Rifat-Bin-Toha

Rifat-Bin-Toha নীতির প্রশ্নে আপোসহীন...

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের খবর সেই সময়ের পত্রিকায় যেভাবে ছাপা হয়েছিলবিজয়ের খবরে যা লেখা হয়েছিল১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ ...
16/12/2024

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের খবর সেই সময়ের পত্রিকায় যেভাবে ছাপা হয়েছিল

বিজয়ের খবরে যা লেখা হয়েছিল
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করার পরদিন ঢাকা থেকে প্রকাশিত সবগুলো সংবাদপত্রের প্রধান খবর ছিল পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন নিয়ে।

১৭ই ডিসেম্বর দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতাজুড়ে বড় বড় অক্ষরে ছাপা হয়েছিল: 'দখলদার পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণ, সোনার বাংলা মুক্ত'।

খবরটির শুরুতে মুক্তিবাহিনীকে বাহবা দিয়ে বলা হয়েছে, "সাবাস মুক্তিযোদ্ধা! বিগত ২৫শে মার্চের বিভীষিকাময় রাত্রির অবসান ঘটিয়াছে।"

এর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর আত্মসমর্পণের বর্ণনা দিয়ে লেখা হয়েছে, "দখলদার পাক-বাহিনী গতকাল (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ সময় অপরাহ্ন ৫-১ (পাঁচটা এক) মিনিটের সময় বিনাশর্তে আত্মসমর্পণ করিয়াছে, জন্ম লইয়াছে বিশ্বের কনিষ্ঠতম ও অষ্টম বৃহত্তম স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ।"

বিজয় অর্জনের আগে পাকিস্তানি সেনারা বাংলাদেশের মানুষের ওপর যে নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, সেটির বর্ণনা দিতে গিয়ে খবরটিতে বলা হয়েছে "অগণিত অসহায় শিশু ও নারী-পুরুষের রক্তে ঢাকা ও এদেশের প্রত্যন্ত এলাকার রাস্তা-ঘাট-মাঠ ও জনপদ রঞ্জিত করিয়াছিল।"

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল বলে ইত্তেফাকের খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারতের সাহায্য নিয়ে দেশটি যেন স্বাধীন হতে না পারে, সেজন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আট মাস পর তেসরা ডিসেম্বর পাকিস্তান ভারতে হামলা শুরু করেছিল। এ ঘটনার পর বাংলাদেশের সমর্থনে ভারত সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।

"মুক্তিপন সংগ্রামী মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর সাথে মাত্র ১২ দিন যুদ্ধ চালাইবার পর গতকাল (১৬ই ডিসেম্বর) সশস্ত্র পাক-বাহিনী বিনাশর্তে আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়," লিখেছে ইত্তেফাক।

তবলার স্বতন্ত্র অস্তিত্ব জানান তিনিই, চলে গেলেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রাণোচ্ছল তালপুরুষ জ়াকির হুসেনBochorerBest2024-Bann...
16/12/2024

তবলার স্বতন্ত্র অস্তিত্ব জানান তিনিই, চলে গেলেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রাণোচ্ছল তালপুরুষ জ়াকির হুসেন

BochorerBest2024-Banner -161224-Lead 0
Anandabazar
Entertainment
An obituary for Ustaad Zakir Hussain dgtl
Ustad Zakir Hussain Death
তবলার স্বতন্ত্র অস্তিত্ব জানান তিনিই, চলে গেলেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রাণোচ্ছল তালপুরুষ জ়াকির হুসেন
যে কোনও শিল্পেই পরিবেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ। জ়াকির ছিলেন সেই শিল্পের সর্বোত্তম শিল্পী। একটা আবর্তন পূর্ণ করে কোনও কায়দা বা টুকরা সমে পড়লে যে ভাবে তিনি তা প্রকাশ করতেন, তা ছিল যেমন নান্দনিক, তেমনই সম্মোহনী।
Advertisement

ঋতপ্রভ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা
শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:৪৪
Share:
Save:

প্রয়াত উস্তাদ জ়াকির হুসেন।
প্রয়াত উস্তাদ জ়াকির হুসেন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

তবলা বাদ্যযন্ত্রটি সাধারণত সঙ্গত করতে ব্যবহৃত হয়। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আদি কাল থেকে তেমনই হয়ে আসছে। সঙ্গতকারী যন্ত্রটিকে মূল ধারায় এনে ফেলার রূপকার তিনি। শুধুমাত্র এক শিল্পীর তবলা বাজানো শুনতে, তাঁকে দেখতে হাজার হাজার মানুষ লাইন দিচ্ছেন— এই বিষয়টি সম্ভব করেছিলেন যিনি, তিনি জ়াকির হুসেন। তাঁর একক বাজনা শুনতে মানুষ টিকিট কাটছেন, টিকিট না পেয়ে নজরুল মঞ্চের মূল প্রেক্ষাগৃহের বাইরে লাগানো বড় জায়ান্ট স্ক্রিনে শীতের রাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন, পুরো বাজনা শুনছেন— এই দৃশ্য চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। তিনিই ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রাণোচ্ছল তালপুরুষ।

Advertisement

ইনা পুরীর লেখা ‘শিবকুমার শর্মা: দ্য ম্যান অ্যান্ড হিজ মিউজ়িক’ বইতে জ়াকিরকে নিয়ে একটি কথালাপ রয়েছে, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের জগতে যা অনেক সময় দৃষ্টান্ত হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের জগতে প্রধান শিল্পী এবং সহকারী শিল্পীর মধ্যে যে সূক্ষ্ম হাইফেনটি স্পষ্ট বিদ্যমান থাকে, সেই ছক ভাঙতে চেয়েছিলেন শিবকুমারও, যাঁর সঙ্গে জ়াকিরের ছিল বিশেষ সখ্য। যিনি প্রয়াত হওয়ার পর সব কাজ ফেলে বিদেশ থেকে ছুটে এসেছিলেন জ়াকির। মৃতদেহ বহন করা থেকে চিরপ্রণম্য অগ্নির রথে সওয়ার হওয়ার সময়ও যিনি নিষ্পলক দাঁড়িয়ে ছিলেন। একাকী। ইনা পুরীর বইতে রয়েছে, পুণের এক অনুষ্ঠানে প্রথম পোস্টার দিয়ে জানানো হয় ‘শিবকুমার শর্মা-জ়াকির হুসেন’-এর যুগলবন্দি হতে চলেছে। যেখানে শিবকুমারের সঙ্গে পোস্টারে ছিল জ়াকিরের একই রকম ছবি। সাধারণত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠানের পোস্টারে যা সচরাচর দেখা যায় না। সেখানে মূল শিল্পী অধিক স্থান দখল করে থাকেন। সহযোগী শিল্পীর জন্য বরাদ্দ থাকে তুলনামূলক কম স্থান। বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করানো হয় শিবকুমারের। শিবকুমার সেই ‘যুগলবন্দি’র তত্ত্বকে সমর্থন করেছিলেন। পরে বলেছিলেন, ‘‘এ নিয়ে বহু জটিলতা হয়েছে। অনেকেই মনে করেন, ‘ইগো’ বা ‘অহং’ হল আত্মবিশ্বাসের একমাত্র আধার। কিন্তু আমি তেমন মনে করি না। সমর্পণ থেকে আসে আত্মবিশ্বাস। সেই সমর্পণ থেকেই আসে শক্তি। ‘অহং’ আসলে ‘আমিত্ব’-এর জন্ম দেয়। শিল্পীর কাজ সাধনা করা এবং ভাবা। তিনি নিজে একটি মাধ্যম মাত্র।’’

অর্থাৎ, সহযোগী শিল্পীও যে আসলে মূল শিল্পীর মতোই গুরুত্বপূর্ণ, তা তিনি স্পষ্ট করেছিলেন চিরকাল। যে কারণেই হয়তো তাঁর একাধিক বাজনায় জ়াকির সঙ্গত করলে তাঁর জন্য বরাদ্দ থাকত পৃথক সময়। উদাহরণ স্বরূপ কিরবাণী রাগটি স্মর্তব্য। দু’জনেরই যুবক বয়সের বাজানো অনুষ্ঠান। সাধারণত কিরবাণীর মতো রাগ ঘণ্টাখানেক ধরে বাজানো হয় না। কিন্তু শিবকুমার বাজিয়েছিলেন। সঙ্গে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন জ়াকির। বাজনাটি এখনও ইউটিউবে পাওয়া যায়। শুনলে বোঝা যায়, গুণী শিল্পীকে কী ভাবে জায়গা করে দিচ্ছেন অন্য জন। সহশিল্পীর জন্য দরজা বন্ধ করে নয়, তাঁকে অন্তর্ভুক্তির মধ্যে দিয়েই পৃথক এক শৈলী তৈরি করতে চেয়েছিলেন শিবকুমার। যে ধারার সওয়ারি ছিলেন আর এক জন। তিনি হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া। তিনিও সুযোগ দেন সহকারীকে তাঁর শিক্ষা-বিদ্যা তুলে ধরার।

ভাই তৌফিক কুরেশি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “জ়াকিরভাইয়ের নাম রেখেছিলেন উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁ-সাহিব। সে সময় বাবা ওঁর সঙ্গে সঙ্গত করতেন। জ়াকিরভাই হওয়ার পর বাবা ওঁকে বলেছিলেন, ‘খাঁ-সাহিব, আপনি ওর নাম রাখবেন?’ ‘জ়াকির’ নামটা ওঁর রাখা। আমার নামও তিনিই রেখেছিলেন।”

তিন বছর বয়স থেকে শিক্ষা শুরু। তবে নিজে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমি এমন বাড়িতে জন্মেছিলাম, যেখানে জন্মানোর পর থেকেই তবলা শুনছি। একজন শিল্পীর বাড়িতে আমার জন্ম। ফলে নার্সিং হোম থেকে আসা ইস্তক আমার শিক্ষা শুরু। আমার কাছে তো কোনও বিকল্প ছিল না। ফলে আমার শিক্ষা শুরু হয়েছিল কথা বলতে পারার আগে থেকেই।” জন্মানোর পর দ্বিতীয় দিনে বাড়ি ফিরে শিশু জ়াকিরকে তার বাবা উস্তাদ আল্লা রাখার কোলে দেওয়া হয়। শিশুপুত্রের কানে প্রার্থনাসূচক কিছু কথা বলার জন্য। সেটাই ছিল রীতি। আল্লা রাখা পুত্রকে কোলে নিয়ে তার কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বলেছিলেন, “ধাগে তেটে, ধাগে তেটে, ক্রিধা তেটে...।” জ়াকিরের মা সেই দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে জ়াকিরের বাবাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, এ তিনি কী করছেন, তাঁর তো প্রার্থনা করার কথা! উত্তরে আল্লা রাখা বলেছিলেন, “এটাই আমার প্রার্থনা। আমি এ ভাবেই প্রার্থনা করি। আমি দেবী সরস্বতী, গণেশের পূজরী। আমি এই বিদ্যা আমার গুরুর কাছ থেকে শিখেছি। এই শিক্ষা পুত্রকে দিয়ে যেতে চাই। ও বড় হয়ে এটাই করবে। যে কারণেই আমি শুরু থেকেই ওর কানে ওই বোল আওড়ালাম।” এ ভাবেই জ়াকিরের শিক্ষা শুরু। সেই ছোট থেকে প্রত্যেক দিন নিয়ম করে প্রায় ঘণ্টাখানেক শিশুপুত্রের কানে তবলার বোল বলতেন আল্লা রাখা। এর পর তিন বছর বয়সে যখন বসে তবলায় হাত রাখতে পারল ছোট্ট জ়াকির, তখন তার বাবা আড়ালে চলে যেতেন। দেখতেন, সে তবলা নিয়ে কী করে। তিন থেকে সাত বছর পর্যন্ত এই কৌশল অবলম্বন করেছিলেন আল্লা রাখা। তত দিনে জ়াকিরের মনের অন্দরে তাল প্রবেশ করেছে। অলক্ষে থেকে বাবা দেখতেন, পুত্র চেষ্টা করছে। আল্লা রাখার কিছু ছাত্র মাঝেমধ্যে জ়াকিরকে কিছু কিছু জিনিস দেখিয়ে দিতেন।

সত্যি কথা বলতে, উস্তাদ আল্লা রাখা খাঁ-সাহিব এক দিকে জ়াকিরের বাবা ছিলেন, অন্য দিকে তিনি ছিলেন তাঁর গুরু। বাবা হিসাবে তিনি ছিলেন খুবই স্নেহপ্রবণ। কিন্তু গুরু হিসাবে ছিলেন খুব কঠোর প্রকৃতির। ছেলে বলে জ়াকিরকে কখনও বাড়তি সুযোগ দেননি। জ়াকির যখন ওঁর সামনে বসে শিখেছেন অন্য ছাত্রদের সঙ্গে, তখন তাঁর একমাত্র পরিচয় ছিল তিনিও অন্যদের মতো ওঁর ছাত্র। আল্লা রাখা বলতেন, “ছাত্র হিসাবে যখন তুমি আমার সামনে বসবে, তখন তুমি আমার সন্তান নও।” তবে গুরু হিসাবে কখনওই তিনি মারধর করেননি। শাসন করার দায়িত্ব ছিল মায়ের উপর। আল্লা রাখা ছাত্রদের শুরুতেই কিছু লিখতে দিতেন না। বলতেন, শুনে মনে রাখতে। বলতেন, মঞ্চে বসে অনুষ্ঠানের সময় কি খাতা দেখে তবলা বাজাবে? এই যে মনে রাখা, আত্মীকরণ করতে শেখানো— এটা ওঁর শিক্ষার একটা মস্ত বড় দিক। তিনি তো শুধু তবলাবাদক ছিলেন না। ছিলেন মস্ত শিক্ষক। না হলে জ়াকিরের মতো ছাত্র তৈরি হয়!

Advertisement

তখন জ়াকির সবে সাত। স্কুলে তবলার অনুষ্ঠান। শুনতে গিয়েছেন আল্লা রাখা। অনুষ্ঠানের পর কোনও কথা বলেননি। রাতে খেতে বসে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “তুমি কি সত্যি সত্যিই তবলা শিখতে চাও?” অপ্রস্তুত জ়াকির উত্তর দেন, “অবশ্যই।” তখন আল্লা রাখা বলেছিলেন, “তা হলে আগামী কাল থেকেই শুরু করব।” পরের দিন রাত তিনটেতে পুত্রকে ডেকে দেন। তিনটে থেকে ছ’টা পর্যন্ত চলত শিক্ষা। গুরুদের কথা। তাঁদের শিক্ষার কথা, পঞ্জাব ঘরানার বৈশিষ্ট্য, তবলার উৎস, কী ভাবে তার বিবর্তন হল, দেবী সরস্বতীর কথা। এর পর সাতটা নাগাদ প্রাতরাশ সেরে স্কুলে যাওয়া, সেই পথে একটি মাদ্রাসা পড়ত, সেখানে কোরান পড়া, সেখান থেকে সেন্ট মাইকেল হাই স্কুলের চার্চে সহপাঠীদের সঙ্গে জড়ো হওয়া, প্রার্থনা করা, স্কুল সেরে বাড়ি ফিরে দুপুরের খাওয়া সেরে রিয়াজে বসা। এটাই ছিল ছোট থেকে তাঁর রুটিন। নিজে বলেছেন, “এই সমস্ত প্রতিষ্ঠান কোনও কিছু আমার উপর চাপিয়ে দেয়নি। বাড়িতে দেবী সরস্বতী, কৃষ্ণের কথা শোনা, মাদ্রাসায় গিয়ে কোরান পাঠ তার অব্যবহিত পরই চার্চে গিয়ে প্রার্থনা— এই সবই আমার কাছে ছিল স্বাভাবিক এবং দৈনন্দিনের অঙ্গ।” সাধে কি জ়াকির বিশ্বনাগরিক হতে পেরেছেন, তবলাকে ভারত তথা উপমহাদেশের গণ্ডি পার করে বিশ্বজনীন করতে সমর্থ হয়েছেন! জ়াকিরের প্রয়াণের অর্থ তবলা যন্ত্রটিকে যিনি বিশ্বের দরবারে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁর প্রয়াসের সমাপ্তি— সম-ফাঁকের নিখুঁত হিসাব গুলিয়ে যাওয়া।

Advertisement

জ়াকিরের আগে কিংবদন্তি তবলিয়া ছিলেন আহমেদ জান থিরাকোয়া কিংবা কণ্ঠে মহারাজ, সমসাময়িকদের মধ্যে রয়েছেন স্বপন চৌধুরী। কিন্তু তাঁদের প্রত্যেকের থেকে স্বতন্ত্র জ়াকিরের স্থান। তাঁর স্বাতন্ত্র্য তবলাকে বিশ্বের দরবারে পৃথক আসনে প্রতিষ্ঠা দেওয়া। সেই সঙ্গে তবলা নামের উপমহাদেশীয় বাদ্যযন্ত্রটিকে আন্তর্জাতিক সঙ্গীতের বিশেষ এক ধারায় যুক্ত করা। সৌকর্যই ছিল জ়াকিরের মূল মন্ত্র। যে কারণে, সাধারণ কোনও বোলও ওঁর হাতে হয়ে উঠত অসাধারণ। পরবর্তী কয়েক প্রজন্মের উপর এমন প্রগাঢ় প্রভাব খুব কম শিল্পী বিস্তার করতে পারেন। জ়াকির পেরেছিলেন।

Advertisement

যে কোনও শিল্পেই পরিবেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ। জ়াকির ছিলেন সেই শিল্পের এক অর্থে সর্বোত্তম শিল্পী। একটা আবর্তন পূর্ণ করে কোনও কায়দা বা টুকরা সমে পড়লে যে ভাবে তিনি তা প্রকাশ করতেন, তা ছিল যেমন নান্দনিক, তেমনই সম্মোহনী। একই সঙ্গে, যিনি ততটা ধ্রুপদী তবলা শুনতে সচ্ছন্দ নন, তাঁদের জন্য থাকত নানা উপকরণ। ইরান-ইরাক যুদ্ধের আবহে সাদ্দাম হোসেনের তোপ কিংবা ঘোড়ার খুরের শব্দ বা বিমানের উড়ান— সবই তিনি তবলায় আনতে পারতেন।

Advertisement

আন্তর্জাতিক সঙ্গীতেও নিজস্ব স্বাক্ষর রেখেছিলেন জাকির। ১৯৭৩ সালে ব্রিটিশ জ্যাজ গিটারবাদক জন ম্যাকলক্‌লিন, বেহালাবাদক এল শঙ্কর, ঘটম-বাদক টিএইচ বিনায়ক্কমের সঙ্গে তবলা নিয়ে মঞ্চে ওঠেন জাকির। জন্ম হয় ফিউশন ব্যান্ড ‘শক্তি’র। হিন্দুস্তানি ও কর্নাটকি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সঙ্গে মিশে যায় আমেরিকান কনটেম্পোরারি জ্যাজ। ‘শক্তি’র বাদন পশ্চিমি সঙ্গীতের জগতেও এক অশ্রুতপূর্ব অভিজ্ঞতার জন্ম দেয়। রবিশঙ্কর, আলি আকবর প্রমুখ তত দিনে তাঁদের পশ্চিম জয় সেরে ফেলেছেন। কিন্তু ইন্দো-জ্যাজ ফিউশনের শ্রুতির বিষয়টি সত্তর দশকের গোড়ায় একেবারে নতুন। ১৯৭৬-এ প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ পায় ‘শক্তি’র। ২০২৩-এ চতুর্থ তথা শেষটি। ম্যাকলক্‌লিন তাঁদের দলকে ‘লাইভ ব্যান্ড’ হিসাবেই উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু পরে ২০২৩-এ জ়াকিরের হাত ধরেন গায়ক শঙ্কর মহাদেবন। ‘শক্তি’ যেন অন্য মাত্রা পেল। জ়াকির ও তাঁর দিকপাল সঙ্গীদের বাদনের সঙ্গে যুক্ত হয় শঙ্করের কণ্ঠসম্পদ। ২০২৪-এ ‘দিস মোমেন্ট’ নামের সেই অ্যালবামই ‘বেস্ট গ্লোবাল মিউজিক অ্যালবাম’ হিসাবে গ্র্যামি জিতে নেয়।

