
10/09/2025
সরিষার খৈলের বুস্টার সার তৈরি পদ্ধতি জেনে নিন!
🔰আমরা প্রায় সকল বাগানীরা সরিষার খৈল পচানো পানির সাথে পরিচিত। সাধারণত আমরা ৫-৭ দিন সরিষার খৈল পানিতে ভিজিয়ে রেখে পচাই। তারপর তার সাথে পানি মিশিয়ে গাছের মাটিতে দেই। সরিষা খৈল যখন পানিতে পচানো হয় তখন সেই পানিতে বিভিন্ন উপাদান তৈরী হয় যা পরবর্তীতে মাটি হয়ে গাছে চলে যায় ও গাছের বৃদ্ধি,ফুল-ফল ধরানো,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ নানাবিধ উপকার করে।
🔰সরিষার খৈল পচানোর প্রক্রিয়াটাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ফার্মান্টেশন। international journal of chemical studies এর গবেষণায় দেখা গিয়েছে সরিষার খৈলকে যতো বেশীদিন ফার্মান্টেশন প্রসেসে রাখা যাবে ততোই এর উপকারী উপাদান বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ আমাদের মাঝে যেই প্রচলিত মতবাদ আছে যে ৭-৮ দিনের মধ্যে খৈল ভেজানো পানি ব্যবহার করে ফেলতে হবে, এই প্রক্রিয়া থেকে এটা আপডেট। এ পদ্ধতিতে সরিষার খৈলকে যদি ৪০ দিন পর্যন্ত পচানো যায় তাহলে সেই পচানো পানিতে মাইক্রো ও ম্যাক্রো নিউট্রিয়েন্ট,যেমন-নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, সালফার, ম্যাগিনেসিয়াম, কপার, জিংক সহ গাছের দরকারী সব উপাদান কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়।
🔰পাশাপাশি আমরা বাজার থেকে ট্রাইকোডার্মা,বায়োডার্মা নামক যেই জৈব ফাংগিসাইড কিনে টবের মাটিতে প্রয়োগ করি সেই সিডিউমুনাস,ট্রাইকোডার্মা, রাইজোব্যাকটেরিয়াসহ গাছের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ফাংগি ও ব্যাংক্টেরিয়াগুলো ৪০ দিন পর সরিষা খৈল পচানো পানিতে উল্লেখযোগ্য হারে তৈরী হয়।
🔰অর্থাৎ, আপনি যদি একটি ভালো মানের সরিষার খৈল ৩৫-৪০ দিন পর্যন্ত পানিতে পচিয়ে তারপর গাছের মাটিতে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে গাছের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান, জৈব অনুজীব,ছাত্রাকনাশক ও কীটনাশক কয়েকগুণ বেশী পাবেন।
🔰আরেকটি বিষয় হলো খৈল পচানোর পানিতে আপনাকে নিয়মিত অক্সিজেন সরবরাহ করতে হবে। কারণ যেই অনুজীব জীবগুলো এই খৈল পচানোর রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে তাদের সার্ভাইভ করার জন্য বা বেঁচে থেকে পচন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার জন্য অক্সিজেন প্রয়োজন। আর অক্সিজেন সরবরাহের জন্য প্রতিদিন কয়েকবার পাত্রের ঢাকনা তুলে পাত্রের পানিকে বাঁশ বা কাঠের কাঠি দিয়ে ক্লকওয়াইজ ও এন্টিক্লকওয়াইজ ঘুরিয়ে নাড়িয়ে দিতে হবে এবং নাড়ানো শেষে আবার ঢাকনা নাড়িয়ে দিতে হবে। আর ফার্মান্টেশন প্রক্রিয়া সবচাইতে ভালো হয় মাটির পাত্রে। সরিষার খৈল পচানোর কাজটি মাটির কলসি বা মাটির পাত্রে করতে পারলে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
👉প্রয়োজনীয় উপকরণ:
১. খৈল ১ কেজি ।
২. পানি ১০ লিটার।
৩. মাটির পাত্র ( সম্ভব হলে )।
৪. কাঠ বা বাঁশের লাঠি।
🔰উক্ত সার তৈরির পর আরও ১০ গুণ পানি যোগ করতে হবে। অর্থাৎ প্রথমে ১০ লিটার পানির সাথে আরও ৯০ লিটার পানি মেশাতে হবে। অর্থ্যাৎ মোট সারের পরিমাণ হবে ১০০ লিটার। এটা গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করতে হবে।
👉কৃষি বিষয় প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে আমাদের সাথে থাকুন অথবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করুন।