Azad TV

Azad TV Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Azad TV, Social Media Agency, Khulna.

25/01/2025
29/10/2024

খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির অন্তবর্তীকালীন কমিটি বার্ষিক নির্বাচনী তফসিন ঘোষণা দিয়ে অতঃপর স্থগিত করায় বিজ্ঞ আইনজীবী সমাজ গতকাল ২৮ অক্টোবর সমিতির ৪নং হলে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন।

দৈনিক “সময়ের খবর”। দেশের -দক্ষিণ-পশ্চিমঞ্চলের গণ মানুষের একমাত্র মুখপাত্র। ৪র্থ পাতায় খবরটি প্রকাশ করে। প্রিয় পাঠক,দেখুন পড়ুন। লাইক ,কমেন্ট দিন।

28/10/2024

বৃহত্তর খুলনা ল’ইয়ার্স জার্নালিষ্ট কাউন্সিল ও আইনজীবী সমাজের যৌথ উদ্যোগে নেতৃবৃন্দ

খুলনা বারে নব্য ফ্যাসিস্টের জায়গা হবে না
খবর বিজ্ঞপ্তিঃ

খুলনা আইনজীবী সমিতির অন্তবর্তীকালীন কমিটি বাষিক নির্বাচন ঘোষণা করে আবার স্থগিত করার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার ২৮ অক্টোবর বিশিষ্ট পরিবেশ নেতা অ্যাড.বাবুল হাওলাদারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আজাদ বার্তা সম্পাদক ও বৃহত্তর খুলনা ল’ইয়ার্স জার্নালিষ্ট কাউন্সিলের সভাপতি অ্যাড এম.মাফতুন আহমেদ।

বৃহত্তর খুলনা ল’ইয়ার্স জার্নালিষ্ট কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাড.মাসুদুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তৃতা করেন খুলনা ল’ইয়ার্স জার্নালিষ্ট কাউন্সিলের বার সভাপতি অ্যাড.নাহিদ সুলতানা,অ্যাড.আতোয়ার জোয়াদ্দার,অ্যাড.আবদুল্লাহ-আল-মামুন,অ্যাড.মেহেদী হাসান,অ্যাড.প্রশান্ত বিশ্বাস প্রমুখ।

বক্তরা অবিলম্বে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা প্রত্যাহার করে নতুন করে নির্বাচনী তফসীল ঘোষণার আহবান জানান। তাঁরা দৃঢ়তার সাথে বলেন খুলনা বারে নব্য ফ্যাসিস্টের জায়গা আর হবে না। প্রয়োজনে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা সহ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ মহলে জ্ঞাত করে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।

24/10/2024

ভারতের রাবার ষ্টাম্প
“বাহাত্তরের পচা-গলা সংবিধান সংস্কার করা প্রয়োজন”

23/10/2024

“সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির অপচেষ্টা।দেশপ্রেমিক বাংলাদেশীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোন গুজবে কান দেবেন না”।

22/10/2024

আ’লীগ ভারতের লেন্দুপ দর্জি। বাকি সব এ দেশের প্রকৃত ‘রাজাকার’ (সাহায্যকারী)। আপনি কী বলেন?

20/10/2024

“অসাধারণ কালজয়ী স্মৃতি যেন অম্লান”

অ্যাড.মোঃ ওমর ফারুক

জজকোর্ট,খুলনা।

দেশের দক্ষিণ বঙ্গ অবিভক্ত পাইকগাছা থানার(আজকে কয়রা উপজেলার) নিভৃত পল্লী ‘বাগালী’ গ্রামে ১৯৩৫ সালের ২ জুলাই একটি সাধারণ মুসলিম পরিবারে জন্ম নিলেন একটি শিশু। তাঁর পিতা-মাতা আদর করে তাঁকে ডাকতো “আমজাদ” বলে। সময়ের পরিক্রমায় নোনা জলের এই ছোট্ট ছেলেটি কয়রা-পাইকগাছার অপমর মানুষের কাছে পরিচিত হলেন তাদের একান্ত আপনজন “হেডমাস্টার আমজাদ আলী” নামে।

হ্যাঁ, তিনিই নোনা জলের সোনার ছেলে সর্বজন শ্রদ্ধেয় হেডমাস্টার মোহাম্মদ আমজাদ আলী। আঞ্চলিকতার নানা কারনে একজন মহৎ মানুষকে হয়তো ব্যক্তি জীবনে খুব বেশী সুখ স্বাচ্ছন্দময় জীবনের অধিকারী হতে দেয় না। কিন্তু তাঁর এ ত্যাগ একটি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির ভাগ্য উন্নয়নে দারুণ ভূমিকা রাখে। আমজাদ আলী স্যার তেমনই একজন মানুষ।

