স্বামী-স্ত্রী ইসলামিক গল্প

স্বামী-স্ত্রী ইসলামিক গল্প Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from স্বামী-স্ত্রী ইসলামিক গল্প, Digital creator, jessore, Jessore.

“স্বামী ও স্ত্রীর সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য ইসলামিক গল্প, উপদেশ ও দোয়া। প্রতিদিন নতুন কাহিনী ও ভিডিও।” তাই আর দেরি না করে স্বামী-স্ত্রী ইসলামিক গল্পকে ফলো করুন।

23/09/2025

Hi everyone! 🌟 You can support me by sending Stars - they help me earn money to keep making content you love.

Whenever you see the Stars icon, you can send me Stars!

ভাসুর এর মেয়েকে ননাসের ছেলের সাথে বিয়ে দিছে,,,ছেলের বয়স ১৯,,মেয়ের ১৪।পরের দিন সকালে মেয়ে হাওয়া,,,গ্রামের সবাই  বউ খুজে প...
23/09/2025

ভাসুর এর মেয়েকে ননাসের ছেলের সাথে বিয়ে দিছে,,,ছেলের বয়স ১৯,,মেয়ের ১৪।

পরের দিন সকালে মেয়ে হাওয়া,,,গ্রামের সবাই বউ খুজে পাই না। সকাল ১১-১২ টার মধ্যে খবর আসে থানা থেকে। 🙃🙃
মেয়ের এই জামাই পছন্দ হয় নাই,,,তাকে নাকি জোর করে এখানে বিয়ে দিছে,,,এখন মেয়ে যারা যারা বিয়েতে ছিলো সবার নামে জিডি করছে।

মেয়ের মা,বাবা,শাশুড়ী, জামাই, ঘটক মানে আমার আরেক ননাস তাদের সবার নামেই জিডি করছে।😔

আল্লাহ বাঁচাইছে আমি আর আমার জামাই এই বিয়েতে যায় নাই ।
চলবে,,,,,,,,
পর্ব___-(- ১) ----
পরবর্তী গল্প পেতে পেজটি ফলো করে রাখুন । #স্বামীস্ত্রীইসলামিকগল্প

বেশ কয়েক বছর আগের ঘটনা‌। বাসে উঠে সীট না পেয়ে আমি দাঁড়িয়ে আছি। ভীড় আছে মোটামুটি; গাদাগাদি যে ভীড় টা হয় সেটা নেই। সীট না ...
23/09/2025

বেশ কয়েক বছর আগের ঘটনা‌। বাসে উঠে সীট না পেয়ে আমি দাঁড়িয়ে আছি। ভীড় আছে মোটামুটি; গাদাগাদি যে ভীড় টা হয় সেটা নেই। সীট না পেলেও ঠিক ঠাক দাঁড়িয়ে থাকা যাবে। আমি দাঁড়িয়ে আছি আর আমার সামনের সীটটায় বসে আছে দুজন মহিলা। একজনের বয়স পঞ্চান্নর কাছাকাছি, আর একজন কম বয়সি একটি মেয়ে, বয়স ওই ছাব্বিশ সাতাশ। সাজগোজ, পোশাক আশাক দেখে মনে হলো বেশ আধুনিক এবং ভালো ফ্যামিলিও বটে। কম বয়সি মেয়েটি, মধ্য বয়স্কা মহিলাটিকে মা বলে সম্বোধন করছে। মা সম্বোধন শুনেই বুঝলাম দুজনের মধ্যে সম্পর্কটা মা আর মেয়ের।

পাশাপাশি বসে দুজনে অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে। কথা বার্তা শুনে যা মনে হলো কিছু দিনের মধ্যেই মেয়েটির বিয়ে, আর বিয়ের কেনা কাটা করেই ফিরছে দুজনে। ওদের কথা বার্তা গুলো শুনতে বেশ ভালোই লাগছিল। বিয়ের কেনাকাটা করার একটা আনন্দ তো আছেই। বিয়ের কেনাকাটার কথা বললেই নিজের বিয়ের কেনা কাটা করার কথা মনে পড়ে যায়। আমার বিয়ের বেনারসী কেনা হয়েছিল কলকাতার বেশ নামকরা দোকান থেকে। দুধে আলতা রঙের বেনারসীটা বার বার গায়ে ফেলে নিয়ে দেখে নিচ্ছিলাম কেমন লাগে। আমার সঙ্গে আমার মাও গিয়েছিল সেদিন। বেনারসীটা দেখে এতটাই পছন্দ হয়ে গিয়েছিল মায়ের, মা বলেছিল, এই লাল বেনারসীতে তোকে দারুণ মানাবে মুনাই। প্রতিটি মেয়ের কাছে বিয়ের বেনারসীটা খুব আবেগের। বিয়ের সাজে সেজে উঠতে বেনারসী শাড়িটাই নতুন করে রাঙিয়ে তোলে হয়তো। হঠাৎ করেই ওদের প্রতি আমার যে ভালো লাগাটা কাজ করছিল সেটারই ছন্দ পতন ঘটলো ওদের একটি কথায়। কানে এলো বিয়ের বেনারসীটা নাকি লাল রঙের কেনে নি। মেয়েটির ইচ্ছে কালো রঙের কোনো বেনারসী, তাই কালো রঙের বেনারসীই কিনেছে। মনের ইচ্ছেটা পূরণ হয়েছে বলে মেয়েটিও বেশ খুশী, সঙ্গে মেয়েটির মাও।

কেন জানি না আমার খারাপ লাগতে শুরু করলো। বিয়ের মতো এমন একটা শুভ অনুষ্ঠান,কালো রঙটা ভীষণ অশুভ। বিয়েতে কালো রঙ চলে না। অথচ কালো বেনারসী পরে বিয়ে করবে, ভাবা যায়? ইচ্ছে হয়েছে বলেই কি কেনা যায়? মেয়েটির মায়েরও দেখলাম পূর্ণ সায় আছে, তাই তো কিনেছে। মেয়ের ইচ্ছে হতে পারে কিন্তু মা হয়ে এটা কি করে মেনে নিল সেটাই ভাবার। মায়ের আসকারা থাকে বলেই ছেলে মেয়েরা উচ্ছন্নে যায়। সে যাই হোক আমার এত না ভাবলেও চলে। মানুষ নিয়ম রীতি মানে না বলেই তো এত অধঃপতন। কালে কালে কত কি আর দেখব। ওদের মনে হয়েছে তাই ওরা কিনেছে। তাতে আমার কি? মা আর মেয়ে নানা কথা বার্তা বলে যাচ্ছে নিজেদের মধ্যে। আমার আর শুনতেই ভালো লাগছিল না, ওদের বকবকানিটা বিরক্তিকর হয়ে উঠলো আমার কাছে। পোশাকে আশাকে আধুনিক যতই হোক রীতি নীতি মানতে হয় বই কি!

এদিকে বাসে ভীড়টা আরো একটু বেড়ে গেল। ভীড় বাস মানেই ঠেলাঠেলি একটু হবেই। আর সেটাই তখন হচ্ছে। আমাকে আরো এক ঘণ্টা যেতে হবে। সীট পাইনি যখন তখন দাঁড়িয়েই যেতে হবে,উপায় নেই। পরের বাসে গেলে হয়তো বসে যাওয়া যেত। কিন্তু আরো এক ঘণ্টা ওয়েট করতে হতো। এদিকে বাড়ি ফেরার তাড়া, তাই দাঁড়িয়ে চলে যাব ভেবেই বাসে উঠেছি। হঠাৎ মেয়েটির মা বলে উঠল,

"-বাবলি সীটটা ছেড়ে দে। একজন অসুস্থ মহিলা উঠেছে। ওনার দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হবে। সীটটা পেলে বরং ওনার সুবিধাই হবে।"

সামনের দিকে তাকিয়ে দেখি অন্য আর একজন মহিলা। ওনাকে দেখে অসুস্থই মনে হচ্ছিল। সীট ছেড়ে দেওয়ার কথাটা শুনতে পেয়েই ওই মহিলাকে দেখলাম এগিয়েই আসতে। বাসের মধ্যে অনেকেই আছেন। কেউ সীট ছাড়েন নি ওনাকে অসুস্থ দেখেও। সবাই যে যার মতো বসে আছেন অথচ মানবিকতা কারো মধ্যেই নেই সেটা বোঝা যায়। তা না'হলে সামনে যারা বসে আছেন তাদের মধ্যে যে কেউ সীট ছেড়ে দিতে পারতেন। মায়ের কথা শুনে বাবলি বলল,

"-আমি দাঁড়িয়ে যেতে পারব। আমার অসুবিধা হবে না। এই যে আমার সীটটায় বসুন আপনি।" বলে মেয়েটি তার হাতের ব্যাগটা মায়ের কোলের ওপর রেখে আমার পাশে দাঁডাল।মেয়েটির সীটে ওই অসুস্থ ভদ্রমহিলাটি বসলেন।

এতক্ষণ ধরে মা ও মেয়ের মধ্যে যে এত কথা হচ্ছিল সেটার ছেদ পড়ে গেল। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছেলেদেরকেই দেখি সীট ছেড়ে দিতে। আজ দেখলাম একটি মেয়েকে সেটা করতে। মা ও মেয়ের মধ্যে এই মানবিকতার কর্তব্য বোধ দেখে বেশ ভালো লাগলো। প্রকৃত শিক্ষাটা থাকে অন্তরে। তাই বাইরে থেকে কাউকে বিচার করাটাই ঠিক নয়। কালো বেনারসীর কথা শুনে যে খারাপ লাগাটা লাগছিল এমন কর্তব্য নিষ্ঠা দেখে মনটা সত্যিই ভরে গেল।

মিনিট পনেরো পার হতেই অসুস্থ মহিলাটি বাস থেকে নেমে যেতেই বাবলি পুনরায় আবার নিজ সীটে বসতে গিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,

"-আপনি অনেক ক্ষণ দাঁড়িয়ে আছেন‌। আপনি একটু বসুন।"

"-না না আমার অসুবিধা হচ্ছে না। তুমি বোসো।"

বাবলির মা পাশ থেকে বলল,

"-ও দাঁড়িয়ে যেতে পারবে। ওর অভ্যেস আছে। আপনি অনেক ক্ষণ থেকেই দাঁড়িয়ে আছেন, আপনি বসুন।"

বাবলি এক প্রকার জোর করেই বসিয়ে দিল। সহযোগিতা ও সহানুভূতি যে মেয়েটির মধ্যে আছে সেটা দেখলেই বোঝা যায়।কিছু ভুল ধারণার জন্য আমরাও মানুষকে ভুল ভাবতে শুরু করি। পাশে বসতেই ভদ্রমহিলার সাথে কথাবার্তা শুরু হল। ভদ্রমহিলা নিজে থেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করলেন,

"-আপনি যাবেন কোথায়?"

