পরকালের চেতনা

পরকালের চেতনা "তুমি দুনিয়াতে এমনভাবে থাকো যেন তুমি একজন পথিক বা একজন অস্থায়ী ভ্রমণকারী।"
— সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৪১৬

18/07/2025

মূসা ইবন ইসমাঈল (রহঃ) .... মু’আয ইবন জাবাল (রাঃ) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ যে মুসলিম রাতে পবিত্র অবস্থায় যিকির করতে করতে শোয়, এরপর ঘুম ভেঙে গেলে সে আল্লাহ্‌র কাছে দু’আ করে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ ও মঙ্গলের জন্য, তখন আল্লাহ্‌ তাকে তা দান করেন।

(সূনানে আবু দাউদ - ৪৯৫৮,
হাদিসের মানঃ সহিহ)

18/07/2025

একটি গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ:

*দুটি চোখকে নিম্নগামী করুন, নফসের কুপ্রবৃত্তি হতে নিজেকে দমন করুন, লজ্জাস্থানকে হিফাজাত করুন তাহলেই দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা কামিয়াব হবে ইনশাআল্লাহ।

18/07/2025

সালমান (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’আ ব্যতীত অন্য কোন কিছুই ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারে না এবং সৎকাজ ব্যতীত অন্য কোন কিছুই হায়াত বাড়াতে পারে না।

( তিরমিজি - ২১৩৯) (হাদিসের মান-হাসান)

উক্ত হাদিস সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা :

১. দু‘আ তাকদীর পরিবর্তন করতে পারে:

এ কথার মানে এই নয় যে আল্লাহর জ্ঞান বা চূড়ান্ত ফয়সালায় ভুল আছে, বরং আল্লাহর জ্ঞানে সব কিছুই রয়েছে। তাকদির দুই প্রকার, তার এক প্রকার হলো 'তাকদীর মুয়াল্লাক’ (সাময়িক নির্ধারিত/ ঝুলন্ত তাকদির)। এটি এমন তাকদির যা বান্দার আমল ও দু‘আর ভিত্তিতে পরিবর্তন হতে পারে। আল্লাহ তাঁর বান্দাকে দু‘আর মাধ্যমে সেই পরিবর্তনের সুযোগ দেন। এটি আল্লাহর রহমতেরই একটি রূপ।

২. নেক আমল আয়ু বৃদ্ধি করতে পারে:

প্রত্যেক মানুষের আয়ু নির্ধারিত আছে তার তাকদীরে। আয়ু বৃদ্ধি অর্থ হল, তার আয়ুতে বিশেষ বরকত লাভ হয়, অল্প সময়ে অনেক সৎ কাজ করতে পারে। অথবা উদ্দেশ্য এই যে, তার আয়ু বৃদ্ধির ব্যাপারটা সৎকর্ম সাপেক্ষ থাকে। তার তাকদীরে এমন লেখা থাকে যে, সে সৎকর্ম করলে, তবে তার বয়স এত হবে।( আল্লাহু আ’লাম)

নেক আমলের মাধ্যমে আয়ু বৃদ্ধি পায় এ মর্মে আরো একটি হাদিস হলো-

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি প্রিয় নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি রিজিকের প্রশস্ততা ও আয়ু বৃদ্ধি করতে চায়, সে যেন তার আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ৫৫৫৯, ৫৫২৭)

এই হাদিসে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ নেক আমল। এই নেক আমলের মাধ্যমে তার রিজিকের প্রশস্ততা ও আয়ু বৃদ্ধি পেতে পারে ইনশাআল্লাহ।

আলোচ্য হাদীস আমাদের কী শিক্ষা দেয়?

