11/08/2025
কত বিচিত্র পেশার মানুষ যে আছে এদেশে, দক্ষতাভিত্তিক উদ্যোক্তা তৈরি প্রকল্প শুরু না করলে হয়তো জানা হতো না আমাদের।
ছবিতে যাকে দেখছেন, খাতা-কলমের কারাখানা দেয়া তার স্বপ্ন ছিল।
আমাদের সহযোগিতায় সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছেন তিনি। তার নাম আজিজুর রহমান।
অথচ স্বপ্ন পূরণের পথ এতটাও মসৃণ ছিল না।
জীবিকার প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্বল্প বেতনে নানা ধরনের কাজ তাকে করতে হয়েছে। কিন্তু মন পড়েছিল এক জায়গায়—খাতা-কলমের কারখানায়।
বিচিত্র পেশার কাজ করেন আর ফাঁকে ফাঁকে ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখেন, কীভাবে কলম বানানো যায়!
একদিন অপছন্দের চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যান চুয়াডাঙ্গায়। সেখানে খাতা-কলম তৈরির এক কারখানায় কাজ নেন। প্রশিক্ষণ নেন হাতে-কলমে।
অল্পদিনে তিনি বুঝে ফেলেন, একটি কারখানা কীভাবে শুরু করতে হবে, কোথা থেকে কাঁচামাল আনতে হবে, এবং কীভাবে উৎপাদন ও বিপণন করতে হবে।
কিন্তু জ্ঞান ও দক্ষতা থাকলেই তো হয় না, কারখানা দেয়ার জন্য চাই বিপুল টাকা। সেই টাকাটাই নেই আজিজুর রহমানের।
এ সময় দক্ষতাভিত্তিক উদ্যোক্তা তৈরি প্রকল্পে আবেদন করেন তিনি। যাচাই-বাছাইয়ের পর গৃহীত হয় তার আবেদন।
পেপার কাটিং গোল্ড মেশিন, স্পাইরাল তার তৈরি মেশিন, স্টেচিং মেশিন, স্পাইরাল বাইন্ডিং A4 সাইজ, কলম তৈরি মেশিন এবং দোকান ও অন্যান্য জরুরি সরঞ্জাম বাবদ ৫ ধাপে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয় তাকে।
বর্তমানে আজিজুর রহমানের কারখানায় ৩ জন শ্রমিক কাজ করেন। প্রতি মাসে প্রায় ৯০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেন তিনি।
কর্মচারীদের বেতন ও যাবতীয় খরচ বাদ দিয়ে প্রত্যেক মাসে তার লাভ থাকে প্রায় ২০ হাজার টাকা।
আজিজুর রহমানের মেয়ের নাম আয়েশা। সেই নামেই তিনি কারখানার নাম দিয়েছেন। আর তার বানানো কলমের নাম দিয়েছেন আয়েশা হাইস্কুল পেন।
আজিজুর রহমানের বাড়ি যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে।