he stopped supplying diamonds. There is now a shortage of diamonds in major countries of the world. When the businessmen contacted Rocky, he informed that the Bangladesh government had issued a death warrant against him. For this Rocky Diamond has stopped supply. If anything happens to Rocky then other countries of the world will declare war against your country. I don't know what you're going to do, but I want Rocky to be unharmed. Rocky is with China, Japan, India, America, London, France and the big countries of the world. I want the peace of the people of the world.I Hope you understand. ”

অনুবাদ: আমি আমেরিকা থেকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নির্বাহী পরিচালক জনি লিভস্টোম বলছি।এশিয়ার এবং অন্যান্য মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় ডায়মন্ড উৎপন্নের কারখানার নাম KDF. যেটা বাংলাদেশে অবস্থিত। KDF এর মালিক রকি নামের এক যুবক। হঠাৎ করেই সে ডায়মন্ড সাপ্লাই করা বন্ধ করে দিয়েছে। পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলোতে এখন ডায়মন্ডের অভাব পড়েছে। ব্যবসায়ীরা রকির সাথে যোগাযোগ করলে সে জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ সরকার তার বিরুদ্ধে মৃত্যুর পরোয়ানা জারি করেছে। এই জন্য রকি ডায়মন্ড সাপ্লাই বন্ধ করে দিয়েছে। রকির যদি কিছু হয় তাহলে পৃথিবীর অন্যান্য দেশেগুলো আপনার দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে। আমি জানি না আপনি কী করবেন, তবে রকির যেন কোনো ক্ষতি না হয় এটাই আমি চাইবো। রকির সাথে রয়েছে ' চিন, জাপান, ভারত, আমেরিকা, লন্ডন, ফ্রান্স থেকে শুরু করে পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলো। আমি চাই পৃথিবী বাসীর শান্তি প্রতিষ্ঠা। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।!.

প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্ট মনোযোগ দিয়ে জনি লিভস্টোমের কথাগুলো শুনলো। তিনি কিছু না ভেবে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলো এবং বলে দিলেন “ অপারেশন বন্ধ করা হোক ”! মাঝ পথে এসে কী হলো যার কারণে প্রধানমন্ত্রী তার সিদ্ধান্ত থেকে দূর সরে গিয়েছেন কিছু ই বুঝতে পারলো না শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়!.. তিনি অপারেশন বন্ধ করে দিলেন। সশস্ত্র বাহিনীর বীর সেনারা ফিরে চল্লো তাদের নিজ গন্তব্যে।

বাংলাদেশ সরকারের কাছে রকি একজন ক্রিমিনাল হলেও অন্যান্য দেশের কাছে রকি হচ্ছে বিজনেস ম্যান। যেখানে ডায়মন্ডের দাম আকাশ ছুঁই অবস্থা সেখানে রকি তার ডায়মন্ড ৩০% ছাড়ে সাপ্লাই দেয়। এই কারণেই সব দেশের ব্যবসায়ীদের কাছে রকি একটা ব্র্যান্ড মাত্র।....

(সেদিনকার পর থেকে বাংলাদেশ এবং KDF দুইটা দুই দেশ হিসেবে সৃকৃতি পায়)
............

আজ প্রায় ১৯' বছর হয়েছে রকির কোনো খুঁজ খবর পৃথিবীবাসী পায় নি।... তাহলে সেখানে কার রাজত্ব কাল চলছে! হবে মনে হয় নতুন কোনো রহস্যের মায়াজাল।

(অর্ধ সমাপ্ত) (হবে নাকি আরেকটা সিরজ)

লিখা : Raja Bhuiyan (mr.440)

Address

Dhaka
Gazipur
1721

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when রায়ান রহমান রাজা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to রায়ান রহমান রাজা:

Share