
10/05/2025
ঝিনাইদহের জনপ্রিয় টিকটকার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসাবে পরিচিতির আড়ালে ভয়ানক অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচারে লিপ্ত একটি সিন্ডিকেট। নিজের নামে একাধিক আইডি খুলে সেখানে ফানি ভিডিও আপলোডের পাশাপাশি ভিডিওর ভেতর সরাসরি অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করেন যা ইতোমধ্যে জেলার অধিকাংশ জনগণের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কিন্তু যখনই তাদেরকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় তারা সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, যে সকল আইডিতে ওইসব বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে সেই আইডিগুলো ফেক। অন্যরা আমাদের ভিডিও ডাউনলোড করে ফেক আইডি খুলে প্রচার করছে। অথচ ওই সকল আইডিতে র-ভিডিওর মধ্যেই জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়েছে। যদিও দুই-তিন দিন পরে আবার ভোল পাল্টে একই ভিডিও ফুটেজ নিজেদের পেজে বিজ্ঞাপন ছাড়া আপলোড করা হয়। ওই সকল আইডি যদি ফেক-ই হবে তবে তারা র ভিডিও ফুটেজ কোথায় পেলো? দেশের অধিকাংশ জেলাতেই এই বিষয়টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে জুয়া সিন্ডিকেট এই সকল টিকটকারদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মাসিক চুক্তি ভিত্তিতে ঘটা করে জুয়ার প্রচার করছে। বর্তমান জেনারেশন শিক্ষামূলক ভালো কোনো ভিডিও দেখুক বা না দেখুন তারা এই সকল টিকটকারদের আজেবাজে ভিডিও দেখে মজা পায়, তাদেরকে ফলো করে আইডল মানে। তাদের মতো হতে চাই।
নামধারী ওই টিকটকার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের পেজে জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার জনগণের উপর বেশ কিছু নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। জুয়াতে অংশগ্রহণের ফলে অনেকে অর্থ হারাতে বসেছে, বিশেষ করে তরুণরা লাভের আশায় দ্রুত জুয়ায় জড়িয়ে পড়েছে। জুয়া মূলত নেশার মতো কাজ করে। একবার শুরু করলে অনেকেই তা থামাতে পারেনা। ফলে এটি আসক্তিতে পরিণত হয়। জুয়ায় পরাজয়ের ফলে হতাশা, দুশ্চিন্তা, আত্মগ্লানি এমনকি আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে অনেকে। অনেকেই আবার অর্থের যোগান দিতে গিয়ে চুরি, প্রতারণা বা অন্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে।
জুয়ার বিজ্ঞাপন তরুণদের পড়াশোনা বা ক্যারিয়ারের বদলে সহজ অর্থের পেছনে ছুটতে শিখিয়েছে।
যে কারণে ঝিনাইদহের টিকটকারদের নিয়ে Jhenada 24 এ দীর্ঘদিনের অনুসন্ধান শেষ হয়েছে। তাদের এই লাইফ স্টাইল ও দামি হোন্ডার বহর ও কালো গ্লাসের প্রাইভেটের উৎস কোথায় সবই দেখতে পাবেন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার অজপাড়াগাঁ থেকে বহর নিয়ে চুয়াডাঙ্গা-জীবননগর সীমান্তে তাদের নিয়মিত কিসের শুটিং থাকে সেটাও পরিষ্কার করা হবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ টিকটকারদের ফানি ভিডিওগুলো বিনোদনের জন্য তৈরি হলেও এর কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকারক দিক রয়েছে, বিশেষ করে যদি সেগুলো যুবসমাজ অতিরিক্ত বা ভুলভাবে গ্রহণ করে। অনেক ভিডিওতে অশ্লীল ভাষা, অশালীন আচরণ বা সমাজবিরোধী বার্তা থাকে, যা যুবসমাজের নৈতিকতা ও ভদ্রতার মান নষ্ট করতে পারে। এছাড়া টিকটকের ফানি ভিডিওগুলো অনেক সময় এতটাই আকর্ষণীয় হয় যে, তরুণরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্ক্রল করে সময় নষ্ট করে, যা পড়ালেখা বা গঠনমূলক কাজে ব্যাঘাত ঘটায়। ভিডিও দেখে অনেক তরুণ এমন সব কাজ অনুকরণ করতে চায় যা ঝুঁকিপূর্ণ, অযৌক্তিক বা সমাজে অগ্রহণযোগ্য। অনেক সময় ভিডিওগুলোতে ভুল তথ্য বা বিকৃত বার্তা ছড়ায়, যা তরুণদের চিন্তাধারায় বিভ্রান্তি তৈরি করে। কিছু তরুণ টিকটকে ভাইরাল বা জনপ্রিয় হওয়ার জন্য নিজস্বতা বিসর্জন দিয়ে হাস্যকর, অশালীন বা নাটকীয় আচরণ করতে শুরু করে, যা আত্মপরিচয়ের বিকৃতি ঘটায়।