12/07/2025
ছোটোবেলা থেকেই সন্তানকে ঘিরে করা যায় এমন কিছু আমল।🌻
১. দুধ খাওয়ানোর সময় দুরুদ শরীফ / কালিমা / সুরা ফাতিহা পাঠ 🌸
নিয়্যত: “এই আমলের সওয়াব যেন আমার ছেলে আর মেয়ের হিফাযত ও ঈমানের জন্য হয়।”
প্রতি ফিডিং-এ অন্তত একবার ছোট দুরুদ (যেমন: “আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ”)।ওযু করে ব্রেস্টফীড করানো।
২. ঘুম পাড়ানোর সময় যিকর অথবা দু'আর শব্দে ঘুম পাড়ানো🌸
নিয়্যত: “আল্লাহ এই যিকরের শব্দ যেন তার অন্তরে গেঁথে দেন।”
পড়ে শোনাতে পারেন:
আয়াতুল কুরসী
সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস (মুষ্টিতে ফুঁ দিয়ে শরীরে হাত বুলিয়ে দেওয়া)
“হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি'মাল ওয়াকীল”
কীভাবে: ফুঁ দিয়ে হাত বুলিয়ে দেওয়া, কিংবা শুধু তার মাথার কাছে পড়ে দোয়া করা।
নিয়্যত: হিফাযতের আমল, রুহানিয়াত তৈরি করা।
ঘুমানোর আগে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলানো বা পড়া।
খুব নরম গলায় বলুন। ধীরে ধীরে সে এটায় অভ্যস্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
৩.কানে কুরআনের শব্দ🌸
কীভাবে: ঘুমানোর সময়, খেলতে খেলতে, কিংবা বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মৃদু ভলিউমে কুরআন চালান।
লক্ষ্য: শব্দ পরিচিতি, অন্তরে নরম ভাব তৈরি, শুনে অভ্যস্ততা গড়ে তোলা।
৪. গোসল করানোর সময় সুরা পড়া বা দোয়া করা🌸
“আল্লাহ, আমার মেয়েকে পবিত্র রাখুন, বাহ্যিক-অন্তর সব দিক থেকেই।”
সুরা ফাতিহা বা ইখলাস পড়া যেতে পারে।
৫. সন্তানের মাথায় হাত রেখে দু'আ করা🌸
“আল্লাহ, একে হিফাযত করুন, একে হিদায়াহ দিন, একে সৎ বান্দি করুন,নেককার দের অন্তর্ভুক্ত করুন,তাওবাহ কবুলকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন।”
৬. নিয়মিত দুরুদ পড়া ও হাদিয়া হিসেবে সন্তানের নামে সওয়াব দান করা🌸
দিনে ১০০ বার ছোট দুরুদ (যেমন: “সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম”) — “ইয়া আল্লাহ, এই দুরুদের সওয়াব আমার সন্তানকে জান্নাতে পৌঁছানোর রাস্তায় সহায়ক হোক।”
৭. মা-বাবা নামাজের পর সন্তানকে নিয়ে মুনাজাত করা🌸
মনের ভাষায় দোয়া করুন। একদিন সে নিজে নিজেই সেই জায়গায় এসে বসবে ইন শা আল্লাহ।
কীভাবে:আপনি যখন নামাজে থাকেন, তাকে পাশে শুইয়ে রাখা বা সিজদার সময় পাশে বসানো।
