গল্প গুচ্ছ

গল্প গুচ্ছ ❝সময় নেই তার জন্য
যে আমায় ঘৃণা করে।
ব্যাস্ত আছি তাকে নিয়ে
যে আমায় ভালবাসে❞

11/04/2025

১০০ টাকার ফিলিস্তিনের 🇪🇭পাতাকা ৫০০টাকা নিচ্ছে.!
(হায়রে বাঙালি)

11/04/2025

ভালোবাসা রইলো সবার প্রতি❤️❤️❤️

19/02/2025

#অপ্রত্যাশিত_বাসর...
#পর্ব_৫... (শেষপর্ব)

একটি মেয়েকে দেখে অবাক হয়ে গেলাম। আমি ভুল দেখছি না তো...এ কি করে সম্ভব?এ তো সেই মেয়ে যাকে তন্ময় ভালো বাসত।কিন্তু মা তো বলেছিল মেয়েটি মারা গেছে। মেয়েটির সাথে আরেকটি লোক আর একটি বাচ্চা আছে। লোকটি মায়ের সাথে কথা বলছে। আমি তাদের ওখানে গেলাম। লোক্টি মাকে বলছে....
-আর কতদিন মা মনি আমি তোমদের আর পরিববারকে ছেড়ে বিদেশের মাটিতে পড়ে থাকবো.....
-যতদিন তোর ছোট ভাই সুস্থ না হয় তত দিন থাকতে হবে.....
-কিন্তু মা আমাদের যে আর বিদেশে থাকতে ভাল লাগে না। আর আপ্নাদের নাতিও আপ্নাদের জন্য খালি কান্না করে....
আমি কিছুই বুঝতে পারছি না..লোকটা মাকে মামুনি বলে ডাকছে কেন..আমি মাকে জিজ্ঞাসা করলাম...
-মা এনারা কে....
-তিশা এ হল আমার বড় ছেলে নিল..আর এ হল মায়া নিলের বউ...
-কিন্তু মা আপ্নি তো বলেছিলেন এই আপুকে তন্ময়....
-হুম ঠিকি বলেছিলাম। মায়াকে তন্ময় ভালবাসত...
-মা আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না.....
-তন্ময় মায়াকে অনেক ভালোবাসত কিন্তু কোন দিন বলতে পারে নি। নিল যেইদিন মায়াকে বউ করে নিয়ে আসে তখন তন্ময় এটা সহ্য করতে পারে নাই। ও রাগ করে বাসা থেকে চলে যায়। কিন্তু রাস্তায় ওর এএক্সিডেন্ট হয়। মাথায় আঘাত পাওয়ার কারনে ওই পাগল হয়ে যায়। নিল আর মায়াকে বারবার খুন করতে আসতো। ডাক্তারকে বললে ডাক্তার বলে যতদিন না এদের দুই জনকে মারতে পারবে ততদিন ওর পাগলামো যাবে না। তাই তোমার বাবা নিল আর মায়াকে আমেরিকা পাঠিয়ে দেয়। আর তন্ময়কে এটা বুঝাই যে ওরা মারা গেছে......
এখন আমার কাছে সব ক্লিয়ার। আমার বরের ছোট বেলা থেকেই মাথায় প্রব্লেম ছিল কিন্তু এক্সিডেন্ট এর পর তার পাগ্লামো বেড়ে যায়।
-ওর ছোট বেলায় একটি রোগ হয় যার সাইড ইফেক্ট ওর ব্রেইনে পড়ে। তাই ছোট বেলা থেকেই এমন করে.....

আমি পুরাই অবাক। নিল ভাইয়া একমাত্র ভাইয়ের ভালোর জন্য নিজের পরিবার থেকে এত দূরে। আমি ভাবছি এমন সময় মায়া আপু আমার হাত ধরলো...
-জানো বোন আমি তন্ময় এর চেয়ে বয়সে পাচ বছরের বড়। সব সময় ওকে ছোট ভাইয়ের মত দেখেছি ওকে। ওহ সব সময় আমার সাথে থাকত। ভাই না থাকায় আমিও ওকে নিজের ভাই হিসেবে মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু যখন নিলের সাথে আমার বিয়ে হয়য় তখন আমি জানতে পারলামম ও আমায় ভালবাসে। ওর ভালোর জন্যই এতদিন আমেরিকায় ছিলাম তোমাদের ছেড়ে। হয়ত আর কোন দিন আসতাম না। কিন্তু নিল যখন জানতে পারল ওর এই অবস্থা তখন আর থাকতে পারে নি চলে এসেছি.....
কথাগুলি বলে উনি কাদতে লাগল। আমি কি বলে আপুকে সান্তনা দিব ভেবে পেলাম না....
-কাদবেন না আপু সব ঠিক হয়ে যাবে......
-জানো তোমার নিল ভাইয়া প্রতিদিন কাদে তার ভাইয়ের জন্য....
-সব ঠিক হয়ে যাবে.....


এমন সময় ডাক্তার এসে বললল...
-আপনাদের জন্য সুখবর আছে...
-কি হয়েছে ডাক্তার...
-আসলে উনার হার্ড নস্ট হয়ে গেছে। কিন্রু একজন ব্যাক্তি মরার আগে তার হার্ড তাকে দান করে দিয়ে গেছে। আল্লাহর রহমতে অপারেশনের পর উনি সুস্থ হয়ে যাবে......
ডাক্তারের কথা শুনে আমাদের সবার চোখে সুখের পানি। আমি মায়া আপুকে জড়িয়ে ধরে কেদে দিলাম..
এখন তন্ময় অনেকটা সুস্থ। এই কয়েকদিন আমাদের কারো সাথেই দেখা করতে দেয় নি। আজ দেখা কর‍তে দিবে। আমি কেবিনে ঢুকে দেখলাম ওই আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে। আমি ওর পাশে বসা মাত্রই আমার হাত ধরে বলল....
-আই লাভ ইউ....
-এমন করে বলছো আমি মনে হয় তোমায় ভালবাসি না....(বলে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগ্লাম)
এমন সময় মা বাবা সবাই আসলেন। ও সবার সাথে কথা বলতে লাগল.এমন সময় চিতকার দিয়ে বলল....
-তিশা নিল ভাইয়া...
ওর কথা শুনে দরজার আড়ালে থাকা নিল ভাইয়া চলে যেতে লাগল....
-যাস না ভাইয়া...তুই বেচে আছিস জানলে কবেই তোদের কাছে আমার অপরাধের ক্ষমা চেয়ে নিতাম.....
নিল ভাইয়া দৌড়ে এসে ওকে জড়িয়ে ধরল। দুই ভাই এক অপরকে জড়িয়ে ধরে কাদছে...
-আই এম সরি ভাইয়া... প্লিজ মাফ করে দাও....
-চুপপ একটা কথাও বলবি না...
দরজার ওই পাশে মায়া আপুও কাদছে তার ছেলেকে কোলে নিয়ে। তন্ময় আপুকে ডাক দিল....
-আপু আমার কাছে আসবি না...
মায়া আপু ওর কাছে গেলল...
-আমায় মাফ করে দে আপু...প্রথমে ভুল্টা বুঝি নি কিন্তু যখন বুঝলাম তখন তোরা ছিলি না। এই অপরাধবোধ আমায় ছয়টি বছর কুড়ে কুড়ে খেয়েছে। আই এম সরি আপু......
-না ভাই....এইসব বলে না....
-আমি তোকে ভাবি বলব না..আপু বলেই ডাকব...
-আচছা ডাকিস...
-এখন থেকে আমরা সবাই মিলে একসাথে থাকবো....আর কোন সাইকো গিরি করবো না....
-তারমানে তুমি...
-সরি তিশা আমি ইচ্ছা করেই অমন কর‍তাম....
-তুই আগে বাসায় চল...
আমাদের কথা শুনে সবাই হেসে দিল। নিল ভাইয়া বলল...
-ওকে বাসায় গিয়েই তন্ময় আর তিশার আবার বিয়ে দিব....
-আমিও বিয়ে কলব...(পিচ্চি শান বলল)
-ওমা তাই কাকে বিয়ে করবে সোনা...(কোলে নিয়ে কথাটা বললাম)
-কেন তুমাকে...তুমি দেখতে কত কিউট উম্মাহ....
-হি হি উম্মা সোনা......



