
20/12/2024
আওলাদে রাসুল ﷺ, গাউসে জামান, সুলতানুল মাশায়েখ, হযরাতুলহাজ্ব আল্লামা শাহ্সূফি সৈয়দ আবুল বশর আল হাসানী মাইজভাণ্ডারী (কাদ্দাসাল্লাহু ছিররাহুল আজিজ) এর পবিত্র জীবনী মুবারক (সংক্ষিপ্ত)....
ইসলাম হচ্ছে আল্লাহর একমাত্র মনোনীত ধর্ম। যা রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাধ্যমে পৃথিবীতে পূর্ণতা লাভ করেছে। তারই ওফাতের পর খোলাফায়ে রাশেদীন তাবেঈন তাবে- তাবেঈন এবং আল্লাহর প্রিয় বন্ধু আউলিয়া এ-কেরামের মাধ্যমে বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইসলাম প্রসার লাভ করেছে। ইসলামের এ মহান সূফী সাধক তথা আউলিয়া-এ-কেরামগণ নিষ্ঠা সহকারে ধর্মীয় অনুশাসনসমূহ পালন করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে মুসলমানদেরকে এর প্রশিক্ষণ দান করেন।
তারা এমন চরিত্র এবং মহৎ বৈশিষ্ট্যের অধিকারি, যার প্রশংসা আল্লাহ্ রাব্বুল আ'লামিন পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেন- হে মুমিনগণ! তোমারা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হয়ে যাও”।
এই উপমহাদেশের শাসকদের প্রতি দৃষ্টিপাত করলে দেখা যায়, মুহাম্মদ বিন কাসেম, সুলতান মুহাম্মদ গজনবী, মুহাম্মদ গৌরা ও মুহাম্মদ বখাতিয়ার খলজি সকলেই ছিলেন বিজয়ী বীর। ইতিহাসের বিচারে তারা কেউই ইসলাম প্রচারক ছিলেন না। যা হয়েছে তা কিন্তু এ দেশের হক্কানী আলেম, সূফী, দরবেশগণের প্রচেষ্টায় তাদের অলৌকিক প্রভাবে।
সাদাসিধে জীবনযাপন ইসলামের উদারনীতি, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের শিক্ষায় মুগ্ধ হয়ে এ অঞ্চলের মানুষ সভ্য জাতি রূপে বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়েছে।
বিশেষ করে সুলতানুল হিন্দ হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ (রাঃ), সুলতানুল আউলিয়া হযরত শাহ্জালাল ইয়ামেনী (রহঃ), গাউসুল আযম হযরত মাওলানা শাহ্সূফী সৈয়দ আহমদউল্লাহ্ মাইজভাণ্ডারী (কঃ), গাউসুল আযম শাহ্সূফী মাওলানা শাহ্সূফি সৈয়দ গোলামুর রহমান আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল মাইজভাণ্ডারী (কঃ) প্রমুখের প্রচেষ্টায় উপমহাদেশে ইসলামের প্রচার প্রসার লাভ করেছে।
এমনই একজন মহান অলি-এ- কামেল, নবীবংশের ২৯ তম পবিত্র বংশধর, সুলতানুল মাশায়েখ, গাউছে জামান হযরত আল্লামা শাহ্সূফি সৈয়দ আবুল বশর আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী মাইজভান্ডারী (কঃ)’র নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।
🕋🕋 জন্ম ও বংশ পরিচিতিঃ
১৯০৬ ইংরেজী সনের এক শুভক্ষণে পৃথিবীর পঞ্চম তীর্থ স্থান মাইজভাণ্ডার শরীফের প্রাণপুরুষ অলিকুল শিরোমণি, গাউসুল আযম হযরত মাওলানা শাহ্সূফী সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবভাণ্ডারী কেবলা ক্বাবার পবিত্র ঔরশে জন্মগ্রহণ করেণ। এ নূরানী শিশুর আগমনে আনন্দিত ও পুলকিত হয়ে সকলেই বলতে লাগলেন, এ শিশু মানব নয়, এ যেন নূরের পুতুল। সৃষ্টির কর্তৃত্ব নিয়েই যেন তার আগমন! কালে হয়ে ছিলোও তাই।
🕋🕋 বাল্যকাল ও শিক্ষাজীবন.....
শিক্ষা জীবনের প্রাথমিক স্তরগুলো মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ থেকেই অতিক্রম করেন। পরবর্তীতে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকেত অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করেন। পিতা গাউসুল আযম বাবাভাণ্ডারী (কঃ) এবং তৎকালীন যুগসেরা আউলিয়ায়ে কেরামগণ এর মাধ্যমে তিনি পবিত্র কুরআন, হাদীস শরীফ, ফিকহ্ শাস্ত্রে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। তিনি আরবী, ইংরেজী, উর্দু , ফারসী ভাষায় বক্তব্য্য ও লিখনী প্রকাশ করে গেছেন। উনার মজলিশে জগৎ বিখ্যতা আলেম ওলামা মনিষীগন উপস্হিত হতেন উল্লেখযোগ্য হযরত মওলানা ছৈয়দ আহমদ সিরিকুটি সাহেব (র.), ইমামে আহলে সুন্নাত হযরত মওলানা আজিজুল হক শেরে বাংলা (র.), বায়তুস শ্রফের প্রধান হযরত মওলানা আক্তার সাহেব (র.) সহ মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী (র.) ও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক (র.) হযরত কেবলা ও বাবাভানডারী কেবলার মাজার জেয়ারত শেষে উনার সোহবতে কয়েকবার সাক্ষাত করেছিলেন।কোরআন হাদিস ও মসনবী শরীফ এলমে তাসাউফ বিষয়ে অগাধ জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন এবং শ্রোতাদের মুগ্ধ করতেন।
🕋🕋 কর্মজীবনঃ
শিক্ষা জীবন সমাপ্তি করে, তিনি স্বীয় পিতা অলিকুল শিরোমণি, হযরত গাউসুল আযম বাবাভান্ডারী (কঃ) এর খেদমতেই নিয়োজিত থাকতেন। বাবাভান্ডারী কেবলা কাবা (কঃ) নিজ স্নেহের সন্তানকে আধ্যাত্মিকতার পরম পরশে যুগসেরা অলিরূপে গড়ে তোলেন। বাবাভান্ডারী কেবলা ক্বাবা বায়াতে খাস (বিশেষ বায়াত) এর মাধ্যমে তাকে খিলাফত দান করে ত্বরিকার মহান খিদমত আঞ্জামের জিম্মাদারী অর্পণ করেন।
তার জীবনযাপনে ছিল হাবিবে কিবরিয়া সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিপূর্ণ অনুসরণ। বাবাভাণ্ডারী (কঃ) এর সাথে চেহারা মুবারকে সাদৃশ্য থাকায়, বাবাভাণ্ডারী (কঃ) এর ওফাতের পরে আশেক, ভক্ত, অলিকুল তার চেহারা দেখেই অন্তরের তৃষ্ণা মেটাতেন।
শেরে বাংলা ইমাম আজিজুল হক্ব শেরে বাংলা (রঃ), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক্ব সহ তৎকালীন যুগসেরা অলি আল্লাহ্, ওলামায়ে কেরামগণ এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিরা তার সাহচর্য গ্রহণ করেছেন।
গাউসুল আযম বাবাভাণ্ডারী কেবলা ক্বাবা (কঃ) এর নূরানী আওলাদে পাকদের মধ্যে যোগ্যতম ও আধ্যাত্নিক জ্ঞানে পরিপূর্ণ হযরত মাওলানা শাহ্সূফী সৈয়দ আবুল বশর মাইজভান্ডারী (কঃ), হযরত বাবাভান্ডারী (কঃ) কেবলা ক্বাবা এর জানাযা শরীফের ইমামতি করেন।
🕋🕋 বেছাল বা ওফাত বরণ.....
বিশাল কর্মময় ও আধ্যাত্মিক জগতের স্বর্ণশিখরে আরোহণপূর্বক স্রষ্টার লীলা সমাপন করে, ১৯৬৫ ইংরেজী সালের ১৬ই ডিসেম্বর, ৩০শে অগ্রহায়ণ মাবুদে হাক্বিকী তথা আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্যে গমন করেন।
🕋🕋 স্থলাভিসিক্ত আওলাদে পাক.....
আওলাদে পাকদের মধ্যে আধ্যাত্মিক মহাসমুদ্রে অবগাহনকারী তার স্নেহধন্য মেঝ শাহ্জাদা, হিজরী পঞ্চদশ শতকের মুজাদ্দিদ, শায়খুল ইসলাম, "আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত" এর সাবেক সম্মানিত প্রেসিডেন্ট, তরিক্বা-এ-মাইজভাণ্ডারীয়ার মহান দিকপাল, হযরত আল্লামা শাহ্সূফি সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী মাইজভান্ডারী (কঃ) কেবলা ক্বাবাকে বিশেষ বায়াতের মাধ্যমে স্থলাভিষিক্ত করে যান। আল্লাহ্ পাক রাব্বুল আ'লামিন এ মহান অলি-এ-কামেল এর পবিত্র পদাঙ্ক অনুসরণের মাধ্যমে মহান আল্লাহ্ ও প্রিয় নবিজী (সাঃ) এর সন্তুষ্টি অর্জনের তৌফিক দান করুন। আমিন।
অমূল্য বাণী.......
🔰🔰 "প্রিয় নবিজীর (ﷺ) প্রেম ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তির পাথেয়"
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
🔰🔰 "একজন প্রকৃত মুসলমানের জন্য সবচেয়ে বেশী মূল্যবান হল,প্রিয় নবিজীকে (ﷺ) নিঃশর্তভাবে ভালবাসা ও তার প্রেমে নিজেকে পূর্ণরূপে সমর্পণ করা।"
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
🔰🔰 "প্রিয় নবিজীর (ﷺ) স্নেহময় দৃষ্টি অর্জনের জন্য নিজেকে তার প্রেমে উৎসর্গ করে দাও।"
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
🔰🔰 "প্রিয় নবিজীর (ﷺ) দুশমনদের হতে নিজেকে দূরে রাখবে।তারা মহান আল্লাহর অফুরন্ত দয়া,রহমত ও ক্ষমা হতে বঞ্চিত।"
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
🔰🔰" হযরত বাবাভান্ডারী (কঃ) "গাউসুল আযম"এর মহৎ সম্মানের মুকুটধারী।তিনি সুবিশাল ধনভান্ডার (বেলায়ত) অর্জন করেছেন।যার চাবি রয়েছে আমার হাতে।আমি ছাড়া কেউ সেই ধনভান্ডারের তালা খুলতে পারবে না।"
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
🔰🔰 "ও মইনুদ্দীন! আমার ভক্তদের জিম্মাদারি তুমি বুঝে নেওয়ায়,আমি চিন্তামুক্ত হয়েছি।"
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
🔰🔰 "প্রিয় মইনুদ্দীন! তোমার মিলাদ মাহফিলে স্বয়ং রাসুলে পাক (ﷺ) তাশরিফ আনায়ন করেন।তুমি মিলাদ মাহফিল পাঠ করলে বাবাভান্ডারী (কঃ) ক্বেবলা-এ-আলম খুশি হন।"
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
আওলাদে রাসুল ﷺ, গাউসে জামান, সুলতানুল মাশায়েখ, হযরাতুলহাজ্ব আল্লামা শাহ্সূফি সৈয়দ আবুল বশর আল হাসানী মাইজভাণ্ডারী (কাদ্দাসাল্লাহু ছিররাহুল আজিজ) ➖➖➖➖➖➖➖➖➖