(ক) দু‘আকে অবহেলা করা যাবে না, দু‘আ ভাগ্য বদলে দিতে পারে। বিপদ-আপদ দূর করতে পারে।

(খ) নেক আমলে জীবন সুন্দর ও বরকতময় হয়। তাই ভালো কাজ করা, ইবাদতে মনোযোগী হওয়া, মানুষের উপকার করা—এসব শুধু আখিরাতেই নয়, দুনিয়াতেও কল্যাণ বয়ে আনে।

(গ) আল্লাহর উপর দৃঢ় ভরসা রাখা উচিত। কারণ তিনি দয়ালু ও করুণাময়। তিনি আমাদের অবস্থা পরিবর্তন করতে সক্ষম, শুধু আমরা যেন তাঁর দিকে ফিরে যাই।

উল্লেখ্য: দুআ' কবুলের জন্য নিঃসন্দেহে হালাল রুজি খাওয়া জরুরী। আল্লাহর দেয়া বিধান মেনে চলা জরুরী। আল্লাহ তায়ালার নিকট আমরা যেন বেশি বেশি সব সময় দুআ' করতে পারি এবং নেক আমল করতে পারি। আমীন!

17/07/2025

’আবদুল্লাহ্ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার আমার দু’ কাঁধ ধরে বললেনঃ তুমি দুনিয়াতে থাক যেন তুমি একজন প্রবাসী অথবা পথচারী।

আর ইবনু ’উমার (রাঃ) বলতেন, তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হলে সকালের আর অপেক্ষা করো না এবং সকালে উপনীত হলে সন্ধ্যার আর অপেক্ষা করো না। তোমার সুস্থতার সময় তোমার পীড়িত অবস্থার জন্য প্রস্তুতি লও। আর তোমার জীবিত অবস্থায় তোমার মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি লও।
( বুখারী -৬৪১৬)

উক্ত হাদিস সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা:

* “তুমি দুনিয়াতে থাক যেন তুমি একজন প্রবাসী অথবা পথচারী”
এখানে রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, দুনিয়া হলো একটি অস্থায়ী আবাস, স্থায়ী নয়। একজন মুমিনের উচিত, এই দুনিয়াতে এমনভাবে জীবনযাপন করা, যেন সে এখানে চিরকাল থাকার জন্য নয়, বরং একটি গন্তব্যের দিকে যাত্রারত পথচারী।

* প্রবাসী (غريب):
সে এমন এক ব্যক্তি যে নিজ বাড়ি থেকে দূরে রয়েছে, অস্থায়ীভাবে অন্য জায়গায় আছে। তার মন পড়ে থাকে নিজের মূল গন্তব্যে। সে কখনোই নিজের অস্থায়ী আবাসকে স্থায়ী ঠিকানা ভাবে না।

* মুসাফির (عابر سبيل):
সে কেবল পথের মাঝে রয়েছে, কোথাও অল্প সময়ের জন্য থেমে আবার রওনা হয়ে যায়। দুনিয়া তার জন্য শুধু এক যাত্রার স্টপেজ।

উক্ত হাদিসের উপমার মাধ্যমে আমাদের মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে- আমাদের প্রকৃত গন্তব্য হলো আখিরাত। দুনিয়াতে জীবন হলো একটি স্বল্প সময়ের সফর মাত্র।

* “সন্ধ্যায় উপনীত হলে সকালের আর অপেক্ষা করো না... জীবনের সময়কে মৃত্যুর জন্য কাজে লাগাও”।
এই অংশে ইবনু ’উমার (রাঃ) আমাদেরকে আরও জোরালোভাবে সময়ের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন। কালকে পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই, তাই আজকেই কাজে লাগাও।
সুস্থতা, সময়, শক্তি সবই অস্থায়ী। এই অস্থায়ী নিয়ামতগুলোকে কাজে লাগিয়ে চিরস্থায়ী জগতের জন্য পাথেয় সংগ্রহ করতে হবে ইনশাআল্লাহ।

16/07/2025

মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ইবনু মাইমুন (রহঃ) .... নাওওয়াস ইবনু সাম’আন আল আনসারী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পুণ্য ও পাপ সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। তখন তিনি জবাব দিলেন, পুণ্য হলো উন্নত চরিত্র। আর পাপ হলো যা তোমার অন্তরে দ্বিধা-দ্বন্ধ সৃষ্টি করে এবং লোকে তা জানুক তা তুমি অপছন্দ করো।

হাদিসের মানঃ সহিহ

(সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬২৮৫)

উক্ত হাদিসের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা :

১. "পুণ্য (البرّ) হলো উত্তম চরিত্র (حسن الخلق)"

পুণ্যের অনেক রকম রূপ আছে – যেমন সালাত, সিয়াম, সদকাহ ইত্যাদি। তবে নাবী (সা.) এখানে বললেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো "উত্তম চরিত্র"।
উত্তম চরিত্র বলতে বোঝানো হয়: বিনয়, ধৈর্য, সহনশীলতা, দয়াশীলতা, সততা, মানুষকে সম্মান করা ইত্যাদি। এটি বুঝিয়ে দেয় যে, ইসলামে অন্য সকল ইবাদাত গুরুত্বের সাথে পালনের মাঝে একজন মানুষের আচরণ ও ব্যবহারের পরিশুদ্ধতা ইসলামে বড় নেকীর কাজ। যার মাধ্যমে একজন প্রকৃত মুমিনের পরিচয় ফুটে ওঠে এবং সে আল্লাহওয়ালা হয়ে যায়।

২. "পাপ হলো এমন কিছু যা অন্তরে দ্বিধা সৃষ্টি করে..."

অর্থাৎ, তুমি যদি কিছু করতে যাও এবং সেটা করতে গিয়ে তোমার মনে বারবার খটকা লাগে — "এটা ঠিক হচ্ছে তো?", "আল্লাহ খুশি হবেন তো?" — তাহলে সেটি গোনাহ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ইসলামে শুধু বাহ্যিক নিয়ম না, অন্তরের শান্তি ও আত্মার স্বচ্ছতা গুরুত্বপূর্ণ। মুমিনের অন্তর আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি অন্তর্দৃষ্টি পায়, যা তাকে সতর্ক করে দেয়।

মনে রাখতে হবে - অন্তরে প্রশান্তি ও স্বচ্ছতা মূলত নির্ভর করে ইসলামি শরীয়া আলোকে সহীহ আমলের মাধ্যমে। যদি অন্তর বেদআত ও শয়তানি প্ররোচনায় প্রশান্তি পায় সেটাতো নিশ্চিত যে তার জন্য মহা ক্ষতির কারণ। এজন্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার যে কোন আমলের ব্যাপারটি সঠিকভাবে অনুসন্ধান বা বড় কোন আলিমের সাথে বুঝে আমল চালিয়ে যেতে হবে। যাহাতে সঠিক বিষয়ের উপর তার অন্তর্দৃষ্টি সন্তুষ্টি লাভ করে ইনশাআল্লাহ।

৩. "...এবং তুমি চাও না যে লোকে তা জানুক"

এখানে একজন প্রকৃত মুমিনের পুণ্য এবং গুনাহের পার্থক্য নির্ণয়ের মূল বিষয় শিক্ষা দিচ্ছে। যদি তুমি এমন কোনো কাজ করো যা মূলত গুনাহের কাজ এবং যা লোকে জানলে তুমি লজ্জিত হবে, তাহলে তা পাপের কাজ হতে পারে। কারণ, পাপ এমন কিছুই যা তুমি গোপনে করতে চাও, আর নেক কাজ এমন কিছু যা তুমি প্রকাশ্যেও করতে দ্বিধা করো না।

উল্লেখ্য: এমন অনেক গুনাহের কর্ম যা প্রকাশ্যে করা হচ্ছে তা অবশ্যই পাপ কিন্তু এখানে মুমিনের জন্য এক বিশেষ মূলনীতি উল্লেখ করা হয়েছে যাহাতে এটা পরিষ্কার যে, একজন প্রকৃত মুমিন কখনো সবসময় গুনাহে অভ্যস্ত হতেই পারে না তবে ভুল হয়ে যেতে পারে কিন্তু সে সবসময় প্রকৃত পাপ কি এটা বুঝতে পারবে এবং নিজেকে সংশোধন করে নিবে তাওবা ও ইস্তিগফারের মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ।