এখন বিছানায় বসে আছি। একটু আগে বিয়ে হয়েছে। আগের বার বাসর রাতে সিগারেটের ছেকা দিছিল এইবার কি দিবে আল্লাই জানে। একটু পর আমার সাইকো বর আস্লো...আমি ঊঠে তাকে সালাম করলাম। উনি আমাকে জড়িয়ে নিল বুকের মাঝে.....
-এই খবরদার ছুবে না আমাকে....
-কিন্তু কেন বাবু...
-আমার কতগুলা ডিমান্ড আছে...
-কি কি শুনি...
-নিল ভাইয়ার সাথে অফিসে যেতে হবে,বখাটেদের সাথে ঘুরতে হবে আরেকটা...
-আরেকটা কি...
-আমার লজ্জা লাগে...
-কি বল না গো....
-আমাকে একটা জুনিয়র তন্ময় গিফট দিতে হবে....
উনি কিছু না বলে আমাকে জড়িয়ে ধরল..
-কি করছ ছাড়ো....
-জুনিয়র তন্ময় দিতে হবে তাই না...
-ভাগ সাইকো কোথাকার....
লাইট অফ........


কেবিনে শুয়ে আছি। আমার পাশে শুয়ে আছে আমার মেয়ে। উফফ আমার মেয়েটা কত্ত কিঊট হইছে। তন্ময় এসে ওকে কুলে তুলে নিল...
-দেখ কত কিউট আমাদের মেয়ে...
-তুই কোন কথা বলবি না...একটা ছেলে দেয়ার মুরত নাই আবার পিরিত দেখাইতে আসছে....
ও কিছু না বলে আমার কপালে চুমু দিল। এমন সময় নিল ভাইয়া বলে উঠলো....
-উহু উহু আমরাও আছি ভাই....
আমরা দুইজনেই লজ্জা পেলাম....

সবাই মিলে এখন আমাদের সুখি সংসার। মেয়ের নাম রেখেছি তানিসা। শান সব সময় তানিসাকে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। আমার আব্বুটার কথা তার বোন সব সময় তার সাথেই থাকবে। আমার মেয়েটাই শান ভাইয়া বলতে অজ্ঞান। সবাইকে নিয়ে অনেক সুখেই আছি তবে আমার বরের সাইকো গিরি এখনো আছে.....
সমাপ্ত..
(তাদের সবাইকে ধন্যবাদ যারা আমার এই গল্পটি পড়ে আমাকে উতসাহিত করেছেন)

aronno joy

19/02/2025

#অপ্রত্যাশিত_বাসর...
#পর্ব_৪..
এখন আমি লোকটার বুকের মাঝে ঘুমিয়ে আছি। কিছুক্ষন পর আবির মেসজ দিল...
-প্লান সব রেডি সোনা...
-ওকে..
-আগামি কাল দেখা করবে সোনা..
-কোথায়..?
-পাতাকুড়ি পার্ক...
-ওকে..(কতগুলো চুমুর ইমোজি)
আমার বর আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। আমি ওর চুলে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম। ঘুমের মাঝে বলতেছে...
-আমায় ছেড়ে যেও না প্লিজ তিশা। আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি....
ওর কথা শুনে ওর জন্য আলাদা টান অনুভব করলাম। কখন যে এই সাইকো লোকটাকে ভালবেসে ফেলেছি নিজেও জানি না। আমি উনাকে আমার বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরলাম। উনি ঘুমের মাঝে আমায় জড়িয়ে ধরে আছে......


সকাল হয়ে গিয়েছে। বাসায় মা ছাড়া কেউ নেই। তন্ময় ঘুমিয়ে গেছে। আমি মা কে মিথ্যা বলে বেরিয়ে পড়লাম আবিরের সাথে দেখা করার জন্য। গিয়ে দেখি আবির আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি যাওয়া মাত্রই আবির আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমি এক ধাক্কায় ওকে সরিয়ে দিলাম....
-উফ আবির ছাড়ো তো... ভাল লাগে না এইসব....
-ওকে বাবা ঠিক আছে...
-কি প্লান করলা....
-এই নাও গান। এটা দিয়ে ওই সাইকো লোক টাকে খুন করে টাকা পয়সা সব নিয়ে চলে আসবে। তারপর আমরা পালিয়ে যাব অনেক দূর.....
-ওকে ঠিক আছে বায়....
আবিরের সাথে দেখা করে চলে আসলাম। এসে দেখি তন্ময় রেগে আছে । ভয়ে আমার জান শেষ আবার যদি মারে....
-কোথায় গিয়েছিলে....
-কোন জায়গায় না...একটু ঘুরতে...
-ঠাস ঠাস...
কি মনে কর নিজেকে।যাওয়ার আগে একবার আমার অনুমতি নেয়ার প্র‍য়োজন মনে কর নি কেন....
-সরি সোনা আর হবে না...(ওর গলা জড়িয়ে ধরে)
-না আমি রাগ করছি....
-কি করতে হবে আমার বরের রাগ ভাঙাতে....
ও কিছু না বলে আমাকে বিছানায় ফেলে দিল। তারপর আমার উপর উঠলো....
-যা চাব তাই দিবা তো...
-বলো সোনা কি লাগবে....(গলা জড়িয়ে ধরে)
-তোমার ওই গোলাপি ঠোট খাব....
-যাও দুস্টু সাইকো একটা....
তন্ময় কিছু না বলে ওর ঠোট আমার ঠোটের মাঝে ডুবিয়ে দিল। আমিও আমার স্বামির আদর উপভোগ করতে থাকলাম। কিছুক্ষন পর ও আমার শাড়ি খুলতে লাগল। আমি আর ওকে বাধা দিলাম না। আমাকে ভালবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছে অই....
-তুমি এত সুন্দর কেন গো...
ওর কথায় আমি লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম। ও আমায় ওর বুকের মাঝে নিয়ে বললল...
-তুমি যদি আমায় ছেড়ে চলে যাও তবে আমি মরেই যাব...
এইবার আমি রেগে গেলাম। ওর বুকের উপর উঠে একটা ছুরি ওর গলায় ধরলাম...
-আর একবার যদি মরার কথা বলছো তাহলে তোমার গলায় চালিয়ে দিব এইটা সাইকো ছেলে....
-আর বলবো না....ওই দেখ টিকটিকি...
আমি ভয়ে ছুরি ফেলে দিলাম। ওই সুযোগ মতো আমায় ওর নিচে ফেলে দিয়ে আমার উপর উঠলো। তারপর আমাকে ওর ভালবাসার আক্রমন শুরু করে দিল আমিও পাল্টা আক্রমন করলাম। ওর প্রতিটা স্পশে আমি শিহরিত হয়ে ঊঠছিলাম.....


বাবার বাসায় দিন গুলি অনেক টা হানিমুনের মত কাটলো। ও প্রতি রাতেই আমাকে অত্যাচার করত। কিন্রু তারপরেই আমাকে অনেক ভালবাসত। সত্যি বলতে ওর অত্যাচারের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম আমি। কিছুদিন পর চলে আসলাম বাসায়। আমার বর খালি আমাকে আদর করে। আমারো ভাল লাগে। কোন বউ ই বা না চায় তার বরের ভালবাসা পেতে। কিন্তু আমি আমার প্লান ভুলে যাই নি। রান্না ঘরে রান্না করছিলাম। এমন সময় ওই পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আমাকে চুমু খেতে শুরু করে...
-এই কি করছ কি...
-আমার সোনা বউকে আদর করছি...
-হইছে হইছে যাও আমি খাবার নিয়ে আসছি....
আমার ঠোট ভিজিয়ে দিয়ে চলে গেল পাগলটা......


আজ প্লানকে সাক্সেস ফুল করব। সকালে উঠে রেডি হয়ে নিলাম। তন্ময় ঘুমুচ্ছে।আমি ওর কপালে চুমু দিয়ে বললাম....
-আমায় মাফ করে দাও সোনা...আজকের পর হয়ত আর দেখা হবে না....
শেষবারের মত ওকে বুকে জড়িয়ে ধরে বেরিয়ে পড়লাম। জানি না যে কাজে যাচ্ছি বেচে ফিরতে পারব কিনা। যাওয়ার আগে পুলিশকে ফোন দিলাম। আসলে আমি একজন গোয়েন্দা। টাকা পয়সা কিছুই নেই নি শুধু আবিরেত দেয়া গান নিয়েছি....
-টাকা পয়সা কই এনেছ....
-টাকা পয়সা জানিনা কিন্তু তুমি আমার কাছে বাচবে না আবির উরফে ছোট জামান...(বলেই ওর দিকে গান ধরলাম)
-তিশা কি বলছ তুমি....
-চুপপ থাক। তুই কি মনে করছিস তোর কারনে আমি আমার বরের ক্ষতি করব। তোকে ভাল করেই চিনি। তোকে ধরার জন্যই এই প্লান আমার.....
-ওহ....ওই দেখ তন্ময়....

