07/05/2025
গল্পঃ একটি ছেলের আত্মকথা
পর্বঃ ০৫ (শেষ)
লেখকঃ ফাহিম
""
""
""
""
কবীর স্যার অনেক এক্সাইটমেন্ট নিয়ে রাকিবের ঠিকানা অনেক কষ্টে বের করে এবং ওর বাসাতে যায় ।
এসে দেখে আমি শুয়ে আছি । কবীর স্যার এসে বললেন,,,,,,
স্যারঃ আরে রাকিব এভাবে শুয়ে আছো কেন । আজকে তো রেজাল্ট বের হইছে । তুমি সারা বগুড়ার মধ্যে ফার্স্ট হইছো ।
আমার খুশি তে চোখ থেকে পানি পড়ছে । এতোদিন কষ্টের কান্না কাঁদছি । কিন্তু অনেকদিন পর খুশির কান্না কাদলাম ।
স্যার আবার বললেন,,,,,,
স্যারঃ কি হলো চলো আমার সাথে । আজকে তোমাকে আমি ট্রিট দিবো ।
আমি প্রথমে যেতে না চাইলেও স্যারের জোরাজুরিতে বের হলাম । তারপর প্রথমেই মিষ্টির দোকানে গিয়ে আমাকে অনেক মিষ্টি খাওয়ালেন ।
সাথে উনিও খেলেন । আমি একটা বিষয় ভাবলাম এই তো সেদিন এই কবীর স্যার ই আমাকে কতটাই না অপমান করতেন ।
কিন্তু আজ আমাকে নিজের টাকায় খাওয়াচ্ছেন তবুও চোখে অনেক আনন্দ নিয়ে । কতটা পরিবর্তন হয়ে গেছেন উনি । আল্লাহ্ কত কিছুই পারে ।
স্যার আমাকে বললেন,,,,,,
স্যারঃ কি এতো ভাবছো ।
আমিঃ কিছু না তো স্যার ।
স্যারঃ তোমার মুখ এতো শুকনো কেন । কি হইছে বলো তো আমাকে ।
আমিঃ না স্যার তেমন কিছুই না ।
স্যারঃ চলো আজকে আমি তোমাকে নিয়ে সারাদিন ঘুরবো ।
তারপর কবীর স্যার আমাকে নিয়ে তার গাড়িতে সারাদিন অনেক ভালো জায়গায় ঘুরিয়েছেন । আমি সেগুলো জায়গা কখনো চোখেই দেখি নি ।
অনেক রাত করে স্যার আমাকে আমার বাসায় নামিয়ে দিলেন । নামার সময় বললাম,,,,,
আমিঃ স্যার আপনাকে একটা কথা বলতে চাই ।
স্যারঃ কালকে বইলো । আর কালকে সেই কোম্পানির ম্যানেজার ও আসবে তোমাকে জবের লেটার দিতে । সো তুমি কাল কলেজে আসতে লেট করবে না ।
আমিঃ স্যার প্লিজ আজকেই কথা গুলো বলতে হবে । অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।
স্যারঃ গাড়ি থেকে নেমে বললেন,,,,,,
স্যারঃ ঠিক আছে বলো কি কথা ।
আমিঃ স্যার আমার ছোট বোন ও আমাদের এই কলেজে পড়ে ।
স্যারঃ হুমম তো ।
আমিঃ স্যার আমার জব টা ওকে দিন প্লিজ । এটা আমার শেষ রিকোয়েস্ট । আমি আর কখনো আপনার থেকে কিছুই চাইবো না ।
স্যারঃ রাকিব তুমি এভাবে বলছো কেন । আর তোমার জব তুমি তোমার বোন কে কেন দিবে ।
তারপর রাকিব যেটা কবীর স্যারকে বললো সেটা শুনে কবীর স্যার রাজি হয়ে গেলেন জবটা তার বোনকে দিতে ।
তারপর সেখান থেকে কবীর স্যার চলে আসেন । পরের দিন কলেজে ম্যানেজার কে কবীর স্যার বুঝিয়ে রাকিবের বোন কে জব টা দেয়া হয় । আর ওর বোন জবটা করে এখন স্বাচ্ছন্দ্যে সংসার চালাতে পারে ।
""
""
""
""
""
তারপর ভরা ক্লাসের সামনে কবীর স্যার চোখ মুছে সকল স্টুডেন্ট দের বললেন,,,,,
স্যারঃ এটাই রাকিবের জীবনের আত্মকথা । আর আমার দেখা একমাত্র ভালো ও সহজ সরল স্টুডেন্ট । রাকিব আমাদের কলেজের এই আজিজুল হক কলেজের একটা গর্ব আর একটা রত্ন ছিলো । যেটা আমরা কেউ বুঝতে পারি নি ।
সকল স্টুডেন্ট নিজেদের ও চোখ মুছে স্যার কে জিজ্ঞাসা করলো,,,,,,,
স্টুডেন্টঃ কিন্তু স্যার আপনি এটা বললেন না রাকিব সেদিন রাতে আপনাকে কি এমন বলেছিলেন । আর আপনি তখন এক কথায় তার বোনকে জব টা দিয়ে দিলেন ।
আর আরেকজন স্টুডেন্ট বললো,,,,,
স্টুডেন্টঃ আর স্যার এখন রাকিব ই বা কোথায় সেটাও তো বললেন না ।
স্যারঃ তোমরা রাকিব কে দেখতে চাও ?