যিনি স্বপ্ন দেখতেন পিছিয়ে পড়া পাইকগাছা-কয়রা সাধারণ মানুষকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করার। ব্যক্তি জীবনে দারুণ মেধাবী এই মানুষটি অদম্য আগ্রহ আর সামনে এগিয়ে যাবার দৃঢ় প্রত্যয়কে পুঁজি করে ১৯৫১ সালে খুলনা জেলা স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে মেট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বলা বাহুল্য সেই সময় খুব কম সংখ্যক হাতেগোনা মুসলিম পরিবারের সন্তান খুলনা জেলা স্কুলে পড়ার সৌভাগ্য অর্জন করতো।

¯্রষ্টার অপার করুণায় আমজাদ আলী স্যার তাঁর মেধা আর অদম্য ইচ্ছা শক্তিকে পুঁজি করে সেই সৌভাগ্যবানদের দলে নিজের নামটি লেখাতে সক্ষম হন। এরপর স্যারকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নানা প্রতিকূলতাকে পিছনে ফেলে ১৯৫৪ সালে খুলনার ঐতিহ্যবাহী হিন্দু একাডেমী (আজকের বি.এল) কলেজ হতে সুনামের সাথে আইএ এবং ১৯৫৮ সালে একই কলেজ হতে অর্থাৎ বি.এল কলেজ হতে বি.এ পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন।

এরপর তিনি এক ব্যতিক্রম কাÐ ঘটিয়ে ফেললেন। সেই সময়ে তাঁর মত আর দশ জন উচ্চ শিক্ষিত আর মেধাবী মানুষের চাওয়ার বিষয় ছিল সরকারী বড় পদে চাকুরী প্রাপ্তির সাথে সাথে শহরের বিলাস বহুল জীবনে অভ্যস্ত হওয়া এবং এটাই সেইসময় স্বাভাবিক বিষয় ছিল। কেননা ব্রিটিশ আমলে গ্রজুয়েট ডিগ্রিধারী মানুষ এর সংখ্যা ছিল অতি নগন্য। যার কারণে গ্রাজুয়েট ডিগ্রিধারী ব্যক্তিদের সরাকারী উচ্চ পদে চাকুরী পাবার ক্ষেত্রে খুব বেশী বেগ পেতে হত না।

কিন্তু আমজাদ আলী স্যার ছিলেন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তিনি সরকারী উচ্চ পদে চাকুরীর হাতছানিকে পিছনে ফেলে সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি গ্রামে ফিরে যাবেন এবং শিক্ষকতার মত মহান পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন। যেই কথা সেই কাজ।
আমজাদ আলী স্যার ইং ১৯৬০ সালে পাইকগাছা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি তাঁর মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে আসীন হন।

১৯৯২ সালের ১লা জুলাই তাঁর অবসরের আগ পর্যন্ত মানুষ গড়ার এই সফল কারিগর অসংখ্য শিক্ষার্থী তৈরি করেছেন, যারা আজ তাদের নিজ যোগ্যতায় সমাজের নানা ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।

ব্যক্তিগত ভাবে আমজাদ আলী স্যার আমার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন না। এমনকি তাঁর জীবদ্দশায় তাঁর সাথে আমার সরাসরি সাক্ষাৎও হয়নি। কিন্তু তাঁর সম্পর্কে শুনেছি তাঁর রেখে যাওয়া অসংখ্য ছাত্রদের কাছে যারা আজ ব্যক্তি জীবনে সফল ও সমাজে প্রতিষ্ঠিত।

যার ফলশ্রুতিতে তাঁকে আমি আমার শ্রদ্ধার আসনে বসিয়েছি। একজন শিক্ষককে সময়ের বেড়াজালে আবদ্ধ করে রাখা যায় না। কেননা একজন শিক্ষক বেঁচে থাকে তাঁর শিক্ষার্থীদের মাঝে। যখনই একজন শিক্ষার্থী জীবনে সফল হয়, একজন শিক্ষক ঠিক ততটুকুই আনন্দ লাভ করে যতটুকু আনন্দ লাভ করে সেই শিক্ষার্থীর বাবা-মা। আমজাদ আলা স্যার শিক্ষার্থীদের ভালোবাসতেন নিজের সন্তানের মত। যার কারণে শিক্ষার্থীর মাঝেই তিনি আজও বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন।

আমজাদ আলী স্যার নানা গুণে গুণান্বিত ছিলেন। আমজাদ আলী স্যার বিশ^াস করতেন ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক মধুর হওয়া উচিত কিন্তু তার মাঝে একটা সীমা রেখা থাকা উচিত। যেটা আজকে তথাকথিত সমাজে দেখা যায় না।

আমার ব্যক্তি জীবনে একটা ঘটনা বলি। বিম্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালে একবার রাজশাহী বিম্ববিদ্যালয়ের একটি বিতর্কিত সংগঠনের আমন্ত্রনে বির্তক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহনের জন্য আমি দলনায়ক হিসাবে গিয়েছিলাম। সেখানে দুপুর এর খাবার এর জন্য সঙ্গী সাথী সহ একটি খাবার হোটেল ঢোকার পূর্ব মূহুর্ত আমাদের চক্ষু কপালে উঠার উপক্রম হয়। দেখি কয়েকজন ছাত্র তার শিক্ষকের সাথে একসঙ্গে ধূমপানরত রয়েছে।

