08/07/2025
বাজুয়ার বেড়েরখালের রাস্তার বেহাল অবস্থা,অচল জনজীবন
অতনু চৌধুরী(রাজু) নিউজঃ
খুলনার দাকোপ উপজেলার বাজুয়া ইউনিয়নের ৭'নং ওয়ার্ডের বেড়েরখাল এলাকার মানুষ বছরের পর বছর ধরে অবহেলিত এই রাস্তাটি নিয়ে দুর্ভোগ বয়ে চলেছেন। সামান্য বৃষ্টি হলেই এই সড়ক কাদায় একাকার হয়ে যায়। কোথাও আবার বড় বড় গর্ত যার ফলে শিক্ষার্থী, রোগী, কর্মজীবী মানুষ সবাই চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বর্ষা এলেই যেন তাদের জীবনে নেমে আসে দুর্বিষহ যন্ত্রণা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী স্থানীয়রা জানান, আনুমানিক প্রায় ৪' কিলোমিটার দীর্ঘ এই ইটের সলিং এর রাস্তাটি দাকোপ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের যাওয়ার একমাত্র যাতায়াতের পথ। রাস্তার দুই পাশে প্রায় ১০'হাজার মানুষ বসবাস করেন। এই রাস্তা দিয়েই এলাকার লোকজন বাজার, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল'সহ নানা স্থানে যাতায়াত করেন। কিন্তু বছরের বেশির ভাগ সময়ই এই রাস্তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এই রাস্তায় ফসল নিয়ে বাজারে যাওয়া খুব কষ্টের। কাদা আর গর্তে জন্য গাড়ি চলে না। ফলে সময়মতো ফসল বিক্রি করতে পারি না। এতে লোকসান হয়। কতবার মেম্বার চেয়ারম্যানকে বলেছি, কেউ আমাদের কথা শোনেন নাই।
এ বিষয়ে রঞ্জন সরকার নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, বর্ষাকালে এই রাস্তা চলাচল করতে খুব কষ্ট হয়। জুতা পরে বের হলেও কিছুদূর যেতেই পা কাদায় আটকে যায়। অনেক সময় অসাবধানতার জন্য পড়ে যাই। জামাকাপড় ভিজে যায়। কোন রোগী অসুস্থ হলে কোন যানবাহন পাওয়া যায়না।
অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা জানিয়ে দীনবন্ধু মন্ডল নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন,একদিন রাতে বৃষ্টির মধ্যে স্ত্রীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিতে হয়েছিল। ইজিভ্যান তো চলেই না, কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয়েছিল। পথেই দুবার পড়ে গেছি। এখনো সেই ভয়ের কথা মনে পড়লে গা শিউরে উঠে।
এ বিষয়ে কামাল হাওলাদার নামের স্থানীয় এক শিক্ষক বলেন, এলাকার জনগণের একটাই প্রশ্ন আর কতদিন এই খানাখন্দভরা রাস্তায় হেঁটে, পড়ে, দুঃখ নিয়ে চলতে হবে। আমরা এইটার দ্রুত সমাধান চাই এবং একটি নিরাপদ ও চলাচলের উপযোগী রাস্তা চাই।
এ বিষয়ে বিচিত্র মন্ডল নামের স্থানীয় এক চাকুরীজীবী বলেন, প্রতিদিন অফিসে যেতে ও আসতে এই রাস্তায় হাঁটতে হয়। কাদায় পা আটকে যায়। অফিসে যাওয়ার আগেই কাপড় নোংরা হয়ে যায়। এত কষ্ট আমরা কেন করবো? রাস্তা পাকা মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অথচ বর্ষা ছাড়াও শুকনো সময়েও চলাচলে দুর্বিষহ। কেউ সাইকেল চালাতে পারে না, মোটরসাইকেল চলাচলও ঝুঁকিপূর্ণ। স্কুলপড়ুয়া শিশু, বৃদ্ধ,বৃদ্ধা, গর্ভবতী নারী, রোগী সবাইকে এই পথে চলাচল করতে হয় রোজ।
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত এই রাস্তা পাকা না করলে গ্রামীণ জনপদের জীবনযাত্রা আরও কষ্টকর হয়ে পড়বে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি, তিন খাতেই এর প্রভাব পড়ছে মারাত্মকভাবে। এখন প্রয়োজন সরকারি জরুরি বরাদ্দ ও উদ্যোগে এই কাঁচা রাস্তাটি পাকা করা।