28/07/2025
গল্প: "অচেনা পথে আলোর খোঁজে"
রাহুল, শহরের এক সাধারণ যুবক। তার জীবন সীমাবদ্ধ ছিল বাসা, অফিস আর একঘেয়ে রুটিনে। প্রতিদিন একই কাজ, একই মুখ, আর একই চিন্তা—জীবনটা যেন কেমন থেমে গেছে। একদিন অফিস থেকে ফেরার পথে রাহুলের চোখে পড়ে একটি পুরনো বইয়ের দোকান। হঠাৎ কী এক তাড়নায় ঢুকে পড়ে সে।
একটি ধূলিধূসরিত বইয়ের মধ্যে লেখা ছিল –
"ভ্রমণ মানুষকে জ্ঞানী করে তোলে, অভিজ্ঞতা শেখায় জীবনের প্রকৃত রূপ।"
এই লাইনটি যেন রাহুলের ভিতর কোনো নিঃশব্দ ঝড় তোলে। পরদিনই সে সিদ্ধান্ত নেয়—এই যান্ত্রিক জীবনে বিরতি চাই। সে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়ে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চলের উদ্দেশে।
প্রথম গন্তব্য—লেপচা গ্রাম। সেখানকার মানুষ, তাদের সহজ জীবনযাপন, পাহাড়ে হাঁটার ক্লান্তি, কুয়াশার ভিতর সূর্যোদয়—সব কিছুতেই রাহুল যেন নতুন করে বাঁচতে শেখে। এক রাতে গ্রামের এক বৃদ্ধ তাকে বললেন,
"শহরের আলোয় চোখ ঝলসে যায়, কিন্তু প্রকৃত আলো খুঁজে পেতে হলে নিজের ভেতর তাকাতে হয়।"
রাহুলের মনে হলো, এই কথাই সে খুঁজছিল এতদিন। এরপর সে আরও কয়েকটি গ্রামে যায়, পাহাড়ে ওঠে, নদীর ধারে বসে, মানুষের গল্প শোনে, নিজের জীবনের মানে খুঁজতে থাকে। শহরের চাকচিক্য আর তাড়াহুড়া থেকে বহু দূরে, সে আবিষ্কার করে নিজের ভিতরের শান্তি।
এক মাস পর যখন রাহুল ফিরে আসে শহরে, সে আর আগের রাহুল ছিল না। তার চোখে ছিল গভীরতা, মনে ছিল প্রশান্তি, আর জীবনের প্রতি ছিল এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি।
শেষ কথাঃ
রাহুল বুঝে যায় — সত্যিই, ভ্রমণ মানুষকে শুধু জায়গা চিনিয়ে দেয় না, বরং নিজের অচেনা দিকগুলো চিনতে শেখায়। জীবনকে দেখে নতুন চোখে, অনুভব করে গভীরভাবে।
আকাশ লেলিন