আমাদের দৃষ্টিতে তা চরম নৈতিক অধঃপতন হলেও হয়ত তাদের দৃষ্টিতে এটাই আধুনিকতা। ঘটনাটি এ কারনে বললাম কারণ এই ঘটনার সাথে আমজাদ স্যার এর একটি ঘটনার বিপরীতধর্মী মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

ঘটনাটি বলেছেন, পাইকগাছা আইনজীবী সমিতির বার বার নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট আইনজীবী অজিত কুমার মণ্ডল। একবার স্যারকে প্রশ্ন করেছিলাম, “স্যার আপনি রেষ্টুরেন্ট এ খেতে যান না কেন? প্রতিত্তোরে আমজাদ স্যার বলেছিলেন-“সব আমার ছাত্র,ওরা রেষ্টুরেন্টে বসে; ধূমপান করে, খোশ গল্প করে, আমার সেখানে যাওয়া কী উচিত”?

এখানেই বর্তমান সময়ের তথাকথিত সেই সব শিক্ষকদের মূল্যবোধ আর আমজাদ আলী স্যারদের মূল্যবোধের মৌলিক পার্থক্য। সময়ের ব্যবধানে আমজাদ আলী স্যাররা আজ হয়ত পৃথিবীতে নেই। কিন্তু তাদের রেখে যাওয়া মূল্যবোধ হৃদয়ে ধারণ করা প্রতিটি শিক্ষকের দায়িত্ব ও কর্তব্য,হোক না সে বিশ^বিদ্যালয় কিংবা স্কুলের শিক্ষক।

ব্যক্তিজীবনে আমজাদ স্যার অনিয়মকে কখনই প্রশয় দিতেন না। কিন্ত প্রবাদ আছে, ভালবাসার প্রতিদান শুধুই ভালোবাসা আর কিছুই নয়। হ্যাঁ, এমনই এক কাÐ ঘটিয়েছিলেন আমজাদ স্যার।

ঘটনাটি বলেছেন আমজাদ স্যার এর সরাসরি ছাত্র বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক জনাব জি এম রুহুল আমিন। তিনি বলেন, তিনি ছাত্র থাকা অবস্থায় একবার ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ৮০ জন ছাত্র ভর্তি করার কথা ছিল। কিন্তু অভিভাবকদের দাবী ছিল অধিক পরিমানে ছাত্র ভর্তি করা হোক। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক এক কথার মানুষ।

কোন সুযোগ নেই। কি আর করা। সাধারণ অভিভাবকরা ছুটলেন দরদী প্রাণ আমজাদ স্যার এর কাছে। যার জীবন জুড়ে শিক্ষার্থীর জন্য ভালোবাসা, তিনি কি সেই দাবীকে সমর্থন না জানিয়ে পারেন? হোক না তা সাধারনের দৃষ্টিতে অনৈতিক।
আমজাদ স্যার এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সে বছর ১০৪ জন ছাত্রকে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়েছিল। আমজাদ স্যার বিশ^াস করতেন ছাত্ররাই তার প্রাণ আর বিদ্যালয় তাঁর আর একটি পরিবার।

ব্যক্তি জীবনে আমজাদ স্যার গুরুগম্ভীর ও স্বল্পভাষী হলেও মনটা ছিল শিশুর মতো। পিতা যেমন সন্তানের বিপদের আশংকায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না,ঠিক তেমনি একজন আদর্শবান শিক্ষক শিক্ষার্থীতুল্য সন্তানদের বিপদ আশংকায় আতংকিত হয়ে ওঠেন। এরকমই একটি ঘটনার জীবন্ত স্বাক্ষী খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির প্রবীণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট কৃষ্ণপদ মণ্ডল।

আজ থেকে প্রায় ৫৩ বছর আগে এ্যাডভোকেট কৃষ্ণপদ মণ্ডল কলেজ ছাত্র অবস্থায় নৈশ প্রহরীর নজর এড়িয়ে পাইকগাছা সরকারী স্কুলের পিচ্ছিল সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠে সারা দেয়াল জুড়ে একটি সংগঠনের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে পোষ্টার লাগিয়ে দিয়ে আসেন।

পরদিন হেডমাস্টার আমজাদ স্যারের বিষয়টি নজরে আসা মাত্র অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উৎঘাটন করেন এবং তাকে আমজাদ স্যার এর সাথে দেখা করতে বলেন। অ্যাডভোকেট কৃষ্ণপদ মণ্ডল এর ধারণা ছিল আমজাদ স্যার হয়ত তাকে পুলিশে সোর্পদ করবে এবং করাটাই স্বাভাবিক। কেননা কাজটা যে অন্যায়।