লক্ষ্য: নামাজের পরিবেশ ও দৃশ্য ছোট থেকেই চেনা হয়ে যাওয়া।
৮. বাচ্চার ঘরের পরিবেশে কুরআনের শব্দ রাখা🌸
দিনে কিছু সময় খালি ঘরেও কুরআনের তিলাওয়াত চালানো, যাতে শব্দে বেড়ে ওঠে।
৯. বাচ্চার পক্ষ থেকে প্রতিদিন/সুযোগমতোন ছোটো সাদ্বাকাহ🌸
১ টাকা হলেও, “আল্লাহ, এই সাদাক্বাহ যেন ওর বিপদ দূর করার কারণ হয়।”
অনলাইন সাদাকাহ অপশন বা মসজিদের দানবাক্স ব্যবহার করা যায়।
১০. মা-বাবার মুখ দিয়ে সুন্দর শব্দ বের করা🌸
যেমন: “আল্লাহ তোমায় হিফাযত করুন”, “আমিন বলো”, “জান্নাতে যাবা ইন শা আল্লাহ” — এগুলো শিশুর মুখে প্রতিফলিত হবে।
১১. “জান্নাত” শব্দ পরিচিতি🌸
কীভাবে: তাকে আদর করে বলুন, “তুমি আমার জান্নাতের ফুল”, “আল্লাহ আমাদের জান্নাতে একসাথে রাখুন ইন শা আল্লাহ।”
লক্ষ্য: জান্নাত শব্দ যেন তার হৃদয়ে মিষ্টি কিছু হিসেবে গেঁথে যায়।
১২. দিনে ১বার আকাশের দিকে তাকিয়ে বলানো “আল্লাহ উপরে”🌸
কীভাবে: তাকে কোলে নিয়ে আকাশ দেখিয়ে বলুন, “আল্লাহ আকাশে আছেন” — শিশু একে অনুভব করে নেয়।
নিয়্যত: আল্লাহ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।
১৩. ঘর থেকে বের হওয়ার আগে “বিসমিল্লাহ” বলা🌸
শিশু ঘর থেকে বের হওয়ার সময় মুখে বলুন: “বিসমিল্লাহ, তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ”
কিছু না বললেও ধীরে ধীরে সে অভ্যস্ত হবে।
১৪. ‘শুকরিয়া’ অভ্যাস🌸
কীভাবে: কিছু দিলে বলুন, “আলহামদুলিল্লাহ বলো।”
প্রথমে না বললেও, এই শব্দের প্রতি এক প্রাকৃতিক টান তৈরি হবে।
১৫. আয়নায় তাকিয়ে “আল্লাহ তোমাকে কত সুন্দর বানিয়েছেন” বলা🌸
শিশুর আত্মসম্মান এবং আল্লাহর নেয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞতা শেখে।
১৬. জানোয়ার বা পাখি দেখিয়ে আল্লাহর সৃষ্টি চিনানো🌸
“এই বিড়ালটা কে বানিয়েছে?” — “আল্লাহ”
এভাবে প্রকৃতি দিয়ে ‘খালিক’ পরিচয় দেওয়া।
১৭. তার হয়ে “ঈমানী দু'আ” করা (প্রতিদিন অন্তত ১ বার করে হলেও)🌸
“আল্লাহ, ওকে সিদ্দিক, আমানতদার ও নামাজি বানিয়ে দাও।”
“ওকে কুরআনের হাফিযা করো।”
(আপনার নিয়্যত ও দু'আর মাধ্যমে আমল হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ)
১৮. খারাপ কিছু দেখলে বা বাজে শব্দে “আস্তাগফিরুল্লাহ” বলা🌸
সে বুঝবে, খারাপ কিছু মানেই আল্লাহকে মনে করে সংশোধন হওয়া দরকার।
১৯. ঈদ/রমাদান/জুমআর দিনকে স্পেশাল বানানো🌸
ছোট ছোট আনন্দ, মিষ্টি, নতুন জামা দিয়ে বলুন: “আজ আল্লাহর পছন্দের দিন!”
