12/11/2024
"ফারুকী ও তিশার জঘন্য রূপ"
নুসরাত ইমরোজ তিশা। বিতর্কিত নির্মাতা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর স্ত্রী। সেই সাথে সময়ের তুমুল আলোচিত অভিনেত্রী। বর্তমানে নাটকের জগতে অন্যতম লিডিং পজিশনে আছেন। চলচ্চিত্রেও তার 'খ্যাতি' আছে একটি বিশেষ মহলে। জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে তার বর্তমান ফলোয়ার সংখ্যা ৪.৭ মিলিয়নের উপরে। বুঝতেই পারছেন বর্তমান সময়ের একজন ইনফ্লুয়েন্সিয়াল নারী।
আর এ কারণে এবং তার স্বামী দেশের কর্তা ব্যক্তি হয়ে যাওয়ায় আজ আমরা তার পাবলিক কাজ গুলো সামান্য পর্যবেক্ষণের চেষ্টা করবো, আদ্যো তার কাজ দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি ও মানুষের জন্য ক্ষতিকর নাকি উপকারী! তিনি মানুষকে কোনদিকে ইনফ্লুয়েন্স করছেন ? নৈতিকতা ও শুদ্ধতার দিকে নাকি অনৈতিকতা ও বিকৃতির দিকে? এছাড়াও তার স্বামী সময়ের তুমুল বিতর্কিত চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীকে নিয়ে আমরা ইতোপূর্বে স্বতন্ত্র পোস্ট করেছি)।
তিশা নব্বইয়ের দশক থেকে নাটকে কাজ করলেও চলচ্চিত্র জগতে পথ চলা শুরু হয় ২০০৯ সালে, 'থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার' মুভির মধ্য দিয়ে। যার পরিচালক ছিল তার স্বামী ফারুকী। আমাদের জানামতে এটিই বাংলাদেশের 'পরকিয়া' বিষয়ক প্রথম মুভি, যার মূল বিষয়বস্তু সমাজ বিধ্বংসী 'পরকিয়া' করার বৈধতা দেয়া। এবং পরকিয়াকে যে খারাপ চোখে দেখা হয়, তা ভুল প্রমাণের চেষ্টা করা হয় এই চলচ্চিত্রে।
এই মুভির প্রধান চরিত্রে ছিলেন এই তিশা, মুভিতে সে প্রথমে তার মায়ের পরকিয়া করাকে খারাপ চোখে দেখলেও সে জীবনের একপ্রান্তে এসে বুঝতে পারে তার মায়ের পরকিয়া করা ভুল ছিলো না, বরং তার দৃষ্টিভঙ্গি ভুল ছিলো । এবং সে নিজেও পরকিয়াতে জড়িয়ে যায়। এখানে শুধু পরকিয়া করাকে মহিমান্বিত করা হয়নি বরং মুভির প্রথম থেকেই ধর্মীয় রীতিতে বিবাহকে প্রশ্ন করা হয়েছে। এবং তারা (তিশা ও মোশাররফ করিম) বিবাহ বহির্ভূত প্রকাশ্য লিভ টুগেদারের মধ্য দিয়ে সাংসারিক জীবন শুরু করে। এমনকি মুভিতে গোরস্থানে ইসলামী বিধান অনুযায়ী মেয়েদের যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা'র বিরুদ্ধেও বিদ্বেষ ছড়ানো হয়।
পরবর্তীতে তৌকির আহমেদ পরিচালিত 'হালদা' মুভিতে অভিনয় করেন অভিনেত্রী তিশা। সেখানেও সে একই বিষয়বস্তু 'পরকিয়া'। তার স্বামীকে উপস্থাপন করা হয় খারাপ হিসেবে আর তার স্বামীকে বাদ দিয়ে অন্য পুরুষের সাথে দৌহিক সম্পর্ক গড়ে তোলাকেই যৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করা হয়। তার স্বামী পরকিয়া'র ঘটনা টের পেলে তিশার নতুন নাগরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন তাই তিশা তার দুষ্ট স্বামীকে হত্যা করার মতো সাহসী(!) ভূমিকা পালন করেন। এই মুভি তাকে বৈদেশিক এওয়ার্ডও এনে দেয়।
সাত বছর আগে এদেশে প্রচারিত হয় তিশা ও জন কবির অভিনীত ' রেইনবো ' নাটক। রেইনবো নাটকের মূল উপাদান সমকামিতা ও সমকামীদের প্রতি ভালোবাসা। তিশা চেষ্টা করেন সমকামিতাকে ঘৃণা বা যৌন বিকৃতি হিসেবে না দেখে , স্বাভাবিক চাহিদা হিসেবে বিবেচনা করানোর।
ফারুকী টেলিভিশন চলচ্চিত্রে দেখা যায়, চতুর্দিকে নদী বেষ্টিত একটি প্রত্যন্ত গ্রামে তিশাদের বসবাস। সে গ্রাম একজন ধার্মিক ও জনপ্রিয় মাদবরের শাসন নীতিতে পরিচালিত হয়। সেখানে সুদি এনজিও, অবিবাহিতদের মোবাইল চালানো নিষিদ্ধ যাতে অবৈধ প্রেম করতে না পারে। গ্রামবাসীদের জন্য গঞ্জের সিনেমা হলে যাওয়াও নিষিদ্ধ।