কিন্তু কৃষ্ণপদ বাবু অবাক হলেন। তিনি দেখলেন এক অন্য আমজাদ স্যারকে। একটি প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ কর্তা ব্যক্তি যখন নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ না হয়ে পিতার আসনে বসে সন্তানকে শাসন করেন তখন কৃষ্ণপদ বাবুর দু’চোখ বেয়ে অশ্রæ নামাটাই স্বাভাবিক ছিল এবং হয়েছিলও তাই।

আমজাদ স্যার যখন বলছিলেন-“ পোষ্টার লাগাতে যেয়ে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে যেয়ে তুমি যদি পড়ে যেতে তোমার জীবনহানির কি আশংকা ছিল না? জীবনে চলার পথে অনেক সমস্যা আসবে ঠাণ্ডা সুস্থ মস্তিষ্কে এগিয়ে চলবে। দেখবে জীবনে একদিন সফলতা আসবে”। তখন কৃষ্ণপদ বাবুর দুচোখ বেয়ে অশ্রু পড়ছিল স্যার এর মহানুভবতার কারনে। এরকম অজস্র ঘটনার সাক্ষী স্যার এর অগণিত ছাত্ররা, যা স্যারের ছাত্রদের হৃদয় মানসপটে আজও সমুজ্জ্বল।

চীন দেশে একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে-“ তুমি যদি এক বছরের জন্য পরিকল্পনা করো, তবে ধান বপন করো। তুমি যদি এক দশকের জন্য পরিকল্পনা করো, তবে গাছ রোপন করো। আর তুমি যদি সারা জীবনের জন্য পরিকল্পনা করো, তবে মানুষকে শিক্ষিত করো”।

আমজাদ স্যার জীবনের প্রকৃত অর্থ অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছিলেন বলেই তিনি তাঁর জীবনের স্বর্ণালী সময়টুকু মানুষকে শিক্ষিত করার কাজে ব্যয় করেছেন। আর এখানেই আমজাদ স্যার এর সার্থকতা।

আমজাদ আলী স্যাররা আসেন একটি পিছিয়ে পড়া অঞ্চলকে এগিয়ে নেবার দীপ্ত শপথ নিয়ে। ¯্রষ্টার কৃপায় সেই কাজটি আমজাদ স্যাররা করেনও তবে ব্যক্তি জীবনে তাঁরা খুব সাধারণ জীবন যাপন করেন। বিত্তবৈভব আহরনে তাঁরা বড্ড আনাড়ি। আমজাদ স্যার খুব সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন।

তিনি পাইকগাছা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থাকাকালে সততা আর নিষ্ঠার পরিচয় দিয়ে গেছেন। পাইকগাছা সরকারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক থাকাকালে তিনি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হতেন। কিন্তু নির্লোভ এই মানুষটি কখনই অনৈতিকতার পথ বেছে নেননি। তিনি সৃষ্টি কর্মশীল মানুষ ছিলেন। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় আজাদ বার্তা ও সত্যের ঝানডা নামক দু’টি পত্রিকা।

বর্তমানে তার সুযোগ্য পুত্র সুনামধন্য আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম. মাফতুন আহমেদ এ দুটি পত্রিকার সম্পাদক। তার কর্মময় জীবনকে স্মরণীয় করে রাখবার জন্য পাইকগাছা সদরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে “হেডমাস্টার আমজাদ আলী পাবলিক লাইব্রেরি এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট”, যা প্রথম শ্রেণীর একটি মান সম্মত লাইব্রেরি।

২০১২ সালের ২০ অক্টোবর একটি কর্মময় জীবনের সফল পরিসমাপ্তি ঘটে। অগণিত শুভনুধ্যায়ী,দেশ বিদেশে বসবাসরত তাঁর অগণিত শিক্ষার্থীদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান সাধারনের মাঝে অসাধারণ, কালজয়ী, সকলের প্রিয় মোহাম্মদ আমজাদ আলী স্যার।

স্যার হয়তো আজ বেঁচে নেই। কিন্তু যতদিন পাইকগাছা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থাকবে, ততদিন স্যার বেঁচে থাকবেন। তিনি বেঁচে থাকবেন তাঁর কর্মের মাঝে। তিনি বেঁচে থাকবেন তাঁর ভালোবাসার দেশ-বিদেশে বসবাসরত অগণিত শিক্ষার্থীর হৃদয় মন্দিরে। মহান ¯্রষ্টার দরবারে তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

লেখকঃ অ্যাডভোকেট মোঃ ওমর ফারুক খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির একজন সদস্য হিসাবে আইন পেশায় নিযুক্ত আছেন। তিনি দেশের সুনামধন্য নর্দান বিশ^বিদ্যালয় থেকে আইনে ¯স্নাতক(সম্মান) ও স্নোত্নকত্তোর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি খুলনা বিশ^বিদ্যালয় থেকে উন্নয়ন পাঠ এর উপর স্নাতকতোর ডিগ্রি অর্জন করেন। সবশেষে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.ফিল ডিগ্রি অর্জন করেন। আইন পেশার পাশাপাশি তিনি বেশ কিছুদিন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন্স কলেজে খণ্ডকালীন শিক্ষকতাও করেছেন।

20/10/2024

“স্মৃতিতে অমর জ্ঞান সাধক হেডমাস্টার মোহাম্মদ আমজাদ আলী”

এস. এম. দেলোয়ার হোসেনঃ


হেডমাস্টার মোহাম্মদ আমজাদ আলী একটি নাম,একটি ইনস্টিটিউশন। বলা যায় জ্ঞানের আলোকবর্তিকা। তিনি জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালিয়ে গেছেন খুলনার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তিনি আর কেউ নন;তিনি ছিলেন পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন প্রথিতযশা জনপ্রিয় প্রধান শিক্ষক।

তিনি মরেও কর্মের মাঝে অমর হয়ে আছেন। যারা সমাজ হিতৈষী তাঁদের মূল উদ্দেশ্য শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে জাতিকে অভীষ্ট উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতিকে পৌছে দেয়া। সেই আদর্শের অনুরাগী হলেন হেডমাস্টার মোহাম্মদ আমজাদ আলী।
সু-শিক্ষাই সুশাসন প্রতিষ্ঠার পূর্ব শর্ত। সুশিক্ষিত,সহনশীল, উদার, দেশপ্রেমিক ও মূল্যবোধ সম্পন্ন জাতি গঠন করতে পারলে সামগ্রিকভাবে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

ভগ্ন সমাজকে যারা এভাবে ধাপে ধাপে অগ্রগতির দিকে নেয়ার চেষ্টা করেছেন,ভেঙ্গে পড়া শিক্ষাঙ্গনের প্রতি যাদের সজাগ দৃষ্টি বিরাজমান এবং নিঃস্বার্থ মেধা ও শ্রমের মাধ্যমে শিক্ষাঙ্গনের উন্নতি সাধনে যারা সচেষ্ট, তারা নিঃসন্দেহে স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে থাকেন আমৃত কাল।

এমনই এক সংকট মুহুর্তে স্বাধীনতা উত্তর পাইকগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ে আবির্ভাব ঘটে মানুষ গড়ার একজন সফল আদর্শ কারিগর হেডমাস্টার মোহাম্মদ আমজাদ আলীর। নির্ভীকচিত্তে এলাকার শিক্ষানুরাগী গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সান্নিধ্য পান যিনি,তিনি আর কেউ নন, তিনি পাইকগাছা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন হেডমাস্টার পরম শ্রদ্ধাভাজন,সর্বজন পরিচিত মরহুম জনাব মোহাম্মদ আমজাদ আলী। তার পরিচয় তিনি নিজেই।

কোন এক সন্ধিক্ষনে পাইকগাছার অবহেলিত মাটিতে পদার্পণ করেন তিনি। তার মধ্যে ছিল সুদুর প্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি। তখন পাইকগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের করুণদশা। তাঁর দৃষ্টিগোচর হয়। পাইকগাছা উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে গড়ে উঠেছে পাইকগাছ সরকারিা উচ্চ বিদ্যালয়টি।

এতদঞ্চলের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ১৯৪৮ খ্রিঃ স্থাপিত হয়। বিদ্যুৎশাহী ও সুধী ব্যক্তিরা শিক্ষাঙ্গনের উন্নতির জন্য ভেঙ্গে পড়েন তখনই শিক্ষার উৎকর্ষ সাধনের জন্য অদম্য সাহস ও অকুন্ঠচিত্তে সেদিন তারা সংগবদ্ধভাবে এগিয়ে এসেছিলেন সৎ শিক্ষকের পরামর্শ ও দিক নির্দেশনায় উদ্ধুব্ধ হয়ে। তিনি শক্ত ও দৃঢ়হস্তে কতিপয় শিক্ষকের সাথে হাল ধরলেন। এখানে শুরু হল তাঁর চলার পথ।

বিদ্যাপীঠের শুভ সূচনার কিছু কথা না বললে অসম্পূর্ণ থেকে যায়। উল্লেখ্য, বর্তমান উপজেলা সদর বাতিখালী গ্রামের স্বর্গীয় রাজেন্দ্রনাথ সরকার ও স্বর্গীয় যজ্ঞেশ্বর মÐল নামে দু’ সহৃদয় ব্যক্তির যৎসামান্য সম্পত্তির ওপর আজকের দলিল লেখক চত্বর এলাকায় স্থাপিত হয় সর্বপ্রথম অত্র বিদ্যাপীঠটি।