ইসলামিক কনসেপ্ট = আনন্দের মাধ্যমেও শেখানো।
২০. "বাবা-মার জন্য দু'আ করো" শেখানো🌸
ছোট্ট দোয়া: “রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বায়ানি ছাগীরা”
প্রথমে শুধু “আল্লাহ মাকে ভালো রাখো” বলাও যথেষ্ট।
এভাবে আস্তে আস্তে অন্যদের জন্যেও দু'আ করতে শেখানো।
২১. নামাজের সিজদায় গিয়ে তার নাম নিয়ে দু'আ করা🌸
কীভাবে: নামাজে সিজদায় গিয়ে বলুন,
“ইয়া আল্লাহ, আমার আকিফাহ-কে আপনার পছন্দের বান্দি বানিয়ে দিন।”
শিশু কিছু না বুঝলেও আপনার নিয়্যতে সেটা আমল হয়ে যাবে।
২২. Islamic lullaby / nasheed শোনানো (বিনা বাদ্যযন্ত্রে)
উদাহরণ:
“Tala’al Badru”
“Give thanks to Allah”
কিংবা শুধু মা’র মুখে গাওয়া “আল্লাহু, আল্লাহু...” ধরণের ধ্বনি।কিংবা আপনার প্রিয় কোনো নাত ও শোনাতে পারেন।
শিশু শান্ত হয়, একইসাথে রূহানি পরিচিতি পায়।
২৩. কুরআনের আয়াত দিয়ে Nickname তৈরি করে ডাকা🌸
যেমন: “ইয়া নূর” (আলোর মতো), “হুরাইন”, “সিদ্দিকাহ”
এতে বাচ্চার পরিচয়ের সাথেই ঈমান জড়ানো হয়।
২৪. হাত ধরে ছোট্ট দু'আ-যিকির শেখানো (মুখে মুখে)🌸
“বিসমিল্লাহ”, “আলহামদুলিল্লাহ”, “আসসালামু আলাইকুম”— এভাবে একটি শব্দ এক সপ্তাহে শিখানো।
২৫. কুরআন স্পর্শ করানোর সময় “এটা আল্লাহর বই” বলা🌸
ছোট্ট হাতে কুরআন ধরালে, আলতোভাবে বলুন,
“আল্লাহর কথা, এইটা সম্মানের জিনিস”
কিছু না বুঝলেও অন্তরে ছাপ পড়ে।
২৬. Islamic mirror প্লে🌸
আয়নায় তাকিয়ে বলুন:
“আল্লাহ তোমাকে কতো সুন্দর বানিয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ, তুমি আল্লাহর বান্দি!”
শিশুর আত্মপরিচয়ের ভিত্তি গড়ে।
২৭. Adhan ও Iqamah শোনানো / বলার অভ্যাস🌸
মাঝে মাঝে তাকে কানে আজান বলুন, এমনকি খেলার ছলেই।
আজান মানেই আল্লাহর ডাক— এটা মনে গেঁথে যাবে।
২৮. “সালাম” বলা ও শিখানো (খেলনার সাথেও)🌸
পুতুল ধরে বলুন:
“আসসালামু আলাইকুম বলো ওকে”
প্রথমে খেলতে খেলতেই হোক, অভ্যাস তৈরি হবে ইন শা আল্লাহ।
২৯. সূর্য / চাঁদ / তারাকে দেখে আল্লাহর নাম বলা🌸
“আল্লাহ এই চাঁদ বানাইছে, দেখো কী সুন্দর!”
Creation দিয়ে Creator চিনানো — এইভাবেই ঈমান গড়ে ওঠে।
৩০. শিশুর হাঁচি / হাই দিলে "আলহামদুলিল্লাহ" বলা🌸
নিজে বলুন, কিংবা তার পক্ষে বলুন:
“আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তোমায় হাঁচি দিয়ে বিশ্রাম দিলেন।”
৩১. খাওয়ার পর আলহামদুলিল্লাহ বলানো🌸
আপনি খাওয়ানোর পর নিজের মুখে বলুন: “আলহামদুলিল্লাহ”
ধীরে ধীরে সে অনুসরণ করতে শিখবে।
৩২. দু'আ দিয়ে কাঁদা বা কান্না থামানো🌸
শিশুর কান্না হলে বলুন:
“আল্লাহ ওকে শান্তি দাও, আরাম দাও, মা তোমার জন্য দোয়া করছে।”
আপনি শান্ত থাকবেন, আমলের নিয়্যতে দোয়া করলেন।
৩৩. ইসলামিক গল্প বলার রুটিন🌸
প্রতিদিন ১–২ মিনিট:
“এক ছিলেন ইউনুস (আ.), তিনি একদিন জাহাজে উঠলেন...”
