01/10/2025
জাপানের একটি স্কুল। ৭০ জন ছাত্র পরিধান করে আছে ৭কেজিকরে ওজনের একেকটি ভেস্ট।এ ভেস্ট বা পোশাক -টায় বুকের দিকে নারীর স্তন সদৃশ দু'টি অংশ, এবং তল পেটের দিকটায় প্রসূতির উঁচু তলপেটের মতো ভারী অংশ। এই পোশাকটা পরে, ছাত্ররা কিছু দৈনন্দিন টুকিটাকি কাজ করে চলেছে ঝুঁকে কিছু একটা তুলে নেওয়া মেঝে থেকে, শোওয়া থেকে উঠে বসা, ইত্যাদি। এই সামান্য কাজগুলো করতেই, ছাত্রদের অনেকে অবাক! তাদের দৃষ্টিতে এতো দিনকার এই 'সামান্য' কাজগুলোই এখন ভীষণ কষ্টে করতে হচ্ছে তাদেরকে!
এরপরই এলো আসল চ্যালেঞ্জ! তাদেরকে, এক গ্রুপে দু'জন করে পঁয়ত্রিশটি গ্রুপে ভাগ করে দিয়ে, প্রত্যেক গ্রুপকে দেওয়া হলো ২ থেকে ৬ মাস বয়সী একটি করে শিশু। ছাত্রদের দায়িত্ব হলো─ সেই শিশুকে কোলে রাখা, দোলনায় দোলানো, খাওয়ানো, পরিষ্কার করানো, ইত্যাদি সদ্য-মাতৃসুলভ দৈনন্দিন কাজ। (সাথে, সেই শিশুদের প্রকৃত মাবাবাকে রাখা হলো দুর্ঘটনা এড়াতে) এই দায়িত্ব গুলো সারতে গিয়ে, ছাত্রদের বিপর্যস্ত অবস্থা! ঘুমাতে পারছে না তারা, যখন তখন কেঁদে জেগে উঠছে বাচ্চা; বিশ্রাম নিতে পারছে না তারা, পেশাবপায়খানা করছে কিংবা খেতে চাইছে যখন তখন বাচ্চা; ঘুমিয়ে পড়ছে হুট হাট বাচ্চা! ছাত্রদের কাছে এ এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা─ যন্ত্রণার ও শিক্ষার!
স্কুল-কর্তৃপক্ষ জানালো─আমাদের এই প্রজেক্টের উদ্দেশ্য ২টি:--- ০১. ছাত্রদের মায়েরা, ও বাবারাও, কীরকম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছিলেন ওদেরকে শৈশব থেকে এই অবস্থায় গড়ে তুলতে, সেটি বুঝিয়ে দেয়া তাদেরকে। যেন অসম্মান না-করে নিজের তো অবশ্যই , অন্যের মা বাবাকেও কখনো।
০২. ছাত্রদের মনে এটি ঢুকিয়ে দেওয়া যে, এক দিন তারাও বাবা হবে, তাদেরকেও সন্তান পালন লালনের দায়িত্ব ভাগ করে নিতেহবে তাদের সন্তানের মায়ের সাথে। আগে থেকে ই শিখে নিক প্যারেন্টিং।
মাঝেমধ্যে, শ্রেষ্ঠ শিক্ষাগুলো পাঠ্যবইয়ের বাইরে থেকে শিখতে হয়। ওই ছাত্রদের একজন বলেছিলো─ "বাচ্চা বড়ো করা ভয়ানক কঠিন, কিন্তু আমি যখন বাবা হবো, আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে দিবো আমি, শিশুটিকে মানুষ করতে।" --- এই আবেগ, এই দায়িত্ববোধ, সৃষ্টি করা, একটি সুস্থ সামাজিক শিক্ষাব্যবস্থায়ই সম্ভব কেবল।
Salah Uddin Ahmed Jewel এর লেখা থেকে ( সংগৃহীত)