"-আরামবাগ যাব।"

"-আমরাও তো আরামবাগ যাব। আরামবাগের কোথায় বাড়ি?"

"-প্রপার আরামবাগ নয়। আরামবাগ থেকে আরো পাঁচ কিলোমিটার ভিতরে। মেয়ের বিয়ের কেনা কাটা করতে গিয়েছিলেন বুঝি?"

"-হ্যাঁ।বিয়ের কেনাকাটা।"

"-একটা কথা জিজ্ঞেস করব যদি কিছু মনে না করেন?"

"-নিশ্চয়ই। মনে আর কি করব,আপনি বলতে পারেন?"

"- মেয়ের বিয়ে দিচ্ছেন তা বিয়েতে কালো বেনারসী কেন?জানেন তো লাল রঙটা কিন্তু শুভ। লাল রঙের বেনারসী পরাটাই কিন্তু রীতি।"

"-না না আমরা ওসব মানি না। লাল রঙ যদি শুভ হতো তাহলে সব কিছুই শুভ থাকত ওর জীবনে।"

"-কথাটা বুঝলাম না ঠিক?"

"-আসলে এটা ওর সেকেণ্ড ম্যারেজ। প্রথম বার বিয়েতে আমিই ওকে বলেছিলাম বিয়েতে লাল টকটকে বেনারসী পরতে। লাল রঙটাই নাকি শুভ। লাল রঙের বেনারসীতে ওকে সুন্দর মানিয়েও ছিল। কিন্তু কোথায় গেল সেই লাল রঙ?দেড় বছরের মাথায় হারিয়ে ফেললো প্রিয় মানুষটাকে। তাই আর শুভ অশুভ কিছু দেখি না। ওর ভালো থাকাটাতেই আমার ভালো থাকা।"

"-জিজ্ঞেস করে কষ্ট দিয়ে ফেললাম। কিছু মনে করবেন না‌।আপনার তাহলে এই একটি মাত্রই মেয়ে?"

"-বাবলি আমার মেয়ে নয়। আমার ছেলের বৌ। তবে বাবলি এখন নিজের মেয়ের থেকেও অনেক বেশি। বাবলি বিয়ের আগে থেকেই আমাদের বাড়ি আসতো। আমার ছেলের সাথে প্রেম করেই ওর বিয়ে‌। বিয়ের আগে থেকেই ও আমাকে মণি মা বলে ডাকে। এই বন্ধনটা বহু দিনের। আমার ছেলের মতো বাবলিও আমার আর এক সন্তান। নিয়তির কি পরিহাস দেখুন।ছোট্ট একটা দুর্ঘটনায় আমার ছেলে মারা গেল। তারপর থেকে আমিও একা হয়ে গেলাম‌। আর মেয়েটা জীবনের সব সাজ হারিয়ে ফেললো। আমি তো ছেলেকে হারিয়েই ফেলেছি। তাই মা হয়ে আমি সব কষ্ট মেনে নিয়েছি। কিন্তু ওই টুকু একটা মেয়ের এই বয়সে যে এমন অঘটন ঘটবে সেটা ভাবতেও পারিনি। সুস্থ লাইফে ফেরানোর জন্য আমি সব সময়েই চেষ্টা করে গেছি ওর পাশে থেকে। মনের জোরটাই বড়ো কথা।গ্রাজুয়েশনের পর আমিই ওকে মাস্টার্সটা কমপ্লিট করাই। এই বছর খানেক হলো ও একটা চাকরিও পেয়েছে। আমি তো ওর জন্যই ভালো আছি। মানে আমাকে ভালো থাকতে হয় আর কি।"

"-তাহলে ও আপনার কাছেই থাকে?"

"-হ্যাঁ আমার কাছেই থাকে। মাঝে মধ্যে মামার বাড়িতে যায়। মামা মামী ছাড়া আর তো নিজের কেউ নেই। মা তো সেই কোন ছোটো বেলায় মারা গেছেন। মা মারা যাওয়ার পর থেকে মামার বাড়িতেই ও মানুষ হয়েছে। তবে মামা মামীও ভীষণ ভালো।আর আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে চায় না‌। এই সামনের ফাল্গুনে ওর বিয়ে। আমিই ওর বিয়েটা দিচ্ছি। ওর তো সারা জীবনটা পড়ে আছে। একজন জীবন সঙ্গীর খুব প্রয়োজন। তবে জীবন সঙ্গী হিসেবে যে ছেলেটি ওর জীবনে এসেছে, বড়ো ভালো মানুষ। সেও আমাকে মা বলেই ডাকে। আর বলছিলেন না কালো বেনারসী কেন বিয়েতে? রঙ দিয়ে কখনো শুভ অশুভ বিচার হয় না। যে রঙটা ওর পছন্দ সেই রঙের বেনারসীটাই ও পরুক। ওর ভালো থাকাতেই যে আমার সুখ।"

কথা বলতে বলতে কখন যে আরামবাগ পৌঁছে গিয়েছি তা আর খেয়াল নেই। বাস থেকে নামি। শুধু ভালো লাগা নয়,সব কিছু শুনে একটা ভালোবাসা তৈরিও হয়ে যায় সঙ্গে সঙ্গেই। কেন জানিনা কিছুক্ষণের পরিচয়টা অনেক বেশি দিনের পরিচিত বলেই মনে হচ্ছিল‌। ওনারা বাস থেকে নামেন। তারপর ওই ভদ্র মহিলা ওনার মোবাইল নাম্বারটা আমাকে দিয়ে বললেন,

"-কথা বলে খুব ভালো লাগলো। সময় করে ফোন করবেন‌।অনেক কথা হবে।

আজ দশ বছর কেটে গেছে। ভদ্র মহিলার সাথে এখনো যোগাযোগ আছে। যোগাযোগ বলব না, রীতি মতো আত্মীয়তার সম্পর্ক। আমি ওনাকে দিদি বলেই ডাকি। মানসিকতার দিক থেকে এতটা উচ্চ মনের ওনার সঙ্গে না মিশলে বুঝতেই পারতাম না। আর বাবলি আমাকে মাসিমণি বলে‌ ডাকে। বাবলির বিয়েতে আমরা সকলেই গিয়েছিলাম। বিয়েতে কালো বেনারসীই পরেছিল‌ ও। আর দশ বছরের বিবাহিত জীবন ভালোই কাটছে ওদের। এক কথায় সুখী জীবন বলা যেতে পারে। জীবনের কোনো রঙ হয় না বোধ হয়। যে রঙে রাঙাবে সেই রঙেই জীবন রঙীন, সে লালই হোক বা কালো।
(সমাপ্ত)

পরবর্তী গল্প পেতে পেজটি ফলো করে রাখুন। #স্বামীস্ত্রীইসলামিকগল্প

প্লেনে উঠেই গার্লফ্রেন্ড বললো,“তুমি নাকি আমার জন্য সব করতে পারবা।”আমি বললাম,“অবশ্যই।”গার্লফ্রেন্ড বললো,“তাহলে এই প্লেনের...
22/09/2025

প্লেনে উঠেই গার্লফ্রেন্ড বললো,“তুমি নাকি আমার জন্য সব করতে পারবা।”
আমি বললাম,“অবশ্যই।”
গার্লফ্রেন্ড বললো,“তাহলে এই প্লেনের মধ্যে হকারি করো দেখি।”

গার্লফ্রেন্ডের কথা শুনে বেলুনের মতন গর্বে যেমন বুক ফুলে উঠেছিলাম, প্লেনে হকারির কথা শুনে ঠিক সেইভাবেই চুপসে গেলাম। জীবনে কেউ শুনেছে প্লেনে হকারি করা যায়?

গার্লফ্রেন্ডকে বললাম,“ইয়ে মানে এর থেকে কঠিন কিছু থাকলে বলো (ভাব নিয়ে)। এটা তো খুব সহজ কাজ।”

গার্লফ্রেন্ড বললো,“আগে এটাই করে দেখাও। যতো সুন্দর করে করবা ততোই বাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় এগিয়ে আসবে। নাহলে কিন্তু অন্য কাউকে নিয়ে গিয়ে বাবার সাথে পরিচিত করিয়ে দিবো।”

সম্রাট শাহজাহান যদি প্রেমের জন্য তাজমহল বানাইতে পারে। আমি প্রেমের জন্য হকারি করলে কি দোষ?
এছাড়া গার্লফ্রেন্ড সরাসরি কলিজাতে হাত দিয়েছে। নিজের সম্মান বাঁচাতে সীট থেকে উঠে হকারি করতে যাবো এমন সময় মনে হইলো ঢাকার বাসে যারা হকারি করে তারা নানা রকম জিনিস বিক্রি করে। কিন্তু এই প্লেনে আমি কি বিক্রি করবো??
গার্লফ্রেন্ড কে বললাম,“ইয়ে মানে হকারি করতে তো জিনিসপাতি লাগে। আমার কাছে তো কিছুই নেই।”

গার্লফ্রেন্ড আমার কথা শুনে ওর হাতের ব্যাগটা থেকে একটা ব্রাশের পাতা বের করে দিলো। গুণে দেখলাম সেখানে ১২ টা ব্রাশ। ব্রাশ গুলো হাতে নিয়ে উঠে যেই দাঁড়াতে যাবো ঠিক তখনি গার্লফ্রেন্ড বললো,“যদি ঠিকমতন হকারি না করতে পারো কি হবে বলেছি তো, মনে আছে??”

