07/09/2023
""আর কত অশ্রু ঝরালে, বিবেকের দংশনে দংশিত হবে জাতি"" : প্রেক্ষিতে ২০০ দিনের শিক্ষক আন্দোলন ।
লেখক: জি. এম. ইয়াছিন ।
২০০৫ সালে এনটিআরসিএ প্রতিষ্ঠার পর ঐ বছরই শিক্ষক নিয়োগ করতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলো, যথারীতি ২৬ জানুয়ারি ২০০৬ সালে ফলাফল প্রকাশিত হলো।আমরা আশান্বিত হলাম, এবার বুঝি ভাগ্যের চাকা ঘুরবে, কিন্তু না, সে আশায় গুড়ে বালি, ১ম ও ৩য় গণবিঞ্জপ্তিতে আবেদন করেছে এমন ১৫০০০ জন শিক্ষক কে নিয়োগ দেওয়া হয়নি যোগ্য শিক্ষক পাওয়া যায়নি এই অযুহাতে এনটিআরসিএ , অথচ ঐ প্রতিষ্ঠান গুলোতে যারা আবেদন করেছিলো, তাদেরই যোগ্যতার মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলো ঐ শিক্ষকরা,,তাহলে ব্যাপারটা কেমন যেনো এলোমেলো হয়ে গেল না। নিজের সন্তানকে নিজেই সমাজে অস্বীকৃতি জানানোর সামিল বলে মনে হলো।আবার ২য় ও ৪র্থ গণবিঞ্জপ্তিতে আবেদন এর সুযোগ দেওয়া হলো না ৩৫+ বয়সীদের, অথচ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, ৩৫+ বয়সীদের আবেদন করার কোনো বয়সসীমা নেই যারা ১২-৬-২০১৮ সালের আগে পাস করেছে তাদের বেলায় শুধু প্রযোজ্য। প্রশ্ন হলো ৪৪০ জন শিক্ষককে নিয়োগের সুপারিশ করলো ৪র্থ গণবিঞ্জপ্তিতে আবেদন কারীদের এনটিআরসিএ, যারা ১ম থেকে ৫ম ব্যাচে পাস করেছে তাদের। এখন কি দাড়ালো এদের বয়স কি আসলেই ৩৫(--) ছিলো, নাকি এদের আলাদা কোনো মাপকাঠিতে যেমন টাকা পয়সা বা মামা খালু কিংবা রাজনৈতিক বিবেচনা করে নিয়োগের সুপারিশ করা হলো। এতশত যোগ্যতা আমাদের না থাকলেও রাজনৈতিক বিবেচনায় আমাদের নিয়োগ পাওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। অথচ আমরা আজ অবহেলিত,দুঃখের বিষয় যেখানে ৬০০০০ জনের অধিক জাল নিবন্ধন সনদধারী কে চাকরি দিলো এনটিআরসিএ, সেখানে আমরা বৈধ সনদধারী রাস্তায় রাস্তায় ধুঁকে ধুঁকে মরছি, তাহলে কি ধরেই নিবো আমরা এনটিআরসিএ'র চেয়ারম্যান এর ড্রাইভার জিয়ার মতো কর্মচারীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করলে পরে, তাহলে আর কিইবা বয়সের বেড়াজাল কিইবা অযুহাত কোনো কিছুই আর ধরাকে সরাঞ্জান করতে হতো না,নাকি সিস্টেম এনালিস্ট এখন কানাডা প্রবাসীর সাথে সিস্টেম করতে পারলে পরে আর কোনো দুশ্চিন্তা থাকতো না চাকরি পেতে। এমনকি যদি কোনো নিবন্ধন সনদধারী কে অবসর গ্রহণের দিনও নিয়োগ দেন, এতে আইমগত কোনো বাঁধা নেই, একটা ডেমো আবেদন নিয়ে, প্রকৃত কতজন ১ম থেকে ১২তম নিবন্ধন সনদধারী আছে সেটা সনাক্ত করে, সুন্দর একটা রোডম্যাপ তৈরি করে, সহজেই নিয়োগ দিতে পারে। অথচ নানান তালবাহানা করে সময়ক্ষেপণ করে চলছে এনটিআরসিএ,হয়তো আমরা বুঝি না, নাহয় এনটিআরসিএ কে বুঝাতে পারছি না, প্রকৃতপক্ষে গ্যাপটা কোথায়,এই প্রশ্নের সদুত্তর না পেয়ে, একান্তই আক্ষেপ করে বলতেই ইচ্ছে করছে আর কতো অশ্রু ঝরালে জাগ্রত হবে জাতীর বিবেক। আর কতো অশ্রু ঝরালে বিবেকের দংশনে দংশিত হবে জাতি। এ কারণে সুষ্ঠু তদন্ত কমিশন গঠন করে, এর সুরাহা করা এখন সময়ের দাবী।শুধু তাই নয়,, জতির বিবেককে সাড়া জাগাতে অধিকার ফিরিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে বঞ্চিত মানবিকতার শিক্ষক নিয়োগের মুক্তির সোপান হিসাবে নিন্মোক্ত ছয়দফা পেশ করছি:
১| আমাদের ১ম -১২তম সনদ ধারীকে আগে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।
২| নিয়োগের ক্ষেত্রে যে সকল অনিয়ম হয়েছে, তার তদন্ত করতে হবে।
৩| আমরা যখন যে ব্যাচে পাস করেছি, তাদের সকলকে সনদ প্রাপ্তির দিন থেকে চাকরির দিনক্ষণ গণনা সহ আর্থিক সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।
৪|অবৈধ সনদধারীকে চাকরিচ্যুতি সহ সকল অনিয়মের সাথে জড়িতদের উপযুক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
৫| সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে।
৬| আইন ও সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের পূর্নাঙ্গ বেঞ্চের রায়, অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ সহ এ ব্যাপারে নীতিনির্ধারকদের শুভদৃষ্টি কামনা করছি। বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। যার মাধ্যমে ১ম থেকে ১২তম নিবন্ধন সনদধারী শিক্ষকদের বেঁচে থাকার পথকে তরান্বিত করতে, বদ্ধপরিকর ভূমিকা পালন করবে বলেই, এই ছয়দফা বঞ্চিত নিবন্ধন সনদধারী শিক্ষকদের মুক্তির সনদ হিসাবে পাথেয় হবে বলেই আমার আন্তরিক বিশ্বাস।।
বিনয়াবনত
লেখক : জি. এম. ইয়াছিন ।
( পিএইচডি গবেষক)
সাধারণ সম্পাদক
কেন্দ্রীয় কমিটি,
প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠন।
মোবাইল : ০১৭১১-২১০০৮৫