28/07/2025
এক বসন্ত দুপুরে 🍂
ঢাকা শহরের ভিড়ে আরিফের দিনগুলো কেটেছে পড়ালেখা আর নিজের ছোট চাকরির চাপে। ওর চোখে কোনো প্রেমের রঙ ছিল না, ছিল শুধু দায়িত্ব আর ভবিষ্যতের চিন্তা।
আর অন্যদিকে, মেহরিন ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। সে যেন বসন্তের রঙ। হাসি, গল্প, কবিতা আর চোখে হাজারো স্বপ্ন নিয়ে সে ক্যাম্পাসে হেঁটে বেড়াত।
দু’জনের দেখা হয় এক দুপুরে, লাইব্রেরির সিঁড়িতে। মেহরিনের হাত থেকে একটা বই পড়ে যায়— "Rabindranath’s Love Letters"। আরিফ সেটা তুলে দেয়, দু’জনে চোখাচোখি হয়।
"তুমি রবীন্দ্রনাথ পড়ো?"
"হ্যাঁ… আর তুমি?"
"তেমন না। তবে ভালোবাসা বুঝতে চাই।"
এই ছোট্ট কথায় তাদের গল্প শুরু হয়।
ক্যাম্পাসে আড্ডা, চায়ের কাপ, বইয়ের পাতা—এই সবকিছুতেই একে অপরকে খুঁজে পেতে থাকে তারা।
আরিফ ধীরে ধীরে শিখে যায়—ভালোবাসা মানে সবসময় শুধু ভবিষ্যতের চিন্তা নয়, বর্তমানটা বাঁচাও।
মেহরিনের চোখে ছিল কবিতা, আরিফের চোখে ছিল বিশ্বাস।
তারা একে অপরের অসম্পূর্ণতাকে ভালবেসে ফেলেছিল।
💔 কিন্তু সময় ভালোবাসার মতো নরম ছিল না।
মেহরিনের পরিবার চায় না সে "কোনো মধ্যবিত্ত ছেলের সঙ্গে জীবন কাটাকাটি করুক"।
আরিফ কিছু বলতে পারে না—সে জানে, তার হাতে এখনো কিছুই নেই।
শেষ দেখা হয়েছিল সেদিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের কাছে।
মেহরিন চুপচাপ বলেছিল,
"ভুল সময়ে যদি ঠিক মানুষ আসে, তাকে ছেড়ে দিতে হয়… ভালোবেসে।"
আরিফ শুধু মাথা নিচু করে বলেছিল,
"তুমি থাকো ভালো। আমি প্রমাণ করবো, ভালোবাসা কখনও হেরে যায় না।"
⏳ বছর পাঁচেক পর...
একদিন, বইমেলায়, আরিফ নিজের লেখা প্রথম বই সাইন করছিল। নাম:
“ভুল সময়ে ভালোবাসা”
বইয়ের প্রথম পাতায় লেখা ছিল— “তোমার জন্য, যে একদিন বলেছিল—ভালোবাসা মানেই ছেড়ে যাওয়া।”
ভিড়ের মাঝে এক জোড়া চোখ তাকিয়ে ছিল অনেকক্ষণ। হয়তো মেহরিন।
কিন্তু সে কিছু বলল না।
আরিফও চাইল না তার গল্প শেষ হয়ে যাক, সে শুধু জানে—
ভালোবাসা হারায় না, রয়ে যায়… অন্য রূপে।
ভালোবাসা সবসময় একসাথে থাকাকে বলে না। কেউ কেউ ভালোবেসে আলাদা থাকে, শুধু দোয়া করে—
“সে যেন ভালো থাকে আমার চেয়েও"