19/08/2025
২০২০ সাল থেকে নিয়মিতভাবে এফবি নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম এর মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছি আলহামদুলিল্লাহ। আপনাদের দোয়া ভালোবাসা এতটাই বেশি যে আমার মতো নগণ্য একজন মানুষ - আমার ফেসবুক পেজে প্রায় এক মিলিয়ন ফলোয়ার, আমার দুইটি ইউটিউব চ্যানেল মিলে প্রায় তিন লক্ষ সাবস্ক্রাইবার।
অনেকেই বলতে পারেন যে আমি আসলে এটাকে বিশাল কিছু মনে করছি। এই সাবস্ক্রাইবার আর ফলোয়ার দিয়ে কী হয়? এগুলো দিয়ে কি ভাত খাওয়া যায়?
আমি মনে করি কী - এক একটি ফলোয়ার একেকজন মানুষের দোয়া এবং ভালোবাসা, এক একটি সাবস্ক্রাইবার একেকজন মানুষের দোয়া এবং ভালোবাসা। আমরা তো এমন মানুষ যে ফেসবুকে স্ক্রলিং করতে গিয়ে যদি কোনো পোস্টে ভুলক্রমে লাইক পড়ে যায় এবং আমরা ওই পোস্টটি ফেলে সামনে চলে যাওয়ার পর আবার রিটার্ন এসে সেই লাইক থেকে আনলাইক করে দিই। চিন্তা করুন একটা লাইক, একটা কমেন্ট, একটা শেয়ার, একটা ফলোয়ার, একটা সাবস্ক্রাইবার কতটাই গুরুত্বপূর্ণ। আলহামদুলিল্লাহ সেই গুরুত্বপূর্ণ সাপোর্ট এবং আপনাদের সকলের দোয়া ও ভালোবাসা আছে বলেই কাজ করে যাচ্ছি।
একটা প্রশ্ন করতে চাই - আপনারা যারা আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনেন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে, অথবা আপনারা আমার বন্ধুবান্ধব, কেউ অথবা আপনারা আমার খুব আপনজন, কাছের মানুষ, ছোট ভাই - আপনাদের মধ্যে এমন কেউ কি আছেন দয়া করে আমাকে বলবেন যে আমি রাসেল মুন্সী, ব্যক্তিগতভাবে আমি আমার নিজেকে নিয়ে কখনো স্বপ্ন দেখেছি? আমি কখনো স্বপ্ন দেখেছি যে একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি তৈরি করব? আমি কখনো নিজেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি যে আমি চেয়ারম্যান, এমপি, মন্ত্রী হব? কখনো আমার পরিবারকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি এবং সেই স্বপ্নকে প্রকাশ করেছি আপনাদের সাথে যে আমার ছেলে আব্দুল্লাহকে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বানিয়ে আমেরিকায় লেখাপড়া করাবো, আমার মেয়ে আয়েশাকে ইঞ্জিনিয়ার বানাবো, ডাক্তার বানাবো এবং বিশাল কিছু বানাবো? আমি কি স্বপ্ন দেখেছি আমার ছোট ছেলে আমির হামজাকে নিয়ে? আমি কি কখনো আমার ভাইদের নিয়ে, আমার বাবা মাকে নিয়ে আপনাদের সাথে স্বপ্ন দেখেছি যে আমি বিশাল কিছু করবো আমার সাথে? নাকি আমার সম্পূর্ণ স্বপ্নগুলোই ছিল দেশের ও সারা বিশ্বের সাধারণ জনগণকে নিয়ে?
আমি নিশ্চিত হান্ড্রেড পার্সেন্ট আমার আপনজনদের উত্তর এটাই হবে যে না, আমি কখনো আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে ব্যক্তিগত স্বার্থ নিয়ে স্বপ্ন দেখতে দেখিনি বরং আপনি জনগণ এবং সারা বিশ্বের জনগণকে নিয়েই স্বপ্ন দেখেছেন। আসলে আমি মনে করি কী - সারা বিশ্বের জনগণের মধ্যে আমার ছেলেও আছে, আমার মেয়েও আছে, আমার স্ত্রী আছে, আমার সন্তানরা আছে, আমার মা-বাবা, ভাই-বোন সবাই। আমি সারা বিশ্বের জনগণকে নিয়ে যত প্রকার কল্যাণকর চিন্তাভাবনা করি সেই কল্যাণকর চিন্তাভাবনার মধ্যে তো জনগণের মধ্যে তো আমার ছেলে, আমার স্ত্রী, আমার বাবা-মা, পরিবারের সবাই আছে। জনগণ আমার কাছ থেকে যা পাবে আমার পরিবার তো তাই পাবে।
যদি আমার স্বপ্ন আপনারা দেখে থাকেন এমনটি, তাহলে আসুন আবার নতুন কিছু সৃষ্টি করি যেই সৃষ্টির মাধ্যমে কল্যাণ বয়ে আনবে দাউদকান্দি, তিতাসসহ সারা বাংলাদেশ তথা সারা বিশ্বে।
যদি আপনজনের মধ্য থেকে কেউ থেকে থাকেন এবং জেনে থাকেন - আল্লাহকে সাক্ষী রেখে আল্লাহর কসম করে জানেন যে আপনারা রাসেল মুন্সীর স্বপ্ন - তার ব্যক্তিগত স্বপ্ন নয়, সমস্ত স্বপ্ন সাধারণ জনগণকে নিয়ে, শুধু দেশের জনগণ নয় সারা বিশ্বের জনগণকে নিয়ে - তাহলে আসুন আমরা একসাথে মিলেমিশে কাজ করি, সকল হিংসা বিদ্বেষ ভুলে যাই।