রবিশঙ্কর, আলি আকবর, শিবকুমার, হরিপ্রসাদ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রথম সারির শিল্পীর সঙ্গে অনুষ্ঠান করেছেন। গ্র্যামি পেয়েছেন। পেয়েছেন বহু সম্মাননা। কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে গিয়েছে তবলা যন্ত্রটিকে বিশ্বজনীন করার প্রয়াস।

৭৩ বছরে চলে যাওয়ায় সেই সম-ফাঁকের হিসাব মিলল না। এই এক বারই তাল কাটল।

24/10/2024

‘ডেনা’র ‘চোখ’ থাকবে না, ‘ল্যান্ডফলের’ পরেই বাঁক নেবে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে

ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র কোনও ‘চোখ’ থাকবে না। বৃহস্পতিবার রাতেই ওড়িশার উপকূলে তার ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যেতে পারে। তা চলবে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত। এর ফলে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার মৌসম ভবনের ডিজি মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, ‘চোখ’ না থাকলেও ‘ডেনা’ তাণ্ডব চালাবে উপকূলে। ভারী বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা থাকছে। ‘ল্যান্ডফলের’ পর ঘূর্ণিঝড় দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে বাঁক নেবে। তার পর ক্রমে তার শক্তিক্ষয় হবে।
‘প্রবল’ ঘূর্ণিঝড় রূপেই স্থলভাগে আছড়ে পড়বে ‘ডেনা’। মৌসম ভবন জানিয়েছে, এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে হাওয়ার গতি রয়েছে ঘণ্টায় ৯৫ থেকে ১০৫ কিলোমিটার। অর্থাৎ, সমুদ্রে ওই বেগে ঝড় বইছে। ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে হাওয়ার গতি ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার। যত সময় এগোবে, ঝড়ের তীব্রতা তত বাড়বে। উপকূলে এই ঝড়ের প্রভাবে হাওয়ার সর্বোচ্চ গতি হবে ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার, জানিয়েছে মৌসম ভবন।

24/10/2024

আগের চেয়ে আরও দ্রুত স্থলভাগের দিকে এগিয়ে আসছে ‘ডেনা’, সমুদ্রে বৃদ্ধি পেল ঘূর্ণিঝড়ের গতিও

পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ থেকে ২১০ কিলোমিটার দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে ‘ডেনা’। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার ভোরের মধ্যে স্থলভাগে আছড়ে পড়ার কথা তার।

24/10/2024

আর মাত্র ৬০ কিলোমিটার, রাতেই স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে ‘ডেনা’, ক্রমে আরও উত্তাল হচ্ছে সমুদ্র

স্থলভাগে আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে ‘ল্যান্ডফলের’ সম্ভাব্য সময়। এই সময়ে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি হবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। গত ছ’ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার বেগে উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়েছে ঘূর্ণিঝড়। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলেও ‘ডেনা’র প্রভাব পড়বে। ঢেউয়ের উচ্চতা হতে পারে ৯ থেকে ১৪ ফুট পর্যন্ত। পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়ের গতি থাকবে ১০০ কিলোমিটারের বেশি। দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে, বিশেষত সুন্দরবন লাগোয়া এলাকাতেও চলবে ‘ডেনা’র তাণ্ডব। কলকাতায় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি হওয়ার কথা ৮০ কিলোমিটার। সঙ্গে শুক্রবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে শহরে। হুগলি, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং ঝাড়গ্রামেও এই সতর্কতা রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ঝড়বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

24/10/2024

বাংলার উপকূলে ১৪ ফুট পর্যন্ত উঠতে পারে ঢেউ! ‘দানা’র ‘ল্যান্ডফলের’ সময় কতটা উত্তাল হবে সমুদ্র?

