01/07/2025
🏮 শিয়া শাষক কতৃক ইমাম আবু বকর আল-নাবুলসী (রহি.) এর উপর অমানবিক নির্যাতন—
শিয়া রাফেযী উবাইদী (ফাতেমী) শাসকদের অপরাধসমূহ ইতিহাসে এক ভয়াবহ অধ্যায়। ইমাম যাহাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ফাতেমী শাসকদের দ্বারা মুসলিমদের উপর সংঘটিত বিপর্যয় ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ। যখন তারা শাম (সিরিয়া) দখল করে নেয়, তখন মুসলিম আলেমদেরকে মসজিদের মিম্বারে দাঁড়িয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাহাবিদের প্রতি প্রকাশ্যে লানত করতে বাধ্য করত। তারা তাদের বিপথগামী মতবাদ প্রচার করত এবং তার প্রতি আহ্বান জানাত। তারা তারাবীহ ও চাশতের নামাজ বাতিল করে দেয় এবং জোহরের নামাজে কুনুত পাঠ করার আদেশ দেয়—এমন আরও অনেক শরীয়তবিরোধী কার্যকলাপ তারা চালু করে।
এই পরিস্থিতিতে, আহলুস সুন্নাহর একজন বর্ষীয়ান আলেম ইমাম আবু বকর আল-নাবুলসী (রহি.) সাহসিকতার সঙ্গে ফাতেমী শাসকদের বিরোধিতা করেন।
☞ তিনি তাঁদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাকে বৈধ মনে করতেন এবং তাঁর বিখ্যাত উক্তিতে বলেন:
"যদি আমার হাতে ১০টি তীর থাকতো, আমি একটি রোমানদের দিকে ছুঁড়তাম, আর বাকি ৯টি এই শাসক (ফাতেমী খলিফা) এর দিকে ছুঁড়তাম।"
এই বক্তব্যের কারণে দামেস্কের শাসক তাঁকে গ্রেপ্তার করে রমজান মাসে কারাবন্দি করে এবং তাঁকে জাওহর আস-সাকালির মাধ্যমে একটি কাঠের খাঁচায় করে মিসরে পাঠায়। মিসরে পৌঁছালে তাঁকে ফাতেমী খলিফা আল-মু'ঈয লিদিনিল্লাহ-এর সামনে পেশ করা হয়।
☞ খলিফা তাঁকে জিজ্ঞেস করেন:
— “আমরা শুনেছি আপনি বলেছেন: যদি কারো হাতে ১০টি তীর থাকে, তবে একটিকে রোমানদের দিকে এবং ৯টিকে আমাদের দিকে ছুঁড়বে?”
ইমাম উত্তর দেন:
— “আমি এভাবে বলিনি!”
◑ এই উত্তরে খলিফা আশ্বস্ত হন, মনে করেন ইমাম হয়তো নিজের কথা ফিরিয়ে নেবেন। তখন তিনি আবার জিজ্ঞেস করেন:
— “তাহলে আপনি কী বলেছিলেন?”
☞ ইমাম দৃঢ়ভাবে বলেন:
— “আমি বলেছিলাম, ১০টি তীরের ৯টি আপনাদের দিকে ছুঁড়বে, আর ১০মটিও আপনাদের দিকেই ছুঁড়বে!”
◑ খলিফা জিজ্ঞেস করেন:
— “কেন?”
☞ ইমাম বলেন:
— “কারণ আপনারা এই উম্মতের দীনকে বিকৃত করেছেন, নেককারদের হত্যা করেছেন, আল্লাহর নূর নিভিয়ে দিয়েছেন এবং এমন দাবী করেছেন যা আপনাদের প্রাপ্য নয়।”
☞ এরপর ইমাম নাবুলসী (রহি.)-এর উপর নির্মম নির্যাতন শুরু হয়:
⊕ প্রথম দিন: তাঁকে প্রকাশ্যে ঘোরানো হয়।
⊕ দ্বিতীয় দিন: তাঁকে কঠিনভাবে চাবুক মারা হয়।
⊕ তৃতীয় দিন: একজন ইয়াহূদী কসাইকে ডেকে আনা হয় (কারণ মুসলিম কসাইরা এই কাজ করতে অস্বীকার করে)।
👉 কসাই তাঁর মাথার চাঁদী থেকে শুরু করে চামড়া ছোলাতে থাকে।
ইমাম তখনও আল্লাহর জিকির করতে থাকেন এবং ধৈর্য ধারণ করেন।
যখন চামড়া ছোলানো হাত পর্যন্ত পৌঁছে, তখন কসাই দয়ায় কাঁপে এবং তার হৃদয়ে করুণা জাগে। ফলে সে ইমামের হৃদয়ে ছুরি ঢুকিয়ে তাঁকে শহীদ করে ফেলে।
👉 পরে ইমামের চামড়ায় খড় ভর্তি করে তাঁকে শূলে চড়ানো হয়। এ নির্মম ঘটনা ৩৬৩ হিজরী সনে সংঘটিত হয়।
☞ এই ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়—একজন ইহুদী দয়া করতে পারে, কিন্তু রাফেযী (শিয়া উবাইদী) শাসকরা দয়া করতে পারে না।
◑ ইবন কাসীর বলেন:
“তাকে বলা হতো শহীদ, এবং এখনো 'নাবুলুস'-এর অনেক লোক নিজেদের পরিচয় দেন 'বনু শহীদ' হিসেবে। তাদের মাঝে এখনো অনেক উত্তম গুণাবলী টিকে আছে।”
◑ ইমাম আবু বকর আল-নাবুলসী (ইনশাআল্লাহ শহীদ)—ইসলামের, সুন্নতের এবং হক কথা বলার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। আল্লাহ তাঁকে শহীদের মর্যাদা দান করুন।
🔥 এই কাহিনীতে আজকের ঘুমন্ত আলেমগণ ও রাফেযীদের দ্বারা প্রভাবিত আলেমদের জন্য রয়েছে এক বড় শিক্ষা। 🔥
📜 ইবন কাসীর – আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া: ১১/৩২২
📜 ইমাম যাহাবী – সিয়ার আ’লামিন নুবালা: ১৬/১৪৮
✒️ শায়েখ ডক্টর Abubakar Muhammad Zakaria (হাফিজাহুল্লাহ)