প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে এতদঞ্চলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অচিরেই আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়। এর গুরুত্ব বহুল অংশে বৃদ্ধি পেতে থাকে। জায়গার স্বল্পতাহেতু পরবর্তীতে ১৯৫৭ খ্রিঃ পাইকগাছা থানার পরিত্যক্ত হাসপাতাল ভবনে বিদ্যালয়টিকে স্থানন্তারিত করা হয়। বর্তমানে সেখানে এর অবস্থান।

দানকৃত ৩.৬৮ শতক রেকর্ডীয় জমির ওপর বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। পরিত্যক্ত হাসপাতাল ভবনে বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের মূলে যাদের অবদান এ সমস্ত ব্যক্তিদের অনলস প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টি ধাপে ধাপে গড়ে উঠতে থাকে।

এরপর ৬০ এর দশকে এলাকায় চরম দারিদ্রতার আভাস পরিলক্ষিত হয়। অর্থনৈতিক সংকটের কবলে পতিত হয় বিদ্যালয়টি। দক্ষ শিক্ষকের অভাব,শিক্ষার্থীর স্বল্পতাহেতু বিদ্যালয়টির অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়। প্রয়োজনীয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থী না থাকার ফলে বিদ্যালয়ের রিকগনিশন (স্বীকৃতি) সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

এমন এক মুহুর্তে ১৯৬০ খ্রিঃ অত্র বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন শ্রদ্ধেয় স্যার মরহুম জনাব আমজাদ আলী। স্যারের অনুপ্রেরণায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়োগে অত্র বিদ্যালয় অবস্থানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

এই শিক্ষাবিদ অকুতোভয়ে দৃঢ় মনোবল নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাদানে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। বিদ্যালয়টিকে পুনর্জীবিত করে তোলার ক্ষেত্রে তিনি গ্রহণ করেন এক অতুলনীয় প্রয়াস। সে অতীতকে ভুলা যায় না। এই জ্ঞানের তাপস সম্পর্কে দু’টি কথা লিখতে যেয়ে অতীত যেন বারংবার তাড়া দেয়। তাই এই মানুষ গড়ার কারিগরের জীবন আলখ্যের প্রয়োজনীয়তা একান্ত দাবি রাখে।

এই জ্ঞান তাপস ১৯৩৫ খ্রিঃ ২ জুলাই অবিভক্ত পাইকগাছা থানার (আজকে কয়রা উপজেলা) বাগালী গ্রামে বুনিয়াদি এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫১ খ্রিঃ খুলনা জিলা স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে মেট্রিক, ১৯৫৪ খ্রিঃ খুলনা হিন্দু একাডেমী আজকে বি.এল কলেজ থেকে আই.এ. ১৯৫৮ খ্রিঃ একই কলেজ থেকে বি.এ. ১৯৭৪ খ্রিঃ বি.এড. এবং ১৯৯১ খ্রিঃ এম.এড. পাস করেন।

মরহুম জনাব আমজাদ আলী ১৯৬০ খ্রিঃ পাইকগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করে সুদীর্ঘ ৩১ বছর শিক্ষাকতা জীবন সমাপ্ত করেন। অত্র বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে তার যোগ্য নেতৃত্বের জন্য বিদ্যালয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি লাভে সমর্থ হয়। যার ফলশ্রুতি স্বরূপ বিদ্যালয়টি ১৯৬৬ খ্রিঃ উন্নয়ন প্রকল্পভুক্ত হয়।

শিবসা-কপোতাক্ষ নদীর পাদদেশে গড়ে ওঠা পাইকগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের চারিপাশে বৃক্ষরাজি শোভাবর্ধন করছে। ১৯৭১ খ্রিঃ শুরু হয় রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধ। সুর্দীঘ ৯ মাস সংগ্রামের পর জাতি ফিরে পায় প্রকৃত স্বাধীনতা। যুদ্ধকালীন সময়ে বিদ্যালয়টি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ফলে বিদ্যালয়টির যাবতীয় নথিপত্র, আসবাবপত্র সহ অফিস কক্ষটি বিধ্বস্ত হয়। যার প্রত্যক্ষ নীরব দর্শক ছিলেন এই সাহসী মানুষটি; মরহুম হেডমাস্টার মোহাম্মদ আমজাদ আলী।

স্বাধীনতা যুদ্ধে নজীরবিহীন ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয় বিদ্যালয়টির। নিতান্ত রিক্তহস্তে এর পরিচালনা খুবই দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। অত্যন্ত ধৈর্যসহকারে তিনি শিক্ষার্থী শিক্ষক ও অভিভাবকের সমন্বয়ে জরুরী অধিবেশনের জনগণ তাঁর গঠনমূলক পরামর্শের প্রতি অকুন্ঠ সমর্থন জানান। এর ফলে বিদ্যালয়টি পুনঃজাগরনে সহৃদয় ব্যক্তিবর্গের সাহায্য ও সহযোগিতার হাত প্রশস্ত হয়। বিদ্যালয়টি ধিরে ধিরে পরিচালনা করা সহজতর হয়ে পড়ে।