তন্ময় এইখানে কিভাবে আসবে। আমি পিছু ঘুরতেই আমার হাত থেকে ছো মেরে গান নিয়ে গেলল আবির.....
-যখন পরিচয় জেনেই গেছ তোমার আর বেচে থেকে লাভ নেই সোনা....
-আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। গুলির আওয়াজ পেলাম। চোখ খুলে দেখি আমার সামনে নিথর হয়ে পড়ে আছে তন্ময়। ওর বুক থেকে রক্ত ঝড়ছে। মুচকি হেসে বুকে হাত দিয়ে লাভ শেপ করে আছে। আরেকটি গুলির আওয়াজ পেলাম। পুলিশ করেছে গুলিটা। আবিরের মাথার খুলি উড়িয়ে দিয়েছে.....


তন্ময়ের এই অবস্থা দেখে আমি ঠিক থাকতে পারলাম না। ওকে আমার কোলে নিয়ে হাউমাউ করস কাদতে লাগলাম....
-কেন করলে আমার সাথে এমন...কেন নিজের এই অবস্থা করলে....
-আমি তোমায় ভালবাসি গো। তোমায় কিভাবে মরতে দিতে পারি বল.....
-আমিও ভালবাসি তোমায়...
-আমার একটা কথা রাখবে...আমায় একবার তোমার বুকে জড়িয়ে নিবে....
আমি কিছু না বলে ওকে আমার বুকের মাঝে জড়িয়ে নিলাম। কিছুক্ষন পর ও হাত পা ছেড়ে দিল। আমি ডাকছি তাও সাইকোটা সাড়া দিতেছে না....
-এই উঠো না প্লিজ...উঠো না তুমি আমাকে না মারলে আমি থাকবো কিভাবে....
আমি ওর বুকে মার‍তে থাকলাম। হঠাত ও শ্বাস নিতে শুরু করল। আমি ওকে মেডিকেল নিয়ে গেলাম। ফোন করে সবাইকে ডাকলাম। ওকে আই সি ইউ তে নেয়া হয়েছে। কিছুক্ষন পর ডাক্তার এসে বললল...
-দেখুন উনাকে আমরা বাচাতে পারবো না। উনার হার্ড বরারবর গুলি লেগেছে তাছাড়া প্রচুর রক্ত ক্ষরন হয়েছে।আপ্নারা পারলে উনাকে বিদেশে নিয়ে যান....

ডাক্তারের কথা শুনে আমি কান্নায় ভেংেএ পড়লাম। আমার কারনেই আজ ওর এই অবস্থা। কিছুসময় পর একটা মেয়েকে দেখে আমি আটকে গেলাম। আমি কি সপ্ন দেখছি। এ কিভাবে সম্ভব। আমার মনে অনেক প্রশ্ন.....
চলবে...

19/02/2025

#অপ্রত্যাশিত_বাসর...
পর্ব_৩..

রাতে দেখি সাইকোটা গরম লোহা আর সুচ নিয়ে ঘরে ঢুকল।চোখে আগের মত সেই পশুর ছায়া। দেখে মনে হল এখন এই লোক আমাকে খুন করবে। আমি ভয়ে ভয়ে পিছিয়ে যেতে লাগলাম। আমি যতই পিছিয়ে যাই জানোয়ারটা ততই আমার সামনে আসে । এক সময় আমি দেয়ালের সাথে লেগে গেলাম।উনি কিছু না বলে আমাকে কিস করা শুরু করলেন। কিছুক্ষন কিস করার পর গরম সুচ হাতে নিলেন। আমি ভয়ে কেদে দিলাম। আমার কান্নার আওয়াজে সে পৈশাচিক হাসি হাসছে...
-প্লিজ আমাকে মারবেন না...
-সোনা আমি তোমাকে মারতে পারি বল..আমি তো তোমায় ভালবাসি তাই না(আমার গালে হাত দিয়ে পাগলের মত বলছে কথা গুলো)
তার পাগলামো দেখে আমি আরো ভয় পেয়ে গেলাম। যেভাবেই হোক আমায় পালাতে হবে না হলে এই জানোয়ার আমাকে কবরে উঠাবে সিউর। আমি পালাতে যাব কিন্তু উনি আমার হাত ধরে ফেলে। তারপর উনি আমর ওড়নাটা বুক থেকে কেড়ে নিয়ে আমার হাত বাধতে থাকে.....
-প্লিজ আমাকে মারবেন না...আমাকে ছেড়ে দিন....
-মারবো না সোনা.. আজ আমাদের একটা ভালবাসার প্রতিক উপহার দিব তোমায়...
উনি আমার হাত বেধে ফেলললেন। তারপর আমার মুখে এক দলা কাপড় ঢুকিয়ে দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলেন। ভয়ে আমার চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগল কিন্তু আমি চিৎকার করতে পারছিলাম না কারন আমার মুখ বাধা ছিল.....


কিছুক্ষন পর গরম কিছু আমার পিঠে অনুভব করলাম। মনে হল কেউ আমার চামড়া কেটে ফেলছে। আমি যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকলাম। কিন্তু উনি কিছুই মনে করলেন না। কিছুক্ষনের মাঝে আমার মনে হল আমি জাহান্নামে চলে এসেছি। এত কস্ট, যন্ত্রনা আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না। আমি প্রাথনা করতে লাগ্লাম আল্লাহর কাছে যেন এই লোকের কাছ থেকে আমার মুক্তি দেয়। কিছুক্ষন পর জানোয়ার টা কি যেন আমার পিঠে লাগিয়ে দিল। সব কস্ট চলে গেলল অল্প সময়ের মাঝে । তারপর উনি আমার বাধন খুলে দিলাম। আমার চোখ দিয়ে পানি ঝরছে কিন্তু ভয়ে কাদতে পারছি না।এমন সময় পশুটা আমার পিঠের ছবি দেখিয়ে বলল....
-সোনা ট্যটুটা সুন্দর হইছে না...এটা আমার আর তোমার ভালবাসার প্রতিক....
আমি কিছু না বলে ভয়ে ভয়ে মাথা নাড়ালাম।উনি আমাকে নিজের বাহুডোরে জড়িয়ে ধরে বলল...
-আমি জানি সোনা তোমার অনেক কস্ট হয়েছে.... এই দেখ আমিও করেছি.....
বলেই উনি আমাকে উনার বুকে করা ট্যটুটা দেখাল। সেখানে খুব ভালভাবে দেখা যায় একটা লাভের মাঝে আমাদের দুই জনের নাম। উনি আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন। আমি উনার বুকের মাঝে শুয়ে ভাবতে লাগ্লাম সাইকোটাকে আমি খুন করবো বা হলে এ আমায় খুন করবে.....এমন সময় বিদ্যুত চমকায়। আমি ভয় পেয়ে উনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। উনি পরম আদরে আমাকে তার ভালবাসার শহরে নিয়ে গেলেন। ভালবাসে উনি কিন্ত এত কস্ট দেয় কেন আমাকে কিছুক্ষন আগে কত কস্ট দিল আর এখন আদরে ভরিয়ে দিচ্ছ আমায়।আমি ইচ্ছা করেও বাধা দিতে পারছি না তাকে। আমি আমার কান্ড জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম। পাগলের মত আদর করতে লাগ্লাম এই সাইকো পশুটাকে........
ভোর বেলা ঘুম থেকে ঊঠে দেখি উনি আমার দিকে একমনে তাকিয়ে আছে। চোখে ভালবাসার সমুদ্র খেলা করছে তার। মাঝে মাঝে আমি অবাক হয়ে যাই একটা মানুষ এর কিভাবে দুইটা রুপ হতে পারে। কোন সময় পশুর রুপ আর কোন সময় একজন নিভ্ররতার মানুষ এর রুপ......
আজ বাবার বাসায় যাব। কিন্তু এই লোক আরো বেশি খুশি যাওয়ার জন্য।বাবার বাসায় গিয়ে খুন করে পালাব এই লোকটাকে। আমাকে কস্ট দেয়া সব পাই পাই করে বুঝিয়ে দিব। উনাকে দেখলেই ভয়ে আমার আত্তা কেপে উঠে। কিছুক্ষন পর রুমে আস্লো। পিছিনে কিছু একটা আছে। ভয়ে আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম....
-সোনা এই নাও শাড়িটা পড়ে নাও...
যাক বাচা গেল। আমি ভেবেছিলাম নতুন কোন অত্যাচার করবে আবার।
-কি হল জলদি পড়। আমি তোমার শাড়ি পরা দেখব....
-আসলে আমি শাড়ি পরতে পারি না.. (মাথা নিচু করে বললাম)
উনি আমার কোমর জড়িয়ে ধরে আমার কপালে আলতো করে চুমু দিল।
-দাও আমি পড়িয়ে দেই...
উনি নিজ হাতে আমায় শাড়ি পড়িয়ে দিতেছে। আমি হাবলার মত তাকিয়ে আছি। এরপর আমায় সাজিয়ে দিল......


বাবার বাসায় আসার সময় শশুড় আব্বা উনাকে কিছু খাম আর চাবি দিল। বাবার বাসায় আসলাম কিছুক্ষনের মাঝে। আসলে আমরা ভাড়া থাকতাম একটা ফ্লাটে। উনি এসেই বাবাকে খাম দুইটা আর চাবি দিল। বাবা চিঠিটা পড়ে চোখ দিয়ে দুই ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লল।আমি চিঠি নিয়ে পড়তে থাকলাম..
প্রিয় বন্ধু...
সবাই জানে তুই আমার কর্মচারি কিন্রু আমরা তো জানি আমরা কত ভাল বন্ধু। তোকে অনেক বার বলেছি আমার জি এম হতে কিন্তু তুই হলি না। আজ তোকে আমার এমডি করলাম। ভাবিস না তোর মেয়ে আমার বউমা বলে করেছি। এটা তোর প্রাপ্য রে ভাই।অনেক দিন থেকেই ইচ্ছা ছিল তোর মেয়েকে আমার মেয়ে বানাব কিন্তু তার আগেই আমার ছেলে তোর মেয়েকে আমার মেয়ে বানিয়ে নিল। তুই আমার ছেলের উপর রাগ করিস না ও খুব ভাল ছেলে খালি একটু পাগলামি করে....
ইতি...
সেই বন্ধু....
চিঠিটা পড়ে এই পরিবারের প্রতি আমার সম্মান বেড়ে গেল। এম ডি হওয়ায় বাবাকে একটি বাংলো আর দুইটি কার গিফট করেছে বাবা....


এখন আমি প্রতিশোধ নিব। রান্নায় ঝাল দিলাম সেই রকম....
-কি করছিস কি ছেলেটা ঝালে মরে যাবে তো.....
-চুপ থাকো তো...
হি হি খেতে দিলাম রাতে। উনি খাচ্ছে আর করুন ভাবে আমার দিকে তাকাচ্ছে। দেখে বুঝা যায় খুব কস্ট হচ্ছে তার। তার অমন চেহারা দেখে আমারি বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠলো। উনি খেয়ে রুমে চলে গেল....
রুমে গিয়ে দেখি কস্টে লাফাচ্ছ। ঝালে চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে। শাশাতে শাসাতে ক্লান্ত হয়ে গেছে। আমি কিছু না বলে উনার সামনে গিয়ে দাড়ালাম। তারপর উনার গলা ধরে আমার ঠোট মিলিয়ে দিলাম উনার ঠোটে। উনি খুব জোড়ে জড়িয়ে ধরল আমায়। কিছুক্ষনের মাঝে আবারো ভালবাসার মাঝে ডুবে গেলাম।.
উনি ঘুমিয়ে গেছে। আমি উনার বুকে মাথা রাখলাম। কিছুক্ষন পর আবিরের মেসেজ আসলো...
-প্লান সব রেডি সোনা...
-ওকে.
(চলবে

19/02/2025

#অপ্রত্যাশিত_বাসর...
#পর্ব_২..

-প্লিজ আমায় ছেড়ে দিন আমার খুব কস্ট হচ্ছে...
-তোকে আগে ভাবা উচিত ছিল... (আমাকে ছেকা দিতে লাগল আর একটা উন্মাদের মত আচরন করছে)
-ও আম্মু গো বাচাও আমাকে এই লোক আমায় মেরে ফেলবে। কেউ বাচাও আমাকে(ব্যাথায় চিৎকার করে কাদতে লাগলাম)
-ওই চুপ একদম কথা বলবি না বুঝছিস...
আমার কান্নার আওয়াজ শুনে আমার শাশুড়ি আর ননদ আসলো...দরজার অকান থেকে বললল....
-বউমা তোমার কিছু হয়েছে...তুমি কাদছো কেন....
আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই জানোয়ারটা আমার মুখ চেপে ধরে। এবং আমার দিকে চোখ রাঙিয়ে সাবধান করে দেয় যেন আমি বেশি চিৎকার না করি। আমি ভয় পেয়ে চুপ হয়ে গেলাম....
-কই আম্মু কিছু হয় নাই তো। মনে হয় পাশের বাসায় আবার মারামারি লাগছে...
-অহ বউমা ঠিক আছে তো...
-হুম মা ও তো ঘুমুচ্ছে....
-ওহ...
শাশুড়ি মা চলে যাওয়ার পর উনি আমার মুখ ছেড়ে দিলেন। আমি হাফ ছেড়ে বাচলাম। আর একটু হলেই হয়ত আগামি দিন আমাকে কবরে থাকতে হত। উনি আমার কাছে আসতে চাইছে...
-খবরদার আমার কাছে আসবেন না বলে দিলাম...আমি কিন্তু নিজেকে শেষ করে দিব....
-বিশ্বাস কর আমি তোমাকে খুব ভালবাসি...ছয় বছর আগে থেকে....
এই লোক পুরাই সাইকো এখন বুঝলাম। আমাদের দেখা মাত্র তিন মাস আর এই লোক বলে ছয় বছর। এমন একটা সাইকো ছেলে আমাকে দুই দিনে মেরে ফেললবে....
-যদি সতিই ভালবাসতেন তাহলে এইভাবে কস্ট দিতেন না...সরুন..(কাদতে কাদতে বিছানার একপাশে গুটি শুটি মেরে ঘুমিয়ে পড়লান)...


ঘুম আসছে না ব্যাথায়। দুই হাত জ্বলে যাচ ্ছে।চিৎকার করে কাদতে ইচ্ছা হয়। কিন্রু জানোয়ারটা যদি আবার মারে। একটু পর সাইকো লোকটা আবার ঘরে আসলো, হাতে বরফ আর মলম।কিছু না বলেই আমার দিকে এগিয়ে এসে আমাকে উঠিয়ে নিজের কোলে বসালো। আমি কিছুই বলতে পারলাম না এই ভয়ে যদি আবার মারে......
-তোমার অনেক কস্ট লাগছে তাই না সোনা....(কাদছে আর বরফ লাগিয়ে বলছে)
-আমাদের কি কস্ট হয় নাকি....(রাগি হয়ে বললাম আর উঠে যেতে লাগলামম)
উনি আমায় একটানে আবার নিজের কোলের মাঝে বসিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মলম লাগিয়ে দিতে থাকলো....
-জানো এই কয়েক বছর আমি তোমাকে ছাড়া একদম ভাল ছিলাম না...সবাই আমাকে সাইকো বলে কিন্তু আমি জানি তুমি আমায় এখনো ভালবাসো.....
লোকটা পাগল নাকি। বারবার বছরের কথা বলে কেন?আমি তো এই লোকটাকে চিনিই না।তার চোখের দিকে তাকালাম কিছুক্ষন আগে যার চোখে শুধুই হিংস্রতা ছিল এখন সেই চোখে শুধুই ভালবাসা।চোখ দিয়ে খালি পানি পড়ছে তার। মনে হয় আমার কস্ট হলে এই পশুটারো কস্ট হয়.....
-ম্যাজিক দেখবা তোমার কস্ট একেবারে শেষ হয়ে যাবে সোনা...
-কিভাবে..(কাদো কাদো হয়ে)
উনি কিছু না বলে আমার দুই হাতে চুমু দেয়া শুরু করলেন। সত্তি কথা বলতে একদম সব কস্ট চলে গেল। একে কি বলে আমি জানি না। এরপর কিছু না বলেই আমাকে বিছানায় ফেলে দিল। তারপর আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আমি কিছুতেই ছাড়াতে পারলাম না....


সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি আমি তার বুকে ঘুমিয়ে আছি। পশুটা যেভাবে ঘুমিয়ে আছে কেউ বলতেই পারবে না এ একটা সাইকো......
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে রুমের বাইরে আসতে যাব ঠিক তখনি উনি আমাকে দেয়ালের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন। এই লোকের শক্তিতে কিছুতেই পেরে উঠা যাবে না। উনি কিছু না বলে আমাকে কিস করা শুরু করলেন। যতই ছাড়ানোর চেস্টা করি তত শক্ত করে কিস করে। আল্লাহ গো এই লোক থেকে আমাকে বাচাও। এই লোকের মাথায় কোন সময় কি চলে কিছুই বুঝে উঠতে পারি না। উনার কিসে আমার দম বন্ধ হওয়ার অবস্থা। প্রায় পনের মিনিট পর আমাকে ছাড়লো। আমি রুমের বাইরে চলে আসি এক দৌড়ে....


বাইরে এসে দেখি মা রান্না করছে। আমাকে দেখে খুব খুশি হলেন...
-আয় মা খেতে আয়...
আমার শশুড় শাশুড়ি খুব ভাল মানুষ। একজন সাধারন কর্মচারির মেয়েকে যারা হাসি মুখে একমাত্র ছেলের বউ হিসেবে মেনে নেয় তারা কখনোই খারাপ হতে পারে না। এমন সময় আমার ছোট ননদ বলে উঠলো...
-সোনা ভাবি তুমি আমার পাশে বসবে....
আমার ননদ এইবার এস এস সি দিয়েছে। দেখেই মনে হয় খুব দুস্টুমি করে। আমি গিয়ে ওর পাশে বসলান। এমন সময় বাবা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন....
-আমাদের ক্ষমা করে দে মা। আমরা কোন দিনি এইভাবে তোকে বউ করে আনতে চাই নাই। কি করব বল ছেলেটাকে কিছুই বলতে পারি না। কিছু বললে নিজের ক্ষতি করে বসে থাকে.....
এই বাসার লোক গুলা এত ভাল কেন। আমার বাবাও বলেছে আমার শশুড় নাকি খুব ভাল মনের মানুষ।অফিসের লোক দের নাকি নিজের পরিবারের মত আগলে রাখে.....


-কি হল মা খাচ্ছিস না কেন...
-না মানে...(খাবো কিভাবে হাত আমার পুড়ে গিয়েছে)
-ভাবি তোমার হাতে কি এগুলো...(ননদ বলে উঠলো)
-কই দেখি দেখি..(মা)
-না কিছু না...
মা জোড় করে আমার হাত দেখল। আমিও বাচ্চাদের মত ভ্যা ভ্যা করে কেদে দিলাম....
-দেখছ তোমার ছেলের কান্ড কি করছে মেয়েটার অবস্থা....
-তন্ময় এই তন্ময় (বাবা হুংকার ছাড়ল)
-কি হয়েছে আব্বু(চোখ মুছতে মুছতে বলল)
-ঠাস ঠাস...
তুই দিন দিন জানোয়ার হয়ে যাইস কেন। কি অবস্থা করেছিস মেয়েটার....
মাইর খেয়ে উনি আমাদের সামনে আবার পাগলের মত করতে লাগলো। মা শান্ত করতে গেলে বাবা মায়ের হাত ধরে ফেলে কারন এখন কি থেকে কি করে ফেলবে বলা যায় না। ঘরের সব আসবাব ভেঙে চলে গেল। বাবা নতুন আসবাবের অর্ডার দিলেন......


এখন আমাকে মা খাইয়ে দিতেছে..
-মাফ করে দে মা আমার ছেলেটা যে কি থেকে কি করে ফেলে ও নিজেই কিছু আচ করতে পারে না...
-উনার কি কোন প্রবলেম আছে...
-ছয় বছর আগের ঘটনার পর ওর মাথায় সমস্যা হয়....ডাক্তার বলেছে আর যা খুশি করতে দিতে না হলে আমরা ওকে হারিয়ে ফেলতে পারি....
কি হয়েছিল উনার ছয় বছর আগে। আমাকে জানতেই হবে। বিকেলে দেখি ঘরে ফিরে আসছে উনি..এসেই মায়ের রুমে গেল..
-তুই মেয়েটাকে এইভাবে কস্ট দিলি কেন বাবা....
-ওহ কেন ছয় বছর আগে আমাকে কস্ট দিছে। ওহ তো জানতই আমি ওকে কত ভালবাসি....
ওহ আল্লাহ এই সাইকো আমারে ছয় বছর আগে কই পাইলো। রাতের বেলা খেয়াল করলাম লোহা গরম করে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। চোখে আগের দিনের মত পশুত্ব.. আমি এক পা করে পিছু হচ ্ছি আর উনি এগিয়ে আসছে....
চলবে...

(

19/02/2025

#অপ্রত্যাশিত_বাসর....
#পর্ব_১...

ধুমধাম করে বিয়ে হয়েছে আমার কিছুক্ষন আগে। আজ আমারর বাসর রাত। খুব সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। কিন্তু আমার কিংবা আমার ইচ্ছাতে বিয়ে হয় নি। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে আমি। এক বখাটে যুবকের লালসার শিকার আমি। আমার বাবা,মার গলায় ছুরি ধরে আমায় বিয়ে করেছে। এর আগে বিভিন্ন ভাবে আমায় জালাতন করত ও। বড় লোক বাপের ছেলেরা যেমন হয় আর কি। এরা যতই ভাল হোক না কেন এরা মানুষকে মানুষ মনে করে না। আমাকে অনেক বার প্রপোজ করেছে কিন্তু আমি তো কোন দিন কোন গুণ্ডার বউ হতে চাই নি। আমি আবির কে ভালবাসি জেনেও আমায় জোড় করে বিয়ে করেছে সে..কিছু সময় পর দরজা লাগানোর আওয়াজ পেলাম। বুঝলাম পশুটা আমার দিকেই আসছে.....
-একদম আমার কাছে আসবেন না বলে দিলাম...
-আমি তোমাকে ভালবাসি তিশা...
-ভালবাসার কি বুঝেন আপ্নারা...শুধু ভোগ করাকেই ভালবাসা এটাই মানেন আপ্নারা....
-কিন্তু তিশা...(বলে আমার দিকে এগিয়ে আস্তেছে)
আমি একটা ছুরি তার দিকে ধরলাম...
-খবরদার আমার সামনে আসবি না...আমার সামনে আসলে আমি নিজেকে শেষ করে ফেলব....
তন্ময় কিছু না বলে বাইরে চলে গেল...


খুব কান্না আসছে আমার। কি দোষ করেছিলাম আমি যে আমার সাথেই এমন হল।আমি কখনো ভাবতেই পারি নি এমন একটা ছেলের সাথে জীবন কাটাতে হবে আমার....


মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে আমি। বাবা মা আর আমি তিনজনের সুখি পরিবার আমাদের। ছোট বেলা থেকে খুব ইচ্ছা ছিল বি সি এস ক্যাডার হব। তাই মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করেছি সব সময়। ইন্টার মিডিয়েট দিয়ে ঢাবিতে চান্স পাই। আমার পড়াশোনার সুবিধার জন্য পুরো পরিবার ঢাকায় চলে আসি। প্র‍থম দিন গিয়ে দেখি কিছু ছেলে মিলে একটা ছেলেকে মারছে..আমি কোন দিনি অন্যায় দেখতে পারি নি....
-কি হল আপ্নারা ছেলেটাকে এভাবে মারছেন কেন....
-তুই কে?যেখান থেকে এসেছিস ওইখানে যা...
-আপ্নারা আমার সামনে একজনকে মারবেন আর আমি চুপ করে থাকেবো নাকি?(রাগ দেখিয়ে)
-এই শোন একে যেমন দেখতেছিস ছেড়া ফাটা কাপড়..বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোর একি অবস্থা হবে....
-ঠাস ঠাস...তোদের সাহস হয় কিভাবে এমন ভাবে কথা বলার.....
-তোর সাহস কিভাবে হয় মারার...বলেই আমার হাত ধরে ফেলে.....
-ছাড়ুন ছাড়ুন বলছি....
-এই ছেড়ে দে..(পেছন থেকে বলল)
কথা বলার পরি ছেলেটা আমায় ছেড়ে দেয়। পিছিনে ঘুরে দেখলাম একটা ছেলে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। আমার মাঝে ভয় কাজ করছে....
-কি নাম তোর....
-জি তিশা...
-তোকে আমার ভাল লাগছে। আমি তোকে বিয়ে করতে চাই...
তার মুখ থেকে কথাটা শুনে ভেবাচেকা খেয়ে যাই। কোন মতে সেই খান থেকে বেরিয়ে আসি। খোজ নিয়ে জানতে পারি ছেলেটার নাম তন্ময়। বড় লোক বাপের বিগড়ে যাওয়া ছেলে। বখাটেগিরি করে বেড়ায়.....


এরপর থেকে দেখতাম কোন ছেলে আমার সাথে থাকত না। ছেলেগুলা আমাকে দেখলে ভাবি ভাবি বলে ডাকত। তন্ময় আমাকে বারবার প্রপোজ করলেও ওকে দেখে আমার খুব রাগ হইত.....
-তিশা আই লাভ ইউ...
-ঠাস ঠাস...
এই নে আমার উত্তর...
-আমি তোমাকে আমার করেই ছাড়বো.....
-এখান থেকে গেলে খুশি হব...
তন্ময় চলে গেল। আমার বান্ধুবিরা আমায় এসে বলল...
-তন্ময় ভাই মনে হয় তোকে সত্যি ভালবাসে...
-এইসব ছেলেকে আমি ভালবাসি না... তোরা ভাল করেই জানিস আমি আবির কে ভালবাসি....
-যাই হোক আজ যেটা করলি তুই কেউ থাকলে এতক্ষনে কবরে শুয়ে থাকত....


দিন দিন তন্ময় এর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেল। ওর ভয়ে আবির আমার সাথে বেশি সময় থাক্ত না। একদিন আমাকে আবিরের সাথে দেখে ফেলে....সেইদিন সন্ধায় আমার বাসায় জোড় করে ঢুকে।আমার মা বাবার গলায় ছুরি ধরে বলে...
-তুমি যদি আমায় বিয়ে না করো তাহলে তোমার মা বাবাকে শেষ করে দিব....
সেইদিন ভয়ে বিয়ে করি। তারপর সে তার মা বাবাকে নিয়ে আসে। আমার বাবা তার বাবার কম্পানিতে জব করে। তারা আমাকে বউ হিসেবে মেনে নেয়। যার ফলে আজ বিয়ে হল.....


কিছু না ভেবে আবির কে ফোন দিলাম....
-আবির আমাকে এইখান থেকে নিয়ে যাও প্লিজ...
-তুমি চিন্তা করিও না সময় মতো তোমাকে আমি নিয়ে যাব....
আবিরের সাথে কথা বলে ফোন রাখা মাত্রি পেছনে ঘুরে দেখি তন্ময় দাঁড়িয়ে...
-কার সাথে কথা বলছিলে....
-আপনাকে বলতে হবে নাকি....
মুহুতেই একটা জানোয়ারের রুপ ধারন করল সে। কুকুরের মত মারতে থাকল আমাকে। সিগারেট দিয়ে আমার হাতে ছেকা দিতে লাগল সে....
-আমার খুব লাগছে প্লিজ আমায় ছেড়ে দে...
খেয়াল করলাম উন্মাদের মত করছে সে। আমাকে মনে হয় মেরেই ফেলবে সে। খুব কস্ট লাগছে
কিন্তু জানোয়ারটার চোখেও পানি।আমি কোন মতেই ছাড়াতে পারছি না ওর থাবা থেকে। ও অল্প অল্প করে আমাকে সিগারেটের ছেকা দিতে লাগল...
-প্লিজ আমায় ছেড়ে দেন আমার খুব কস্ট হচ্ছে....
চলবে.

19/02/2025

খুব কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন যেদিন আড়াল থেকে শ্বশুরকে বলতে শুনেছিলাম,
"কী এক বৌমা আনলাম, না আছে রুপ না আছে গুন
আর না আছে বংশ মর্যাদা"।
আরও কষ্ট পাচ্ছিলাম যখন শুনলাম আমার শ্বাশুড়ি ভাশুর আর ভাশুরের বউ ও শ্বশুর এর সাথে সুর মেলাচ্ছিল।
নিজেকে তখন ঐ পরিবেশে বড্ড বেমানান আর অসহায় লাগছিল।
ভেতরটা দুমরে মুচরে যাচ্ছিলো কিন্তু প্রকাশ করলাম না।
আমার জা আমার থেকে সুন্দরী আর বয়স কম এই নিয়ে শ্বাশুড়ির অভিযোগের শেষ ছিল না।
আমি তানিয়া।
এমবিএ পড়ছি।
বয়স ২৫।
তানিমকে ভালোবেসে ছিলাম ঠিকই কিন্তু বিয়ে করেছিলাম দুই পরিবারের সম্মতিতে।
তানিমের পরিবার প্রথমে রাজী না হলেও পরে রাজী হন।
কিন্তু বিয়ের পর থেকেই কারণে অকারণে তুচ্ছ বিষয় নিয়েও কথা শুনাতে ছাড় দিত না।
তাদের অভিযোগ গুলো ছিল এমন যে আমি বড় বউ এর মতন দুধে আলতা নই।
আমার বয়স বড় বউ এর চেয়ে ৫ বছর বেশি।
আমার বাবার অনেক টাকা নাই।
আর তার চেয়েও বড় কথা আমি আর তানিম সমবয়সী।
যেখানে তানিম আর আমার কোনো সমস্যা ছিল না সেখানে পুরো পরিবার আমার বিরুদ্ধে।
তানিম আর আমার বোঝাপড়াটা বেশ ছিল।
সে কখনোই আমাকে অবহেলা করেনি।
যতটা ভালো বিয়ের আগে বাসতো তার চেয়ে আরও অনেক বেশি এখন বাসে।
আমার শত কষ্ট আমি ভুলে যেতাম তানিমকে আকড়ে ধরে।
যতদিন যাচ্ছিল ততই তাদের কথা শুনানোর মাত্রা বেড়েই যাচ্ছিল।
আমি কখনই তানিমকে এসব জানাতাম না, আমি চাইতাম না তাকে মেন্টালি প্রেশার দিতে।
নিজের মধ্যেই চেপে রাখতাম।
কখনোই আলাদা হবার কথাও বলতাম না।
অনেক চেষ্টা করতাম সবার মন জয় করার।
আমার চেয়ে ছোট হওয়া স্বত্বেও জা এর সাথে সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য তার সব কাজও আমি করে দিতাম।
বন্ধু হতে চাইতাম কিন্তু পারছিলাম না।
প্রতিনিয়ত শুনতে হতো তানিম আরও ভালো মেয়ে ডিজার্ব করে।
শ্বাশুড়ি আর জা এক হয়ে আমাকে প্রতি নিয়ত কষ্ট দিত।
পরিবার নিয়ে কথা শুনাতো।
বাবা মা বেড়াতে আসলে তাদেরকেও ছাড় দিত না।
তানিমের রোজগার কম বলেও কথা শুনাতো।
বড় ছেলে আর তার বউ কে নিয়ে তার গর্বের সীমা ছিল না।
মুখ থুবরে কাঁদতাম
এরই মধ্যে এমবিএ শেষ করে
তানিম আর আমি জব এপ্লাই শুরু করলাম।
তানিমের একটি বেসরকারি কোম্পানীতে ভালো পদে চাকরী হলেও আমার হচ্ছিল না।
হতাশ হই নি, চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম।
জবের কথা শুনেই সবার মাথা গরম, ঘরের বউ বাইরে চাকরি করলে ছেলেকে টাইম দিতে পারবেনা।
চাকরী ওয়ালা মেয়েদের সংসার টিকেনা।আমার একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে চাকরী হয়।
আমি আর তানিম আলাদা বাসা নিয়ে ঢাকায় অফিসের পাশেই ভাড়া থাকতে শুরু করলাম।
নিজেদের মত করে সংসার শুরু করলাম।
দুজনই দুজনের বাবা মায়ের খরচ স্বরুপ সাধ্যমত টাকা পাঠাতাম।
এরই মধ্যে ঘর আলো করে আমার সন্তান রিয়াম জন্মালো।
আমার শ্বশুড় বাড়ির কেউ দেখতে এলো না।
আমি নিজে ছেলেকে নিয়ে তার দাদু ঠাম্মা কে দেখালাম।
সেদিন ও তারা কথা শুনাতে ছাড়ল না।
বলল চাকরী ওয়ালা মেয়েরা কখনোই ভালো মা হতে পারে না।
কষ্ট পেয়েছিলাম কিন্তু উত্তর দেইনি।
বেয়াদবি করিনি।
তানিমকে তার পিতামাতার প্রতি দায়িত্ব পালনে কখনোই বাধা দেইনি।
বরং নিজ থেকে তাদের সকল অভিমান ভাঙ্গানোর চেষ্টা করতাম।
কিন্তু পারিনি।
না আমি পারিনি সংসার জীবনের ২৫ টি বছর পাড় করেও আমি ভালো বৌ মা হতে পারিনি।
তবে হ্যা ভালো মা হতে পেরেছি।
আমার ছেলে আজ দশ জনের একজন।
একজন ক্যাপ্টেন এর মা হতে পেরে আমি গর্বিত।
হুম চাইলেই সেদিন শ্বাশুড়িকে বলতে পারতাম,
আপনার বড় ছেলের বউ হয়তো দেখতেই সুন্দর কিন্তু তার যোগ্যতা কি?
তার নিজের কোনো পরিচয় আছে?
গ্রজুয়েশন আছে?
ভালো পজিশন ভালো চাকরি কি আছে?
তার সন্তানেরা কি মানুষ হতে পেরেছে?
ভালো বিবেক কি তার আছে?
বাবার পরিচয় বাবার টাকায় গর্বের কিছু নেই।
হয়ত ভালো বৌ মা হতে পারিনি।
কিন্তু দিনশেষে ভালো স্ত্রী
আদর্শ মা হতে পেরেছি।
এটাই হয়ত আমার নারী জীবনের সার্থকতা।

সত্য_ঘটনা_অবলম্বনে

(_সমাপ্ত_)

