02/08/2025
রাস্তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম,হঠাৎ চোখে পরল একটা গুইসাপ পুকুরের জ্বালে আটকা পরে আছে। দেখে মনে হল গুইসাপটি বাঁচার জন্য ছটফট করছে। আমার মনে হল ওকে উদ্ধার করা উচিৎ। একটা ব্লেড কিনে এনে পুকুরে নামলাম। আমার ভয় হচ্ছিল,কারণ এর আগে কখনো এভাবে গুইসাপ ধরা হয়নি। তবে আদনান ভাইয়ের ভিডিও গুলো দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি। আদনান ভাই প্রাণীবৈচিত্র নিয়ে কাজ করে। গুইসাপ আমাদের পরিবেশের জন্য অনেক উপকারী একটা প্রাণী। বিষাক্ত পোকামাকড়, ইদুর, সাপের ডিম,সাপের বাচ্চা খেয়ে জীবনধারণ করে থাকে।
গুইসাপ পরিবেশের জন্য খুবই উপকারী একটি প্রাণী। এদের উপকারীতাগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
১. পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা
গুইসাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ 'পরিবেশ বন্ধু' প্রাণী, যা খাদ্য শৃঙ্খলে একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এরা বিষধর সাপ, ইঁদুর, ক্ষতিকর পোকামাকড়, শামুক, ব্যাঙ ও বিভিন্ন প্রাণীর ডিম খেয়ে থাকে। এভাবে তারা এসব প্রাণীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রেখে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। যদি এদের সংখ্যা কমে যায়, তাহলে ইঁদুর ও সাপের উপদ্রব বেড়ে যেতে পারে, যা মানুষের জন্য ক্ষতিকর।
২. কৃষিক্ষেত্রে অবদান
গুইসাপ ক্ষতিকর পোকামাকড় ও ইঁদুর খেয়ে ফসলের ফলন বাড়াতে পরোক্ষভাবে সাহায্য করে। অনেক সময় ইঁদুর প্রতিদিন প্রচুর ধানের শীষ কেটে নষ্ট করে। একটি গুইসাপ দৈনিক ৫০টিরও বেশি ইঁদুর খেয়ে কৃষকের উপকার করে। তাই এদেরকে **'কৃষকের বন্ধু'**ও বলা হয়।
৩. পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা
গুইসাপ পচা-গলা বা মৃত প্রাণীর মাংস (carrion) খেয়ে পরিবেশকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এটি রোগজীবাণু ছড়ানো রোধ করতেও ভূমিকা রাখে।
৪. অর্থনৈতিক গুরুত্ব
বিশ্ববাজারে গুইসাপের চামড়ার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এই চামড়া দিয়ে মানি ব্যাগ, বেল্ট, জুতো এবং ভ্যানিটি ব্যাগের মতো দামি জিনিসপত্র তৈরি করা হয়। একারণে চোরা শিকারিদের কাছে এটি একটি লোভনীয় পণ্য। অনেকে এদের মাংস এবং তেল ঐতিহ্যবাহী ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে, যদিও এর কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
দুঃখের বিষয় হলো, এই উপকারী প্রাণীটি এখন চোরাচালান, বনভূমি ধ্বংস এবং মানুষের অজ্ঞতার কারণে বিলুপ্তির পথে। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুইসাপকে সংরক্ষণ করা খুবই জরুরি।