23/10/2024

বঙ্গোপসাগর থেকে কি ক্রমে ঝড়ঝাপটার সংখ্যা বাড়ছে? ‘দানা’ ঘিরে প্রশ্ন

23/10/2024

বৃহস্পতির সকালেই তৈরি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়, কখন, কোথায় আছড়ে পড়বে ‘দানা’?

https://jamuna.tv/news/520450
26/02/2024

https://jamuna.tv/news/520450

‘চোখ তার চোরাবালি, মন যে পাথরচোখ তার চোরাবালি, মন যে পাথরকবরের ওপরেতে যেন বাঁধা ঘরভালোবাসা যাকে করে গেছে পর..’

প্রয়াত পঙ্কজ উধাস, ৭২ বছর বয়সে সুরের জগৎ থেকে চিরবিদায় নিলেন বলিউডের গজ়ল শিল্পী
26/02/2024

প্রয়াত পঙ্কজ উধাস, ৭২ বছর বয়সে সুরের জগৎ থেকে চিরবিদায় নিলেন বলিউডের গজ়ল শিল্পী

https://jamuna.tv/news/511810
20/01/2024

https://jamuna.tv/news/511810

মাঝে মাঝে ভাবি, দর্শক-পাঠকদের কী দেয়ার আছে আমাদের? একটু খবরই তো জানতে চান তারা। চান সংবাদটা বস্তুনিষ্ঠ-নিরপেক্ষ হ...

Address

73. Jel Road.
Jessore
7400

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Rifat-Bin-Toha posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Rifat-Bin-Toha:

Share

Category

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ; এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম...

“একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য কি দারুণ অপেক্ষা আর উত্তেজনা নিয়ে/ লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে/ ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে/ ‘কখন আসবে কবি’?/ ...শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে/ রবীন্দ্রনাথের মত দৃপ্ত পায়ে হেঁটে/ অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন/.... কে রোধে তাঁহার বজ্রকণ্ঠ বাণী?/ গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানি/ এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/ এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। / সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।” দেশের স্বনামধন্য কবি নির্মলেন্দু গুণ রক্তক্ষরা একাত্তরের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বহুল প্রতীক্ষিত শিহরণ-জাগানো কালজয়ী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ডাক সংবলিত ঐতিহাসিক বর্জ্রকঠিন ভাষণের মুহূর্তটি এভাবেই তাঁর কবিতায় তুলে ধরেছিলেন।

’৭৫ পরবর্তী দীর্ঘ একুশ বছর বঙ্গবন্ধুর যে ঐতিহাসিক ভাষণটি বাজানোর ওপর অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা ছিল, সময়ের ব্যবধানে স্বাধীনতার ডাক সংবলিত বজ্রকঠিন বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণটিই আজ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণের স্বীকৃতি পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পর বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের অমূল্য দলিল। এ ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় বাংলাদেশের মানুষের গৌরব-সম্মান আরেকবার আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তাই বাঙালী জাতি আজ কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সারাদেশেই এক আনন্দ-উৎসবের মাধ্যমে দিনটি উদ্যাপন করবে কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতি। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালীর স্বাধীনতা-মুক্তি ও জাতীয়তাবোধ জাগরণের মহাকাব্য, বাঙালী তথা বিশ্বের সকল লাঞ্ছিত-বঞ্চিত নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের মুক্তির সনদ। ইতিহাসের ম্যাগনাকার্টা ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালীর পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচনের চূড়ান্ত প্রেরণা। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণিক দলিল এবং বিশ্বে সর্বাধিকবার প্রচারিত ও শ্রবণকৃত ভাষণ।

তবে এবার এক ভিন্ন আবহে জাতির সামনে এসেছে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। আর মাত্র ৯ দিন বাকি। আগামী ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন। ওই দিন থেকেই শুরু হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ঘোষিত বছরব্যাপী ‘মুজিববর্ষ’। আগামী বছরের ১৭ মার্চ পর্যন্ত চলবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশে বছরব্যাপী মুজিববর্ষের নানা অনুষ্ঠান, উৎসব। তাই এবার শুধু মাসব্যাপী নয়, পুরো একবছর কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতি নানা আনুষ্ঠানিকতায়, উৎসব-অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে বাংলাদেশ নামক ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্রের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।