
16/08/2025
কৃষ্ণকে রক্ষা করার জন্য দেবকী আর বসুদেব তুলে দিয়েছিলেন
কংসের হাতে একটি মেয়ে শিশুকে, যাকে কংস মেরে ফেলতে চেয়েছিলো।
সেই মেয়ে শিশুটির কি হয়েছিলো? সে বুঝি যোগমায়া বলে ম্যাজিক
হয়ে গেছিলো !
কিন্তু একটি ছেলেকে রক্ষা করার জন্য এখানেও একটি মেয়েকেই বলিদান দেয়া হয়েছিলো। অথচ আমরা কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী নিয়েই আদীক্ষেতাটা বেশি দেখাই,
সেই মেয়েটির সাথে সেদিন যা হয়েছিলো..তা আমরা ভুলেও মনে করি না,
যেনো এটা ছিলো খুবই স্বাভাবিক ঘটনা।
যাই হোক কৃষ্ণের প্রতি যতোটা মানুষের অভিমান
থাকার কথা ছিলো তার চেয়ে মানুষের তার প্রতি বেশি আবেগ..
এর কারণ হচ্ছে সে হচ্ছে পরমেশ্বর।
অথচ মনুষ্যরূপী কৃষ্ণই আমার কাছে বেশি প্রাসঙ্গিক,
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের রাধাকৃষ্ণ বইটা আমার কাছে দারুণ অর্থবহ।
বৃন্দাবন ছেড়ে মথুরায় পাড়ি দিয়েছে কৃষ্ণ, ঘর্ঘর শব্দে রথ চলে গেল বৃন্দাবন ছেড়ে মথুরার দিকে। কৃষ্ণ রাধাকে কথা দিয়েছিলো সে ফিরে আসবে।
প্রতি পূর্ণিমার রাতে রাধা সাজতে বসে, কুমকুম চন্দনের আলিপন দেয় শরীরে, হাতে পায়ে গলায় পরে নেয় ফুলের গহনা। তারপর চুপি চুপি চলে যায় যমুনা তীরে। তমাল গাছের নিচে দীপ জ্বেলে দাঁড়িয়ে থাকে। সে আসবে বলে কথা দিয়েছিলো, তাই রাধাকে সে অপেক্ষায় থাকতেই হবে।
একসময় মনে হয়, যেনো দূরে কোথাও বেজে ওঠে সেই পাগল করা বাঁশি।
সেই সুর বাতাসে কাঁপে এবং রাধাকে কাঁপায়। যমুনার জল কাঁপে, তমালের পাতা কাঁপে। তারপর এক সময় মনে হয় সেই দূরন্ত দুর্দান্ত মেঘবর্ণ ছেলেটি ছুটে ছুটে আসছে বন-পাথার পেরিয়ে। এক সময় সে রাধার বুকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে
তারপর হাসিতে-কান্নায় আদরে সোহাগে মানে-অভিমানে রাত ভোর হয়ে যায়।
এ রাধার একান্ত নিজস্ব কানু, এ তাকে ছেড়ে থাকবে কি করে?
মথুরায় যে রাজত্ব করছে, সে রাজত্ব নিয়েই থাকুক। সে অন্য কৃষ্ণ।
সে রাধার কেউ নয় !
লেখা -০৭/০৯/২০২৩
#বাংলাসাহিত্য