আমি হকারদের মতন হাতে ব্রাশের পাতা পেঁচিয়ে বললাম,“হ্যাঁ হ্যাঁ মনে আছে।”

কিছুটা সময় নিয়ে ভাবতে লাগলাম কিভাবে লোকাল বাসে হকাররা হকারি শুরু করে। তারপর ব্রাশ গুলো হাতে নিয়ে হকারি শুরু করে দিলাম।
“ডিয়ার ভাই ও বোনেরা, আপনাদের কি দাঁতের সমস্যা? ঠিকমতন দাঁত ব্রাশ করেন না বলে দাঁতে ময়লা জমে গেছে? দাঁতের গোড়ায় পোকা হয়ে দিন দিন দাঁত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে? মুখের দুর্গন্ধে চারপাশের মানুষের সাঠে ঠিকমতন কথা বলতে পারছেন না?
তাহলে এক্ষুনী সংগ্রহ করুন বাংলাদেশের নাভানা কোম্পানির এই মূল্যবান ব্রাশ। সকালবিকাল দুবার এই ব্রাশ করে দাঁত মাজলে আপনার দাঁত হবে চকচকে ফকফকে।”
তারপর ব্রাশের পাতা থেকে একটা ব্রাশ বের করে হাত উঁচু করে সবাইকে দেখিয়ে বললাম,“দাম মাত্র দশ টাকা দশ টাকা।”
প্লেনের মানুষজন আমার দিকে এলিয়েন দেখার মতন করে তাকিয়ে আছে।

গার্লফ্রেন্ডের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। গার্লফ্রেন্ডের ভয়ে আবার বলা শুরু করলাম,“আমার দাদা ছিলেন বিখ্যাত হকার কালু শেখ। তিনি সারাজীবন ট্রেনে হকারি করেছেন। তারপর তার ছেলে লাল শেখ ছিলো আমার বাবা। উনি সারাজীবন বাসে হকারি করছে। আমি লাল শেখের ছেলে ধলা শেখ তাই প্লেনে হকারি করি।”

দেখি পিছন থেকে একটা বয়স্ক মহিলা আমাকে ডাকছে। কাছে যাবার সাথে সাথে উনি আমাকে দশ টাকা দিয়ে হাতের ব্রাশ টা নিয়ে নিলো।

তারপর এক বয়স্ক সাদা লোক আমাকে ডাকলো। উনার কাছে এগিয়ে যেতেই উনি বললো,“হ্যালো মিঃ ধলা শেইখ (ইংরেজরা বাংলা উচ্চারণ করলে যেমন হয়)।
আমি বললাম,“ইয়েস স্যার।”
উনি বললেন,“টোমার আইডিয়া আমার খুব পছন্দ হইয়াছে। টুমি একমাত্র হকার যে প্লেন হকারি সূচনা করিয়াছো। যদি নোবেল কমিটি এইরকম মানব সেবায় নোবেল দিতো। টাহলে আমি টোমার নামে ওদের কাচে সুপারিশ করতাম।”
আমি খুশিতে বললাম,“থ্যাংক ইউ স্যার।”
তারপর উনি বললেন,“আমাখে দুইটা নাভানা কোম্পানির ব্রাশ দেও।”
সাথে সাথে ব্রাশের পাতা থেকে দুইটা ব্রাশ খুলে উনার হাতে দিয়ে দিলাম।

এরমধ্যে দেখি দুইজন এয়ার হোস্টেজ আমার দিকে দৌড়ে আসছে। ভয়ে কলিজা শুকিয়ে গেলো। আল্লাহ! আজ নিশ্চিত ওরা আমাকে প্লেন থেকে নিচে ফেলে দিবে। ঠিক তখনি হঠাৎ করে আমার গার্লফ্রেন্ড এগিয়ে এসে ছোট বাচ্চার মতন করে আমাকে বললো,“লক্ষী সোনা এমন করে না, চলো চলো সীটে বসো। মানুষ খারাপ বলবে বাবু।”

গার্লফ্রেন্ডের এতো সুন্দর ব্যবহার দেখে অবাক হয়ে গেলাম। কিন্তু সেই অবাক আর বেশিক্ষণ থাকলো না যখন সে প্লেনের সবাইকে উদ্দেশ্য করে ইংরেজিতে বললো,“আপনারা সবাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমার স্বামী একজন মানসিক রোগী। উন্নত চিকিৎসার জন্য ওকে আমেরিকা নিয়ে যাচ্ছি।”

এবার দেখি প্লেনের সবাই আমার দিকে মায়ার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এয়ার হোস্টেজ গুলার মুখও দেখার মতন ছিলো। একজন এয়ার হোস্টেজ এগিয়ে এসে আমার হাতে একটা ললিপপ দিয়ে বললো,“এটা খাও, অনেক মিষ্টি।”

তারপর প্লেনে আমার আর কোনো সমস্যা হয়নি। গার্লফ্রেন্ডও খুশি আমিও খুশি।

কিন্তু বাংলাদেশে ফিরবার পর এয়ারপোর্টে বিশাল ভিড় দেখে ভয় পেয়ে গেলাম। পাশের একজন কে বললাম,“ভাই এতো ভিড় কিসের?”
লোকটি বললো,“বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নাকি কোন দেশ থেকে বাংলাদেশে এসেছে তাই এতো ভিড়।”
আমি নিজের মতন একা একা হেঁটে যেইনা এয়ারপোর্ট থেকে বের হচ্ছি। দেখি সবার হাতে আমার ছবি। কেউ কেউ আমার ছবিতে মালা দিয়েছে। কেউ কেউ আমার ছবির নিচে লেখেছে দেশের গর্ব, জাতীর গর্ব মিঃ ধলা হকার। চোরের মতন এয়ারপোর্ট থেকে পালিয়ে বাসায় এসে শুনি কোন হা*রা*ম*জা*দা যেন আমার প্লেনে হকারির ভিডিও নেটে ছেড়ে দিয়েছে। তাই বাংলাদেশের হকাররা আমাকে স্বাগতম জানাতে এয়ারপোর্ট গিয়েছিলো।

১__ পর্ব

প্লেনের হকার
চলবে,,,,,,,,,
পরবর্তী গল্প পেতে পেজটি ফলো করে রাখুন। #স্বামীস্ত্রীইসলামিকগল্প

- আমি যা দেখি আপনিও কি তাই দেখতেছেন...!?? কমেন্ট করে জানাবেন প্লিজ।
22/09/2025

- আমি যা দেখি আপনিও কি তাই দেখতেছেন...!?? কমেন্ট করে জানাবেন প্লিজ।

বাবা মা মানবে না বলে যে ছেলের সাথে ব্রেকাপ করেছিলো আজ সে ছেলের অফিসেই চাকরির জন্য দাঁড়িয়ে আছে আফ্রা! অফিসে ইন্টারভিউ এর ...
22/09/2025

বাবা মা মানবে না বলে যে ছেলের সাথে ব্রেকাপ করেছিলো আজ সে ছেলের অফিসেই চাকরির জন্য দাঁড়িয়ে আছে আফ্রা! অফিসে ইন্টারভিউ এর জন্য বসে আছে চুপ করে! আজ এতো বছর পর সে আবার তার মুখোমুখি হবে!কি উত্তর দেবে সে? বেকার বলে ছেলেটাকে ছেড়ে এসেছিলো! কিন্তু আজ? ভাবতে ভাবতেই সে যেন হারিয়ে যায়।

হঠাৎ তার সামনে কেউ এসে দাঁড়ায়

-- জ্বি আপনি কার কাছে ইন্টারভিউ এর জন্য এসেছেন?(একটা মেয়ে)

-- জ্বি কাব্য....

-- ওহ! একটু সাবধানে! উনি অনেক রাগী!

বলেই মেয়েটা চলে যায়! আফ্রার এই কথা টা আজব লাগলো! তার মানে কি? কাব্য তো রাগী না! ও তো সব সময় হাসিখুশি থাকতো! হঠাৎ তার মনে হলো আশেপাশে একদম নিস্তব্ধ হয়ে গেছে!এটা কেমন অনুভূতি! এক মিনিট, এটা অনুভুতি না! আফ্রা মাথা তুলে দেখে অফিসের সবাই চুপ হয়ে গেছে।

আফ্রা কিছু বুঝলো না!

-- কাজ না পারলে অফিসে আসার দরকার নেই!(???)

দূরে একটা কেবিন থেকে পরিচিত সেই কন্ঠ টা শুনে আফ্রার বুক কেপে উঠে।

তখনই অফিসের সেই মেয়েটা আবার আসে।

-- জ্বি আপনি এবার ইন্টারভিউ এর জন্য যেতে পারেন!(মেয়েটা)

আফ্রা মাথা নেড়ে কেবিনের দিকে যায়। তার বুক ভয়ে কাপছে। দরজা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে যেতেই দেখে সামনে চেয়ারে কেউ বসে আছে আর তার মুখ ফাইল দিয়ে ঢাকা।

-- আসুন!(???)

আফ্রা ধীরে ধীরে এসে চেয়ারে বসে

-- আপনাকে তো বসতে বলিনি!

-- সরি স্যার!

এবার কাব্য মুখের সামনে থেকে ফাইল সরায়!

-- ইন্টারভিউ তেই অবাধ্য!

-- না না কাব্য...

-- স্যার...

-- সরি স্যার

-- নাম কি?

-- আফ্রা

-- বিবাহিত?

--- না বিয়ে ঠিক

-- চাকরি করার কারন?

-- আসলে কিছু প্রয়োজন তাই

-- চাকরি না করলে ও চলবে?

-- না স্যার এই চাকরি টা খুব প্রয়োজন!

-- হুম বিয়ে কবে!

-- স্যার এসব কেন!

-- জানতে চেয়েছি!

-- ৩মাস পর

-- আপনি কি পদে এপ্লাই করেছেন জানেন তো?

-- জ্বি স্যার! পি এ

-- হুম!

-- জ্বি

-- কাল থেকে জয়েন করবেন

-- স্যার সত্যি!

-- হুম

আফ্রা বেশ খুশি হয়ে যায়! কিন্তু কাব্য একটা চুপচাপ নিজের কাজে মন দেয়
আফ্রা চাকরি পেয়ে খুশি হয়ে বাসায় ফিরে আসে।

মা রান্নাঘরে ছিলো! আফ্রা এসেই মাকে জড়িয়ে ধরে!

-- মা মা মা( মাকে জড়িয়ে ধরে আফ্রা)

-- আরে আরে কি হয়েছে!

-- চাকরি পেয়ে গেছি!!!

-- সত্যি!

মা একটু আবেগী হয়ে যায়। আফ্রা শক্ত করে মাকে জড়িয়ে ধরে

-- মা এবার সব ঠিক হয়ে যাবে!(আফ্রা)

-- তাই যেন হয়! দোয়া করি!

-- হুম মা আবার কিছু খেতে দাও!

-- তুই ফ্রেশ হয়ে আয়!

-- আচ্ছা।

আফ্রা ফ্রেশ হতে চলে যায়।

এদিকে

কাব্য ছাদে দাঁড়িয়ে আছে একা! ড্রিংকের গ্লাস টা হাতে নিয়ে আছে সে। হঠাৎ

-- আফ্রাকেই তাহলে চাকরি টা দিলি!(সামির)

-- হুম! ওকে এই ৩ মাস এতো টা টরচার করবো যে আমি যতটা কস্ট পেয়েছি তার থেকে দ্বিগুণ কস্ট ও পায়!

-- কিন্তু তুই এতে খুশি হবি?

-- কেন হবো না! অবশ্যই খুশি আমি!

-- আমার তো মনে হচ্ছে না!

-- আমি খুশি!

বলেই কাব্য গ্লাসে চুমুক দেয়।

পরেরদিন সকালে আফ্রা অফিসে এসে কেবিন ঢুকে দেখে কাব্য এখনো আসেনি! তাই সে ফাইল গুছিয়ে রাখতে থাকে। তখনই লক্ষ করে কেবিনের কোণায় একটা গাছ! আফ্রা গিয়ে সেটায় পানি দেয়। মনে হচ্ছে রোজ এটার য*ত্ন নেয়া হয়। আফ্রা এই কাজ শেষ করে পুরো কেবিন টা গোছায়! সব কেমন একটা লাগছে তার।

কাজ শেষ করে চেয়ারে একটু বসে,কাজের জন্য আজ জলদি ঘুম থেকে উঠে তাই কেমন ঘুম ঘুম পাচ্ছে তাই সে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে। কখন সে ঘুমিয়ে পড়ে বুঝতেই পারেনি

হঠাৎ পানির ঝাপটায় সে লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে! দেখলো সামনে কাব্য দাঁড়িয়ে আছে।

-- কাজ করতে এসেছো নাকি ঘুমাতে(কাব্য)

আফ্রা দ্রুত উঠে দাঁড়ায়

-- সরি স্যার আসলে আমি পুরো রুম গুছিয়ে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছলাম!

-- বাহানা দেবে না! যাও কফি নিয়ে আসো!

আফ্রা মাথা নেড়ে বেরিয়ে যায়।

কিছুক্ষন পর এক কাপ কফি নিয়ে কেবিনে আসে, কফি এনে কেবিনের এক কোনায় দাঁড়িয়ে কফি খেতে থাকে নিচের দিকে তাকিয়ে আর অন্য দিকে কাব্য হাত বাড়িয়ে আছে কফির জন্য! তার এই কাজ থেকে কাব্য কি বলবে বুঝতে পারছে না!

আফ্রা কাব্যের দিকে তাকিয়ে হতবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। সে বুঝতে পারে কফি টা তার জন্য ছিলোনা! জ্বিবে কামড় দিয়ে তাকায় সে

-- সরি স্যার আমি বুঝিনি,আপনি চাইলে নিতে পারেন আমি পুরো খাইনি... (আফ্রা)

--idiot! যাও আরেকটা কফি নিয়ে আসো!

আফ্রা দ্রুত বেরিয়ে যায়।

কাব্য তাকিয়ে থাকে, একে কি টরচার করতে এনেছে নাকি টরচার হতে! এমন ভাবে চলতে থাকলে কি হবে সামনে?

চলবে...

শুরু তাই ছোট করে দিয়েছি!যদি ভালো লাগে তাহলে চালিয়ে যাবো!
গল্প- প্রতিক্ষা
রাগী_বস_আর_কিউট_পিএ
এপিসোড_১
লেখক_তুষার_আহমেদ_কাব্য

সবাই মতামত জানাবেন
চলবে,,,,,,,,, পরবর্তী গল্প পেতে পেজটি ফলো করে রাখুন। #স্বামীস্ত্রীইসলামিকগল্প

বিয়ের পর  যখন প্রথম পিরিয়ড হয়েছিল খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ওর সামনে আসতেই ভয় পাচ্ছিলাম। এমনকি এমন অবস্থা হয়েছিল বিছানায় বস...
22/09/2025

বিয়ের পর যখন প্রথম পিরিয়ড হয়েছিল খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ওর সামনে আসতেই ভয় পাচ্ছিলাম। এমনকি এমন অবস্থা হয়েছিল বিছানায় বসা, ওকে খাবার বেড়ে দেওয়া এসবও পারছিলাম না।
সাধারণত আমি যতক্ষণ ইয়াসিরকে ভাত বেড়ে দিই না ততক্ষণ সে টেবিলে বসে থাকে। ভাত দেওয়ার পর ওর পাশে টেবিলে বসে না থাকলে ওর ভাল লাগে না। আমাদের সংসারের বয়স তিন মাস, তিন মাস থেকেই এটাই হয়ে আসছে।
বেশ ভাল লাগে!!

সেদিন ইয়াসির অফিস থেকে আসার পর, ওকে ভাত দিয়ে রুমে চলে আসি, ওর অভিমান ভরা দুটো চোখ বার বার আমার বেড রুমের দরজার দিকে লক্ষ্য রাখছিল। কেন আমি পাশে বসিনি।

শেষে কিছুক্ষণ পরে রুমে এসে, একটু রেগে বললো,
: সুমু পানি দাও,

পানি টেবিলেই ছিল, তাও আমায় যখন বললো, আমি পানি এনে দিই। সাধারণত কোন কিছু লাগলে সে আমাকে আদেশের সুরে কিছু বলে না। যা দরকার নিজেই নিয়ে নেয়। কিন্তু অভিমান হলে এসব ইচ্ছে করেই করে।

আমি পানি দিয়ে দৌড়ে চলে যাচ্ছিলাম সে হাতটা ধরে বললো,
: বস,

আমি না বসেই নীচের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম।
সে আমার দিকে পূর্ণ দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে বললো,
: সুমাইয়া, কি হয়েছে তোমার? তুমি এমন করছ কেন? তুমি আমার পাশে না বসলে ভাত খেতে ইচ্ছে করে না। তুমি জান, তাও আমাকে ভাত দিয়ে কোথায় চলে গেছ? কাছে আসছ না? পাশে বসছ না? কি হয়েছে বল? না বললে আমি কীভাবে বুঝব বলো। আমি সারাদিন তো অফিসেই ছিলাম, আমি কীভাবে জানব?

আমি তাও চুপ, একটা শব্দও বলিনি। সে আবার বললো,
: তুমি টেবিলে গিয়ে দেখেছ? আমি ভাত খেয়েছি কি না? খায়নি। তুমি পাশে না থাকলে আমি খেতে পারি না।

এবার আমি নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি। খুব কষ্ট হচ্ছিল। নিজের উপর অনেক রাগ। সে খুদা সহ্য করতে পারে না। খুদা লাগলেই কিছু খেতে হয়। এখন এগারটা বাজে সে এখনো খায়নি।

--আগে খেতে চল। তারপর বলতেছি।

সে প্রচণ্ড অভিমান নিয়ে বললো,
: না, আমি খাব না। আগে বল, কি হয়েছে? তোমার মন খারাপ কেন? আমার কাছে আসছ না কেন? ভালো আছ তো?

ইয়াসিরকে অনেকভাবে খেতে যেতে বলার পরও যখন সে খায়নি বললাম,
--আমার পিরিয়ড শুরু হয়েছে।

সে শব্দ করে হেসে আমাকে কাছে টেনে নিতে চেয়ে বললো,
: তো কি হয়েছে? তোমার খুব ব্যথা হচ্ছে কি?

--না। আমি নাপাক, নির্দিষ্ট জায়গায় বসতে হবে। সোফা, চেয়ারে বসা যাবে না। খাটের নির্দিষ্ট জায়গায় বসতে হবে।

: এগুলো কে বলেছে?

-- আপুর শ্বশুর বাড়িতে তো এমনই নিয়ম। এগুলোই হয়। পিরিয়ড থেকে সুস্থ হওয়ার পর, পুরো বাড়ি মুছে দিতে হবে। মোড়া, চেয়ার সব পানি দিয়ে মুছে দিতে হবে। বেড,,,,

: ব্যস, ব্যস, আর বলতে হবে না। কিন্তু আমাদের বাড়িতে এই নিয়ম নেই।
ছোট বেলায় যখন থেকে রোজা রাখতে শুরু করেছি, রমজাম মাসে আপুরা সেহেরি খেতে না উঠলে, রোজা না রাখলে মা'কে বলতাম, আপু কেন রোজা রাখছে না?
মা বলতো,
: আপুকে আল্লাহ নামাজ থেকে ছুটি দিয়েছেন। এমনকি সব মেয়েদের মাসের নির্দিষ্ট সময়ে আল্লাহ নামাজ, রোজা, কোরান তেলাওয়াত থেকে ছুটি দিয়ে দেন।

বুঝতাম না, কিন্তু চুপ থাকতাম। আরেকটু যখন বড় হলাম, লক্ষ্য করলাম, একদিন মা আপুকে খুব যত্ন করে দুধ, ডিম, ভালো খাবার খেতে দিচ্ছিলেন।
আমি জেলাস হয়ে, মায়ের সাথে খুব রাগ করেছিলাম। আপুকে কেন বেশি দিচ্ছে। মা সেদিন বলেছিলেন,

: বলেছিলাম, মেয়েদেরকে আল্লাহ ছুটি দিয়ে দেন, কেন ছুটি দেয় জানিস?
:: নাহ,
: কারণ, তখন মেয়েদের অনেক কষ্ট হয়, অনেক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে প্রতিটি সেকেন্ড অতিবাহিত করতে হয়। ওই সময় মেয়েদের বিশ্রাম নিতে হয়। যথাসম্ভব ভালো খাবার দিতে হয়। এমন সময় আসলে যখন বুঝবি , কখনো আপুকে কষ্ট দিয়ে কথা বলবি না। শুধু আপুকে নয়, কোন মেয়েকেও না। যদি কখনো বুঝিস কোন মেয়ে এই সময়টা অতিক্রম করতেছে, তখন তাকে সম্মান প্রয়োজনের চেয়ে বেশি দিতে হবে। কারণ এই সময়টার কারণেই প্রতিটি মেয়ে মা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে।

: বুঝলাম, কিন্তু ছুটি চলতেছে সেটা কীভাবে বুঝবো?

মা মুচকি হেসে বললো,
: সেটা এখন না বুঝলেও চলবে। সময় হলেই বুঝতে পারবি।

মা গরম পানির বেগে পানি ভরতে ভরতে কথা বলছিলেন, গরম পানির ব্যগটা হাতে দিয়ে বললেন,
: যা, এটা তোর আপুকে দিয়ে আস।

আমি আপুর কাছে সেটা দিয়ে বললাম,
: আপু কিছুর দরকার হলে আমাকে বলিও। তুমি এখন রেস্ট নাও। আমি তোমার খাবারে ভাগ বসাব না। তোমাকে জ্বালাব না। আমি জানি তোমার অনেক কষ্ট হচ্ছে।

আপু খুব খুশি হয়েছিলেন সেদিন। আর এখন আমার বউটাকে খুশি করার, যত্ন করার দায়িত্ব আমার। বলে আমাকে জড়িয়ে ধরতে চাচ্ছিলো, আমি একটু দূরে সরে গিয়ে বললাম,
--আমার আনইজি লাগতেছে। এই অবস্থায় তোমার পাশে,,,,

: এই অবস্থা মানে কী হুহ, জানো?