স্টুডেন্টঃ জ্বি স্যার ।
স্যারঃ তাহলে আমার সাথে এসো ।
স্যার স্টুডেন্সদের কলেজের একটু পাশেই একটা কবর স্থানে নিয়ে গিয়ে একটা কবর দেখি বললেন,,,,,,
স্যারঃ ওই তো রাকিব ওখানে চিরো নিদ্রাই শুয়ে আছে ।
স্টুডেন্ট গুলো সবাই অবাক হয়ে একসাথে বললো,,,,,,,
স্টুডেন্টঃ মানে ।
স্যারঃ মানে হলো,,সেদিন রাকিব আমাকে বলেছিলো,,,,,,
""
""
ফ্লাশব্যাক,,,,,
""
""
স্যারঃ আচ্ছা বলো কি কথা ।
রাকিবঃ স্যার আমার যেদিন মাথা ব্যথার জন্য হাসপাতালে যাই তখন ডাক্তার আমার মাথাটা পরীক্ষা করে জানায় আমার মাথায় একটা ব্রেইন টিউমার হইছে । আর সেখান থেকে আমার ব্রেইন ক্যানসার ও ধরেছে । আর এটাই আমার লাস্ট স্টেইজ । অপারেশন করেও আর কোনো কাজ হবে না । রেজাল্ট শুনে অনেক খুশি হয়েছিলাম । আপনাদের সাথে অনেক দিন বেঁচে থাকতে চেয়েছিলাম । কিন্তু ভাগ্য আমার সায় দিল না স্যার । স্বপ্ন ছিলো মা বোন কে নিয়ে অনেক হ্যাপি থাকার । কিন্তু সেটা আর হলো না । তাই আমার জব টা আমার বোনকে দিতে চাই । প্লিজ স্যার এটা আমার জীবনের শেষ অনুরোধ । আপনকে রাখতেই হবে ।
বলতে বলতে রাকিবের চোখের কোণে পানি চলে এসেছে । কবীর স্যারের চোখ ও পানিতে ছলছল করছে । কোনো কথা না বলেই এক ঝটকায় রাকিবকে জড়িয়ে ধরলেন ।
""
""
বর্তমানে,,,,,,,,
""
""
বলা শেষে স্যার আবার চোখ মুছে সকল স্টুডেন্ট দের বললেন,,,,,,
স্যারঃ তো অল স্টুডেন্ট এখন বলো কে কে ওর মতো একজন মেধাবী ওর কঠোর পরিশ্রম করে জীবন গড়তে চাও বলো ।
সব স্টুডেন্ট ই হাত তুলে বললেন,,,,,
স্টুডেন্টঃ স্যার আমরা সবাই রাকিবের মতো হতে চাই ।
স্যারঃ তাহলে রাকিবের জীবনের আত্মকথা শুনিয়ে আমিও স্বার্থকতা লাভ করবো ।
ভালো থাকুক রাকিবের মতো ভালো রাখার মানুষ গুলো ।
______________//
___________//
_______//
সমাপ্ত//
_______//
___________//
______________//
কেমন লাগলো আপনাদের এই গল্পটা । আশা করি ভালোই লাগছে । আমার সাধ্য মতোই চেষ্টা করছি । সকলেই একটা করে কমেন্টস করবেন আশা করছি ।গল্পঃ Hidden Love
Written By_Ishanur Tasmia
20th Part and last
রায়ানের খুব প্রিয় রঙ হচ্ছে নীল,,,তাই মিরা একটা নীল রঙের শাড়ি পরেছে,,,, সাথে টুকটাক সাজগুজ,,,,
রায়ানের অফিস থেকে বাসায় আসতে প্রায় রাত ১০ টা বেজে যায়,,,,, রুমে এসেই দেখে মিরা নেই,,,, ওয়াশরুমেও দেখে কিন্তু সেখানেও নেই,,,, মিরাকে না পেয়ে রায়ান যেন পা*গ*ল হয়ে যায়,,, দিশেহারা হয়ে খুঁজতে থাকে তাকে,,,, হঠাৎ রায়ানের চোখ যায় কোনার রুমটায়,,,,
