28/08/2023
কুরআনুল কারীমের সঠিক প্রয়োগ/পদ্ধতিঃ-
✅ কুরআন কারীমের শব্দার্থ শেখা,আয়াতের অর্থ বোঝা,তাদাব্বুর করা। কুরআনুল কারীমের প্রতিটি আয়াত চিন্তা/ফিকির করে করে খতম করা। ইহা আমার রবের কালাম। ইহাতে রয়েছে আমার রবের পরিচয়। যিনি ব্যতীত ইবাদতের উপযুক্ত অন্য কোনো মাবুদ নেই। একমাত্র তিনিই ইবাদতের উপযুক্ত। তিনিই আমাকে সৃষ্টি করেছেন। তিনিই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। তিনি আমাদেরকে প্রতিমুহূর্তেই পরীক্ষা করছেন আমরা ভালো কাজ করতেছি নাকি মন্দ কাজ করতেছি। পরিশেষে আমাদেরকে মৃত্যুর মাধ্যমে তার কাছেই ফিরে যেতে হবে। হিসাব দিতে হবে প্রতিটি কর্মের! কুরআনুল কারীমে রয়েছে ইহকাল/পরকাল সমস্ত সমস্যার সমাধান। চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে সফলতার রাস্তা/ব্যর্থতার রাস্তা,হিদায়াতের রাস্তা/গোমরাহীর রাস্তা। ✓কুরআনুল কারীমে 'কুফরকে' অত্যন্ত ঘৃণিত করে দেখানো হয়েছে! একটি শিশুর মনে কুফরের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে দেয়া গেলে,তার জন্য আর চিন্তা করতে হয় না। সরাসরি কুরআনের আয়াত শুনিয়েই এ কাজ করতে হবে। নিজের চিন্তা বা যুক্তি থেকে নয়। ✓কুরআনুল কারীম দুনিয়াকে উসীলা বা মাধ্যম হিসেবেই চিত্রিত করেছে। আখিরাতকেই মূল লক্ষ্য বানিয়েছে। এ বিষয়ক আয়াতগুলো বারবার শিশুর কানে/সত্যের সন্ধানী যুবকের মনে গেঁথে দিতে হবে। দুনিয়ার চাকচিক্যের অসারতা তার সামনে তুলে ধরতে হবে কুরআনী পদ্ধতিতে/কুরআনী আমেজে। ✓পরনারী/পরপুরুষের সাথে যিনা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া সম্পর্কে কুরআনুল কারীমের শিক্ষা যুবকের কানে/মনে গেঁথে দিতে হবে। কুরআনুল কারীমের পাতায় পাতায়,তাকওয়ার যে শিক্ষা বুনে রাখা আছে,সেটা তাদের মনেও বুনে দিতে হবে। ✓শিশুবেলা থেকেই ওহীর গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে। ওহীর অকাট্য অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিয়ে রাখতে হবে। যে চিন্তা ওহীর বিরুদ্ধে যাবে,সেটা অভিশপ্ত/ধ্বংসাত্মক ও কঠিন শাস্তির যোগ্য! এ কথাটা মনের পর্দায় নামতার মতো এঁকে দিতে হবে। ✓কুরআনুল কারীমে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে বাধা প্রদানকে গুরুত্বের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। শৈশব থেকেই ভালো/মন্দের পার্থক্য বুঝিয়ে দিতে হবে। সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোর প্রতি শুধু উদ্বুদ্ধ নয়,প্রস্তুত করে দিতে হবে। ✓কুরআনুল কারীম ব্যক্তি স্বাধীনতার লাগাম ছেড়ে দেয় না। যা ইচ্ছা তাই করার অনুমতি কুরআনুল