19/02/2025

বউকে চাকরি করতে দিবো, কি দিবো না- এই নিয়া টানা এক সপ্তাহ ধরে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছি।। বউকে আমিই এদিক সেদিক সিভি ড্রপ করতে বলছিলাম।। দুই একটা ইন্টারভিউতে নিজেই নিয়ে গেছি।। বউয়ের ভালো একটা চাকরির অফার আসছে গত সপ্তাহে, সবি ঠিক ছিলো- ভালো কোম্পানি, হ্যান্ডসাম স্যালারি।। কিন্তু বিপত্তিটা হলো পোস্টিং নিয়া।।

আমি থাকি ঢাকা, দেড় বছরের সংসার।। উচ্চ শিক্ষিত বউকে সামান্য স্পেস দেয়ার কথা চিন্তা করে- আমিই ওকে চাকরি করার অফার করি।। সে যাস্ট লুফে নেয় আমার অফার।। যদিও আমি ভেবেছিলাম- সে অফার শুনে খুশি হবে, কিন্তু চাকরি করতে চাইবে না।।

এ সি এল নামে এক বিদেশি সংস্থায় জব হয়েছে নোভার।। কর্মস্থল কক্সবাজার।। ভাবা যায় আমি থাকবো ঢাকা, বউ থাকবে কক্সবাজার।। মাত্র দেড় বছরের সংসার আমাদের, এরমধ্যে এই দূরত্ব ভুল না সঠিক- সময় বলে দিবে।।

নোভাকে না করে দিলাম, এই জব করা লাগবে না।। নোভা অভিমান করে বসে আছে।। আমি জানি নোভার অভিমান, কচু পাতার উপরে পানির মত।। একটু নাড়া চাড়া দিলেই পানির নাম নিশানা গায়েব।। কিন্তু, এইবার কাজ হচ্ছে না- অগত্যা আমি নতি স্বীকার করলাম।।......
নোভা আর একটা মেয়ে কক্সবাজার কুরুশকুল এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে।। আমি ঢাকায় বিয়ের আগে ব্যাচেলর থেকেছি, আবারো ব্যাচেলর লাইফ নতুন করে উপভোগ করছি।। এলাকার হোটেলে খেয়ে দেয়ে গ্যাস্ট্রিক ডেকে এনেছি, গ্যাস্ট্রিক এখন রাতে আমার পাশে ঘুমায়।। মাঝে মাঝে হুদাই ঘুম থেকে ডেকে তুলে।। নোভার অভাবে গ্যাস্ট্রিক আমাকে নিয়মিত সংগ দেয়।।

নোভার চরিত্রের ব্যাপারে আমার একবিন্দুও সন্দেহ নেই, খুব সাধারণ ঘরের অসাধারণ একটা মেয়ে।। তাই ও এত দূরে থাকলেও বাজে চিন্তা মাথায় ঢুকে না।। আমি সকাল বিকাল অফিস করি, নোভার সাথে চ্যাট-ফ্যাট, ভিডিও কল এভাবেই যাচ্ছে।। বেচারির নাকি তিনমাসে কোন ছুটি নাই, নতুন জয়েন বলে কথা।। আমি ভাবলাম সময় করে আমিই কক্সবাজার যাবো।। .....
মাস খানেক হয়ে গেলো, নোভার জন্যে মন কেমন ছটফট করতেছে।। আমি এখন হাড়ে হাড়ে ওর অভাব অনুভব করছি।।

নোভার ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড আমার জানা, অভ্যাসবশত আমি মাঝে মাঝে এমনিই ঢুকি।৷ আজ মধ্য রাতে নোভার আইডিতে ঢুকতে গিয়ে ধাক্কা খেলাম।। এটা নাকি ওল্ড পাসওয়ার্ড, গতকাল রাতে নাকি এটা চেঞ্জ হয়েছে।। তেমন কিছু মনে না করে ঘুম দিলাম।।

পরের দিন সকাল থেকে নোভা ফোন রিসিভ করছে না।। বিকালে সে ফোন রিসিভ করে বলে- অফিসের জরুরি মিটিং ছিলো, কিছু ফরেনার গেস্ট ডিল করলো হ্যান ত্যান।। সেদিনের মত মেনে নিলাম।। বার বার ভাবছি- ভুল কিছু হচ্ছে না তো?
সন্দেহ জিনিসটা সংক্রামকের মত, একবার অল্প স্বল্প দানা বাঁধলে তা মহামারী হতে সময় লাগে না।। আমি সন্দেহ করতে ভয় পাই, নিজের মত যুক্তি বানিয়ে সান্ত্বনা নিতে ভালোবাসি।।

রাত ১০ টা বাজে, নোভা নাকি এখনো অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত।। আমার ফোনগুলোকে যাস্ট পলক পড়ার আগেই রেখে দিচ্ছে সে।। রাত ১১.৩০ এ জানালো বাসায় ফিরছে নোভা।। আমি ১২ টার দিকে কল দিয়ে ফোন ওয়েটিং পাই।। রাত সাড়ে বারোটার পর সে আমাকে কল দিয়ে বলে- মাথা ব্যাথা ঘুমিয়ে যাবো।। আমার আর জানা হলো না- ওর ফোন কেনো ওয়েটিং ছিলো।।
আমি সন্দেহ করতে ভয় পাই, তাই সেদিনো ঠান্ডা মাথায় ঘুমিয়ে গেলাম।।.....
নোভার বদলে যাওয়াগুলো আমার বুকে তীক্ষ্ণ তীরের ফলার মত বিঁধছে।। মস্তিস্কের চিন্তাগুলো নেগেটিভ হবার জন্যে কিলবিল করছে।। তবুও আমার ধৈর্য্যচূতি ঘটে নি।।

আজ ভয়ানক একটা জিনিস আবিস্কার করলাম, ওর এক কলিগের সাথে ফেসবুকে এড থাকার সুবাদে ওর কিছু ছবি সামনে আসলো।। যেখানে এক ছেলের সাথে নোভার কয়েকটা সেলফি।। সম্ভবত হিমছড়িতে গিয়ে তোলা।৷ ছেলেটা আবার নিজের ওয়ালে ক্যাপশন দিয়ে পোস্ট করেছে-
""সুন্দরীর সাথে পাহাড়ে একদিন।।
আমি বুঝার চেস্টা করলাম, কবেকার ঘটনা!! অবাক ব্যাপার, ছবিগুলো অইদিন সন্ধ্যায় আপলোড করা হয়েছে- যে দিন নোভা আমাকে সারাদিন মিটিং এর কথা বলেছিলো।।
নাহ, এইবার আর থাকা গেলো না।। সন্দেহ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে গেলাম।। ছেলেটার প্রোফাইল ঘেঁটে আরো অবাক হলাম।। ছেলেটার নাম পারভেজ, জব করে হোটেল সি প্যালেসে।। একজন ফাইভ স্টার হোটেলে চাকরি করা সুদর্শন যুবকের সাথে নোভার এইসব সেলফির রহস্য আমাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিলো।। আমি নোভাকে কোন প্রশ্ন করি না- অফিস থেকে ছুটির প্রস্তুতি নিচ্ছি।।......
নোভাকে জানালাম আগামী শুক্র শনি রবি ছুটি পেতে পারি- আমি আসতেছি কক্সবাজার।। নোভাকে খুব খুশি মনে হলো।। আমি কিছুটা ভরসা পেলাম নোভার খুশি দেখে।।
কিন্তু বিধিবাম।। অফিস ছুটি এলোট করলো না, বরং এমন একটা ভাব যে এইবার শুক্রবারেও অফিস করা লাগবে।।
নোভাকে নিউজটা জানানের সাথে সাথে বউটা আমার ভীষণ মন খারাপ করলো।।
আমিও কি করবো ভেবে না পেয়ে অফিসের কাজে মন দিলাম।।
বৃহস্পতিবার, আচমকা আমার ফোনে নোভার ম্যাসেজ এলো।।
শুনো, রায়হান মনে হয় আসতে পারবে না- পরশু আমাকে একটু সময় দিবা?
আমি ম্যাসেজের আগা মাথা কিছুই বুঝতে পারলাম না।। নোভাকে জিজ্ঞেস করবো এমন সময়, মনে হলো- আচ্ছা নোভা কি ভুল করে অন্যকারো ম্যাসেজ আমাকে দিলো? এমন কিছু কি হলো যে, পারভেজকে দেয়া ম্যাসেজ আমার কাছে এসে পড়লো?......
বাসে করে কক্সবাজার যাচ্ছি।। সকাল ৮ টায় কক্সবাজার ডলফিন মোড়ে নামলাম।। অফিসে যা হবার হবে।। ঘরের বউ নিয়ে সন্দেহে পড়েছি, অন্য কিছু ভাবার অবকাশ নেই।। নোভা জানে না আমি কক্সবাজার।।
আজ শুক্রবার, নোভার অফিস শুক্রবারে বন্ধ থাকে।। আমি সোজা কক্স ওশান হোটেলে উঠে গেলাম।। আমার খুব ইচ্ছা হাতে নাতে নোভাকে পাকরাও করবো।। হোটেল রুমে বসে কর্ম পরিকল্পনা সাজালাম।৷ কিন্তু, কোন বুদ্ধি মাথায় আসছে না।। যেহেতু আজ নোভার অফিস বন্ধ, সুতরাং আজ পারভেজ নামের অই ছোকরাটার সাথে দেখা করার সম্ভবনা অনেক বেশি।।
নোভাকে কল দিলাম- সকাল ১০ টার একটু বেশি বাজে।। নোভা আমাকে বললো, আজ ওর অফিস আছে।। আমি আরেক দফা অবাক হলাম।। নোভা জানালো দুপুর ২ টার পর নাকি ওর মিটিং- রাত ৮-৯ টা বেজে যাবে শেষ হতে।।
বেলা ১ টায় নোভার অফিসের সামনের চা স্টলে।। আড়ালে বসে অফিসের গেটে চোখ রাখছি, কেউ প্রবেশ করে কিনা দেখার জন্যে।। না বেলা তিনটা বেজে গেলো, অফিসে কাউকে ঢুকতে বা বেরুতে দেখলাম না।।নোভাকে কল দিলাম, ফোন কেটে দিলো।। মাথা ভোঁ ভোঁ করছে।।.....
সন্ধ্যায় নুসরাতের সাথে তাজ বে ক্যাফেতে তে বসে আছি।। মেয়েটা নোভার সাথে একি বাসায় থাকে।। নুসরাতের নাম্বার ছিলো আমার কাছে- আমি কল দিয়ে ওকে তাজ বে ক্যাফে তে আসতে বলি, সাথে বলে দেই প্লিজ নোভাকে কিছু জানাবেন না।।
আমার বিশ্বাস মেয়েটা নোভাকে কিছু জানায় নি।।
নুসরাতকে আমি সব খুলে বললাম, নুসরাত শুনে বিচলিত হলো।। কিন্তু কেন যেনো ওর বিচলিত হওয়াকে অভিনয় মনে হচ্ছিলো।। নুসরাত জব করে অন্য আরেক অফিসে, তাই সে নোভার অফিসিয়াল তেমন কোন তথ্য দিতে পারলো না।। তবে, সে যেটা জানালো সেটা হলো- এখন নোভা প্রায় সময় রাত করে বাসায় ফিরে।।
আমি নুসরাতকে বার বার অনুরোধ করে বললাম, আপু প্লিজ নোভাকে কিচ্ছু জানায়েন না।। মেয়েটার চোখের চাহিনীতে আস্থা পেলাম।।.....
হোটেল সি প্যালেসের ৩০২ নাম্বার রুমের দিকে যাচ্ছি।। ভয়ে বুক কাঁপছে আমার।। চিন্তা আর নানা দুঃচিন্তায় কুঁকড়ে যাচ্ছি আমি।। নুসরাত কিভাবে যেনো তথ্য পেয়েছে- নোভা আর পারভেজ নাকি, আজ রাতে ওই রুমে রাত কাটাবে।। আমাকে ফোনে জানানো মাত্রই আমি মাথা ঘুরে পড়ে যাবার মত অবস্থা।। ৩০২ নাম্বার রুমের সামনে দাঁড়ানো আমি- দরজা ভিতর থেকে লাগানো।। হোটেলে ঢুকার সময় কেউ তেমন জিজ্ঞেস করে নি।। নুসরাত কল দিয়ে বললো- দরজা ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢুকুন।।

আমি যাস্ট দরজা ধাক্কা দিলাম-
ভিতরে তাকাতেই চোখে মুখে আমার রাজ্যের বিষ্ময়।।
অইটা হোটেলের কোন কামরা না, ছোট খাটো বল রুম।। পুরো রুম সাজানো, আর বেশ কয়েকজন লোক।। আমি দরজায় দাঁড়ানো, আমাকে নোভা এসে হাত ধরে ভিতরে নিয়ে গেলো।। অবাক কান্ড ভিতরে নোভা, পারভেজ আরো ৪-৫ জন আছে।।

নোভা আমাকে সারপ্রাইজ দিলো- অফিসে ওর প্রমোশন হয়েছে।। মাত্র একমাসে ওর কাজ আর কোয়ালিটি দেখে ওকে সিনিয়র পোস্ট দিয়ে দিয়েছে।। এই খুশির সংবাদ সাথে সারপ্রাইজ দেবার জন্যে এসব আয়োজন।। আমি অত্যাধিক অবাক হয়ে হতবিহব্বল হয়ে আছি।। .....
নোভার সাথে কল কক্স ওশান হোটেলে আমি, কাল ঢাকা চলে যাবো।। আমার মাথায় দুনিয়ার প্রশ্ন, আজ রাতেই সব সমাধান করতে হবে-
ফেসবুকের আইডি চেঞ্জ করলা যে হঠাৎ করে?
নোভা বললো- তোমাকে চিন্তায় ফেলার জন্যে।।
পারভেজের সাথে পরিচয় কিভাবে?
--- আরে ওই হোটেলে আমাদের ফরেন গেস্টরা থাকে, তাই পারভেজ সহ ওই হোটেলের অনেকের সাথেই পরিচয় আছে।।
আর আমাদের সেলফিগুলো আমার অনুরোধেই ও আপলোড করে- যাতে তুমি জ্বলে পুড়ে আমার কাছে ছুটে আসো।।
আর যে ম্যাসেজটা দিয়েছিলা-
---- অইটা তো ইচ্ছা করে দিয়েছি, বুদ্ধু।। তোমার মনে চূড়ান্ত সন্দেহ ঢুকানের জন্যে।। তুমি আসতে চেয়ে আবার না করে দিলা, তাই আর উপায় ছিলো না।।
শুনো রায়হান, আমি জানতাম না তুমি কক্সবাজার।। আমি ভাবি নি তুমি আমাকে এতই সন্দেহ করবে যে, না জানিয়ে চলে আসবে।। আমি আরো সন্দেহ ঢুকানের জন্যে শুক্রবার অফিসের কথা বললাম।। তুমি আমাকে জানালেই পারতা তুমি কক্সবাজার এসে পড়েছো।।
আমার বুক থেকে বিশাল এক পাথর সরে গেলো।। নুসরাত তোমাকে সব বলে দিয়েছে তাই না।। নোভাকে হাসিমুখে জিজ্ঞেস করলাম।।
হ্যাঁ বলে নাই আবার- ওকে দিয়েই তো তোমাকে শেষে সি প্যালেসে এনে চমকে দিলাম।।
মনের মধ্যে শান্তি নিয়ে ঢাকা ফিরে যাচ্ছি।। মেয়েটা এত দুস্ট, আগে বুঝি নি।।......
নুসরাত পারভেজ আর নোভা বিচের পাড়ে বসে আছে।।
পারভেজ বলছে- তুমি না বলছিলা, তোমার জামাই অনেক চালাক।। হালায় তো পুরাই গাধা।। কি দিয়া কি বুঝাইলাম, বলদের মত ঢাকা চইলা গেলো।। বলদের বলদ আমাগো নুসরাতকেই ডাকলো সব ঘটনা বলার জন্যে।।

নোভা পারভেজের মাথায় টোকা দিয়ে বলে- তোমার এত বুদ্ধি কই থাকে।। কিভাবে একটা ফাউ অনুষ্ঠানের এরেঞ্জ করে বেচারা রায়হানকে ধোঁকা দিলা।। আর ভুল করে পাঠানো ম্যাসেজ থেকে শুরু করে সম্ভাব্য সব প্রশ্নের উত্তর মুখস্ত করাই দিছিলা ভাগ্যিস। জানো, অই ম্যাসেজ ভুলে রায়হানের কাছে যাবার পর থেকেই ভয়ে ছিলাম।। যাক, আপাতত আর কোন ঝামেলা নেই।।

নুসরাতের দিকে তাকিয়ে, তোকে ধন্যবাদ রে- বড় একটা ট্রিট পাবি তুই।।
নুসরাত ফিক করে লাজুক হাসি দিয়ে বলে- শুনেন পারভেজ ভাই, এইসব পরকিয়া টরকিয়া বাদ দিয়া নোভাকে বিয়ে করেন দ্রুত।।
আর নোভা, রায়হান ভাইকে কবে তালাক দিবি?
-- রায়হান শোভন

Address

Gazipur

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when গল্প গুচ্ছ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to গল্প গুচ্ছ:

Share