06/09/2025
🌑 সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ: আনন্দ নয়, সতর্কবার্তা 🌑
আজকের যুগে অনেক দেশে দেখা যায়—
সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণকে ঘিরে মানুষ উৎসব করে, আনন্দ করে, কৌতূহল নিয়ে আকাশের দিকে তাকায়।
কিন্তু একবার কি ভেবে দেখেছেন❓
এগুলো আসলে হতে পারে কিয়ামতের আলামতের নিদর্শন— আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাদের জন্য এক বড় সতর্কবার্তা।
📖 কুরআনের আলোকে
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
“সূর্য ও চন্দ্র নির্দিষ্ট গণনায় চলে।”
(সূরা আর-রহমান: ৫)
👉 এখানে আল্লাহ তায়ালা আমাদের জানাচ্ছেন— সূর্য ও চন্দ্র কেবল আকাশে থাকা আলো নয়, বরং এগুলো আল্লাহর নির্দিষ্ট বিধান ও হুকুমে চলছে।
তাদের চলায় পরিবর্তন মানেই কোনো কিছু আমাদের জন্য শিক্ষা, সতর্কতা বা নিদর্শন।
আরেক জায়গায় আল্লাহ বলেন:
“সূর্যকে ধরা যাবে না চন্দ্রকে, আর রাতও দিনের আগেভাগে আসতে পারে না। প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে সাঁতার কাটছে।”
(সূরা ইয়াসীন: ৪০)
👉 এর ব্যাখ্যায় মুফাসসিরগণ বলেন—
এটি প্রমাণ করে যে সূর্য-চন্দ্রের যেকোনো অস্বাভাবিক ঘটনা আল্লাহর ইচ্ছায় ঘটে, আর বান্দাদের জন্য সেটা আল্লাহর মহাশক্তির নিদর্শন ও কিয়ামতের সতর্কতা।
🕌 রাসূলুল্লাহ ﷺ এর আমল ও ভয়
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শন। এগুলো কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে গ্রহণ করে না। বরং আল্লাহ এগুলোর মাধ্যমে বান্দাদের ভয় দেখান।”
(বুখারী, মুসলিম)
🌿 একবার নবীর ছেলে ইব্রাহীম (রাঃ) মারা যান, তখন সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। সাহাবীগণ ভেবেছিলেন সূর্যগ্রহণ হয়েছে ইব্রাহীমের মৃত্যুর কারণে।
কিন্তু রাসূল ﷺ সাথে সাথেই বললেন—
না! এগুলো কারো মৃত্যু বা জন্মের জন্য নয়, বরং আল্লাহ বান্দাদের ভয় দেখানোর জন্য পাঠান।
🌙 নবীর ভয় ও আমাদের শিক্ষা
হাদীসে এসেছে—
গ্রহণের সময় রাসূল ﷺ ভয় পেয়ে দৌড়ে মসজিদে চলে যেতেন, নামাজে দাঁড়াতেন, দীর্ঘ রুকু-সিজদা করতেন।
তিনি দোয়া করতেন, কেঁদে উঠতেন।
কারণ তিনি ﷺ জানতেন—
👉 এটা আল্লাহর গজব নামার আভাসও হতে পারে, কিয়ামতের এক নিদর্শনও হতে পারে।
📌 মুসলমানের করণীয়ঃ
রাসূল ﷺ নির্দেশ দিয়েছেন—
সালাতুল কুসূফ/খুসূফ নামাজ পড়া।
বেশি বেশি ইস্তিগফার ও দোয়া করা।
সদকা করা।
আল্লাহর ভয় মনে জাগ্রত রাখা।
পরিশেষেঃ
সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ আমাদের জন্য উৎসব নয়—
বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে এক সতর্ক সংকেত।
যখন সূর্য অন্ধকারে ঢেকে যায় বা চাঁদ রক্তবর্ণ হয়ে ওঠে—
এটা যেন আমাদের মনে করিয়ে দেয়:
➡️ একদিন এই পৃথিবীও মুছে যাবে।
➡️ কিয়ামত আসবেই।
➡️ তাই আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়াই একমাত্র পথ।