কারীম দেয় না। কী করা যাবে,আর কী করা যাবে না,তার একটা সুস্পষ্ট সীমারেখা কুরআনুল কারীমে দেয়া আছে। শিশুকে বারবার বলতে থাকা আমার করণীয় ও বর্জনীয় কুরআনুল কারীম ও হাদীস শরীফ থেকেই গ্রহণ করতে হবে। ✓হক ও বাতিলের চিরন্তন দ্বন্দ্বের কথাও তার সামনে পরিষ্কার করে তুলতে হবে। ছোটবেলা থেকেই সে কুরআনী আয়নায় যেনো হক বাতিল চিনতে পারে,সে ব্যবস্থা নিতে হবে। ✓কুরআনী আইনের বিপরীতে অন্য সমস্ত আইন সম্পূর্ণ বাতিল। ইসলামী শরীয়াহ শাসনই মানবতার একমাত্র মুক্তি। অন্য সব কিছু 'হাবাআম মানসূরা'! বিক্ষিপ্ত ধূলিকণা! এটা তাকে প্রতিদিন কয়েকবার করে শোনাতে হবে। এ বিষয়ক আয়াতগুলো মুখস্থ করাতে হবে। ✓কুরআনুল কারীম সবধরনের সংশয়/সন্দেহের ঊর্ধ্বে। কুরআনুল কারীম ইয়াকীনের শিক্ষা দেয়। দ্বিধা/দোদুল্যমান ও সংশয়বাদকে ধুলিস্যাৎ করে। কচি মনে একথা এঁকে দিতে হবে। ✓আগের যুগে একটা জাতি,আল্লাহ্ তায়ালার বিধানকে নিজের ইচ্ছামতো রদবদল করার কারণে নিকৃষ্ট বানরে পরিণত হয়েছিল! তারা আল্লাহ্ তায়ালার আয়াতকে চাহিদা মতো তাবীল/ব্যাখ্যা করতো! তার পরিণতি ছিল ভয়াবহ! কচি মনে ঠুসে দিতে হবে,কুরআনী আইনে কোনো রকম রদবদল চলে না। শিশুমনে পূর্ববর্তী সম্প্রদায় সমূহের অবাধ্যতা/হঠকারিতা ও চতুরতার পরিণতিগুলো যত্নের সাথে তাদের অন্তরে লিখে দিতে হবে। সেটা হবে সরাসরি কুরআনের আয়াত থেকে। জানিয়ে দিতে হবে পুরস্কার আর তিরস্কারের ঘটনাগুলো। স্পষ্ট করে দিতে হবে নেককারদের সফলতা ও বদকারদের ধ্বংসের কারণগুলো। ✓গুনাহ্ করলে,আল্লাহ্ ও তাহার রাসূলের অবাধ্যতা করলে কী পরিণতি হবে,তার বাস্তব চিত্রগুলো কুরআনুল কারীম থেকে পেশ করা। শিশুমনে এর ভয়াবহতা এঁকে দেয়া। তাকে বারবার বলা,পৃথিবীতে যত বিপদাপদ হয়,সবই মানুষের পাপের ফসল! ✓হাঁটি/হাঁটি পা পা বয়েস থেকেই শিশুকে ঈমানের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া। তাওহীদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া। ঈমান ও তাওহীদ গ্রহণ করলে কি কি দায়িত্ব নিজের ওপর বর্তায়,তা খোলাসা করে দেয়া। বুঝতে না পারলেও সহজ ভাষায় বলতে থাকা। সরাসরি আয়াত দিয়েই। ✓তার মধ্যে কুরআনী আখলাক তৈরির চেষ্টা চালানো। আখলাক বিষয়ক আয়াতগুলো শয়নে/স্বপনে/জাগরণে তাকে পড়ে পড়ে শোনানো। তরজমাসহ একবার হলে,তরজমা ছাড়া দশবার শোনানো। মূল কুরআনের শক্তি অনস্বীকার্য। ✓একটা শিশুকে/একজন কিশোরকে/একজন তরুণকে কুরআনের এ শিক্ষাগুলো বারবার দিতে থাকলে,সে তার ঈমানকে আঁকড়ে ধরে থাকতে পারবে,পথভ্রষ্টতা ও গোমরাহী থেকে বেঁচে থাকতে পারবে ইনশা আল্লাহ্। (আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি)