24/01/2025
লাফনাউটের দস্তারবন্দী সম্মেলনে : ভয়াবহ রাজনীতি আর বাটপারির মেলবন্ধন
★গোলাম আম্বিয়া কয়েসের বাটপারি
দস্তারবন্দী সম্মেলনে স্মারকের সম্পূর্ণ খরচ দেবেন বলে ওয়াদা করেছিলেন গোলাম আম্বিয়া কয়েছ। সে কারণে স্মারক কমিটির একজন সদস্য স্মারক ছাপার সময় তাকে বলেন, 'আজ স্মারকের কাগজ কিনব টাকা দেন।'
তখন কয়েস বলেন, 'তোমার আব্বার কাছে ১ লাখ টাকা দিয়ে দিয়েছি।' কিন্তু নাজিম সাহেব যেদিন স্মারক ফাইনাল করতে যান সেদিন বললেন, 'কয়েস কোনো টাকা দেন নি।'
যাহোক, এসবের মধ্য দিয়েই ঠিক সময়ে স্মারক ছাপা হয়ে এলো। শুরু হলো দস্তারবন্দী। স্মারক উন্মোচনের পর দেখা গেলো, ১ম পৃষ্ঠায় অর্থায়নে কয়েসের নাম! কী বিস্ময়! কী রাজনীতি! এক টাকা না দিয়েও সবকিছুতে নাম!
এ ঘটনার পর ফুজালা কমিটি ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েসকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। তাকে ডেকে জবাবদিহিতা করেন। টাকা প্রদান না করলে তাকে স্টেজে ওঠতে দেওয়া হবে না বলে জানান। এসময় কয়েস ওয়াদা করেন, 'আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টায় আপনাদের হাতে টাকা দিয়ে দেব।'
কিন্তু পরদিন সকাল ১০টা পেরিয়ে গেলেও কয়েস কোনো টাকা দেন নি। হুটকরে দুপুরে স্মারক নিলামকালে দুই লাখ ২২ হাজার টাকার চেক দিয়ে নিলাম রাখেন।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্মারক নিলামের নামে কয়েসের প্রদানকৃত চেকটির লিখিত টাকাগুলো অন্য দাতার।
** মূল পয়েন্ট : আজ ২৪ তারিখ পেরিয়ে গেলেও কয়েস এখনো স্মারকের খরচের টাকা দেননি। কেবল সাজানো নাটকে নিজেকে প্রমোট করেছেন। নিজের বিজ্ঞাপন হিসেবে মাহফিলকে ইউজ করেছেন।
★ ফজলুর রহমান পাকিস্তানি ও আরশাদ মাদানির আসা নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা
প্রথমে জমিয়তের মহাসচিব (একাংশ) ড. মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম সাহেবের মাধ্যমে মাওলানা ফজলুর রহমান সাহেবকে লাফনাউট মাদরাসা কর্তৃপক্ষ দাওয়াত করেন এবং ফজলুর রহমান সাব দাওয়াতও কবুল করেন।
এর ধারাবাহিকতায় দেড় মাস পূর্বে ইকরাম সাহেব লাফনাউট মাদরাসার নাজিম সাহেবকে ফজলুর রহমান সাহেবের টিকিট ও আসার এন্তেজামের বিষয়ে কল করলে নাজিম সাহেব বলেন, আমরা ফজলুর রহমান সাহেবকে দাওয়াত প্রদান ও আনার দায়িত্ব মুফতি আব্দুল মুনতাকিম সাহেবকে দিয়ে দিয়েছি। তিনি সবকিছুর ব্যবস্থা করবেন।'
ইকরাম সাহেব এসব শুনে একটু অবাকই হলেন। কারণ, তার (ইকরাম সাহেবের) মাদরাসায় গিয়ে লাফনাউট কর্তৃপক্ষ মাওলানা ফজলুর রহমান পাকিস্তানিকে দাওয়াত করার জন্য তাগিদ দেন।
পরে একপর্যায়ে ইকরাম সাহবে মাওলানা ফজলুর রহমান সাহেবকে দাওয়াত করেন এবং তিনি দাওয়াত কবুলও করেন।
কিন্তু হুটকরে লাফনাউট মাদরাসার এমন কাণ্ড (মুনতাকিম সাহেবকে নিয়মবহির্ভুত দায়িত্ব)
ইকরাম সাহেবকে অবাক করে। অবশ্য তিনি ধৈর্য ধরে এ বিষয় এড়িয়ে গেছেন। লাফনাউটকর্তৃপক্ষ মুনতাকিম সাহেবের কাছে দা
সবশেষ বৃহস্পতিবার লাফনাউট মাদরাসার নাজিম সাহেব পাকিস্তানের মুফতি সায়্যিদ শাহ ফয়সাল নাদীম সাহেবকে লাফনাউটের সম্মেলনে হাজির করার জন্য মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম নেতৃত্বাধীন জমিয়তের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ আরমান সাহেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তখন আরমান সাহেব নাজিম সাহেবকে জিজ্ঞেস করেন, 'মাওলানা ফজলুর রহমান সাহেব ও মাওলানা আরশাদ মাদানী সাহেব না আসার কারণ কী?'
উত্তরে নাজিম সাহেব বলেন, ''আমরা প্রথমে মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম সাহেবের মাধ্যমে মাওলানা ফজলুর রহমান সাহেবকে দাওয়াত করেছিলাম। পরে গোলাম আম্বিয়া কয়েছ বললেন, 'মাওলানা ফজলুর রহমান সাহেবের সঙ্গে মুফতি আব্দুল মুনতাকিম সাহেবের ভালো সম্পর্ক।' এজন্য আমরা গোলাম আম্বিয়া কয়েছ সাহেবের মাধ্যমে আব্দুল মুনতাকিম সাহেবকে মাওলানা ( ফজলুর রহমান পাকিস্তানি) আনার দায়িত্ব দিই।''
'তিনি নিজ খরচে মাওলানাকে আনবেন পরে আমরা টাকা দেব এইভাবে সবকিছু ফাইনাল হয়। কিন্তু মুনতাকিম সাহেব কিছুই করেননি, এমনি মাওলানার (ফজলুর রহমান পাকিস্তানির) টিকিটও করেননি।'
একই সময়ে আরশাদ মাদানী প্রসঙ্গে নাজিম সাহেব বলেন, 'আমি নিজে দেওবন্দ গিয়ে হযরতকে দাওয়াত করি। হযরত তখন দাওয়াত কবুল করেননি। বলেছেন, 'আমি নভেম্বরে যাব, আবার জানুয়ারিতে আসা সম্ভব হবে না।'
''কয়েকদিন পূর্বে (কৌড়িয়ার শায়খের সাহেবজাদা) হাফিজ মাওলানা মুহসিন বলেন যে, ' ২২তারিখ আরশাদ মাদানি বাংলাদেশে তাশরিফ আনবেন।' তখন আমরা ২৩ তারিখ লাফনাউট আসার বিষয়ে কথা বলতে বললে মুহসিন বলেন,'আমি কথা বলে জানাব।''
'পরে মুহসিন সাহেব জানান, ''হযরত আসবেন ইনশাআল্লাহ। ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে আনতে হবে। আমরা এজন্য প্রচারও করি।''
কিছুদিন পর মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া সাহেব বললেন, 'হযরতের প্রোগ্রাম ঢাকায়ই সময়ে কাভার হবে না। ঢাকার বাহিরে হযরত যাওয়া সম্ভব না।''
নীতিকথা : জগতজুড়ে কওমি মাদরাসাকেন্দ্রীক মাহফিলগুলো কেবল জনতার ইসলাহের জন্য হয়ে থাকে। উদ্দেশ্য থাকে, মানুষতে হকের বার্তা পৌঁছে দিয়ে দ্বীনের পথে নিয়ে আসা। লাফনাউটের দস্তারবন্দী সম্মেলনও নিশ্চয় এই তরিকার বাহিরে না। কিন্তু প্রশ্ন হলো, যদি এই তরিকার হয়, তবে এত এত মিথ্যাচার, প্রতারণা কেন? ইসলাহের মাহফিলে অন্ধকার রাজনীতি কেন? ছত্রপুরির এই পবিত্র বাগানকে কলুষিত করছে কারা? কাদের ছত্রছায়ায় এসব হচ্ছে? আমরা জানতে চাই, ফুজালা কমিটি জানতে চায়, জানতে চায় সাধারণ মানুষগুলোও।