
05/08/2025
"শেষ চিঠি"
চিঠির পাতায় লেখা শেষ ভালোবাসা
নীলার সঙ্গে অর্ণবের পরিচয় হয়েছিল কলেজের প্রথম দিন। চোখে বড় বড় স্বপ্ন, বইয়ের গন্ধ, আর অজানা ভবিষ্যতের কল্পনায় মুগ্ধ দুই মন ধীরে ধীরে কাছাকাছি এসেছিল। ক্লাসের পর লাইব্রেরিতে বসে গল্প, সন্ধ্যায় হোস্টেলের বারান্দায় আকাশ দেখা—সব কিছুতেই ছিল একটুখানি প্রেমের ছোঁয়া।
তাদের ভালোবাসা ছিল গভীর, কিন্তু খুব শব্দহীন। অর্ণব কখনো বলেনি, "ভালোবাসি", নীলা কখনো চায়নি শুনতে—তারা একে অপরকে শুধু অনুভব করত।
তবে সময় সবকিছু বদলে দেয়। পড়াশোনা শেষে অর্ণব একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে চলে যায় অন্য শহরে। আর নীলা থেকে যায় গ্রামে, পরিবারের দায়িত্ব আর বাস্তবতার মধ্যে।
প্রথমে নিয়মিত ফোন, মেসেজ... তারপর ব্যস্ততা, দূরত্ব, আর এক সময়ে নিস্তব্ধতা।
অর্ণব খুব চেয়েছিল ফিরে যেতে, কিন্তু সময় তাকে বেঁধে রাখে।
নীলা চুপচাপ একদিন বিয়ে করে নেয়—পছন্দ নয়, বাধ্যতা।
বছর পাঁচেক পর, অর্ণব একদিন একটি চিঠি পায়। পুরনো হাতের লেখা, পুরনো ঠিকানা—
নীলা লিখেছে,
“অর্ণব,
আমি জানি, আমাদের গল্পটা অসম্পূর্ণ ছিল। কিন্তু তুই আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর অধ্যায়।
আমার ছেলে যখন আকাশের দিকে তাকায়, আমি বলি—ওই তারা গুলোকে তার বাবা খুব ভালোবাসত।
আমি এখনো তোকে মনে করি, কিন্তু অভিযোগ করিনা।
তোকে শেষবারের মতো বলতে চাই—ভালোবাসি।”
চিঠি পড়ে অর্ণব কাঁদে। হয়তো অনেক বছর পর প্রথমবার।
শেষ হয়েও রয়ে গেলো…
ভালোবাসা কখনো মুছে যায় না, শুধু রূপ বদলায়।