11/07/2025

প্রসংগ: কুরআন ও হাদিসের আলোকে জুয়ার নিষেধাজ্ঞা।

মহান আল্লাহ তাআ'লা পবিত্র কুরআনে বলেন-

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّمَا الۡخَمۡرُ وَ الۡمَیۡسِرُ وَ الۡاَنۡصَابُ وَ الۡاَزۡلَامُ رِجۡسٌ مِّنۡ عَمَلِ الشَّیۡطٰنِ فَاجۡتَنِبُوۡہُ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ﴿۹۰﴾

অর্থ: হে মু’মিনগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তি ইত্যাদি এবং লটারীর তীর, এ সব গর্হিত বিষয়, শাইতানী কাজ ছাড়া আর কিছুই নয়। সুতরাং এ থেকে সম্পূর্ণ রূপে দূরে থাক, যেন তোমাদের কল্যাণ হয়।
সূরা নিসা, আয়াত ৯০।

اِنَّمَا یُرِیۡدُ الشَّیۡطٰنُ اَنۡ یُّوۡقِعَ بَیۡنَکُمُ الۡعَدَاوَۃَ وَ الۡبَغۡضَآءَ فِی الۡخَمۡرِ وَ الۡمَیۡسِرِ وَ یَصُدَّکُمۡ عَنۡ ذِکۡرِ اللّٰہِ وَ عَنِ الصَّلٰوۃِ ۚ فَہَلۡ اَنۡتُمۡ مُّنۡتَہُوۡنَ ﴿۹۱﴾

অর্থ: শাইতানতো এটাই চায় যে, মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের পরস্পরের মধ্যে শক্রতা ও হিংসা সৃষ্টি হোক এবং আল্লাহর স্মরণ হতে ও সালাত হতে তোমাদেরকে বিরত রাখে। সুতরাং এখনো কি তোমরা নিবৃত্ত হবেনা? সূরা নিসা, আয়াত ৯১

উল্লিখিত আয়াতদ্বয়ে ‘মাইসার’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, যার অর্থ হলো জুয়া। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, এটি শয়তানের কাজ, আর সফল হতে চাইলে এর থেকে দূরে থাকতে হবে। জুয়া শুধু অর্থের ক্ষতি নয়, এটা সম্পর্ক নষ্ট করে, বিদ্বেষ সৃষ্টি করে, নামায ও আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে রাখে। এগুলো সবই মানুষের ধ্বংসের কারণ।

হাদীসের আলোকে জুয়া :

(ক) আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, "নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা মদ, জুয়া ও বাদ্যযন্ত্র হারাম করেছেন।"(বায়হাকি, হাদিস: ৪৫০৩; মিশকাত, হাদিস: ৪৩০৪)

(খ) আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, জুয়ায় অংশগ্রহণকারী, খোঁটাদাতা ও মদ্যপায়ী জান্নাতে যাবে না। ’
(দারেমি, হাদিস: ৩৬৫৩; মিশকাত, হাদিস: ৩৪৮৬)

(গ) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-আল্লাহ তাআলা আমার উম্মতের জন্য মদ ও জুয়াকে হারাম করেছেন।
(মুসনাদে আহমদ ২/১৬৫, হাদীস : ৬৫৪৭)

উল্লিখিত হাদিস দ্বারাও আমরা বুঝতে পারছি জুয়া কতটা নগন্য গুনাহের কাজ।

বিভিন্ন রুপ চেহারায় জুয়ার চিত্র আমরা দেখতে পাই-
আজকের দিনে মোবাইলে অ্যাপস বা গেমের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে পুরস্কার জেতার চেষ্টা, অনলাইন ক্যাসিনো বা বেটিং (ক্রিকেট, ফুটবল, ইত্যাদি), ভিডিও গেম যেখানে বাস্তব অর্থ দিয়ে "গ্যাম্বলিং" হয়,রিয়েল মানি স্পিন, লটারি ইত্যাদি এসবই জুয়ার আধুনিক রূপ।

এগুলোর পেছনে একটাই উদ্দেশ্য থাকে,আর তা হল- “কিছু না দিয়ে বা অল্প দিয়ে বেশি কিছু পাওয়ার লোভ এবং অন্যদের অর্থ হাতিয়ে নিজের পকেটে তোলা।"
কুরআন ও হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী, যে কোনো ধরনের জুয়া হোক না কোনাে সেটি পুরাতন পদ্ধতিতে হোক বা আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে হোক, ইসলামে জুয়া স্পষ্ট হারাম (নিষিদ্ধ কর্ম)।

** ✔কেন জুয়া হারাম?
০১. বিনা পরিশ্রমে লাভের আশা,
০২.অন্যের টাকা লােভে আসক্ত হয়ে নিজের করে নেওয়ার মানসিকতা সৃষ্টি করে,
০৩. লোভ, হিংসা ও হতাশা সৃষ্টি করে,
০৪. পারিবারিক অশান্তি সৃষ্টি,এবং
০৫. আখিরাত ধ্বংসের কারণ হয়

***✔ জুয়া থেকে বাঁচার জন্য জরুরীভাবে করণীয়:

মোবাইল থেকে সব জুয়া সম্পর্কিত অ্যাপস ও গেমস মুছে ফেলুন। জুয়া বলতে আরো যত কিছু উপকরণ ও বন্ধু আছে সবকিছু থেকে দূরে থাকুন। নিজে তাওবা করুন ও অন্যদেরকেও সচেতন করুন। আল্লাহর দেওয়া হালাল রিজিক ও পরিশ্রমের মাধ্যমে উপার্জনকে মূল্য দিন। সময় কাটান ইবাদাতে, দ্বীনি জ্ঞানে ও বেশি বেশি ভাল কর্ম করার মাধ্যমে।

অতএব, সব ধরনের জুয়া-বাজি ইসলামে অবৈধ। জুয়া-বাজি থেকে প্রাপ্ত সবকিছু হারাম। হারাম ভোগ করে ইবাদত-বন্দেগি করলে, আল্লাহ তাআলা তা কবুল করেন না। তাই মুসলমান হিসেবে সব ধরনের জুয়া-বাজি থেকে দূরে থাকা আবশ্যক। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো,শহরাঞ্চল তো আছেই প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এখন বিভিন্ন জায়গায় বসছে জুয়ার আসর। কৃষক, তরুণ, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীরা জড়িয়ে পড়ছেন মরণনেশা জুয়ায়। এসব আসরে উড়ছে লাখ লাখ টাকা। মাদকের মতোই জুয়ার গ্রাস এখন দৃশ্যমান।

আমাদের আশেপাশে ছড়িয়ে থাকা জুয়ার নেশায় যেসমস্ত ভাইয়েরা তাদের জীবন ধ্বংসের দিকে ধাবিত করছে তাদেরকে আমরা ইসলামের সুমহান দাওয়াত দেওয়ার চেষ্টা করি,তাদেরকে ফিরিয়ে আনার জন্য যথেষ্ট আহবান আমরা করতে পারি,তাদের নিকট আপাতত কুরআন ও হাদিসের বাস্তবতা তুলে ধরি,যাতে করে আমাদের নূন্যতম দায়িত্ব হলেও পালন হয় ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহ আমাদের জুয়ায় আসক্ত মুসলিম ভাইদের জুয়ার কঠিন ক্ষতিকর প্রভাব বোঝার ও দ্বীনের সঠিক জ্ঞান যেন দান করেন,আমীন।

18/06/2025

(কুরআনের শিক্ষামূলক সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্ব)

(সূরা আল-মুত্বাফ্ফিফীন – আয়াত ৬)

يَوْمَ يَقُومُ ٱلنَّاسُ لِرَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ۝

অনুবাদ:
"যেদিন মানুষ দাঁড়াবে সমস্ত জগতের প্রতিপালকের সামনে।"

উক্ত আয়াত সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু আলোচনা-

এই আয়াতে কিয়ামতের দিনের একটি ভয়াবহ দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে মানুষকে তাদের সমস্ত কাজের জবাবদিহির জন্য আল্লাহর সামনে দাঁড় করানো হবে।

🔹 ১. "يَوْمَ" (যেদিন):

এটি কিয়ামতের দিনকে নির্দেশ করে — যেদিন দুনিয়ার সবকিছু ধ্বংস হবে এবং পুনরুত্থান ঘটবে।

🔹 ২. "يَقُومُ ٱلنَّاسُ" (মানুষ দাঁড়াবে):

এখানে বোঝানো হয়েছে, মৃতরা কবর থেকে উঠে দাঁড়াবে। তারা ভয়, লজ্জা ও জবাবদিহির ভয়ে গম্ভীরভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে। কারো কোনো উপকারে কিছু আসবে না, প্রত্যেকেই নিজের আমলের জন্য দায়ী থাকবে।

🔹 ৩. "لِرَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ" (সকল সৃষ্টি জগতের প্রতিপালকের সামনে)

সেদিন আল্লাহ তাআলার সামনে দাঁড়াতে হবে, যিনি একমাত্র বিচারক, যিনি সবকিছু জানেন। কেউ কোনো কিছু গোপন রাখতে পারবে না, কারণ তিনি অন্তরের কথাও জানেন।

🌟 শিক্ষা ও উপলব্ধি:

(ক). জবাবদিহির অনুভব জাগানো:
এই আয়াত মানুষকে মনে করিয়ে দেয় যে, সে চিরকাল দায়িত্বহীনভাবে বাঁচতে পারে না। একদিন তাকে আল্লাহর সামনে নিজের কর্মের হিসাব দিতে হবে।

(খ). আত্মসমালোচনার প্রেরণা:
আমরা যেন প্রতিদিন নিজেদের কাজ, কথাবার্তা, অন্যের সঙ্গে আচরণ করার ক্ষেত্রে একটু বিচার করি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।

(গ). আখিরাতের ভয়:
কিয়ামতের দিন খুবই কঠিন হবে। সেখানে কেবল সৎকর্মই কাজে আসবে। এই আয়াত সেই ভয়াবহ দিনের একটি চিত্র এঁকে দেয়।

আল্লাহ তাআ'লা উক্ত আয়াত থেকে মূল মর্ম চেতনায় আমলে নেওয়ার তাওফিক দান করেন, আমীন।

12/06/2025

পেশাব থেকে পবিত্রতা অর্জনে অনেকের অবহেলা রয়েছে। অথচ কবরে আযাব হওয়ার অন্যতম দুটি কারণের মধ্যে একটি হল পেশাব থেকে পবিত্রতা না হওয়া বা সতর্ক না হওয়া।

পেশাব পায়খানা থেকে ১০০% পবিত্র না হলে অযু ও নামাজ একটাও সহীহ হবে না। অতএব, মূল লক্ষ্য পেশাব থেকে পবিত্র থাকা। যার শারীরিক সুস্থতা ও সক্ষমতা অটুট আছে, তার জন্য পানি ব্যবহার কিংবা ঢিলা বা টিস্যু ব্যবহার যথেষ্ট। উভয়টি ব্যবহার করা অধিক পছন্দনীয়।

তবে, পুরুষের একটি সময় এমন আসে যখন পেশাব শেষ করে পানি ব্যবহার করে উঠে যাওয়ার পরও এক দু’ফোটা পেশাব পুনরায় বের হয়। যা অজু আগে হলে কাপড় নাপাক হয়, অজুর পর হলে অজু ভেঙ্গে যায়, নামাজের ভেতর হলে নামাজ নষ্ট হয়ে যায়। এ সমস্যা যার তার পক্ষে পেশাবের পর সামান্য হাঁটাচলা করে, কাশি দিয়ে, প্রয়োজনে উঠবস করে শেষ পেশাবটুকুও বের করা জরুরী হয়ে পড়ে। ঢিলা বা টিস্যু থাকলে ফোটাগুলো শুষে নেয়। পেশাব আর হবে না এমত প্রত্যয় জন্মালে পানি ব্যবহার করা উত্তম। এ সমস্যাটুকু যার আছে (সব পুরুষেরই জীবনের নানা সময়ে এমন হয়েই থাকে) তার জন্য এসব কৌশলে পবিত্র হওয়া জরুরী। যার সমস্যা নেই, তার জন্য এতকিছুর প্রয়োজন নেই। অবশ্য মানুষের সামনে দৃষ্টিকটু হাঁটাচলা, কাশি ইত্যাদি উচিত নয়। যা অশ্লীল পর্যায়ে চলে যায় এবং ইসলামের সুন্দর ফিচারকে কলুষিত করে। মনে রাখতে হবে, এসব কাজ যেন ফ্রেশ হওয়ার মতই আড়ালস্থানে শালীন উপায়ে হয়। ব্যক্তিগত এ কাজটি অবিবেচক, নির্লজ্জ ও দৃষ্টিকটু উপায়ে করা না হয়। মনে রাখতে হবে, হাদিসের বাণী ‘পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ’ যেমন আমলযোগ্য। ‘লজ্জা শরম ঈমানের অঙ্গ’ এ বাণীটিও কম প্রণিধানযোগ্য নয়।

11/06/2025

একটি সতর্কতা

পায়ের গিরার নিচে কাপড় না পড়া সম্পর্কে কেউ কেউ এমন ধারণা করেন যে, এটা শুধু সালাত আদায়ের সময় বুঝি করতে হয় অন্য সময়ে গিরার নিচে পড়লে কোন সমস্যা নেই।
আসলে এমন ধারনা সঠিক নয়।সালাতরত অবস্হায় হোক বা অন্য সময়ে হোক সকল অবস্হায় গিরার নিচে কাপড় পরা হারাম।
আমরা এ আমলটি অবহেলা করবো না কারণ এটি জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হয়ে যাবে (নাউযুবিল্লাহ)। আল্লাহ তাআলা আমাদের এ আমলটি করার তাওফিক দান করেন, আমিন।

09/06/2025

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনটি বস্ত্ত মৃত ব্যক্তির অনুসরণ করে। দু’টি ফিরে আসে, আর একটি তার সঙ্গে থেকে যায়। তার পরিবারবর্গ, তার মাল ও তার ’আমল তার অনুসরণ করে। তার পরিবারবর্গ ও তার মাল ফিরে আসে, এবং তার ’আমল তার সঙ্গে থেকে যায়।

সহীহ বুখারী -৬৫১৪
হাদিসের মানঃ সহিহ

উক্ত হাদিস সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা।

১. পরিবার (أهلهُ) কীভাবে অনুসরণ করে:

যখন কেউ মারা যায়, তার আত্মীয়-স্বজন, পরিবার, বন্ধুবান্ধব — সবাই তার জানাযা ও দাফন কার্যক্রমে অংশ নেয়। তারা শোক পালন করে, কান্না করে, দোয়া করে এবং তাকে দাফনের জন্য কবরে নিয়ে যায়।
কিন্তু... কবরে ঢোকার পর আর কেউ তার সঙ্গে থাকে না, তারা ফিরে যায়। তাহলে পরিবারও প্রথমে মৃতকে কেন্দ্র করে অনেক দুঃখ শোক প্রকাশের মাধ্যমে অনুসরণ করলেও পরে তারাও ফিরে যায়।

২.সম্পদ (مالهُ) কীভাবে অনুসরণ করে:

মৃত ব্যক্তির সম্পদ থেকেই তার কাফন-দাফনের খরচ, এমনকি কবরস্থানের জায়গা সবকিছুই তার সম্পদের অংশ দিয়ে হতে পারে।
তবে... মৃত্যুর পর সম্পদ অন্যদের হয়ে যায় অর্থাৎ উত্তরাধিকারীদের মাঝে বণ্টন হয়। তাহলে সম্পদ প্রথমে মৃতকে অনুসরণ করে মৃতের প্রয়োজনে তারপর সম্পদও ফিরে যায়।

৩. আমল (عملهُ) কীভাবে অনুসরণ করে:

একজন মানুষ জীবদ্দশায় যা করেছে, সৎ বা অসৎ সব তার সঙ্গে থেকে যায়।
কবরের জীবনে ফেরেশতারা এসে প্রশ্ন করে তখন কেবল আমলই সঙ্গ দেয়। কবরে শান্তি, আযাব, বা নাজাত সবই নির্ভর করে তার জীবনের আমলের ওপর। শুধু আমলই কবরে সঙ্গ দেয় এবং আখিরাতে হিসাব-নিকাশে তার সঙ্গে থাকে।

02/06/2025

আবু তালহা আনসারী রা. বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে তাশরীফ আনলেন। তখন তাঁর চেহারা মুবারক খুশি ও আনন্দে উজ্জ্বল ছিল। তিনি (নবীজী) ইরশাদ করলেন-

আমার কাছে জিবরাঈল এসেছেন এবং (আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে) বলেছেন, হে মুহাম্মাদ! আপনার খুশি ও সন্তুষ্টির জন্য এ কি যথেষ্ট নয় যে, আপনার উম্মতের যে কেউ আপনার প্রতি সালাত প্রেরণ করবে, আল্লাহ তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। আর আপনার উম্মতের যে কেউ আপনার প্রতি সালাম প্রেরণ করবে, আল্লাহ তার উপর দশবার শান্তি বর্ষণ করবেন! -সুনানে নাসায়ী, হাদীস ১২৯৫; সুনানে দারেমী, হাদীস ২৭৭৬; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৯১৫

31/05/2025

ہَلۡ اَتٰی عَلَی الۡاِنۡسَانِ حِیۡنٌ مِّنَ الدَّہۡرِ لَمۡ یَکُنۡ شَیۡئًا مَّذۡکُوۡرًا.

অনুবাদ:- কাল-প্রবাহে মানুষের উপর এক সময় অতিবাহিত হয়েছে যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছু ছিলনা।
(সূরা ইনসান-০১)

সংক্ষিপ্ত আলোচনা-
অবশ্যই মানুষের এমন একটা সময় ছিল, যখন সে সম্পূর্ণ অনস্তিত্বের ভেতর ছিল, ফলে তার সম্পর্কে কোনো রকম আলোচনা‌ও ছিল না। আল্লাহ্‌ তাআলাই নিজ দয়ায় তাকে পর্যায়ক্রমে অস্তিত্ব দান করেছেন হীন শুক্রবিন্দু হতে আর এভাবে তাকে নাস্তি ও হীনাবস্থা হতে সৃষ্টির সেরা মাখুলকে উপনীত করেছেন। এর দ্বারা মানুষকে তার সূচনাপর্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শোকরগোজারির আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ আয়াত থেকে নিম্ন কয়েকটি বিষয় উল্লেখযোগ্য-

১/ মানুষের অস্তিত্বহীন অবস্থার স্মরণ:
এই আয়াতটি মানবজাতির সূচনালগ্নের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এক সময় মানুষ ছিল না, এমনকি তার কোনো অস্তিত্ব বা পরিচয়ও ছিল না, কেউ তাকে চিনত না বা আলোচনা করত না। আল্লাহ তখন তাকে সৃষ্টি করেন।

২/ সৃষ্টির বিস্ময় ও করুণার স্মরণ:
এই আয়াত মানুষকে স্মরণ করায় যে সে নিজে কোনো কিছুর মালিক ছিল না,ছিল না জ্ঞান, শক্তি, মর্যাদা। কিন্তু আল্লাহ তাকে সৃষ্টি করে এমন মর্যাদা দিয়েছেন যে সে এখন সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে শ্রেষ্ঠ।

৩/ শোকর ও নম্রতার শিক্ষা:
মানুষ যেন অহংকার না করে, বরং নিজের শূন্যতা ও আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করে কৃতজ্ঞ হয়। আল্লাহ মানুষকে ধাপে ধাপে এমন উচ্চতায় পৌঁছিয়েছেন, এটা তাঁর অসীম দয়ারই নিদর্শন।

৪/ স্মরণ ও সচেতনতার আহ্বান:
এ আয়াতের মাধ্যমে মানুষের নিজের অস্তিত্ব ও উদ্দেশ্য নিয়ে চিন্তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। তুমি কোথা থেকে এলে, কেন এলে, আর কোথায় যাচ্ছো?

আল্লাহ তাআ'লা আমাদের উক্ত আয়াত থেকে সঠিক মর্ম বোঝার তাওফিক দান করেন,আমিন।

Address

Jhinaidaha

Telephone

+8801710192939

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when পরকালের চেতনা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share