11/12/2024
পর্ব-০২
# মাদরাসা শিক্ষার গুরুত্ব :
ইসলামের সূচনা লগ্ন থেকে বিশুদ্ধ শিক্ষা বিস্তারে মাদরাসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। যেমন-
মর্যাদা বৃদ্ধি করে :
আল্লাহ বলেন, ‘যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান?’ বিবেকবান লোকেরাই কেবল উপদেশ গ্রহণ করে'(যুমার ৩৯:৯)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, ‘বস্ত্তত অন্ধ ও চক্ষুস্মান কখনো সমান নয়। আর সমান নয় অন্ধকার ও আলো। আর সমান নয় ছায়া ও রৌদ্র। আর সমান নয় জীবিত ও মৃতগণ’ (ফাতির ৩৫/১৯-২২)। ইমাম কুরতুবী (রহ.) বলেন, অন্ধ ও দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তি বলতে আলেম
এবং জাহেলকে বুঝানো হয়েছে। ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, নিশ্চয়ই ইলম জীবন ও আলো আর মূর্খতা হ’ল মৃত ও অন্ধকার। সমস্ত অনিষ্টের মূল হ’ল জীবন ও আলো না থাকা। আর কল্যাণের মূল হ’ল আলো ও জীবন।
সুতরাং যারা (মাদরাসা থেকে) দ্বীনী ইলমের অর্জন করেন আল্লাহর তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণের আলোয় আলোকিত করেন এবং মর্যাদায় সমুন্নত করবেন।
যেমন মহান আল্লাহ বলেন,يَرْفَعِ اللهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَالَّذِينَ أُوتُوا العِلْمَ دَرَجَاتٍ، ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে, আল্লাহ তাদেরকে উচ্চ মর্যাদা দান করবেন’ (মুজাদালা ৫৮/১১)। প্রকৃত মর্যাদাবান তারাই যারা কুরআন ও হাদীছের জ্ঞানে বিজ্ঞ। আর এই জ্ঞান তাদেরকে সম্মানিত করে। ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, إِن الله يَرْفَعُ بِهَذَا الْكِتَابِ أَقْوَامًا وَيَضَعُ بِهِ آخَرِينَ ‘আল্লাহ তা‘আলা এ কিতাব কুরআনের মাধ্যমে কোন কোন জাতিকে উন্নতি দান করেন। আবার অন্যদেরকে করেন অবনত’ (মুসলিম হা/৮১৭; ইবনু মাজাহ হা/২১৮; ছহীহাহ হা/২২৩৯।
ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন,إن العلم يرفع صاحبه في الدنيا والآخرة ما لا يرفعه الملك ولا المال ولا غيرهما، فالعلم يزيد الشريف شرفاً ويرفع العبد المملوك حتى يجلسه مجالس الملوك، ‘নিশ্চয়ই ইলম তার অধিকারীকে দুনিয়া ও আখেরাতে মর্যাদাবান করে, যা রাজত্ব, সম্পদ বা অন্য কিছু করতে পারে না। আর ইলম মর্যাদাবানের মর্যাদা বাড়িয়ে দেয় এবং মালিকানাধীন দাসকে উঁচু করে তোলে যতক্ষণ না সে রাজাদের পরিষদে বসে’(ফাযলুল ইলম ওয়াল ওলামা, পৃ: ৮৬)।
ইসলামে আবেদ অপেক্ষা আলেমের মর্যাদা অধিক। আবূ উমামাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,فَضْلُ العَالِمِ عَلَى العَابِدِ كَفَضْلِي عَلَى أَدْنَاكُمْ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللهِ إِنَّ اللهَ وَمَلاَئِكَتَهُ وَأَهْلَ السَّماوَاتِ وَالأَرْضِ حَتَّى النَّمْلَةَ فِي جُحْرِهَا وَحَتَّى الحُوْتَ لَيُصَلُّونَ عَلَى مُعَلِّمِي النَّاسِ الخَيْرَ، ‘আলেমের মর্যাদা আবেদের উপর ঠিক তদ্রূপ, যেরূপ আমার ফযীলত তোমাদের উপর। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন, তাঁর ফেরেশতাকুল, আসমান-যমীনের সকল বাসিন্দা এমনকি গর্তের পিঁপড়া এবং (পানির মধ্যে) মাছ পর্যন্ত মানবমন্ডলীর শিক্ষাগুরুদের জন্য কল্যাণ কামনা ও নেক দো‘আ করে থাকে’।তিরমিযী হা/২৬৮৫; ছহীহুত তারগীব হা/৭৭। আবুদ্দারদা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, আবেদ বা ইবাদতকারী ব্যক্তির উপর আলেমের মর্যাদা হ’ল যেমন সমস্ত তারকার উপর পূর্ণিমার চাঁদের মর্যাদা’(আবূদাউদ হা/৩৬৪১; ছহীহুল জামে‘ হা/৪২১২)।