সে গ্রামে টেলিভিশন কিনে নিয়ে আসেন একজন হিন্দু ব্যক্তি। সেখানে মাদবর নির্দেশ জারি করেন হিন্দু ব্যক্তির বাসায় যাতে কোন মুসলিমকে যেন তথাকথিত সিনেমা দেখতে না দেয়া হয়, কিন্তু কিছু মুসলিম ব্যক্তি সিনেমা দেখতে শুরু করার খবর মাদবর পেয়ে নৈতিকতা রক্ষায় জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এর বিপক্ষে প্রথমে প্রতিবাদ করে এই তিশা। সে তার প্রেমিকের নেতৃত্বে একদল নির্বোধ তরুণকে দ্বার করে দেয় মাদবরের নীতি'র বিরুদ্ধে। ছবি শেষ প্রান্তে দেখানো হয় মাদবর সাহেব একপর্যায়ে তাঁর টেলিভিশন বিষয়ক নীতি'র ভুল বুঝতে পারেন। এই ছবিও কা*ফের বিশ্বে বিপুল সমাদৃত হয়।
এভাবে তার নাটক সিনেমার অনৈতিকতার বিবরণ দিতে থাকলে অনেক দেয়া যাবে। এ জাতীয় তার অনেক কাজ আছে, যা তাকে এনে দিয়েছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।( কাদের দেয়া হয় একটু চিন্তা করুন) পেয়েছেন দশ'দশবার মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার। তিশা ও জয়া যেন অশ্লীলতা ছড়িয়ে এওয়ার্ড পাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। পেয়ে চলেছেন কাফেরদেশ গুলো থেকেও অশ্লীলতা ছড়ানোর পুরষ্কার স্বরূপ নানা সম্মাননা।
এছাড়াও বাকশালের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবের বায়োপিকে ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মোস্তফা সারওয়ার ফারুকীর স্ত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। তখনকার সময়ে তিশার সাক্ষাৎকারে তিশা উল্লেখ করেন, এটি তার অভিনয় জীবনের সেরা কাজ এবং তিনি মনেপ্রাণে ধারণ করে এ চরিত্রটি করেছিলেন! এবং গণভবনে শেখ হাসিনার সাথে কি গদ গদ কথাবার্তাই না আমরা তখন দেখেছিলাম মোস্তফা সারওয়ার ফারুকীর স্ত্রীর। তবে এখনো তিশা গণভবনে যাওয়ার দাওয়াত পান।
তিশা'রা ক্রমাগত পোশাকের বিবর্তন ঘটাতে ঘটাতে বর্তমানে তাদের নাটকের জগত থেকে ওড়না বাদ দিয়েছেন। যৌনাবেদনময়ী পোশাককে বানিয়েছেন স্বাধীনতার প্রতিক হিসেবে। নাটকে প্রেমের নামে যৌনসুড়সুড়ি দিয়ে বেড়াচ্ছেন জাতিকে। তারা নাটকের মধ্যমে উপস্থাপন করে জাস্ট ফ্রেন্ড, বেস্ট ফ্রেন্ড ও বয় ফ্রেন্ড তত্ত্ব। নাটকে বয়ফ্রেন্ডের সাথে শারীরিক সম্পর্ক থাকা যেনো এখন ডালভাত চিত্র। ক্লোজআপ ওয়ানের কাছে আসার সাহসী গল্পে তিশা-মিথিলা, তাহসান-নিশোদের ভূমিকার কথা তো বলার জো নেই।
কোন জাতির পতনের জন্য খুব বেশি কিছু দরকার নেই, যুবসমাজের চরিত্র ধ্বংস করে দেয়ায় যথেষ্ট। আর তিশা'রা পরকিয়া, বিবাহ বহির্ভূত প্রেম, সমকামিতার মতো নিলজ্জ বিকৃত যৌনাচার প্রমোট করছে, যা দেশের আইনেও নিষিদ্ধ। এর ফলাফল আমরা সমাজের পরোতে পরোতে দেখতে পাচ্ছি। বছরে লক্ষাধিক গর্ভপাত, ডাস্টবিনে ও কুকুরের মুখে নবজাতকের লাশ, পরকিয়া'র জেরে স্বামী'র হাতে স্ত্রী খুন, স্ত্রী'র হাতে স্বামী খুন, মায়ের হাতে সন্তান খুনের নব্য এক জাহেলিয়াতের সূচনা হয়েছে এই বিকৃত যৌনাচারের প্রভাবে। এই সকল অকারেন্সের পিছনে অনেক ক্ষেত্রেই তিশাদের পরোক্ষ দ্বায় অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
আমাদের দেশকে নৈতিক ,সভ্য, বসবাসযোগ্য করার জন্য অবশ্যই অপসংস্কৃতির ধারকবাহক ও প্রচারকদের বিরুদ্ধে সচেতন সভ্য মানুষদের সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। আর এটাও মনে রাখতে হবে তিশা শুধু একজন নয় , এতো দিনে বহু তিশাই তৈরি হয়ে গেছে।
আর তিশা স্বামী যখন সংস্কৃতি উপদেষ্টা এখন আর তিশার পেছনে ফেরার সময় নেই। এখনই সময় সমকামীতা, পরকিয়া ও অবাধ যৌনাচার ছড়িয়ে দেয়ার। ফ্যাসিবাদের দালাল হয়েও তিশা এখন জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় পার করছেন।
লেখক: সাব্বির হোসাইন মনির