কোনার রুমটায় চোখ যেতেই রায়ানের বুক ধুক করে ওঠে,,,, কারন রুমটায় রায়ান আর মিরা অতীতে থাকত,,,,রুমটা রায়ান সবসময় তালা মে*রে রাখে,,,, কিন্তু এখন রুমটায় তালা নেই,,,, তার উপর রুমটার দরজা সম্পূর্ণ খোলা আর সেখান থেকে লাইটের আলো আসছে,,,,,
রুমে লাইট জ্বালানো দেখে রায়ানের বুঝতে বাকি রইল না যে মিরা রুমটার ভেতরে আছে,,,, অজানা এক ভয় কাজ করছে রায়ানের ভেতর,,,, "" তবে কি মিরা সব জেনে গেছে?? সে কি তাকে ছেড়ে চলে যাবে?? একবারও কি মাফ করবে না তাকে?? "" প্রশ্ন গুলো বেশ ভাবেই কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে রায়ানের মাথাটাকে,,,,, কী করবে বুঝতে পারছে না রায়ান,,,, রুমটায় যাবে কি যাবে না,,?? এটা ভেবেই ৩ মিনিট সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে,,, তারপর কিছুটা সাহস মনে সঞ্চয় করে রুমটার দিকে এগুতে থাকে,,,,
রুমটার ভেতর ঢুকতেই কে যেন রায়ানকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,,,, আচমকা এভাবে জড়িয়ে ধরায় রায়ান কিছুটা ভয় পায়,,, পরক্ষনে নিজেকে সামলে নেয়,,,কারন সে জানে,,, তাকে জড়িয়ে থাকা ব্যক্তি আর কেউ না মিরা,,,, তাই রায়ানও মিরাকে জড়িয়ে ধরতে নিবে তার আগেই মিরা রায়ানের ঠোঁট ২টা দখল করে নেয়,,,,,
মিরার এমন করায় রায়ান অনেকটাই অবাক হয়,,, কারন মিরা কখনও-ই রায়ানকে নিজ থেকে কিস করে নি,,,,,
রায়ান মিরাকে ছাড়াতে নিলে মিরা আরও বেশি করে রায়নকে কিস করা শুরু করে,,, তাতে রায়ান আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না,,, সেও মিরাকে সমান তালে কিস করা শুরু করে,,,,
কিছুক্ষন পর মিরা রায়ানের কাছ থেকে সরে আসে,,, মিরা সরে আসতেই রায়ান মিরাকে মাথা থেজে পা পর্যন্ত একবার স্কেন করে নেয়,,,, অপরুপ লাগছে তার মায়াপরীকে,,,, রায়ান হাসিমুখে মিরাকে জিজ্ঞেস করে,,,,
রায়ানঃ আজকে এত সুন্দর করে সাজলে যে,,,??
মিরাঃ ওমা,,, সাজব না,,, আজকে তো আপনার জন্য একটা বিশেষ দিন,,,, যা আপনি আজীবন মনে রাখবেন,,,,,
মিরার কথা শুনে রায়ান ভ্রু কুচকে মিরার দিকে তাকায়,,,, পরক্ষনে তার মনে হয় তারা তো তাদের আগের রুমে,,,
রায়ানের মধ্যে আবার ভয় কাজ করা শুরু করে,,, ভয়ে ভয়ে মিরাকে বলল,,,,
রায়ানঃ ত,,,তুমি,,এ,,এখা,,নে,, কেন,,, মিরা,,,?? চ,,,চল,,,এখা,,,ন,,থ,,,থেকে,,,,
মিরাঃ কেন যাব,,,তাছাড়া আমি আমাদের অতীতের রুম দেখতে আসছি,,,,
রায়ানঃ অ,,,অতী,,,তের,,, র,,রুম,,,মানে,,,??
মিরাঃ আহারে আমার ব*জ্জা*দ বর দেখি ৪ মাস মেন্টাল হসপিটালে থেকেও ঠিক হলো না,,,, আচ্ছা যে হসপিটালে গেসিলেন,,, সেটা মনে হয় ভালো না,,, একটা কাজ করি এবার ভালো হসপিটালে নিয়ে যাব,,, ওকে,,,
রায়ানঃ দেখো,,,মিরা,,,ত,,তুমি কি বলছ,, আমি,,আমি,,বুঝ,,তে,,,পারছি না,,
মিরাঃ আরে আপনি দেখি সব ভুলে গেছেন,,,আমার কি মনে হচ্ছে জানেন,,,??
রায়ানঃ ক,,কী,,,??
মিরাঃ আমার মনে হচ্ছে আমার স্মৃতি শক্তি যায় নাই,,, আপনার গেছে,,,তাই না মিস্টার ব*জ্জা*দ মিথ্যাবাদী,,, সুইট বিশ্বাসঘাতক বর,,,,??
রায়ানঃ দেখো,,,মিরা,,, আমি তোমাকে বলতাম,,,
মিরাঃ ও সাট আপ মিস্টার রায়ান আহমেদ,,,,আচ্ছা কখন বলতেন আপনি,,,এ ১ মাসেও কি একদিনও সুযোগ হয়নি বলার,,,???[ চিল্লিয়ে ]
রায়ানঃ দেখো মিরা হাইপার হয়ো না,,,, আমি এটা ইচ্ছা করে করি নি,, শুধু মাত্র তোমাকে পাওয়ার জন্য করেছি,,,
মিরাঃ ও রেইলি,,,তাহলে বলুন তো আমি কোন বাজারের পণ্য,, যে আপনি আমাকে পাওয়ার জন্য এগুলা করেছেন,,,
রায়ানঃ মিরা,,,আ,,আমি,,বল[ বলতে না দিয়ে ]
মিরাঃ আর কি বলা বাকি আছে আপনার,,, যা জানার তা কিন্তু আমি জেনে গেছি,,,এন্ড ইউ নো ওয়াট মিস্টার রায়ান,,,আপনার জন্য আমার স্মৃতি শক্তি হারিয়েছে,,, আমার বেবি মা*রা গেছে,,,, এর শাস্তি আপনি পাবেন,, নিশ্চয়ই পাবেন,,,,
রায়ানঃ দেখ,,সাহেল,,য [ বলতে না দিয়ে,,,,,
মিরাঃ একটা কথা জানেন কি আপনি জীবনেও সুধরাবেন না,,,, কি বলতে যাচ্ছিলেন যানি,,, ওহ্,,, বুঝতে পেরেছি,, আপনি বলতে চাচ্ছেন সাহেলের জন্য আমার বেবি মা*রা গেছে,,, ওয়েল মিস্টার,,, ও তো জানত না আমার বেবি পেটে,,, কিন্তু আপনি তো জানতেন,,, আর তাছাড়া পুরা ১ টা বছর আমি আপনার সাথে ছিলাম,,, তখনও কি সময় হয় নি আপনার বলার,,,, হ্যাঁ হয়ত রাগ করতাম,,, কিন্তু পরে হয়ত সেটা চলে যেত,,, কিন্তু এখন আপনাকে আর মাফ করব না,,,, আপনার জন্য অনেক কিছু হারিয়েছি এখন আর না,,,,,,
রায়ানঃ তু,,তুমি,,কি,,সা,,সাহেলের কাছে চলে যাবা,,,???
মিরাঃ বলে ছিলাম না মিস্টার রায়ান,,, আপনি জীবনেও সুধরাবেন না,,, দেখেছেন প্রমাণটা কিন্তু আপনার সামনে,,,
বলেই মিরা চলে নিতে যায় কিন্তু দরজার কাছে এসেই দাঁড়িয়ে যায়,,, তারপর বলে,,,,
মিরাঃ আপনার শাস্তিটা বলতে ভুলে গেছি,,, শুনবেন কি শাস্তি,,,??
রায়ানঃ,,,,,,,
মিরাঃ কিছু বলছেন না যে,,,?? আচ্ছা থাক আর বলতে হবে না আমিই বলে দিচ্ছি,,,আপনি তো জানেন আমাদের বিয়ের ৬ মাস হতে আর মাত্র ৫ মাস বাকি,,, সো মিস্টার রায়ান ডিভোর্স লেটারটা কিন্তু আপনি ৫ মাস পরেই পাচ্ছেন,,,,
বলেই মিরা তাড়াতাড়ি করে রুমের দরজা লাগিয়ে দেয়,,,, তারপর বাসা থেকে বের হয়ে সোজা বাস স্ট্যান্ডে চলে আসে,,,, আর চিটাগং এর বাসে উঠে যায়,,,গন্তব্য মা-বাবার কাছে যাবে,,,,
বাসে উঠেই মিরা সাহেলকে কল করে,,,,,
মিরাঃ সাহেল আমি বাসে উঠে গেছি,,, আপনি প্লিজ বাসায় গিয়ে একটু দেখবেন রায়ান কি করছে,,,, কোনো আজেবাজে কাজ করছে নাকি,,,,
সাহেলঃ হ্যাঁ যাচ্ছি,,,কিন্তু একটা কথা ছিল,,,
মিরাঃ জ্বী বলুন,,,,,
সাহেলঃ তুমি কি রায়ান কে একেবারে ছেড়ে চলে যাচ্ছ,,,,
মিরাঃ আপনার কি মনে হয় আমি চলে যাচ্ছি বলে রায়ান আমাকে চলে যেতে দেবে,,,,
সাহেলঃ না কিন্তু,,, এটা আমার প্রশ্নের উত্তর না,,,,
মিরাঃ জানেন তো সাহেল,,, উনার জন্য অনেক কিছু হারিয়েছি,,, এভাবে তো শাস্তি দেওয়া ছাড়া ছেড়ে দিতে পারব না,,,কিছুদিন শাস্তি দেই,,, তারপর নাহয় কাছে টেনে নিব,,,,
মিরার কথা শুনে সাহেল একটু হাসলো,,, তারপর ফোন কেটে রায়ানের কাছে যাওয়ার জন্য গাড়ি স্টার্ট দিল,,,,
সাহেল রায়ানের বাসায় ঢুকতেই ভাঙার কিছু শব্দ পায়,,,, কোনার রুমটার কাছে আসতেই বুঝতে পারে,,, রুমটার থেকেই আওয়াজ আসছে,,,, তাড়াতাড়ি করে রুমের দরজা খুলে,,,, রুমের ভেতরে ঢুকেই দেখে রায়ান ফ্লোরে বসে বসে কান্না করছে,,,, সাহেল রায়ানের কাছে আসতেই রায়ান সাহেলকে জড়িয়ে ধরে,,,,তারপর বলে,,,,,
রায়ানঃ দেখ না সাহেল,,,, মিরা আমাকে রেখে চলে গেছে,,, ও বলে আমাকে ডিভোর্স দিবে,,,, প্লিজ ওকে মানা করনা যেন আমাকে ডিভোর্স না দেয়,,, আমি বাঁচব না সাহেল,,,ওকে ছাড়া আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হয়,,,একবার হারিয়েছি,,, আবার হারাতে পারব না,,,,,, [ কান্না করে ]
সাহেলঃ তাহলে চল মিরার কাছে,,,
রায়ানঃ ও কি আসবে,,,,?? ভয় লাগে আমার,,,,যদি আমাকে ফিরিয়ে দেয়,,,
সাহেলঃ চেষ্টা তো করে দেখতে পারিস,,,আর একবার না পারিলে দেখ শতবার,,,তাছাড়া এত কিছু করেছিস,,, এটা করতে তোর ভয় লাগে না,,,যত্তসব,,,
রায়ানঃ😑😑
সাহেলঃ এত মুখ না বানিয়ে এখন যাবি,,,,
রায়ানঃ কোথায়,,,??
সাহেলঃ তোরে পাচার করে দিতে,,,
রায়ানঃ মানে,,,?আমারে আবার কে কিনবে,,,??
সাহেলঃ কে আর মিরা কিনবে,,,
রায়ানঃ যদি না কিনে,,,??
সাহেলঃ তাহলে তোকে আবার মেন্টাল হসপিটালে পাঠামু,,, এখন চল,,,,,
রায়ানঃ হুম,,,,, কিন্তু কায়রা আর আবিরও যাবে আমাদের সাথে,,,,
সাহেলঃ আসার সময় কল দিসিলাম,,,, বলসি এয়ারপোর্টে থাকতে,,, এতখনে মনে হয় চলে আসছে,,,,
তারপর রায়ান আর সাহেল এয়ারপোর্টে যায়,,, সেখানে গিয়ে দেখে কায়রা আর আবির আগেই সেখানে দাঁড়িয়ে আছে,,,,
আবিরঃ কিরে রায়ান,,, কেমন আছস,,,,
রায়ানঃ ভালা নাই,,,তোর ভাবি গেসে গা আমারে রাইখা,,দাড়া আমি এগুলা কি ভাষায় কথা বলছি ছিঃ,,,, আসলেই আমার মাথা গেসে,,,,
কায়রাঃ তা আর নতুন কি,,, আচ্ছা তাহলে যাওয়া যাক,,,,
সাহেলঃ অবশ্যই,,,,
তারপর সবাই প্লেনে করে ডাইরেক চিটাগং এ,,,,,
এদিকে মিরা,,, বাস থেকে এইমাত্র নামল,,,,নেমেই একটা টেক্সি নিয়ে তার মা বাবার বাসায় চলে আসে,,,, বাসায় ঢুকতেই দেখে রায়ানরা অনেক আগেই তাদের বাসার ড্রইং রুনে বসে আছে,,,,
মিরাকে ঢুকতে দেখে আবির বলে ওঠে,,,
আবিরঃ ভাবি,, কেমন আছ,,,??
মিরাঃ আমি আপনাকে ঠিক চিনলাম না,,,,
সাহেলঃ আরে মিরা,,, ও আবির,,,
মিরাঃ ও,, তাহলে আপনি আবির,,,নাইস টু মিট ইউ এন্ড সাহেল আপনি আপনার বন্ধু বান্ধবীদের নিয়ে তাড়াতাড়ি বের হয়ে যান,,, নাহলে অপমান হয়ে বের হতে হবে আপনাদের,,,,,
রায়ানঃ দেখো,,,,[ বলতে না দিয়ে ]
মিরাঃ জাস্ট সাট আপ,,, আপনি তো আরও আগে বের হবেন,,, তাই কিছু বলার অধিকার আপনার নেই,,,সো প্লিজ,,,অপমান হতে না চাইলে এখান থেকে যত দ্রুত সম্ভব চলে যান,,,,
বলেই মিরা নিজের রুমে চলে যায়,,, মিরাকে চলে যেতে দেখে রায়ান মিরার পিছু নিতে যায়,,, কিন্তু তার আগেই সাহেল রায়ানকে যেতে মানা করে,,,,
সাহেলঃ এখন ওর মাথা গরম,,,গেলে শুধূশুধু অপমানিত হবি,,,, ওর মাথা ঠান্ডা হলে তারপর কথা বলিস,,, এখন চলে যাওয়াটাই ভালো,,,,
রায়ানঃ হুম,,,[ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ]
সাহেলঃ তাহলে আন্টি আংকেল,,,আজ আমরা আসি,,,
মিরার মাঃ আর একটু বসো,,,,
কায়রাঃ না আন্টি অন্য একদিন,,,,আমরা তো চিটাগং আছিই না,,,,
মিরার বাবাঃ তারপরও,,,
রায়ানঃ চিন্তা করিয়েন না বাবা,,, কাল আবার আসব আপনার মেয়ের রাগ ভাঙাতে,,,
তারপর রায়ানরা চলে যায়,,, ওরা যেতেই মিরার মা বাবা মিরার রুমে আসে,,,
মিরা ব্যগ থেকে জামা নিয়ে আলমাড়িতে রাখছিল,,, মা বাবা কে রুমে আসতে দেখে বলে,,,,
মিরাঃ তোমরা হঠাৎ এখানে,,??
মিরার বাবাঃ তুই যা করছিস তা কিন্তু একদম ঠিক না,,,,
মিরাঃ কি ঠিক না বাবা,,, আমি যা করছি তা তোমাদের ঠিক লাগছে না,,, আর ও যা করেছে তা কি সব ঠিক,,,??
মিরার মাঃ আমরা সেটা বলিনি,,,
মিরাঃ তাহলে কি বলতে চাচ্ছো,,,একটা কথা শুনে রাখো মা,,, দোষ তোমাদের ও কম না,,, তোমরাও আমার কাছ থেকে সত্যি টা লুকিয়েছো,,,
বাবাঃ হ্যাঁ,, কিন্তু তোর ভালোর জন্য,,,
মিরাঃ তাই নাকি,,,,তাহলে শুনে রাখ আমি ভালো নেই,,, তোমাদের এত মিথ্যা বলার পরেও আমি ভালো নেই,,প্লিজ আমাকে একা থাকতে দাও,,,
বাবাঃ কিন্তু,,,
মিরাঃ তোমরা কি চাচ্ছ আমি অন্য কোথাও যাই,,,??
মিরার মা বাবা আর কিছু বলল না,,, রুম থেকে চলে যায়,,,,
এভাবে কেটে যায় ২ মাস,,,
এ ২ মাসে রায়ান নানা ভাবে মিরার রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করে,,, কিন্তু প্রতিবারই মিরা রায়ানকে অপমান করে,,,, তাও রায়ান হাল ছাড়ে না,,, মিরা যতই আপমান করুক না কেন,,, সে তবুও মিরার কাছে যায়,,,,
কিছুদিন ধরে মিরা নিজের মধ্যে কারো অস্তিত্ব অনুভব করছে,,,, তার বুঝতে বাকি রইল না যে সে প্রেগন্যান্ট,,,, মিরার মধ্যে এক অজানা আনন্দ কাজ করছে,,,, কিন্তু তা বেশিক্ষন থাকে না,,, তার মনে পরে যায় এটা ওর ২ নং বেবি,,, রায়ানের জন্য তার প্রথম বেবি মা*রা গেছে,,, ভাবতেই কান্না চকে আসে মিরার,,,,
মিরাঃ কেমনে তোমাকে মাফ করব রায়ান,,, তুমি অনেক বেশিই ভুল করে ফেলেছ ,,,, জান রায়ান তোমাকে যদি আমি ভালোনা বাসতাম,,,তাহলে হয়ত এত কিছুর পরও তোমাকে মেনে নিতাম না,,,, তবে আর একটু শাস্তি তোমাকে পেতে হবে,,,,
তারপর কেটে যায় প্রায় অনেক দিন,,,, এর মধ্যেই রায়ান অসুস্থ হয়ে পরে,,, পা*গ*লে*র মত বিহেভ করা শুরু করে,,, তাই মিরা ভেবেছে আজকে রায়ানকে একটু শাস্তি দেওয়ার পর সারা জীবনের জন্য আপন করে নেবে,,,, তাই রায়ান, সাহেল, কায়রা আর আবিরকে একটা রেস্টুরেন্টে আসতে বলে,,,,
যথা সময়ে,,তারা সবাই চলে আসে,,,,
রায়ান মিরার সামনে বসে আছে অপরাধির মত,,, আর মিরা রায়ানের দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে,,,,,
মিরাঃ কি,,,?? হ্যাঁ কি,,,সমস্যা আপনার,,,?? আবার পা*গ*ল হওয়ার প্ল্যান প্রোগ্রাম নাকি,,?
রায়ানঃ মিরা,, আই এম সরি,,, প্লিজ আমাকে মাফ করে দাও,,, আই কেন্ট লিফ উইদ আউট ইউ,,,,প্লিজ ফর গিভ মি,,,
মিরাঃ মাফ করতাম যদি এ-ই সব ইংলিশে পটরপটর না করতেন,,,,
রায়ানঃ ম,,মানে,,?
মিরা কিছু না বলেই রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে যায়,,,মিরার সাথে সাথে বাকিরাও বের হয়,,, রায়ান বের হয় সবার শেষে,,,
সবাই রাস্তা পার হতেই একটা চিল্লানোর আওয়াজ পায়,,, পিছনে তাকাতেই দেখে রায়ান র*ক্তা*ক্ত অবস্থায় রাস্তায় পরে আছে,,,,,
এটা দেখা মাত্র মিরা রায়ানের কাছে দৌড়ে চলে আসে,,,, রায়ানের গাল ধরে বলতে থাকে,,,
মিরাঃ প্লিজ রায়ান চোখ খুল,,, দেখো আমি তোমাকে মাফ করে দিয়েছি,, প্লিজ চোখ খুলো,,,
সাহেলঃ মিরা ওকে হাসপাতালে নিতে হবে,,, প্লিজ সর,,,,
মিরাঃ না আমি সরব না,, প্লিজ রায়ানকে উঠতে বল,,,,
সাহেলঃ আচ্ছা উঠতে বলব,, এখন প্লিজ সর,,,,
মিরাঃ বলসি না আমি রায়ানকে ছাড়া যাব না,,, কেন বুঝ,,,
বলতে বলতেই মিরা অজ্ঞান হয়ে যায়,,,,,
""
""
""
৬ বছর পর,,,,,
""
""
""
মিরাঃ নায়রা,,,,বেবি,,,মার কাছে আস,,, প্লিজ,,, এত দৌড়া দৌড়ি করে না,,, মা না ভালো,,,, [ নায়রার পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে ]
নায়রাঃ না তোমাল মেয়ে ভালো না,,, [ দৌড়ে তার বাবার কোলে উঠে যায় ]
মিরাঃ দেখছেন,,, আপনার মেয়ে কেমন দুষ্ট হইসে,,,,
নায়রাঃ না আমি ভালো,,, তাই না বাবা,,,
মিরাঃ ওরে আমার ভালোর ফ্যাক্টরী,,,,আচ্ছা রায়ান কায়রা, সাহেল আর আবির কই,,,ওরা আসবে না ,,??
রায়ানঃ জান ওরা মেবি রাস্তায়,,, একটু পরেই চলে আসবে,,,
মিরাঃ তাড়াতাড়ি আসলেই ভালো,,,,
রায়ানঃ হুম,,,আচ্ছা নায়রা,,, তুমি একটু চোখ বন্ধ কর তো,,,
নায়রাঃ কেন,,,মাম্মামকে আদল কলবা,,,??😁
মিরাঃ নায়রা,, এগুলা কি হ্যাঁ,,, আর রায়ান আপনিও কি শুরু করেছেন,,,
রায়ানঃ কি শুরু করসি মানে,,,?? কতদিন হল একটা কিসও করি নি,,,,
মিরাঃ তাই নাকি,,,তাহলে সকালে কে দিল,,,
রায়ানঃওইটা তো ভুলে হয়ে গেছিল,,, এখন যেটা দিব অইটা সজ্ঞানে দিব ওকে,,,,
মিরাঃ একদম না,,, সাহেল,কায়রা আর আবির এখনই চলে আসবে,,,
রায়ানঃ তাই তো এখন দিচ্ছি,,,,
মিরাঃ দিতে দিকে এএএ না,,,
বলেই মিরা দৌড় দিয়ে চলে যায়,,,এটা দেখে রায়ান নায়রাকে বলে,,,
রায়ানঃ দেখছ,,,মামুনি,, তোমার মাম্মাম বাবাকে একটুও আদর করে না,,,
,
নায়রাঃ মাম্মাম না কললে,, কি হইছে,,, আমি তোমাকে আদল কলব,,,[ রায়ানকে চুমু দিয়ে ]
এর কিছুক্ষনের মধ্যেই সাহেক কায়রা আর আবির চলে আসে,,,,
রায়ানঃ কেমন আছিস সাহেল,,, আবির,,??
সাহেল আর আবিরঃ ভালো,,,
কায়রাঃ কিরে আমাকে জিজ্ঞেস করলা না,,,,??
রায়ানঃ তুমি তো সাহেলের সাথে ভালোই আছো,,, তোমাকে আর কি জিজ্ঞেস করব,,,,
কায়রাঃ তুমি আসলেই ফা*ল*তু,,,
মিরাঃ একেবারে ঠিক বলেছো,,,তা তোমরা বিয়ে করছ কবে,,,,
সাহেলঃ এইতো ১ মাস পরে,,,
রায়ানঃ তাহলে ১ মাস পর তুই জেলখানায় আটক হচ্ছিস,,,[ ঘারে হাত দিয়ে ]
মিরাঃ আপনার ফা*ল*তু কথা জিবনেও শেষ হবে না,,,,,
আবিরঃ ঠিক বলছো ভাবি,,,
মিরাঃ হুম,,,কিন্তু তোমার বিয়ে কবে হবে,,,,,??
আবিরঃ কাউকে তো পাইনি এখন,,যাকে তোমাদের মত মনের অজান্তে hidden love করে ফেলব,,,
রায়ানঃ তাহলে ভাই,, তুই আশা বাদ দিয়ে দে,,,,
বলেই সবাই হেসে উঠল,,,,
............ ❤সমাপ্ত ❤.............
পুরা গল্পটা কেমন লাগল বলবেন,,,,আর আমার সাথে গল্পটার শেষ অব্দি থাকার জন্য ধন্যবাদ,,,❤❤