রাসুল (সা:) প্রায় সময় উম্মুল মু’মিনীন খাদিজা (রা:) এর কোলে মাথা রাখতেন, এবং তাঁর মৃত্যুর পর আয়শা (রা:) এর উরুর উপর মাথা রেখে শুতেন। যখন আয়শা (রা:) ঋতুবর্তী অবস্থায় উপনীত হতেন, তখন তিনি (সা:) তাঁর উরুর উপর শুয়ে কোর’আন তিলাওয়াত করতেন।

হযরত আয়শা (র:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
আমি পিরিয়ড অবস্থায় পনি পান করতাম এবং পানির পাত্রটা রাসুল (স:) এর দিকে এগিয়ে দিতাম। তিনি পানির পাত্রে সে জায়গায় মুখ লাগিয়ে পানি পান করতেন যে জায়গায় মুখ
লাগিয়ে আমি পানি পান করেছি। আমি হায়েজ (পিরিয়ড) অবস্থায় হাড্ডি থেকে গোশত ছিড়ে খেতাম অত:পর তা রাসুল (স:) কে দিতাম তিনি সেখানে মুখ লাগিয়ে গোশত
ছিড়তেন যেখানে মুখ লাগিয়ে আমি গোশত
ছিড়েছি। (মুসলিম- ৭১৮)

আল্লাহ বলেন,
“আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে হায়েয (ঋতু)
সম্পর্কে। বলে দাও, এটা ‘আযা’। কাজেই তোমরা
হায়েয অবস্থায় স্ত্রীগমন(সহবাস) থেকে বিরত থাক। তখন পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হবে না, যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়ে যায়। যখন উত্তম রূপে পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে, তখন গমন কর তাদের কাছে, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন”।(সুরা বাকারাহ, ২২২)

সুতরাং বুঝতে পারছ? আমি কিন্তু সব কিছু করতে পারবো। বলে মুচকি হেসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।

--উঁহু, সব কিছু পারবে না কিন্তু,

বলে, লজ্জা পেয়ে সরে যাচ্ছিলাম, সে কাছে টেনে নিয়ে বললো,
: জানি তো রানী সাহেবা। লজ্জা পাচ্ছ কেন? কোরানে আছে,
"আল্লাহ সত্য বলতে লজ্জাবোধ করেন না। (সূরা আহযাব-৫৩)"

সুতরাং এসব বিষয়ে নিসংকোচে ক্লিয়ারলি জেনে নেওয়া উচিৎ। তবেই আমাদের জীবন সুন্দর হবে। লজ্জা নিয়ে বসে থেকে না জেনে যদি গুনাহ বা ভুল করে ফেলি, তা কী কখনোই উচিৎ হবে?

--না,

: তবে সব জানতে হবে।

এর পর থেকে পিরিয়ড হলে আর নিজেকে কখনো অপরাধী ভাবিনি। এবং ইয়াসির ওই সময়গুলোতে আমার প্রতি রাণীর মত আচরণ করতো। গরম পানি করে দেওয়া, খাবারের খেয়াল রাখা। কোন কিছু লাগবে কি না। ব্যথা হচ্ছে কি না ইত্যাদি।
যেমনটি শিক্ষা সে তার পরিবার থেকে তার মা থেকে পেয়েছে।
আর আমার শাশুড়ি তখন আমাকে কীচেনে গেলেই বলে,
: মা'রেই জোর করে কাজ করতে হবে না। যতটুকু পারো করো। মাসের প্রতিটা দিন তুমি রান্না করো এই দিনগুলোতে না হয় আমিই রান্না করব। আমিও মেয়ে, আমারও মেয়ে আছে। আমি বুঝিরে মা, এইসময় কত ব্যথা যন্ত্রণার মধ্যে যেতে হয়।

চলবে,,,,,,,,, পরবর্তী গল্প পেতে পেজটি ফলো করে রাখুন। #স্বামীস্ত্রীইসলামিকগল্প

"আমার বন্ধু বাসায় এলে আজকাল দেখি তুমি একটু বেশি সেজেগুজে বসে থাকো। এর কারণটা কী?"রাহুলের প্রশ্নটা শ্রেয়ার কানে যেতেই ওর ...
22/09/2025

"আমার বন্ধু বাসায় এলে আজকাল দেখি তুমি একটু বেশি সেজেগুজে বসে থাকো। এর কারণটা কী?"

রাহুলের প্রশ্নটা শ্রেয়ার কানে যেতেই ওর মুখটা মুহূর্তে কঠিন হয়ে উঠলো। ওর শান্ত চোখ দুটোতে দপ করে জ্বলে উঠলো আগুন। তীব্র ঘৃণায় স্বামীর দিকে তাকিয়ে সে বলল,
- " কী বলতে চাইছো তুমি? তোমার কি মনে হয় আমি ওর জন্য সেজে থাকি?"
- "এখন তো তাই মনে হচ্ছে।" রাহুলের কণ্ঠে ছিল চাপা অভিমান আর হতাশা।
- "তোমার যা মনে হয়, সেটাই ভেবে নাও। আমি কখন সাজবো, কখন বসে থাকবো, সেটা সম্পূর্ণ আমার ব্যাপার।" শ্রেয়ার কণ্ঠস্বরে ছিল স্পষ্ট অবজ্ঞা।
- "ও আচ্ছা! তাহলে তো ভালোই বেড়েছো তুমি। এই কথা যদি তোমার মা-বাবাকে না বলেছি, তো আমার নামও রাহুল নয়।"
এইটুকু বলতেই শ্রেয়া যেন রা*গে ফেটে পড়ল। সে চিৎকার করে বলল,
- "খবরদার! যদি আমার মা-বাবাকে একটা কথাও বলেছো, তাহলে আমি নিজেকে শেষ করে দেবো!"

শ্রেয়ার চোখেমুখে এমন এক হিংস্রতা আর জেদ ছিল, যা দেখে রাহুল স্তব্ধ হয়ে গেল। আর কোনো কথা বাড়ালো না সে। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিঃশব্দে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এল। নিজের কারখানায় এসে এক কোণে একটা চেয়ারে নির্জীবের মতো বসে রইলো সে। মাথার ভেতর হাজারো চিন্তা তোলপাড় করছে। কোনো কিছুতেই মন বসাতে পারছে না। বার বার মনে হচ্ছে, শ্রেয়া আর তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু তৌফিকের মধ্যে কিছু একটা চলছে। যে শ্রেয়া একসময় তৌফিককে দেখলে এড়িয়ে চলতো, এমনকি ঠিকমতো কথাও বলতো না, সেই মেয়েই এখন তৌফিক বাসায় এলে পরিপাটি করে সেজেগুঁজে বসে থাকে।

বদলের শুরুটা ঠিক কোথা থেকে, তা রাহুল মেলাতে পারে না। দুই বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছিল তাদের। শ্রেয়া ছিল অসম্ভব সুন্দরী, কিন্তু তার চেয়েও বেশি ছিল তার লজ্জা। অচেনা তো বটেই, পরিচিত পুরুষদের সামনেও সে আসতো না। বাইরে বের হলে আপাদমস্তক বোরখায় ঢেকে রাখতো নিজেকে। আর এখন? এখন সে আঁটসাঁট সালোয়ার-কামিজ পরে, ওড়নাটা দায়সারা ভাবে কাঁধের একপাশে ঝুলিয়ে রাখে। অথচ একসময় এই ওড়না দিয়েই সে নিজের মাথা আর শরীর যত্ন করে ঢেকে রাখতো। বোরখা পরা তো কবেই ছেড়ে দিয়েছে, নামাজও আর পড়ে না। সারাক্ষণ ফোন নিয়ে পড়ে থাকে। ফোনের স্ক্রিনে সর্বক্ষণ আঙুল চলে, আর ঠোঁটের কোণে লেগে থাকে রহস্যময় হাসি। ফোনটা লক করা থাকে, রাহুল হাতে নিলেই তুমুল কাণ্ড শুরু করে দেয়, খাওয়া-দাওয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়। এই অশান্তি রাহুলের জীবনকে বিষিয়ে তুলেছে।

হঠাৎ এমন আমূল পরিবর্তনের কারণ কী? এই চিন্তায় রাহুলের রাতের ঘুম উবে গেছে, খাওয়া-দাওয়ায় রুচি নেই। অথচ শ্রেয়ার সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। রাহুল এই যন্ত্রণাগুলো কাউকে বলতেও পারে না। বাবা-মা গ্রামে থাকেন, তাদের এসব বললে দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়বেন। একমাত্র বন্ধু তৌফিক, কিন্তু সন্দেহের তীর তো তারই দিকে! বাকি বন্ধুদের ওপর ভরসা করার মতো সাহস রাহুলের নেই।

রাহুলের শহরের বুকে ছোট একটা কারখানা আছে, যেখানে তিন-চারজন কর্মচারী কাজ করে। আসিফ নামের একটি ছেলে ব্যবসা শুরুর দিন থেকেই ওর সাথে আছে। বয়সে রাহুলের চেয়ে বছর দুয়েকের ছোট হবে, কিন্তু ছেলেটা বেশ বিচক্ষণ। সে রাহুলের সামনে একটা চেয়ার টেনে বসে বলল,
- "ভাই, আপনাকে খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে। কিছু হয়েছে?"
- "না, তেমন কিছু না। "
- "ছোট ভাই হিসেবে আমার সাথে বলতে পারেন। এটুকু বিশ্বাস রাখতে পারেন, আমার দ্বারা আপনার কোনো ক্ষতি হবে না।"
রাহুলের ভেতরটা যেন একটা আশ্রয় খুঁজছিল। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে বলল,
- "চিন্তা তোমার ভাবিকে নিয়ে। সে কেমন যেন বদলে গেছে। আগের মতো আর আমাকে ভালোবাসে না মনে হয়।"
আসিফ একটা অদ্ভুত মুচকি হাসলো। তারপর ধীরেসুস্থে বলল,
- "আপনি তো ভাই সারাক্ষণ ব্যবসার পেছনে পড়ে থাকেন। সেই সকালে আসেন আর ফেরেন গভীর রাতে। একবার ওই বেচারির কথা ভেবে দেখেছেন? একা একা থাকতে থাকতে তার দম বন্ধ হয়ে আসাটাই স্বাভাবিক। আবার শুক্রবার ছুটির দিনটাতেও দেখি তৌফিক ভাইয়ের সাথে ঘুরে বেড়ান, নয়তো তাকে বাসায় নিয়ে এসে আড্ডা দেন। ভাবিকে একটু সময় দিন, দেখবেন সব আগের মতো হয়ে গেছে।"

রাহুলের মনে হলো, আসিফের কথাটা মিথ্যা নয়। সে কি সত্যিই শ্রেয়াকে সময় দেয়নি? তার মনে একটা নতুন প্রশ্ন জন্ম নিল, তবে কি এই সময় না দেওয়ার সুযোগেই শ্রেয়া তৌফিকের দিকে ঝুঁকে পড়েছে?
আসিফ ইতস্তত করে বলল,
- "ভাই, কিছু মনে না করলে একটা কথা বলবো?"
- "বল।"
- "তৌফিক ভাই কিন্তু সুবিধের লোক না। মেয়ে মানুষ দেখলে তার মুখ দিয়ে লালা ঝরে। সিনিয়র, জুনিয়র, বিবাহিত-অবিবাহিত,কোনো বাছবিচার নেই। যাকে পছন্দ হয়, তাকে পাওয়ার জন্য পা*গল হয়ে যায়। আমার মনে হয়, ওকে আর বাসায় না আনাই ভালো।"
- "আরে না! ও যেমনই হোক, আমার সাথে এমন করবে না।"
- "লুচ্চাদের কোনো জাত-কুল নেই, ভাই।"
আসিফের সোজাসাপ্টা উত্তরে রাহুল চুপ করে গেল।

রাতে বাসায় ফিরে রাহুল দেখলো, শ্রেয়া বিছানায় হেলান দিয়ে ফোন টিপছে আর মুচকি মুচকি হাসছে। সেই হাসিতে এমন এক আবেশ, যা রাহুলের জন্য নয়। রাহুল যে ঘরে ঢুকেছে, সেদিকে তার কোনো খেয়ালই নেই। রাহুল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফ্রেশ হয়ে এসে শ্রেয়ার পাশে বসলো। শ্রেয়া নির্বিকার। রাহুলই নীরবতা ভাঙলো,
- "ভাবছি, এই শুক্রবারে তোমাকে নিয়ে গ্রামে যাবো। অনেকদিন হলো মা-বাবার কাছে যাই না।"
- "তুমি যাও। আমার যাওয়ার ইচ্ছা নেই। আর হ্যাঁ, আমাকে কিছু টাকা দিও। কাল এক বান্ধবীর সাথে দেখা করতে যাবো।"
- "কোন বান্ধবী?"
- "রুহি ছাড়া আর কে?"
রাহুলের বুকের ভেতরটা ছ্যাঁৎ করে উঠলো। ইদানীং এই রুহির সাথে তার দেখা করার পরিমাণটা বড্ড বেশি বেড়ে গেছে। রাহুলের মনে হলো, এটাই সুযোগ শ্রেয়াকে অনুসরণ করার।

গভীর রাতে ঘুমের ঘোরে রাহুলের ঘুম ভেঙে গেল। পাশে হাত দিয়ে দেখলো, শ্রেয়া বিছানায় নেই। ভাবলো হয়তো বাথরুমে গেছে। সে আবার ঘুমানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু অনেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও যখন শ্রেয়া ফিরলো না, তখন তার মনে তীব্র সন্দেহ দানা বাঁধলো। সে বিছানা থেকে উঠতে যাবে, ঠিক সেই মুহূর্তে দেখলো, শ্রেয়া বেলকনি থেকে নিঃশব্দে ঘরে ঢুকছে। তার হাতে ধরা মোবাইল ফোন, যার স্ক্রিনের আলোয় তার মুখটা রহস্যময় দেখাচ্ছে।
দৃশ্যটা দেখে রাহুলের বুকের ভেতরটা যেন বরফশীতল হয়ে গেল। সন্দেহের যে কাঁটা এতদিন শুধু খচখচ করছিল, আজ রাতে তা যেন গভীরে বিঁধে গেল। রাহুলের পৃথিবীটা এক মুহূর্তে দুলে উঠলো।

পরদিন সকালে রাহুলের ঘুম ভাঙলো একরাশ ক্লান্তি আর মন খারাপের বোঝা নিয়ে। কারখানায় যাওয়ার জন্য মনটা সায় দিচ্ছিল না। তার ভেতরের অবিশ্বাস আর যন্ত্রণা তাকে স্থির থাকতে দিচ্ছিল না। সে সিদ্ধান্ত নিল, আজ সে কারখানায় যাবে না। আজ সে সত্যের মুখোমুখি হবে। শ্রেয়াকে অনুসরণ করবে।

বাড়ি থেকে বেরিয়ে সে রাস্তার ওপারে একটা দোকানের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে ফেলল। বুকের ভেতরটা হাতুড়ির মতো পেটাচ্ছে। কিছুক্ষণ পরই শ্রেয়া বেরিয়ে এল, আর তাকে দেখে রাহুলের পৃথিবীটা যেন মুহূর্তে দুলে উঠল। এ কোন শ্রেয়া! পরনে আকাশী রঙের ঝলমলে এক চুরিদার, যা তার শরীরের প্রতিটি বাঁক ফুটিয়ে তুলেছে। চোখে কালো সানগ্লাস, ঠোঁটে গাঢ় লাল লিপস্টিক আর খোলা চুলগুলো বুকের একপাশে আলতো করে সাজানো। তার হাঁটার ভঙ্গিতে এমন এক আত্মবিশ্বাস, যা রাহুলের কাছে সম্পূর্ণ অচেনা। নিজের স্ত্রীকে এই রূপে সে আগে কখনো দেখেনি। তার মনে হলো, কোনো বান্ধবীর সাথে দেখা করতে কেউ এভাবে যায় না। এ সাজ অন্য কারো জন্য।

একটা রিকশা ডেকে শ্রেয়া উঠে বসতেই রাহুল দ্রুত একটা অটোরিকশা নিয়ে তার পিছু নিল। শ্রেয়া শহরের এক নির্জন পার্কে এসে নামল। রাহুল কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে শ্বাসরুদ্ধকর উত্তেজনায় অপেক্ষা করতে লাগল। শ্রেয়া পার্কের ভেতরে একটা বেঞ্চে গিয়ে বসল, আর ঠিক তখনই সেখানে প্রবেশ করল সে, রাহুলের প্রিয় বন্ধু, তৌফিক।

দৃশ্যটা দেখার সাথে সাথে রাহুলের মাথাটা বন বন করে ঘুরতে শুরু করল। পায়ের তলার মাটি যেন সরে যাচ্ছে। তাহলে তার সন্দেহই সত্যি হলো! তার অগোচরে, তার ছাদের নিচে, তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু আর তার স্ত্রী এক নোংরা খেলায় মেতেছে! তীব্র ঘৃ*ণায় আর কষ্টে তার শ্বাস বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হলো। কাঁপা কাঁপা হাতে সে ফোনটা বের করে তাদের হাসাহাসি আর অ*ন্তর*ঙ্গ মুহূর্তগুলো ভিডিও করতে লাগল। প্রতিটি সেকেন্ড তার বুকে ছুরির মতো বিঁ*ধছিল।

ভিডিওটা করে ফোন পকেটে রেখে সে আর এক মুহূর্তও সেখানে দাঁড়াতে পারল না। টলতে টলতে কারখানায় এসে নিজের চেয়ারে ধপ করে বসে পড়ল। কিন্তু শরীরটা আর তার নিয়ন্ত্রণে ছিল না। মনে হচ্ছে র*ক্তচাপ বেড়ে গেছে, চোখের সামনে সবকিছু ঝাপসা হয়ে আসছে।

ওর অবস্থা দেখে আসিফ ছুটে এল। সে রাহুলের অবস্থা বুঝতে পেরে তৎক্ষণাৎ তাকে ধরে নিয়ে গেল কাছের এক ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার পরীক্ষা করে কিছু ওষুধ দিয়ে বললেন বাসায় গিয়ে পুরোপুরি বিশ্রাম নিতে।
আসিফ বলল,
- "চলেন ভাই! আমি আপনাকে বাসায় রেখে আসি।"
- "না, আমি যাবো না। আমি ঠিক আছি।"
- "আপনি একদম ঠিক নেই। চলুন। সুস্থ হলে তারপর কারখানায় আসবেন।"

আসিফ প্রায় জোর করেই রাহুলকে ধরে নিয়ে বাসার দরজার সামনে এলো। কলিংবেল চাপতেই শ্রেয়া দরজা খুলে দিল। দরজায় বিধ্বস্ত চেহারার রাহুলকে দেখে সে চমকে উঠল। উদ্বিগ্ন হয়ে শ্রেয়া রাহুলের কপালে হাত রাখতে যেতেই রাহুল তীব্র ঘৃ*ণায় তার হাতটা সরিয়ে দিল। তার দৃষ্টিতে ছিল এমন এক আ*গুন যা শ্রেয়াকে মুহূর্তে পুড়িয়ে দিচ্ছিল। কোনো কথা না বলে সে স্ত্রীর সামনে থেকে সরে গিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল।

চলবে.....!

#সন্দেহের_কাঁটা।

পর্ব:- এক।

লেখা:- সিহাব হোসেন।

(পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই দেওয়া হবে)
ফলো করুন পেজটি #স্বামীস্ত্রীইসলামিকগল্প

- ইসস তোর ঠোঁ'ট জোড়া এতো স্বা'দ কেন রে...-? 🤤  দেখলেই মন চায় সারাদিন চু*ষে চু*ষে খাই... 💏 - উফ আপু সরো তো, খালি সব সময়...
22/09/2025

- ইসস তোর ঠোঁ'ট জোড়া এতো স্বা'দ কেন রে...-? 🤤
দেখলেই মন চায় সারাদিন চু*ষে চু*ষে খাই... 💏

- উফ আপু সরো তো, খালি সব সময় বা'জে কথা😤
আবার কি'স করলে কিন্তু আমি এবার খালামণিকে বলে দিবো..............

- তোর সাহস থাকলে বল যা, আমিও খালামণিকে
বলবো, তুই রাতের বেলা আমার রু'মে পড়তে না,
আমাকে বা'জে ভাবে টা'র্চ করতে আসিস 😒 (নদী)

- কি এটা তো একদম একটা মিথ্যা কথা।
আমি তোমার দিকে কখনো বা'জে ভাবে তাকাই- নি
টা'র্চ করা তো দূরের কথা...... উল্টো তুমি তো
আমাকে জো'র কি সব করো.............