স্বাধীনতাত্তোর কালে প্রাথমিক পর্যায়ে বিধস্ত বিদ্যালয়টি আশু পরিচালনার জন্য এই দুরদর্শী পরিচালক তারই প্রাক্তন ছাত্র বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জনাব শেখ বেলাল উদ্দীন বিলু এর দানকৃত যৎ সামান্য অর্থ দিয়ে বিদ্যালয়ের ঘড়ি, ঘন্টা, খাতাপত্র ডাস্টার সহ কিছু উপকরণ ক্রয় পূর্বক পুনঃ পরিচালনা করা সম্ভব হয়। বিদ্যালয়টির গুণগত বৈশিষ্ট্য বিচার পূর্বক দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয় এই সদাশয় হেডমাস্টার মোহাম্মদ আমজাদ আলীর প্রচেষ্টায়।

পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন সাফল্য অর্জনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭৭ খ্রিঃ স্কুলটি পাইলট স্কীম ভুক্তকরণ করা হয়। যার ফল স্বরূপ বিদ্যালয়টি সরকারি আর্থিক সাহায্য লাভে সক্ষম হয়। অতঃপর চার কক্ষ বিশিষ্ট দ্বি-তল ভবন নির্মাণ সহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও বিজ্ঞান সরঞ্জামাদি লাভ করে। এই চিন্তাচিত্তের গঠনমূলক চিন্তাধারা থেমে থাকেনি। সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার মান উন্নত ও সম্প্রসারনের জন্য ১৯৮২ খ্রিঃ সরকার কর্তৃক কমিউনিটি প্রকল্পভুক্ত হয়।

একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষ হেডমাস্টার হিসেবে যে স্বাক্ষরতা রেখেছেন তারই স্বীকৃতি স্বরূপ বিদ্যালয়টি জাতীয় ঐতিহ্যের চিত্রবহন করে। তারই নিরালস প্রচেষ্টায় অবশেষে ১৯৮৫ খ্রিঃ ২০ এপ্রিল সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ পাইকগাছা সফর করেন। বিদ্যালয়ের ময়দানে বিশাল জনসভায় এতদঞ্চলের জনগণের দীর্ঘদিনের কাঙ্কিত দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যালয়টিকে জাতীয়করনের ঘোষণা প্রদান করেন। উল্লেখ্য,জাতীয়করনের মুলে হেডমাস্টার মোহাম্মদ আমজাদ আলীর অবদান অসামান্য।

পাইকগাছাবাসী বিদ্যালয়টির প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সর্বজন প্রিয় মরহুম জনাব আমজাদ আলীর বিকল্প কাউকে দেখেননি। সর্বগুনে গুণার্ন্বিত এই শিক্ষাবিদ, শিক্ষার্থী ও সহকর্মীদের শাসন করেছেন এবং স্নেহ ভালবাসা প্রদর্শন করেছেন। কখনও কেউ তার আচরনে অসন্তোষ প্রকাশ করেননি। স্পষ্ট ভাষায় দক্ষ পরিচালনায় শিক্ষাক্ষেত্রে বিদ্যালয়টি যেমন সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে;

তেমনই খেলাধুলার ক্ষেত্রে রয়েছে শিক্ষার্থীদের অগ্রণী ভুমিকা। তারই ফলশ্রæতি স্বরূপ ১৯৮২ খ্রিঃ তৎকালীন সুযোগ্য থানা নির্বাহী অফিসার মরহুম জনাব জামাল উদ্দীন সাহেবের অনুপ্রেরণায় এখানে গড়ে ওঠে সুসজ্জিত স্কাউট দল। পরবর্তীতে জাতীয় প্রতিযোগিতায় স্কুলের স্কাউট দলটি নতুন নতুন কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে।
দূরদৃষ্টি সম্পন্ন হেড মাষ্টার অত্র বিদ্যালয়ের পুকুরের চারিপার্শে নারিকেল গাছ, তাল গাছ,খেজুর গাছ,আমগাছ,জামগাছ নানাবিধ ফলজ বৃক্ষরোপন করেছিলেন। সাথে সাথে মেহগনি, শিরিস, সেগুন, কৃষ্ণচুড়া, প্রভৃতি বৃৃক্ষ রোপন করেছেন।

সে গুলোর শোভা ও সৌন্দর্য বিদ্যালয়ের মাঝে বিরাজমান। এ গুলোর আর্থিক মূল্যও রয়েছে যথেষ্ট। বিদ্যালয়ের পুকরটি স্বেচ্ছাশ্রমেরভিত্তিতে তারই উদ্যোগে ১৯৯০ খ্রিঃ পুনঃ খনন করা হয়।

