19/07/2025
প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগুনের বলয় (Pacific Ring of Fire) জুড়ে আগ্নেয়গিরি এবং ভূমিকম্পের কার্যকলাপ হঠাৎ করেই আলোচনার কেন্দ্রে। রাশিয়া থেকে জাপান, ইন্দোনেশিয়া থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত আগ্নেয়গিরিগুলো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু এর পেছনের বিজ্ঞানভিত্তিক সত্যটা কী? আসুন জেনে নেওয়া যাক।
সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে কয়েকটি বড় বড় আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা আমাদের সে কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে। প্রশান্ত মহাসাগরকে ঘিরে থাকা ‘রিং অফ ফায়ার’ বা আগুনের বলয় জুড়ে বেশ কিছু আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটছে, যা বিজ্ঞানীদেরও নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে।
আসুন দেখি ঠিক কী কী ঘটছে:
🌋 মাউন্ট রেইনিয়ার, যুক্তরাষ্ট্র : আমেরিকার এই ভয়ঙ্কর আগ্নেয়গিরিটির নিচে সম্প্রতি রেকর্ডে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প ঝাঁকুনির (Earthquake Swarm) সৃষ্টি হয়েছে। জুলাই মাসের শুরুতে এখানে ৩ শতাধিক ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে, যা আধুনিক পর্যবেক্ষণের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
🌋 সাকুরাজিমা, জাপান: জাপানের অন্যতম সক্রিয় এই আগ্নেয়গিরিটি জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে আবার জেগে উঠেছে এবং আকাশে কয়েক কিলোমিটার উঁচু পর্যন্ত ছাইয়ের মেঘ ছড়িয়ে দিয়েছে।
🌋 ইন্দোনেশিয়ার দানবেরা: লেওতোবি (Lewotobi) এবং মেরাপি (Merapi) নামক আগ্নেয়গিরি দুটি ক্রমাগত লাভা এবং ছাই উদগিরণ করে চলেছে, যা সেখানকার মানুষের জীবনে বড় প্রভাব ফেলছে।
🌋 অন্যান্য প্রান্তেও সক্রিয়তা: রাশিয়ার ক্লিউচেভস্কয় (Klyuchevskoy), আলাস্কার গ্রেট সিটকিন (Great Sitkin) ও মাউন্ট স্পার (Mount Spurr) এবং মেক্সিকোর পোপোক্যাটেপেটল (Popocatépetl) আগ্নেয়গিরিও সম্প্রতি তাদের সক্রিয়তার জানান দিয়েছে।
এই ঘটনাগুলো নিঃসন্দেহে আশ্চর্যজনক এবং প্রকৃতির বিশাল শক্তির পরিচায়ক। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটিকে একটি “চেইন রিঅ্যাকশন” বা অস্বাভাবিক জাগরণ বলাটা কিছুটা অতিরঞ্জিত।
“রিং অফ ফায়ার” হলো পৃথিবীর সবচেয়ে ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রিয় অঞ্চল। এখানে পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেটগুলো একে অপরের সাথে ক্রমাগত সংঘর্ষে লিপ্ত। ফলে, এই অঞ্চলে সারা বছরই অসংখ্য ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটে।
স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউটের গ্লোবাল ভলকানিজম প্রোগ্রামের মতো শীর্ষস্থানীয় গবেষণা সংস্থাগুলোর মতে, যেকোনো সময়ে পৃথিবীতে ৪০-৫০টি আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত চলতে থাকাটা স্বাভাবিক। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নির্দিষ্ট স্থানে উল্লেখযোগ্য হলেও, বৈশ্বিক স্তরে আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ এখনো স্বাভাবিক সীমার মধ্যেই আছে।
সুতরাং, যদিও তালিকাভুক্ত ঘটনাগুলো সত্যি এবং পর্যবেক্ষণযোগ্য, তবে এটি কোনো আসন্ন বৈশ্বিক দুর্যোগের ইঙ্গিত দিচ্ছে না। বরং এটি আমাদের গ্রহের অভ্যন্তরীণ শক্তির একটি স্বাভাবিক প্রকাশ।
📸 ছবি টি Ai দিয়ে তৈরি।। উপরে লিখিত ঘটনা প্রবাহ গুলো সব তথ্যসূত্রের আলোকে।
অনুবাদ: AH Abubakkar Siddique
সোর্স:
১. স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউট, গ্লোবাল ভলকানিজম
প্রোগ্রাম
২. ইউ.এস. জিওলজিক্যাল সার্ভে (USGS)
৩. জাপান মেটিওরোলজিক্যাল এজেন্সি (JMA)
৪. আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম (Reuters,
Associated Press)