- সেটা তো তুই জানিস, আব্বু আম্মু, খালু খালামণি তো
আর জানে না.. একটা কাজ কর,
দ'রজাটা লা'গিয়ে আয়, তোকে একটু আ'দর করি 💋

- ধ্যাত, আপু পড়াও তো.......

- নদী নিজেই এবার চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে রুমের
দ'রজা-টা লাগিয়ে দিলো....
তারপর সামনের দিকে ঘুরে ঠোঁ'ট কা'মড়া'তে কা'মড়া'তে
আবিরের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো.....

আবির চেয়ার থেকে উঠে কিছু বলতে যাবে,
সাথে সাথে নদী দৌড়ে আবিরের কাছে গিয়ে তাকে
ধা'ক্কা দিয়ে খাটের উপরে ফে'লে দিলো আর, ওর
দুই হাত খা'টের সাথে চে'পে ধরে, নিজের দখলে নিয়ে
নিলো নদী.................।

- আবির ছা'ড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু, নদী ছা'ড়লো না।
যতবার আবির ছা'ড়ানোর চেষ্টা করে,
ততবার আবিরের ঠোঁ'টের কা'মড় আরো বাড়িয়ে দেয়
নদী....। আবির কান্না করতে যাবে তখন দরজায় নক
করার শব্দ আসে...... নদী তখন আবিরের উপর
থেকে উঠে পড়ে, আবিরও তাড়াতাড়ি করে চেয়ারে
বসে পড়ার ভান করতে থাকে আর,
তার ঠোঁ'ট মুছতে থাকে , নদী বিরক্ত হয়ে দরজাটা
খুলে বলে..........

- ও আম্মু তুমি, কি হয়েছে -? 🧍🏻‍♀️

- কিরে দরজা লাগিয়ে দিয়েছিস কেন ? (খালামণি)

- আর বলো না, তোমার ভাগিনা একটা আস্তো ফা'জিল। পড়া বাদ দিয়ে খালি দৌড়ে পালাতে যায়...
তাই দরজা লাগিয়ে দিছি যাতে পালাতে না পারে... 😶

- ও আচ্ছ, এই আবির এমন করিস কেন-?
তোর আম্মুকে কল দিয়ে বলব নাকি আমি এসব

- না না খালামণি এসব করো না....,
খালামণি আমার অনেক ক্ষুদা লাগছে, তাই পড়তে
ভালো লাগছে না (আবির)

- আহারে সো'না আমার ,তুই আমাকে আগে বলবি না,
নদী তুই ও আয়, হালকা কিছু খাবার খেয়ে নিয়ে
তারপর তোরা দুজন পড়াশোনা কর.....। (খালামণি)

- আচ্ছা আম্মু তুমি যাও, আমরা আসছি (নদী)

**নদীর আম্মু চলে গেলো আর আবির চেয়ার থেকে
উঠে জোরে জোরে হাসতে লাগলো।
নদী ভ্রূ কুঁচকে আবিরের দিকে তাকিয়ে বলে.....**

- কিরে হাসছিস কেন....?

- হাসবো না, খালামণিকে কিভাবে বোকা বানালাম।😂
খালামণি তো আর জানে না, যে আমাকে পড়ানো বাদ
দিয়ে তুমি আমার সাথে চু'মাচু'মি করছিলে.......

** আবির কথাটা বলেই হাসতে থাকে, নদী রেগে গিয়ে
আবিরের মাথায় একটা থাপ্পড় দেয়, 👋
আবির অবাক হয়ে তাকালে নদী বলে........

- এটা আবার কেমন ভাষা, চুমাচুমি এসব কি ধরনের
কথা -? 😡😠 (নদী)

- সরি আমি নিচে গেলাম, আমার ক্ষুধা লাগছে...🚶

**আবির মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে নিচে চলে গেলো,
নদী বইগুলো বন্ধ করে, ও'ড়না ঠিক করে সেও নিচে
চলে আসে, নিচে এসে দেখে আবির সোফায় বসে
আছে নুডুলস খাচ্ছে আর, টিভি দেখছে।
নদী এসে আবিরের পাশে বসে, আবিরের মাথায়
আরেকটা থা'প্পর মে'রে বলে.......

- কলেজে পড়িস অথচ এখনো কার্টুন দেখা বন্ধ হয়
নাই। দে রিমোট দে, আমি এখন সিরিয়াল দেখবো.....

- খালামণি, আপু কিন্তু কথায় কথায় আমার মাথায়
থা'প্পড় দেয়,😠😫😭
আপুর জন্য কিন্তু আমার পড়া হতে চায় না.....!!

- কিরে নদী, তুই আবিরের মাথায় এভাবে থা'প্পর মা'রিস
কেন আর, তোর নুডুলসের বাটি দেখ টেবিলের উপর
রাখা আছে (খালামণি অর্থাৎ নদীর আম্মু )

- এই সময় আবার নুডলস করতে গেছে কেন,
তুমি না আজকে বিরিয়ানি রান্না করবে বললা (নদী)

- আপাতত এটাই খা, সিলিন্ডারের গ্যাস শেষ হয়ে গেছে
ওটা চেঞ্জ করে আনবে তারপর, রান্না করবো.......

- ও 🙂

**নদী টেবিলের উপর থেকে ওর লুডসের বাটিটা নিয়ে
সোফায় বসে খেতে লাগে, হঠাৎ করে আবিরের দিকে
নজর দিলো, কতো সুন্দর করে খাচ্ছে আবির,
নদীর মাথায় এর মধ্যেই দুষ্টু বুদ্ধি চলে আসছে,
আবির যখন পানি খেতে নেয় আর টিভি দেখে,
তখন নদী ওর চা'মু'চের সাথে নিজের এটো চামুচটাকে
আবিরের চামুচ-টার সাথে পাল্টিয়ে নেয়....।

* - আবির না বুঝে ওটা দিয়েই খেতে শুরু করে.....
হঠাৎ করে লিপস্টিকের ঘ্রা'ণ নাকে আসলে আবির
নদীর দিকে তাকায়, তখন দেখে নদী মিটিমিটি করে
হাসছে, আবিরের তখন আর বুঝতে বাকি রইল না যে
তার চামচটা নদী পাল্টে দিয়েছে....
তারপরও আবির জিজ্ঞেস করলো...........

- আপু, তুমি নিশ্চয়ই কিছু করছো,
না হলে এভাবে মিটিমিটি হাসছো কেন-? 😕
সত্যি করে বলো আবার কি করছো এই নিরীহ
বাচ্চাটার সাথে..

- আমি আবার কি করলাম,🙄
আমি তো কার্টুন দেখে হাসছি......😁 হিহিহি

- আমার চা'মুচ কি চেঞ্জ করে নিছো নাকি,
কেমন যেনো লিপস্টিকের গ'ন্ধ আসছে 🤢( আবির)

- ওইটা গন্ধ না, ঘ্রাণ, ঘ্রাণ বলে,
আহহা কত মিষ্টি একটা ঘ্রাণ.....😇

** ইয়াক থু🤧💦 বলে আবির রান্নাঘরে গিয়ে কুলি
করে এসে বলে.......

- তুমি আমার চামচের সাথে ছিঃ,
তুমি এতো নোং'রা কেন, খালামণিকে বলে দিবো নাকি

- কি হয়েছে রে আবির (খালামণি)

- না, কিছু না......

**নদীর রাগ আরো বেড়ে গেলো, আবিরের দিকে তাকিয়ে সে দাঁত খিচিমিচি করে আস্তে আস্তে বললো...

- আবিরের বাচ্চা, একবার শুধু রুমে চল তারপর তোকে
দেখাবো, তোকে যদি আমার থু'থু ভালো করে না খাওয়াচ্ছি তো, আমার নামও নদী না বলে দিলাম...🙅🏻‍♀️

- আমি পড়বো-ই না, আমি গেলাম চলে......

- আম্মু দেখো, আবির পড়া বাদ দিয়ে চলে যাচ্ছে, (নদী)

- আবির পড়তে যা, না হলে কিন্তু আমি বিরিয়ানি রান্না
করে দিবো না তোকে....(খালা মণি)

- ঠিক আছে যাচ্ছি 😑

*** আবির আর কোনো উপায় না পেয়ে নদীর সাথে
চলে যায় পড়তে,, রুমে ভয়ে ভয়ে ভেতরে ঢুকতেই নদী
আবিরের কাছে গিয়ে ওর চুল গুলো শক্ত করে ধরে,
আবিরের ঠোঁ'টের সাথে ওর নিজের ঠোঁ'ট লাগিয়ে দেয়,
💏💏💏

প্রায় চার মিনিট কিসিং এরপর ছেড়ে দিলো নদী,
আবির তখন বমি করতে থাকে আর, জোরে জোরে
নিশ্বাস ফেলতে থাকে............।

- কি রে এখন কেমন লাগে, আমাকে রাগাতে না
করছিলাম না, নে এখন আমার থু'থু খাওয়ায় দিলাম
মজা বুঝ এবার (নদী)

- দুর বাল......

- কি বললি কু'ত্তা 😠

- না, কিছু না

***আবির আর কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে এসে চুপচাপ
টেবিলের সামনে এসে বসে বই নিয়ে পড়তে থাকে...।
নদী আবিরের সামনে বসে বলে......

- কি রে চুপচাপ কেন, কথা বল...🧍🏻‍♀️

**আবির কোনো কিছু না বলে, মাথা নিচু করে বইয়ের
দিকে তাকিয়ে পড়তে থাকে, দশটার দিকে পড়া শেষ
করে খাবার খেয়ে, বাসায় চলে যায় আবির,
আবির বাসায় গিয়ে দেখে তার আম্মু বসে অফিসের
কাজ করছে আবির ওর আম্মুর পাশে বসে বলে......