দেখুন খুব কষ্ট হয় বলতে - ২০২০ সাল থেকে সাংগঠনিকভাবে কাজ শুরু করি। আসলে আমি একজন উৎসাহদাতা হিসেবে কাজ করেছি। জানি না আমার উৎসাহ পেয়ে দাউদকান্দি তিতাসে কোনো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে উঠেছে কিনা অথবা আমার উৎসাহে কেউ কোনো ভালো কাজ করেছেন কিনা। আসলে আমি একজন উৎসাহদাতাই, আর এইটুকু সামর্থ্যই আমার আছে।
একজন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সাংগঠনিক কাজ করতে গিয়ে অনেক বড় বড় সাংগঠনিক মানুষের সাথে মিশেছি। আসলে একটা বিষয় হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করেছি - আমরা যারা সংগঠনপ্রিয় মানুষ, সংগঠন তৈরি করি, আমরা মানুষের কল্যাণ চাই, মানুষের কল্যাণে কাজ করি, কিন্তু আমরা নিজেরা নিজেদের কল্যাণ চাই না, নিজেদের কল্যাণে আমরা কাজ করি না। আমরা স্বেচ্ছাসেবীরা, সংগঠক যারা আছি তারা তো একজন আরেকজনের পিছনে লেগে থাকি, কে কার ক্ষতি করব - অথচ আমরা নাকি স্বেচ্ছাসেবী, মানবতার কল্যাণে কাজ করি, মানুষের সেবা করি, নিজের সেবা করি না। এমন কাজকর্ম দেখে আরও তিক্ত অভিজ্ঞতা যেগুলো প্রকাশ করার মতো নয় সেই অভিজ্ঞতা থেকে ছেড়ে দিই এই সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড। কিন্তু আবারো শুরু করতে চাই - একা কোনো কিছুই সম্ভব নয় যদি সংঘবদ্ধ সাংগঠনিকভাবে না করা হয়।
যারা আমাকে চিনেন জানেন এবং আল্লাহকে সাক্ষী রেখে যারা বুঝেন চিনেন জানেন আমার স্বপ্নগুলো শুধু সাধারণ জনগণকে নিয়ে - আসুন আমরা কিছু করি সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে সাধারণ জনগণের জন্য, শুধু দেশের জন্য নয় সারা বিশ্বের জন্য।
জানেন, আপনারা অনেকেই বলেন - আপনারা যারা আমাকে ভালোবাসেন আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দেন, আমার সাথে যোগাযোগ করেন, জানতে চান রাসেল ভাই আগের মতো কেন আপনাকে দেখি না। জানেন আমি বড় একাকী, আমি কীভাবে কাজ করব? মাঝেমধ্যে আমি নিজেই নিজেকে হারিয়ে ফেলি, হতাশ হয়ে যাই। আমিও তো মানুষ, আমিও তো রক্তে মাংসে গড়া একজন মানুষ, আমারও পরিবার আছে, আমারও জীবনের মায়া আছে, কিন্তু প্রতিনিয়ত আমাকে জীবনের হুমকি নিয়ে চলাফেরা করতে হয়।
নিজের অনেক দুঃখ কষ্ট আছে। আমাদের জিআরকান্দি গ্রাম - এই গ্রামে জন্মগ্রহণ করার পর থেকেই হয়ে গেছি সন্ত্রাসী। অথচ নিজের বাপ-দাদা চৌদ্দগুষ্টির মধ্যে কেউ সন্ত্রাসী নাই। আমাদের জিআরকান্দি ইউনিয়নের মধ্যে শোলাকান্দি জিয়ারকান্দি নাম শুনলেই মানুষের আতঙ্কিত হয়ে সেঁধাবার খায়। মূলত যে সন্ত্রাসীদের কারণে আমাদের সবার বদনাম হচ্ছে, আমাদের মাতৃভূমির বদনাম হচ্ছে, মায়ের বদনাম হচ্ছে - তাদেরকে পরিবর্তন করতে গিয়ে নিজের জীবনটাই যাওয়ার পথে চলে আসছিল। আমাকে মাইক্রোবাসে চাপা দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। কারা সে আপনারা জানেন। আমি আসলে এগুলো প্রকাশ করতে চাই না। এবার জেল থেকে প্রতিজ্ঞা করে আসছে - হাতে হাত রেখে আরও কিছু সন্ত্রাসী আছে জেলের মধ্যে, তারা সবাই একত্রিত হয়ে মামুন সম্রাট - এবার আমাকে খুন করে শেষবারের মতো যাই। অথচ আল্লাহ তা'আলা জানেন একটা লোকের জীবন পরিবর্তন করার জন্য না জানি কতটাই চেষ্টা করেছি। সন্ত্রাসীর সাথে চলেছি বলে সন্ত্রাসী হয়েছি। আল্লাহ তা'আলা জানেন আমি কোন উদ্দেশ্যে, কোন নিয়তে কী করছি।
আসুন আমরা মিলেমিশে - যদি আপনার বিবেক বলে - আসুন আমরা মিলেমিশে এমন কিছু তৈরি করি, এমন কিছু তৈরি করি যেটা আমাদের গৌরীপুর বাজার থেকে আলোকিত হয়ে সারা বিশ্ব আলোকিত হবে। এখানে এমন একটি নূর সৃষ্টি হবে যেই নূরের আলোতে শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্ব আলোকিত হবে ইনশাআল্লাহ।