বিগত ১৯৬৬ খ্রিঃ নির্মিত বিদ্যালয়ের মূল দ্বি-তলা ভবনটি পুনঃসংষ্কারের জন্য সদাশয় কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত করান তিনি। ১৯৯১-৯২ খ্রিঃ মূল ভবনটির সংষ্কার সাধন ও একতলা বিশিষ্ট নতুন কক্ষ নির্মানের জন্য ১৪ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ হয় এবং তারই মাধ্যমে উক্ত অর্থ নির্মানে কার্য সু-সম্পন্ন হয়।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকার জনাব শেখ রাজ্জাক আলী উক্ত নতুন ভবনটি ২৯ নভেম্বর ১৯৯১ খ্রিঃ উদ্ধোধন করেন। তার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় নানা বাঁধা বিঘ্ন অতিক্রম করে আজ শতাব্দীর মাইল ফলক হিসেবে আপন মহিময় দাঁড়িয়ে আছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি বছর তৈরি হচ্ছে দেশের সূর্য সম্ভাবনাময় হাজারো প্রতীক।

হেডমাস্টার আমজাদ আলী দীর্ঘ কর্মময় জীবনে সততা ও নিষ্টার কারনে বেঁচে থাকবেন তার অসংখ্যা অনুসারী শিক্ষার্থীর হৃদয়ে। ১ জুলাই ১৯৯২ খ্রিঃ অত্র বিদ্যালয়ে ৩১ বছর শিক্ষাকতা জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন। নিঃস্বার্থ সহমর্মিতা বিরাজ করছে তার প্রতি সকল শিক্ষার্থীর অন্তরে।

অবশেষে তার চলার যে পথ থেমে যায় সে পথ সংসারের এবং জীবনের চির চলমান তারই প্রতীক। এ পথে কতটি দেখেছেন। ছায়াঘেরা পাখি ডাকা গ্রাম-গ্রামান্তরের মায়ালোক পার করেছেন তিনি। জীবন সামনে পৌছে দেখেন,এ- পথ কেবল চলার ফেরার নয়।

২০১২ খ্রিঃ মহান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে এ মায়ার পৃথিবী ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি দেন। কিছু কিছু মানুষের মৃত্যু স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয়া কঠিন। তার সুচারু কর্মের মাঝে তিনি আমাদের মাঝে চির অমর হয়ে থাকবেন।

তার মৃত্যুর সংবাদে শোকহত পরিবারকে সান্তনা ও সমবেদনা জানাতে তার দোরগড়ায় এসে হাজির হন অসংখ্য নারী-পুরুষ। শোক বিহবল হয়ে পড়ে সকলে বিদ্যালয়ের সম্মুখে তার জানাজায় সহস্রাধিক শুভাকাঙ্খীদের আবির্ভাব ঘটে। আমরা বিশ্বাস করি আমজাদ আলীর মতো শিক্ষক রা কখনও প্রয়াত হন না।

এই শিক্ষাবিদ শিক্ষানুরাগীদের মাঝে রেখে গেছেন পাইকগাছা সদরে সরকার কর্তৃক রেজিষ্টার্ড হেডমাস্টার আমজাদ আলী পাবলিক লাইবে্িরর, আজাদ বার্তা ও সত্যের ঝান্ডা দু’টি পাক্ষিক পত্রিকা।

এ লাইব্রেরিতে প্রতি বছর বিভিন্ন সংগঠন থেকে বিষয়ভিত্তিক নানা লেখকের অসংখ্যা বই অনুদান প্রাপ্ত হন। এ ছাড়াও সরকারি আর্থিক সাহায্য লাভে সমর্থ লাইব্রেরীটি। এ দিকে তার প্রতিষ্ঠিত পত্রিকা দু’টি এলাকার পাঠকদের মনোরঞ্জন করতে সমর্থ হয়েছে। তিনি রেখে গেছেন স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী আপনজন।

বর্তমান তার সুযোগ্য পুত্রদ্বয় জনাব অ্যাডভোকেট এম. মাফতুন আহমেদ ও জনাব ইকবাল আহমেদ। তাঁর প্রতিষ্ঠিত লাইব্রেরি ও পত্রিকা দু’টির তত্বাবধায়ক। তাঁর মৃত্যু বার্ষিকীতে পরিবারের সকল সদস্যদের সমবেদনা জানিয়ে এবং তাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু জীবন কামনা করছি।

“ক্ষুদ্র স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে রেখে গেছেন যে অবদান
তার আদেশের বারিধারা কভু না হবে ম্লান“।

লেখকঃ খুলনার বিশিষ্ট সমাজসেবক ও ইউনাইটেড ডেভালাপমেন্ট সোসাইটি খুলনার সভাপতি

Address

Khulna

Telephone

+8801713901753

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Azad TV posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Azad TV:

Share

Biodata

Name: Advocate M. Maftun Ahmed

Father name: Late Md.Amjad Ali

(Former Head Master, Paikgacha Govt.High School.Khulna.

Date Of Birth: 18Th August 1964