24/05/2025
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আগামী মাসে ৩০ বিলিয়ন ডলার ছুঁতে যাচ্ছে—এটি নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ঘটনা এবং আলোচনার দাবিদার। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি, রেমিট্যান্স প্রবাহে ধীরগতি, এবং আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে রিজার্ভে যে চাপ সৃষ্টি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে কাটিয়ে ওঠা এখন আমাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার সাফল্যের প্রমাণ।
এই ৩০ বিলিয়নের ঘরে ফেরা কেবল একটি সংখ্যা নয়, বরং এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য এক শক্ত বার্তা যে—বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও স্থিতিশীল ও সম্ভাবনাময়। রিজার্ভ বাড়া মানে আমদানি ব্যয় নির্বাহে সক্ষমতা বৃদ্ধি, টাকার মানে স্থিতিশীলতা, এবং বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনা।
তবে কেবল রিজার্ভের পরিমাণ বাড়লেই হবে না, এর গুণগত মানও গুরুত্বপূর্ণ। রিজার্ভের উৎস যদি বিদেশি ঋণ বা স্বল্পমেয়াদি বন্ড হয়, তাহলে তা টেকসই নয়। কিন্তু যদি এটি হয় রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স এবং বিদেশি বিনিয়োগ—তাহলে সেটি দীর্ঘমেয়াদে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে।
এখানে আর্থিক নীতিমালার দৃঢ়তা, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ, এবং বৈদেশিক লেনদেনের স্বচ্ছতা অত্যন্ত জরুরি। কৃত্রিমভাবে রিজার্ভ বাড়ানোর প্রয়াস না নিয়ে টেকসই পথে অগ্রসর হওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
সরকার যদি বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিবেশ আরও উন্নত করে, আইনি কাঠামো শক্তিশালী করে, এবং প্রবাসী আয় প্রেরণে উৎসাহিত করে—তবে এই রিজার্ভ ৩০ থেকে ৫০ বিলিয়নে পৌঁছানো কেবল সময়ের ব্যাপার।
তবে সবচেয়ে বড় কথা, জনগণ যেন এই রিজার্ভ বৃদ্ধির সুফল বাস্তবে অনুভব করে—মূল্যস্ফীতির চাপ কমে, কর্মসংস্থান বাড়ে, এবং উন্নয়ন প্রকল্পে গতি আসে। তবেই এই অর্জন হবে অর্থবহ।