14/07/2025
বর্তমান দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে আমরা কীভাবে কাজের মাধ্যমে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারি? এমন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে, আমরা কি আশা করতে পারি যে ভবিষ্যতে স্থানীয় বা জাতীয় পর্যায়ের যেসব নির্বাচন হবে, সেখানে প্রার্থীরা শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি না দিয়ে সেই প্রতিশ্রুতির পরিকল্পনাও জনগণের সামনে তুলে ধরবেন?
বর্তমানে দেশে বহু নগর ও গ্রামীণ/আঞ্চলিক পরিকল্পনাবিদ রয়েছেন, যারা উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করতে পারেন। তারা কোনো দলের নয়, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করতে পারেন। তাদের সম্পৃক্ত করাই হতে পারে একটি পরিকল্পিত ও টেকসই বাংলাদেশের রূপান্তরের প্রথম ধাপ।
প্রশ্ন হলো, সাধারণ মানুষ বা ভোটাররা কি শুধু নির্বাচনী প্রতীক দেখে নয়, বরং "উন্নয়ন পরিকল্পনা আছে কিনা" তা দেখে প্রার্থী বাছাইয়ের সাহসিকতা দেখাতে পারবেন?
উন্নয়ন পরিকল্পনার অর্থ একটি কম্পিউটারের দোকানে তৈরি রিপোর্ট বা নীলক্ষেত থেকে কেনা কাগজ নয়। বরং এটি হবে ইপযুক্ত তথ্যনির্ভর, বিশ্লেষণভিত্তিক, বাস্তবসম্মত একটি রূপরেখা, যা একটি এলাকার বর্তমান বাস্তবতা এবং একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের পরিষ্কার চিত্র তুলে ধরবে। এই পরিকল্পনায় শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়—অর্থনীতি, সামাজিক অবস্থা, শিক্ষা, আইন-শৃঙ্খলা, পরিবেশ ও প্রকৃতির ভারসাম্য—সবকিছুকে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।
"জনগণের সেবা করতে চাই" বা "সমাজসেবার জন্য রাজনীতি করি" এ ধরনের আবেগী বক্তব্য আর গ্রহণযোগ্য নয়। এসব কথার আড়ালে যারা নিজেদের "ত্রাতা" হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান, তারা সিস্টেম বদলাতে চান না। কারন দেশের সিস্টেম ঠিক থাকলে সিস্টেমই সবাইতে তাদের প্রাপ্য সেবা দিবে, নির্দিষ্ট কোন "ত্রাতা" লাগবে না। দেশ বা সমাজকে বদলাতে হলে, সেটা ইউনিয়ন পরিষদ হোক কিংবা জাতীয় সংসদ—প্রত্যেক পর্যায়ে দরকার সঠিক পরিকল্পনা, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা।
পরিশেষে বলা যায়, কোনো প্রার্থী যদি সত্যিই পরিবর্তন আনতে চান, তাহলে তাকে পরিকল্পনা দিয়ে শুরু করতে হবে, প্রতিশ্রুতি দিয়ে নয়। জনগণকেই সেই পরিকল্পনা আদায় করে ছাড়তে হবে প্রারথীদের কাছে থেকে। না হলে দেশ একইভাবে চলেতেই থাকবে, যেমনটা এতদিন চলছে।