27/04/2025
বেগুন চাষের বিস্তারিত নির্দেশিকা:
১. মাটি ও পরিবেশ:
বেগুন চাষের জন্য উর্বর, জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দোঁআশ বা বেলে দোঁআশ মাটি সবচেয়ে ভালো।
মাটির pH মান ৫.৫ - ৭.০ এর মধ্যে হওয়া উচিত।
প্রচুর রোদ এবং উষ্ণ পরিবেশ বেগুন চাষের জন্য আদর্শ। তাপমাত্রা ২৫-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস উপযুক্ত।
২. জাত নির্বাচন:
স্থানীয় চাহিদা ও আবহাওয়া অনুযায়ী জাত বাছাই করা দরকার। কিছু জনপ্রিয় জাত হলো — কনকিনী, নয়নতারা, সোনালী, কৃষ্ণা, ব্রি বেগুন-৪ ইত্যাদি।
৩. বীজ বপন:
বেগুন সাধারণত চারা করে লাগানো হয়।
প্রথমে নার্সারিতে বীজ বপন করতে হবে।
২৫-৩০ দিনের চারা জমিতে রোপণ করা হয়।
৪. জমি প্রস্তুতি:
২-৩ বার চাষ ও মই দিয়ে জমি ভালোভাবে ভেঙে নরম করে নিতে হবে।
পর্যাপ্ত জৈব সার (কম্পোস্ট/গোবর) মাটিতে মেশাতে হবে।
বেড তৈরি করে নির্দিষ্ট দূরত্বে গাছ লাগাতে হয় (সাধারণত ৬০ সেমি × ৭৫ সেমি দূরত্বে)।
৫. সার ব্যবস্থাপনা:
গোবর সার: ১৫-২০ টন/হেক্টর।
ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি যথাযথ পরিমাণে প্রয়োগ করতে হয় (মাটির পরীক্ষার ভিত্তিতে)।
প্রয়োজনে টপড্রেসিং (উপরি সার প্রয়োগ) করা হয়।
৬. সেচ ও নিষ্কাশন:
নিয়মিত সেচ দিতে হবে বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে।
অতিরিক্ত জল যাতে জমে না থাকে, সেই ব্যবস্থাও রাখতে হবে।
৭. রোগ ও পোকা দমন:
ঢলে পড়া রোগ, লিফ স্পট, ফল ছিদ্রকারী পোকা ইত্যাদির আক্রমণ হতে পারে।
জৈব কীটনাশক বা IPM (Integrated Pest Management) পদ্ধতি অনুসরণ করা ভালো।
নিয়মিত গাছ পরিদর্শন করে প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নিতে হবে।
৮. ফল সংগ্রহ:
ফুল ফোটার ১৫-২০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ উপযোগী হয়।
ফল মাঝারি আকারের হওয়া মাত্রই সংগ্রহ করা উচিত, নাহলে বেগুন শক্ত হয়ে যায়।
৯. উৎপাদন:
জাতভেদে একর প্রতি ১০-১৫ টন পর্যন্ত উৎপাদন হতে পারে।