28/11/2025
প্রিয় কচুয়াবাসি,
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন,আমি আপনাদেরই সন্তান, আপনাদেরই ভাই ও বন্ধু। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি,আপনাদের একজন ক্ষুদ্র নগণ্য সেবক,কচুয়ার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে 'শাপলা কলি' 🪷 প্রতীক নিয়ে আপনাদের সমর্থনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মাঠে নামছি। আপনাদের দোয়া ও নিঃশর্ত সমর্থন একান্তভাবে কামনা করি।
📌 আমার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে কিছু কথা:
মাঠ পর্যায়ে আমাকে নিয়ে সমালোচনা ও আলোচনা আছে, কারণ আপনারা আমাকে বিভিন্ন সময়ে,বিভিন্ন দলের লোকের সাথে দেখেছেন।এই দেখা বা মেশার কারণ ছিল একটাই— আমি সব সময় আমার ভাই-বন্ধু এবং বড় ভাইদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।
আমি কখনো দল দেখিনি বা কোনো দলের সাথে জড়িত হইনি।
বিভিন্ন দলের সাথে আমার কিছু ছবি থাকলেও,তা ছিল কেবল ভালোবাসার বন্ধন বা সমর্থন জানানোর ফল।
আমি মনে করি,কচুয়াবাসী সবাই একটি পরিবার। আমাদের থানা এক,জেলা এক,সবাই পরিচিত মুখ। তাই দলমত নির্বিশেষে শক্তিশালীভাবে সবার পাশে দাঁড়ানোকে আমি মানবিক কর্তব্য মনে করেছি।
আমি প্রকাশ্যে ঘোষণা করছি: যদি কোনো ব্যক্তি আমার নাম কোনো কাগজে বা দলে দেখাতে পারেন, আমি চিরদিনের জন্য রাজনীতি থেকে অব্যহতি নেব।
✊ আমার শক্তি: কচুয়ার জনগণ
আমি ছোট মানুষ,আমার ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে। আপনাদের কাছে অনুরোধ,সকল ভেদাভেদ ভুলে, আমাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখে,আমার পাশে দাঁড়াবেন এবং আমার হাতকে শক্তিশালী করবেন।
আমার কোনো নেতা নেই,আমার নেতা আমার কচুয়ার জনগণ।
আপনারা আমাকে পরিচালনা করবেন। আমি আপনাদের পাশে থেকে,আপনাদের হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে চাই।
✅ আমার প্রতিশ্রুতি: আপনাদের হক নিশ্চিত করব
আমি ব্যক্তিগতভাবে হয়তো অনেক কিছু করতে পারব না,কিন্তু আমি কথা দিচ্ছি— আপনাদের হক যেটা, সেটা আমি সংসদ থেকে এনে দিবো। আমার মূল লক্ষ্যগুলি নিম্নরূপ:
১. সন্ত্রাস ও দুর্নীতি নির্মূল:
কচুয়া থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দখলদার, মাদক চিরতরে নির্মূল করা হবে।
মামলা বাণিজ্য স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেবো।কোনো মায়ের সন্তান যেন রাজনীতির কারণে মামলা-হামলার শিকার না হয়,সেই ব্যবস্থা করবো।
যারা নিজেদের ভূমি থেকে বঞ্চিত,তাদের অধিকার ফিরিয়ে এনে দেবো।
২. উন্নয়ন, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান:
সুষম উন্নয়নের ছোঁয়া কচুয়ার প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দেবো।
আমাদের তরুণ প্রজন্ম যেন পড়াশোনার পাশাপাশি নিজ গ্রাম,নিজ থানায় থেকে কর্ম করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করবো ইনশাআল্লাহ।
৩. কৃষি ও কৃষক:
আমাদের কৃষকদের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে হিমাগার তৈরি করবো।
ফসল ফলাদি সংরক্ষণ (রিজার্ভ) করে তা যেন চওড়া দামে দেশে ও বিদেশে বিক্রি করা যায়, সেই ব্যবস্থা করবো।
কৃষক যেন তাদের পরিশ্রমের নায্য মূল্য এবং সরকারের প্রতিটি সহায়তা নিশ্চিতভাবে পায়, তা নিশ্চিত করবো।
৪. শিক্ষা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা:
শিক্ষা ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবো।
আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসায় পাঠ্যদানের পাশাপাশি ইসলামি চর্চা করতে পারে,সেই ব্যবস্থা করবো।
বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা যেন তাদের ধর্মগ্রন্থের চর্চা করতে পারে,সেই ব্যবস্থা করবো ইনশাআল্লাহ।
৫. নাগরিক অধিকার:
নাগরিকের সকল সেবা নিশ্চিত করবো।
গণতন্ত্র রাষ্ট্রে সবার বাক স্বাধীনতা প্রকাশের ব্যবস্থা করবো এবং যার যার মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনবো।
৬. 🩺 স্বাস্থ্যখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন:
চিকিৎসা খাত উন্নতকরণ: কচুয়ার চিকিৎসা খাতকে ঢেলে সাজানো হবে।
উন্নত মানের চিকিৎসক: উন্নত মানের চিকিৎসক দ্বারা সকল চিকিৎসালয় পরিচালনা নিশ্চিত করা হবে।
দালাল মুক্ত চিকিৎসালয়: সরকারি-বেসরকারি সকল চিকিৎসালয়কে দালাল মুক্ত করা হবে, যাতে সাধারণ মানুষ কোনো ভোগান্তি ছাড়া চিকিৎসা সেবা পায়।
গ্রাম পর্যায়ে চিকিৎসালয়: কচুয়ার প্রতিটি গ্রামে ছোট ছোট চিকিৎসালয় স্থাপন করা হবে,যাতে মানুষের ভোগান্তি কম হয় এবং স্থানীয়ভাবে উন্নতমানের চিকিৎসা পায়।
৭. ⚽ তরুণদের নিয়ে বিশেষ পরিবর্তন ও সাংস্কৃতিক বিকাশ:
সাংস্কৃতিক উৎকর্ষ: তরুণদের নিয়ে বিশেষ পরিবর্তন আনতে চাই। সাংস্কৃতিক চর্চা, খেলাধুলা, গান-বাজনা এবং ইসলামী চর্চাসহ সকল ইতিবাচক দিকে উন্নতির জন্য কাজ করব।
সুযোগ সৃষ্টি: তরুণ প্রজন্মকে সৃজনশীল ও মননশীল বিকাশের সুযোগ করে দেওয়া হবে।
৮. 👩🦱 নারী ক্ষমতায়ন ও সুরক্ষা:
নারীর কর্মসংস্থান: কচুয়ার নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে (SME) বিশেষ ঋণ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। ঘরে বসে কাজ করতে পারে এমন কর্মসংস্থান তৈরিকে অগ্রাধিকার দেবো।
শিক্ষা ও নিরাপত্তা: নারীদের জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগ বাড়ানো এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা হবে।
মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য: প্রতিটি চিকিৎসালয়ে প্রসূতি মা ও শিশুদের জন্য উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে নিশ্চিত করা হবে।
সহিংসতা প্রতিরোধ: নারী ও শিশুর ওপর সকল প্রকার সহিংসতা ও নির্যাতন রোধে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে নারী নির্যাতনের মামলার নিষ্পত্তি নিশ্চিত করা হবে।
রাজনৈতিক ও সামাজিক অংশগ্রহণ: সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীদের নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে আরও বেশি করে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
৯. ✈️ প্রবাসী কল্যাণ ও অধিকার সুরক্ষা:
দ্রুত সেবা ও হয়রানি মুক্তি: প্রবাসীদের জন্য সকল সরকারি সেবা (যেমন: পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র, জমি সংক্রান্ত কাজ) দ্রুততম সময়ে এবং সম্পূর্ণ দালাল ও হয়রানি মুক্ত করার জন্য একটি বিশেষ 'প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক' স্থাপন করা হবে।
বিনিয়োগ সুরক্ষা: প্রবাসীরা যেন দেশে নিরাপদে এবং স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের উপার্জিত অর্থ বিনিয়োগ করতে পারে, তার জন্য আইনি সুরক্ষা ও বিশেষ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। তাদের বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক জোন বা উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
সম্মান ও পুনর্বাসন: দেশে ফিরে আসা প্রবাসীদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে কাজে লাগানোর জন্য পুনর্বাসন প্যাকেজ এবং স্থানীয় শিল্পে কর্মসংস্থানের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তাদের সামাজিক মর্যাদা ও সম্মান নিশ্চিত করা হবে।
জরুরী সহায়তা: বিদেশে কর্মরত অবস্থায় কোনো প্রবাসী ভাই-বোন বিপদে পড়লে, দ্রুততম সময়ে আইনি ও আর্থিক সহায়তার জন্য বিশেষ তহবিল ও হটলাইন চালু করা হবে।
মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ: প্রবাসী কল্যাণ ফান্ডের মাধ্যমে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ও লাশ দ্রুত দেশে আনার প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করা হবে।
১০. 🛣️ অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন:
টেকসই রাস্তা নির্মাণ: কচুয়ার সকল প্রধান সড়ক, সংযোগকারী রাস্তা এবং অভ্যন্তরীণ গ্রামীণ রাস্তাঘাটগুলি উন্নত ও টেকসই মানদণ্ডে নির্মাণ করা হবে। দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়া বা বছর বছর মেরামতের প্রয়োজন হয় এমন কাজ বন্ধ করা হবে।
সুষম উন্নয়ন: কচুয়ার শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত—সকল এলাকায় সমান গুরুত্বের সাথে রাস্তাঘাট পাকা ও সংস্কার করা হবে। কোনো এলাকা যেন উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত না হয়, তা নিশ্চিত করব।
ড্রেনেজ ও কালভার্ট: রাস্তা নির্মাণের পাশাপাশি বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য উপযুক্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনে নতুন কালভার্ট ও সেতু নির্মাণ করা হবে।
আধুনিক সংযোগ: গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং পথচারীদের জন্য নিরাপদ ফুটপাথ তৈরি করা হবে।
১১. 🛒 বাজার ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায়িক সুবিধা:
আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন বাজার: কচুয়ার বিদ্যমান বাজারগুলিকে (যেমন: মাছ, মাংস, সবজি, ফল ইত্যাদি) আধুনিকায়ন ও পরিচ্ছন্ন করে গড়ে তোলা হবে, যাতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত হয়।
কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য: কৃষকদের জন্য বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হবে, যাতে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমে এবং কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পান।
নতুন ব্যবসায়ী সুবিধা: ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের (SME) জন্য সহজ শর্তে সরকারি ঋণ প্রাপ্তির ব্যবস্থা করা হবে। নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশেষ প্রশিক্ষণ ও সহায়তা কার্যক্রম চালু করা হবে।
চাঁদাবাজি ও হয়রানি মুক্তি: ব্যবসায়ী মহলকে চাঁদাবাজ ও দখলদার মুক্ত নিরাপদ পরিবেশের নিশ্চয়তা প্রদান করা হবে। কোনো ব্যবসায়ীকে যেন অবৈধ অর্থ দিতে না হয়, তার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ: বাজারের খাদ্যদ্রব্যের মান নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে, যাতে কচুয়াবাসী নিরাপদ ও ভেজালমুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে পারে।
১২. 🤝 প্রশাসন ও জনগণের পারস্পরিক সহযোগিতা:
জনগণের হক আদায়: প্রশাসন যেন তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে এবং জনগণের প্রাপ্য সেবা বা অধিকার (হক) নিশ্চিতভাবে তাদের কাছে পৌঁছে দেয়, সেই বিষয়টি আমি সংসদের মাধ্যমে তদারকি করব। কোনো নাগরিক যেন তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, তা নিশ্চিত করাই হবে আমার প্রধান কাজ।
প্রশাসনিক সহযোগিতা: স্থানীয় প্রশাসনকে আরও জনমুখী, দুর্নীতিমুক্ত এবং জবাবদিহিমূলক করে তুলতে আমি সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করব। প্রশাসন যাতে সকল ক্ষেত্রে জনগণের বন্ধু হিসেবে কাজ করতে পারে, সেই পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে।
জনগণের নিরাপত্তা প্রদান: জনগণই রাষ্ট্রের মূল শক্তি। প্রশাসন যাতে নির্ভয়ে, নিরপেক্ষভাবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে কাজ করতে পারে, তার জন্য কচুয়াবাসী হিসেবে আমরাই প্রশাসনকে পূর্ণ সমর্থন ও নিরাপত্তা দেব। অন্যায়কারী যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে প্রশাসনকে সহায়তা করা জনগণের নৈতিক দায়িত্ব—আমি সেই সংস্কৃতি তৈরি করব।
পারস্পরিক আস্থা: প্রশাসন এবং জনগণের মধ্যেকার আস্থার ঘাটতি দূর করে একটি সুসম্পর্ক তৈরি করা হবে, যেখানে জনগণ তাদের সমস্যা নির্ভয়ে প্রশাসনের কাছে তুলে ধরতে পারবে এবং প্রশাসন জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করবে।
উপসংহারের পূর্বে:-
আপনারা সজাগ হোন, জাগ্রত হোন! এখনই সময় এসেছে নিজেদের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার। কচুয়ার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে আমার হাতকে শক্তিশালী করার।
আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন কচুয়ার হয়ে,কচুয়ার মানুষের হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারি,আপনারা আমার পাশে থাকবেন,ভালোবাসবেন।
ইনকিলাব জিন্দাবাদ,শাপলা কলি জিন্দাবাদ 🪷
রাসেল আহমেদ শান্ত
এমপি পদপ্রার্থী