24/12/2023
পার্ট 5......এর মধ্যে আমার পরীক্ষাও চলে আসল। হঠাৎ করেই একদিন বুঝলাম অন্য এক নতুন কার অস্তিত্ব আমার ভেতরে।
খুশিতে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলাম। কি করব কি না করব ভাবতে ভাবতে মিলিকে কল দিলাম। দিয়েই বললাম,
– "তোর না নিম্মু হওয়ার খুব শখ যা তোকে নিম্মু করেই দিলাম।"
মিলির ততদিনে বিয়ে হয়ে গেছে তখন সে সুইডেন প্রবাসী।আমার কথা শুনে ও এমন এক চিৎকার দিলো আমার মনে হল সুইডেন থেকে সেই শব্দ বিনা ফোনেই বাংলাদেশ এসে পৌছেছে। সে জিজ্ঞেস করলো, ‘তার ভাই জানে কি না।’ আমি মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললাম, ‘কি যে বলবো তাই তো বুঝে উঠতে পারছি না।’ এই কথা শোনার পরে সে কোন কথা নেই ধপ করে লাইন কেটে দিলো।
ও মা একটু পরেই দেখি আমার শাশুড়ী মা কোথা থেকে যেন দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে অঝোরে কান্না। কান্নার মধ্যে কি যে বলছে কিছুই বুঝতেছিলাম না। পরে বুঝলাম সে যে দাদি হবে এই খবর মিলি তাকে দিয়েছে আর এই খবর শুনে সে বিশাল খুশি যা তার চোখ দিয়ে অশ্রু হয়ে পড়ছে।
রাতে আসলেন সাহেব। খালা অনেক চেষ্টা করেছিলো খুশির খবরটা দিতে কিন্তু কি করে ও যেন এড়িয়ে যাচ্ছিল ব্যাপারটা।পরে আমিও ভাবলাম যাক ভালোই হইছে মিলি মনে হয় বলে নাই উনাকে। রুমে ঢুকেই দেখি লাইট অফ। আমি ভেবেছিলাম উনি বিছানায় শুয়ে পড়েছে পা টিপে টিপে যেতে লাগলাম যাতে আমার আওয়াজে ওর ঘুম না ভেঙ্গে যায়। ঠিক তখনই পিছন থেকে কে যেন খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আমাকে। একটু পরেই বুঝলাম নিশু ভাই ছাড়া এই আকাম আর কেই বা করবে। বললাম,
– "ছাড়বে তো ঘুমাতে হবে তো নাকি!!"
আস্তে করে আমার পেটে হাত বুলিয়ে বললো,
– "শোন নিলু, বাবুকে কখনও ব্যাথা দিবি না বাবুকে কখনও বকা দিবি না। তাহলে কিন্তু জানে মে'রে ফেলবো"।
বাবা হবার খবর সে ঠিকই পেয়ে গিয়েছিলো।
নতুন মানুষের আগমন উপলক্ষে ফ্যামিলির সবাই খুশিতে আটখানা হয়ে গিয়েছিল।মিলি ঘন্টায় ঘন্টায় ভিডিও কল দিয়ে দেখতো, আমাকে দেখতে কেমন দেখায়। পেট কত বড় হল আরো কতো পাগলামি। আর উনি উনার তো কোন কথাই নাই মিনিটের আগা মাথায় কল দিয়ে দিয়ে খোঁজ খবর নিত।
মাঝে মাঝে খালা রাগ করে বলতো,
– "দেখ নিশু তোর বউ তুই অফিসে নিয়ে যা। মেয়েটা আর আমি তোর আর তোর বোনের ফোনের জ্বালায় অস্থির। কবে জানি বাসার সব ফোন ভেঙে গুঁড়ো গুঁড়ো করে ফেলি আমি নিজেও জানি না"
এমন করে দেখতে দেখতে ডেলিভারি ডেট এগিয়ে আসছিল। জেনেছিলাম যে ছেলে বাবু হবে। নিশু ভাই সব সময় বলতো,
আমার ছেলের নাম হবে মেঘ।