- আম্মু, আমি নদী আপুর কাছে আর পড়বো না।
স্যারের কাছে পড়বো, এভাবে মেয়েদের কাছে পড়তে আমার ভালো লাগে না আর, পড়া তো দূর,
পড়ার প্রতি মনোযোগ ও আসে না,, (আবির)

** আবিরের আম্মু আবিরের দিকে তাকিয়ে বলে.....

- কি বলিস, মেয়েদের কাছে পড়তে ভালো লাগেনা,
তোর বড় ভাই তো, সবসময় মেয়েদের আশেপাশে থাকতে পছন্দ করে আর তুই কিনা, হাহাহা😂 (আম্মু)

**আবিরের আম্মু এভাবেই হাসতে থাকে তখনই
আবিরের বড় ভাইয়া সেখানে তাদের মধ্যে চলে আসে.

- কি ব্যাপার আম্ম, হাসছো কেন -?
‌ (মাহিন -অর্থাৎ আবিরের বড় ভাই)

- তোর ছোট ভাইয়ের কথা শোন, ওর নাকি মেয়েদের
আশে পাশে থাকতে ভালো লাগে না (আম্মু)

- হাহাহা 😂🤣 (মাহিন)

**আবিরের রাগ হলো তাই ও, চুপ চাপ সেখান থেকে
উঠে নিজের রুমে চলে আসে......

**আবির রুমে এসে বিছানায় শুয়ে শুয়ে নদীর
কান্ডগুলো ভাবছিলো, ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলো

- সকালে ঘুম ভাঙলে আবির ফ্রেশ হয়ে, রেডি হয়ে ব্যাগ
নিয়ে নাস্তার টেবিলে বসে পড়ে, নাস্তা সেরে নিয়ে
আবির সাইকেল নিয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে
বের হয়ে যায়....।
কলেজের ক্লাস শেষ করে বন্ধুদের সাথে কোচিং
করতে চলে যায় আবির.....
কোচিং শেষ করে রাত আটটার দিকে বাসায় ফিরে
আসলে, আবিরের ভাইয়া আর আম্মু বলে উঠে.....

- কি রে সারাদিন কোথায় ছিলি তুই (আম্মু)-? 😠

- আম্মু রেগে যাচ্ছো কেন, একটু নরম করে তাকাও না
প্লিজ আমার ভয় লাগে তো (আবির)

- আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দে.....

- কোচিং করতে গিয়েছিলাম, দুইটা কোচিং নিয়েছি

- আমাকে একবারও বললি না......

- গতকাল না বলছিলাম আমি স্যারের
কাছে কোচিং করবো....(আবির)

- যা রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়.........

**আবির ভয়ে ভয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে নিজের
রুমে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খাটে শুয়ে পড়ে,
সারাদিনের অনেক ক্লান্তির কারণে সে না খেয়েই
ঘুমিয়ে যায়....

- এভাবেই চার দিন কে'টে যায়, নদী চার দিন হলো
আবিরের কোনো খোঁজ না পেয়ে, প্রায় পা'গলের মত
অবস্থা হয়ে গেছে, নদী সকাল সকাল আবিরদের
বাসায় এসে আবিরের আম্মুকে বলে....

- খালামণ, কি ব্যাপার আবির আর পড়তে যায় না কেন-? মাঠেও খেলতে যায় না,
ওর শ'রীর ঠিক আছে তো-? (নদী)

- ওর শ'রীর ঠিক আছে ম। আর বলিস না,
ছেলেটা আমার পড়াশোনায় অনেক মনোযোগী হয়েছে। সকালে খেয়ে বের হয়, রাত আটটায় বাসায় ফিরে,, সারাদিন পড়াশোনা নিয়ে থাকে, আজকে ওর ছুটি তাই রুমে ঘুমিয়ে আছে......‌( আম্মু)

- ও আচ্ছা, তা রাত আটটা পর্যন্ত কিসের পড়াশোনা করে বাহিরে...?

- দুইটা কোচিং নাকি নিয়েছে ও..

- ওওও, তোমার ছেলে রুমে আছে...-?( নদী)

- হুম আছে যা গিয়ে দেখ

**নদী আর কোনো কথা না বলে সিঁড়ি ধরে সোজা
আবিরের রুমে গিয়ে নক করে.... আবির ঘুম ঘুম
চোখে বি'ছা'না থেকে উঠে এসে দরজা খু'লে দেয়...
দরজা খোলার সাথে সাথে নদী আবিরের গা'লে ঠাস
করে একটা থা'প্পড় মে'রে দেয়.....
- আর তাতেই আবিরের সব ঘুম কোথায় যেনো উধাও হয়ে গেলো, আবির চোখ বড়ো বড়ো করে তাকাতেই নদী আবিরকে ধা'ক্কা দিয়ে, রুমের ভেতরে নিয়ে গিয়ে দরজা আটকিয়ে দেয়.....‌ আর, আবিরের টি শার্টের কলার চেপে ধরে বলে...........****

- আমি না হয় একটু তোর সাথে দু'ষ্টুমি করি,
তাই বলে তুই অন্য জায়গায় কোচিং নিবি,
নিবি ভালো কথা, একবার আমাকে কল দিয়ে বলতে
পারিস নাই -? তোর কোনো ধারণা আছে,
আমি কি ভয় পেয়েছিলাম তোর কোন খোঁজ না
পেয়ে.................

**নদী কথাগুলো বলতে বলতে আবির কে জ'ড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো..... 😭😭😭😭
আবির যেনো থমকে গেলো, নদীর হুট করে এমন কান্না দেখে সে যেনো নিজেকে সহ্য করতে পারছে না।
নদীর কান্নার আওয়াজ আবিরের বুকে তীরের মত
আ'ঘাত করছে......
আবির এই প্রথম নদীর প্রতি অন্যরকম অনুভব করতে
লাগলো....... 😭😭😭💔💔

-- আবির নিজের অজান্তেই নদীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো, আর নদী কান্নায় আবিরের টি শা'র্ট ভিজিয়ে ফেলতে থাকলো, 🤧

-আবিরের টি শার্ট দিয়ে নাকের পানি ও মুছতে থাকলো নদী, আবির রেগে গিয়ে নদীর দিকে তাকিয়ে,
কিছু বলবে ভেবেও, বললো না ,
তখন নদী কান্না করতে করতে আরও বলে.....

- আমি না হয় তোকে ভালোবাসি বলে,
তোর সাথে এমন পা'গলামি করি আর তুই,
আমার এই ভালোবাসাটা বিরক্তিকর মনে করিস,😭

- আবির আমি তোকে অনেক ভালবাসি রে,
তাই আমি তোর সাথে এমন দু'ষ্টুমি করি,
আমি তোকে এক নজর না দেখলে আমার,
দম বন্ধ হয়ে আসতে নেয়, তুই সারাদিন কলেজে
থাকলে আমার মনটা ছটফট করে....
কখন আমি ,এক নজর তোকে দেখতে পারবো , তোকে জ্বা'লাতন করতে আমার অনেক ভালো লাগে...।
- (নদী)

**নদীর কথাগুলো চুপচাপ শুনছিলো আবির.......
একপর্যায়ে নদী আবিরকে ধা'ক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে
আরো জোরে কান্না করতে করতে বলে........

- আমি যখন এতো-ই বিরক্ত করি তোকে,
তাহলে আর কোনদিনও আমি তোকে বিরক্ত করবো
না, তোকে জ্বা'লাবো না, তোর সাথে কোনো অ'ত্যাচা'র
করবো না.......!! (নদী)

**নদী একাই কথাগুলো বলে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। আবির শুধু ভ্যাবাচাকা খেয়ে সেখানে
দাঁড়িয়ে, দাঁড়িয়ে, নদীর কান্ডগুলো দেখছিলো....!!
সে নদী-কে এমন অবস্থায় আটকাবে নাকি দেখবে
কিছুই বুঝতে পারছিলো না.....!!

- আবির আর দাঁড়িয়ে না থেকে ওয়াশরুমে চলে গেলো,
এরপর ফ্রেশ হয়ে ফুটবল নিয়ে খেলার জন্য বের হয়ে গেলো, আবিরের আম্মু খাওয়ার জন্য ডাকলে ও আবির কিছু না বলে, ফুটবল নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়.........
সারাদিন খেলাধুলা করে , সন্ধ্যার সময় বাসায় ফিরে আবির, *****

- সময় হয়েছে বাসায় আসার (আম্মু)-?

- না মানে আম্মু , আমার তো খেলার সময় নাই তাই আজকে সবাই মিলে অনেক আনন্দ করছি , একসাথে খেলছি , প্লিজ আম্মু বকা দিও না🥹

- আম্মু বাদ দাও, যা আবির রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে
(মাহিন)

- লাভ ইউ ভাইয়া 🥰 (আবির)

**এরপর আবির রুমে গিয়ে ফুটবল রেখে গোসল করে খাবার টেবিলে এসে বসে খাবার খেয়ে নেয় ,
খাওয়া শেষে আবির বলে....

- আম্মু আমি খালামণিদের বাসায় গেলাম....

- কথাটা বলেই আবির সাইকেল নিয়ে বের হয়ে যায় 🚴
নদীদের বাসার সামনে এসে মেইন দরজায় নক
করতেই, নদীর আম্মু এসে দরজা খুলে দেয়...

- কিরে আবির কেমন আছিস,
তোর তো কোন পাত্তা নেই যে,
এই কয়দিন আসিস নি কেন-? কোথায় ছিলি-?
(খালামণি)

- পড়াশোনা করি না বলে বকাঝকা কর তাই পড়াশোনায় মনোযোগ দিয়েছি , 😒
নদী আপু কি আছে.....-?

- হুম ও ওর রুমে আছে....

**আবির আর কিছু না বলে নদীর রুমের সামনে গিয়ে
দরজায় নক করলো ,, নদী দরজা খুলে দিতে-ই
সামনে তাকিয়ে দেখে আবির তার সামনে দাঁড়িয়ে
আছে.....।
- নদী তখন রাগ করে দরজা ব'ন্ধ করে দিতে যাবে
তখন, আবির দরজাটা ধরে বলে.........***

- আরে আরে দরজা ব'ন্ধ করে দিচ্ছো কেন,
আমাকে ভিতরে আসতে বলবে না-? (আবির)

- না, তুই এখানে কেন এসেছিস -?
আমি তো তোকে বলে দিয়েছি, আর কখনো তোকে বিরক্ত করবো না তাহল, আমার এখানে কেন তুই-?

- আগে ভেতরে তো আসতে দাও তারপর বলি, 🧍🏻

**তারপর আবির নদীকে পাস কাটিয়ার টুসস করে রুমের ভিতরে প্রবেশ করে.............. আর
চলবে,,,,,,,,,,,

গল্প: সিনিয়র আপুর অত্যাচার
পর্ব: ০১ (এক)
আবির মাহমুদ শান্ত

পরবর্তী গল্প পেতে পেজটি ফলো করে রাখুন। #স্বামীস্ত্রীইসলামিকগল্প

Address

Jessore
Jessore
7420

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when স্বামী-স্ত্রী ইসলামিক গল্প posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to স্বামী-স্ত্রী ইসলামিক গল্প:

Share