30/07/2025
(নগ্নতার বিশ্বায়ন— সিরিজ-৫:)
"মোবাইল, টিকটক ও বাচ্চাদের হাতে বিকৃত বিনোদনের বিষ—যা বাবা-মা নিজের হাতে তুলে দিচ্ছেন!"
আজকের এই লেখাটা একটু তেতো, কিন্তু ভীষণ প্রয়োজনীয়।
অনেক বাবা-মা আছেন, যাদের ভাবটা এমন—
“আমার বাচ্চা তো ঘরেই থাকে, বাইরে যায় না, খারাপ কিছুতে জড়ায় না। সারাদিন মোবাইলেই থাকে... তাতে ক্ষতি কী?”
দুঃখজনক হলেও সত্যি, এই “ঘরেই থাকে” বলতে আপনি যা বোঝেন, বাস্তবে তা আর নেই।
আপনার সন্তান এখন বাইরে নেই ঠিকই, কিন্তু তার হাতে এমন এক ডিজিটাল দরজা আছে, যার ভিতর দিয়ে সে পৃথিবীর নোংরা ও বিকৃত বিনোদনের মধ্যে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিচরণ করছে।
🎭 টিকটক, রিলস, শর্টস—বাচ্চাদের নতুন মাদক
এখনকার মোবাইল ইন্টারটেইনমেন্ট মানেই "অল্প সময়ে বেশি উত্তেজনা"।
▪️ টিকটক খুললে ১০ সেকেন্ডের মধ্যে নাচ
▪️ রিলসে ২০ সেকেন্ডে চটুল গান
▪️ ইউটিউব শর্টসে ৩০ সেকেন্ডে জঘন্য কনটেন্ট
এইসব ছোট ছোট ভিডিওতে লুকানো থাকে যৌনতা, হিংসা, বিকৃত কল্পনা আর বিকারগ্রস্ত চিন্তা।
সন্তান যে কিছুই বোঝে না—এটা মিথ্যা।
সে যা দেখে, সেটাই শিখছে।
যা শুনছে, সেটাই তার ভেতরে গেঁথে যাচ্ছে।
মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব? ভয়াবহ!
▪️ ৫ বছর বয়সেই শিশুরা শিখে নিচ্ছে, “ভিউ পেতে হলে শরীর দেখাতে হয়।”
▪️ ৮ বছর বয়সে ছেলেরা মনে করছে, মেয়েরা কনটেন্ট; চরিত্র নয়।
▪️ ১০ বছরের কিশোর ভাবছে, ‘রিলেশনে না থাকলে আমি লুজার।’
▪️ ১২ বছর বয়সে অনেকে ‘গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঝামেলা’ করছে!
এগুলো কি আপনি তাকে শিখিয়েছেন? না।
তবে আপনি তার হাতে যা তুলে দিয়েছেন, সেখান থেকেই সে এই শিক্ষা পাচ্ছে।
📱 “আমার বাচ্চা তো গেম খেলে”—এই কথাটাও ভুল!
আধুনিক গেম মানেই সহিংসতা, খুন, গালাগালি, নগ্নতা, প্রতিযোগিতার নামে দম্ভ আর মস্তিষ্কের বিকৃতি।
কোনো ভালো কিছু শেখার সময় নেই—শুধুই আনলিমিটেড স্ক্রল আর ডোপামিন রিলিজ।
এই দায় আপনি এড়াতে পারবেন না
▪️ বাচ্চার হাতে কে মোবাইল দিল?
▪️ কে WiFi কানেকশন দিল?
▪️ কে বলল—“তুমি তো বাসায় থাকো, সমস্যা নেই”?
আপনি দিয়েছেন।
নিজের হাতে, ভালোবেসে, আদর করে
একটা আস্ত স্ক্রিনের ভেতর একটা জাহান্নামের দরজা খুলে দিয়েছেন!
সমাধান কী?
✅ ১২ বছর বয়স পর্যন্ত ব্যক্তিগত মোবাইল দেবেন না
✅ ঘরেই একটা নির্দিষ্ট জায়গায় সকলের সামনে মোবাইল ব্যবহার শিখান
✅ ভালো ইসলামিক কার্টুন, বই, খেলনা দিয়ে তার সময় পূর্ণ করুন
✅ নিজে যেভাবে ফেসবুক-ইউটিউবে আসক্ত হয়ে গেছেন, সেভাবে যেন সন্তান না হয়—সে ব্যাপারে সজাগ থাকুন
✅ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—তার সাথে বন্ধুর মতো সম্পর্ক তৈরি করুন, যেন সে আপনার কাছেই সব বলে
স্মরণ রাখুন:
"আপনার বাচ্চার মোবাইল আসক্তির দায় আপনি এড়াতে পারবেন না, কারণ আপনি নিজেই তাকে আসক্ত বানিয়েছেন!"
📌 পরবর্তী পর্বে ইনশাআল্লাহ:
“স্কুল-কলেজে মুখচেনা বন্ধুদের ছদ্মবেশে আসা নৈতিক শত্রুদের চিনবেন কীভাবে?”
#আধুনিক_প্রজন্ম #ডিজিটাল_বিনোদন #মোবাইল_নেশা #টিকটক_বাচ্চারা #প্যারেন্টিং #ইসলামিক_চিন্তা #ফেসবুক_সিরিজ
✍️ লেখাটি উপকারি মনে হলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
সন্তানদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করা শুধু নিজের নয়, আমাদের সকলের দায়িত্ব।