
05/07/2025
আশুরার রোজা কবে রাখতে হবে?
আশুরার রোজার ফজিলত জেনে নিন
"হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
ফরজ নামাজের পর (নফল নামাজের মধ্যে) শ্রেষ্ঠতম নামাজ হচ্ছে গভীর রাতের নামাজ, আর রমজান মাসের রোজার পর (নফল রোজাগুলোর মধ্যে) সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ রোজা হচ্ছে মুহাররম মাসের রোজা।
[মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ২৮১৩]
আশুরার রোজা কবে রাখব?
সহীহ বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারী-তে হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. লিখেছেন : আশুরার রোজা তিন স্তরের। সর্বনিম্ন স্তর হলো মুহাররমের ১০ তারিখ একদিন রোজা রাখা, এর উপরের স্তর দশ তারিখের আগে নয় তারিখেও রোজা রাখা, এর উপরের স্তর হলো নয়-দশ-এগার এ তিন দিন রোজা রাখা। [বাবু সিয়ামি ইয়াওমি আশুরা]
সে হিসাবে এ বছরের রোজার তারিখগুলো হচ্ছে:
৯ মুহাররম - ৫ জুলাই
১০ মুহাররম - ৬ জুলাই
১১ মুহাররম - ৭ জুলাই
সম্ভব হলে ৩ দিনই রাখি। যদি ২দিন রাখতে চাই তাহলে ৫ ও ৬ জুলাই কিংবা ৬ ও ৭ জুলাই রাখতে পারি। যারা ১ দিন হলেও রাখতে পারব তারা ৬ জুলাই আশুরার দিন রাখব ইনশাআল্লাহ।
আশুরার রোজার ফজিলত
আশুরার রোজা বিগত এক বছরের সগিরা গুনাহ মাফ করে দেয়।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বর্ণনা করেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসের ফরজ রোজা ছাড়া অন্য যেসব দিনে রোজা রাখতেন, সেসব রোজার কোনোটিকেই আশুরার রোজার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে তাঁকে আমি দেখি নি। [বুখারী শরীফ, হাদীস নং ২০০৬]
মক্কায় থাকাকালীন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরাইশদের সাথে সাথে আশুরার রোজা রেখেছেন, তবে তিনি তখন কাউকে এ রোজা রাখতে আদেশ করেন নি। পরে যখন মদীনায় আসলেন, তখন নিজে রাখার পাশাপাশি অন্যদেরকেও রোজাটি রাখতে আদেশ করলেন।
বুখারী ও মুসলিম শরীফের কোনো কোনো হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী—রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রোজাটির উপর এতই জোর দিতেন যে, একবার তিনি আশুরার দিনে মদীনার ঘরে ঘরে সংবাদ পাঠালেন যে আজ সকাল থেকে কিছু খায় নি কিংবা পান করে নি, সে যেন আজকের রোজা রাখে, আর যদি কেউ কিছু খেয়েও থাকে, তবু যেন অবশিষ্ট সময়টুকু সে না খেয়েই কাটায়। এ থেকে কেউ কেউ বলেন, রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পূর্বে আশুরার রোজাই ফরজ ছিল। পরে যখন রমজান মাসের রোজাই ফরজ হয়ে গেল, তখন আশুরার রোজাটি ঐচ্ছিক হয়ে যায়—কেউ চাইলে রাখে, কেউ রাখে না।
তাই আসুন, আমরা প্রত্যেকেই আশুরার রোজাটি রাখি। পরিবারের ছোট সন্তানদেরকেও এই রোজাটি রাখতে উৎসাহিত করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন।
মুহাররম ও আশুরা সম্পর্কে আরো জানতে মুসলিমস ডে'র ব্লগপোস্ট পড়ুন: