
07/08/2025
ঐতিহাসিক এই বিপর্যয় দেখে মনে হয়, জাতিরা তাদের মহানায়কদের অবমূল্যায়ন করে থাকে। কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে অবমূল্যায়নের এই ধারাটি অনেক পুরনো এবং বেদনাদায়ক। যে জাতিগুলো তাদের মহানায়কদের ভুলে যায়, তারা যেকোনো সময় তাদের স্বাধীনতার জীবন থেকে বঞ্চিত হতে পারে।
দক্ষিণ এশিয়ায় ইসলামের দ্বার উন্মোচনকারী তরুণ মুহাম্মদ বিন কাসিম, যিনি নিজেই মুসলমানদের হাতে শহীদ হয়েছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরাচারী শাসকরা তাঁকে ইতিহাসে সঠিক স্থান দেননি। কিন্তু সময় যখন অন্যায়ের ধুলো সরিয়ে দিল, তখন ইবনে কাসিমের উজ্জ্বল মুখ আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠল। ইতিহাস তাঁকে নিজের বুকে তুলে নিল এবং আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন মানুষ তাঁকে মর্যাদার প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করল।
ঐতিহাসিক উদাহরণ এবং বিশ্বাসঘাতকতা
পরে, সেই একই ভূমিতে সৈয়দ আহমদ শহীদ এবং শাহ ইসমাইল শহীদ বালাকোট উপত্যকায় জিহাদ করলেন। কিছু বিশ্বাসঘাতক তাদের পেছনে ছুরি মেরে শিখদের সঙ্গে হাত মেলাল। ব্রিটিশদের উদ্দেশ্য সফল হলো এবং কুনহার নদীর বিক্ষুব্ধ স্রোতে এই আন্দোলনের পবিত্র রক্ত মিশে গেল। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তি মুজাহিদদের জন্য 'ওহাবিবাদ' নামক গালিটি তৈরি করল এবং তাদের প্রভাবাধীন কিছু ধর্মীয় পণ্ডিতের মাধ্যমে তা জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দিল। এত কিছুর পরেও, ইতিহাস এই মুজাহিদদের এক উঁচু স্থান দিয়েছে। তারা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রকৃত ইসলামী জিহাদের প্রথম এবং সবচেয়ে বড় আন্দোলনের অগ্রদূত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন।
এই শতাব্দীর চতুর্থ দশকে, ফি লি স্তিনের ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া ই**হুদি রাষ্ট্র ই স *রায়েলের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলে ইখওয়ানুল মুসলিমিনের কর্মীরা। তারা নিজেদের জীবন বাজি রেখেছিল। যখন ইখওয়ানের জিহাদ আন্দোলন সফলতার দ্বারপ্রান্তে ছিল, তখন মিশর ও জর্ডানের বাদশাহরা তাদের পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষকদের ইশারায় ইখওয়ানের ওপর নির্মম আক্রমণ চালায়। ইখওয়ানের মুরশিদকে শহীদ করা হয়, এবং পূর্ব ও পশ্চিমের প্রভাবে থাকা কিছু আরব রাষ্ট্র এবং কিছু লেখক ইখওয়ানি মুজাহিদদেরকে মৃত্যুদণ্ডযোগ্য বলে ঘোষণা করে। তাদের সাহিত্য নিষিদ্ধ করা হয় এবং প্রথম সারির নেতাদের ফাঁ*সিতে ঝোলানো হয়।
একই ধরনের মানুষ আজ আফগান মুজাহিদদের মহান জিহাদ ও তাদের আত্মত্যাগকে খাটো করার চেষ্টা করছে।
এই প্রেক্ষাপটে, যদি দুই-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে গঠিত পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে আল-বদর শহীদদের ওপর সাক্ষ্যদানকারী জিহ্বাগুলো নীরব, যুক্তি ও শব্দগুলো পঙ্গু এবং কলমগুলো ভেঙে যায়, তবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ, মুনাফেকির অন্ধকারে সামান্য স্বার্থের খোঁয়াড়ে চলা বুদ্ধিজীবীদের চিন্তা এই আলোর যাত্রার ধারণা ও উপলব্ধি করতে পারে না।
@সেলিমমুনসুরআলবদর