22/06/2025
তুমি ভাবো তুমি জিতে গেছো?
তুমি ভাবো, কাউকে ফাঁকি দিয়ে একধাপ এগিয়ে গেলে জীবন তোমার হয়ে যাবে?
হতে পারে আজ তুমি আলোয় দাঁড়িয়ে আছো,
আর সে, যাকে তুমি ঠকিয়ে দিলে, বসে আছে ছায়ায়— চুপচাপ, নিশ্চুপ।
কিন্তু তুমি কি জানো ছায়া কিভাবে সময়ের সঙ্গে রূপ নেয় এক দীর্ঘ প্রতিধ্বনিতে?
সে মানুষটি, যে তোমাকে বিশ্বাস করেছিল,
তার চোখে ছিল একরাশ আস্থা,
তার কণ্ঠে ছিল না অভিমান,
তবু তুমি তাকে ঠকালে—
হয়তো টাকা-পয়সায়, হয়তো কথায়, হয়তো সুযোগের অপব্যবহারে।
তুমি ভাবলে, তুমি চালাক, তুমি বুদ্ধিমান, তুমি সফল।
কিন্তু শুনো—
সফলতা যদি হয় প্রতারণার বীজ বপনে,
তবে তার ফল ফলেও ফেলে বিষ।
সেই বিষ প্রথমে ঘুম পাড়ায় বিবেককে,
তারপর আস্তে আস্তে নিঃশেষ করে আত্মাকে।
একদিন, তুমি হয়তো আরও অনেক দূর যাবে—
চাকচিক্যের মাঝে হারিয়ে যাবে নিজের মুখ।
তুমি হয়তো ভুলে যাবে কাকে কতটা ক্ষতি করেছো,
কিন্তু কালের খাতা ভুলে না কিছুই।
সেখানে প্রতিটি অন্যায়ের পাশে লেখা থাকে—
"অবিচারের ঋণ বাকি রইল।"
আর ঠিক তখনই, যেদিন তুমি নিজেকে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ ভাববে,
তোমারই বানানো মঞ্চে তোমার মুখোশ খুলে যাবে।
মানুষ নয়, সময়ই তোমার বিচার করবে।
হয়তো প্রকাশ্যে নয়,
হয়তো রাতের নিস্তব্ধতায়
একটি ফোনকল, একটি মিথ্যা বিশ্বাসঘাতকতা,
একটি 'তোমাকে আর দরকার নেই'—
এইভাবেই আসবে সেই প্রতিশোধ।
আর সেই যে মানুষটি—
যাকে তুমি ঠকিয়ে গিয়েছিলে সাময়িকভাবে এগিয়ে—
সে তখনও হাঁটছে, ধীরে ধীরে,
সত্যের পথ ধরে,
কোনো তাড়া নেই তার, কোনো দ্বিধাও নয়।
কারণ সে জানে,
উপরের দিকে যেতে হলে মই লাগে না, লাগে মন।
আর সততার পায়ে জুতো না থাকলেও, তার পথ ফুরোয় না।
তোমার চাতুর্য হয়তো তার গন্তব্য বদলাতে পেরেছিল,
কিন্তু দিক নয়।
তাকে তুমি থামাতে পারো নি, পারবে না।
সততা কখনো শোরগোল করে না,
সে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে—
যেন নদী অপেক্ষা করে সাগরের ডাকে।
তাই মনে রেখো—
সৎ কাউকে ঠকিয়ে কেউ কখনো সত্যিকার অর্থে উপরে যেতে পারে না।
তারা শুধু একটা উঁচু দেয়ালে চড়ে,
যেখানে কোনো দিনভর আকাশ থাকে না—
শুধু অপেক্ষা থাকে— পড়ার।
"শব্দের প্রতিশোধ"
স. ম. জাহিদ
[২২ জুন, ২০২৫ । সকাল । মাগুরা]