গল্প সংক্ষিপ্ত হলেও ধারাবাহিকতা ঈমানের বীজ বোনে।
৩৪. Islamic Counting / Color Game🌸
রঙ/গণনার সাথে ইসলাম যুক্ত করা:
“১ আল্লাহ, ২ রাকাআত, ৩ সাহাবী”
“সবুজ রঙ – জান্নাতের রঙ”
৩৫. ছোট ছোট দু'আর কার্ড বানিয়ে দেয়ালে লাগানো🌸
যেমন:
“ঘুমের আগে: বিসমিকা আল্লাহুম্মা আমুতু ওয়া আহইয়া”
“খাওয়ার আগে: বিসমিল্লাহ”
আপনারাও শিখবেন, শিশুটিও বড় হয়ে দেখবে।
৩৬. দিনে একবার বলে দেওয়া: “আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসেন”🌸
শিশুর আত্মা আল্লাহর ভালোবাসার দিকে ধাবিত হয়।
৩৭. অন্যকে দোয়া করতে শেখানো🌸
যেমন: “নানু যেন ভালো থাকে, বলো আমিন”
এতে তার হৃদয় নরম হবে, আর দোয়া’র অভ্যাস গড়ে উঠবে।
৩৮. সূর্য ডোবার সময় ‘মাগরিব’ নামাজের কথা স্মরণ করানো🌸
“সূর্য ডুবে যাচ্ছে, এখন আল্লাহ ডাকেন নামাজের জন্য”
সময়/নামাজের পরিচিতি জন্মাবে।
৩৯. Islamic affirmation game🌸
বলুন, “তুমি কে?”
সে উত্তর শিখুক: “আমি আল্লাহর বান্দি/বান্দি।”
ছোট হলেও তার আত্মপরিচয় গড়বে।
৪০. Islamic tone with hugs🌸
জড়িয়ে ধরে বলুন:
“আল্লাহ তোমার উপর রহম করুন”,
“তুমি জান্নাতে যাবে ইন শা আল্লাহ”
ভালোবাসার সাথে ঈমানি বাণী—চিরস্থায়ী ছাপ ফেলবে।
৪১. প্রতিদিন একটি ‘নতুন শব্দ’ শেখানো (ইসলামিক শব্দভাণ্ডার)🌸
যেমন:
আজ: “সালাত”, কাল: “সবর”, পরশু: “কুরআন”
শিশুদের মস্তিষ্ক শব্দ ধরে রাখে, এই শব্দগুলো তার অন্তরে গেঁথে যাবে।
৪২. বৃষ্টি নামলে কানে কানে বলুন: “দোয়ার সময়”🌸
বলুন: “চল দোয়া করি, এখন আসমান খুলে গেছে।”
“আল্লাহ, আমার আকিফাহ-কে ভালো রাখুন।”
৪৩. গায়ের কাপড় পরাতে গিয়ে বলুন: “আল্লাহ তোমাকে সুন্দর কাপড় দিয়েছেন”🌸
নেয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞতা শেখানো হবে।
৪৪. তার খেলনাগুলোকে Islamic নাম দেওয়া🌸
যেমন: পুতুলের নাম “মারিয়াম”, “আসিয়া”, “ইব্রাহীম”, “উমর”
খেলতে খেলতে সে ইসলামি ইতিহাসের সাথে পরিচিত হবে।
৪৫. ঘুমের আগে ছোট্ট তালিম🌸
মাত্র ১ মিনিটের কথা:
“আজ আমরা কি শিখলাম?”
“আল্লাহ ভালোবাসলে কী হয়?”
আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা বাড়বে।
৪৬. কুরআনের শব্দ/আয়াত মুখস্থ করাতে ছন্দ নাহয় তাল দিয়ে বলা🌸
“কুল হুয়াল্লাহু আহাদ...” ধীরে ধীরে সুরে বলুন — শিশু সুর ধরতে পারে।
৪৭. Islamic visual toy/card বানিয়ে খেলা🌸
উল্টে উল্টে বলুন:
“এইটা কা'বা”
“এইটা জান্নাতের দরজা”
“এইটা কুরআন”
খেলনার মাঝেও ইসলাম শেখা হবে।
৪৮. তার হয়ে charity করা (সে দেখুক)🌸
কেউ দরজায় এলে বলুন:
“এইটা আকিফাহর তরফ থেকে দিচ্ছি।”
সে দান করা শিখবে।
৪৯. কখনও কান্না থামলে বলুন: “আল্লাহ তোমাকে শান্ত করেছেন”🌸
সে বুঝবে, শান্তি = আল্লাহ
৫০. পছন্দের কাজের পর “আলহামদুলিল্লাহ” দিয়ে রিক্যাপ করা🌸
যেমন: খাওয়ার পর, খেলার পর, ঘুমের পর বলুন:
“আলহামদুলিল্লাহ! আজ কত ভালো দিন গেলো, তাই না?”
৫১. আয়নার সামনে দাড় করিয়ে বলুন: “তুমি আল্লাহর সৃষ্টি, কত সুন্দর!”🌸
নিজের সম্পর্কে পজিটিভ ভাবনার ভিত্তি তৈরি হয় — এটা ইসলামিক আত্মপরিচয় গঠনের প্রথম ধাপ।
৫২. চুপ থাকা শেখানোর সময় “সুবহানাল্লাহ” বা “আল্লাহু আকবার” শেখানো🌸
খেলতে খেলতে বলুন,
“চুপ করে বলি: সুবহানাল্লাহ”
চুপচাপ থাকা মানেই তখন আল্লাহর যিকর!
৫৩. Islamic object-based hide & seek🌸
পুতুল বা খেলনার কুরআন লুকিয়ে বলুন,
“আল্লাহর কথা কোথায় লুকিয়েছে? খুঁজে বের করো!”
খেলনার মাধ্যমেও ইসলাম।
৫৪. Islamic “Yes-No” game🌸
আপনি জিজ্ঞেস করুন:
“আমরা নামাজ পড়ি?” → সে বলবে হ্যাঁ।
“আমরা মিথ্যা বলি?” → না।
ছোট প্রশ্নে বড় শিক্ষা!
৫৫. তার নাম দিয়ে ছোট্ট দোয়া বানিয়ে বারবার বলা🌸
“আল্লাহুম্মা হাফিয আলা আকিফাহ”
বা
“ইয়া রাহমান, আকিফাহ’র উপর রহম কর।”
৫৬. Islamic weather talk🌸
বৃষ্টি = আল্লাহর রহমত
রোদ = আল্লাহর নূর
ঝড় = আল্লাহর কুদরত
প্রকৃতি দিয়ে তাওহীদ শেখানো।
৫৭. তার বডি পার্ট শেখানোর সময় আল্লাহর সৃষ্টির কথা বলা 🌸
“এই চোখ? আল্লাহ দিয়েছেন।”
“এই হাত? আল্লাহ বানিয়েছেন।”
সে বুঝবে, সব কিছু আল্লাহর দেয়া।
৫৮. ইসলামিক shape & color matching game🌸
সবুজ = জান্নাত
কালো = কা’বা
সাদা = তাহারাত
রঙ আর আকৃতির মাধ্যমে বিশ্বাস শেখানো।
৫৯. ঘরের দেয়ালে Islamic Alphabet চার্ট লাগানো🌸
A – Allah
B – Bismillah
C – Caliph
ছোট থেকেই শব্দগুলোর সাথে পরিচয় করানো।
৬০. ঝিমুতে থাকা অবস্থায় মুখে মুখে ধীরে ধীরে বলুন:🌸
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ...”
ঘুমের সাথে যিকরের সম্পর্ক তৈরি হয়, ইন শা আল্লাহ।
৬১. “হাত তুলে দোয়া করি” খেলা🌸
দুজন হাত তোলে বলুন:
“আল্লাহ, আকিফাহ যেন জান্নাতে যায়, আমিন!”
শিশুরা হাত তোলা শেখে আর দোয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে।
৬২. Islamic clean-up song🌸
খেলনা গুছানোর সময় বলুন:
“নবীজী (সা.) ছিলেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন!”
“চল সব গুছিয়ে দেই, আল্লাহ খুশি হন।”
৬৩. ঘুম ভাঙার পর কানে বলুন:🌸
“আলহামদুলিল্লাহিল্লাযি আহইয়ানা…”
ধীরে ধীরে শিশুর মুখেও বসে যাবে।
৬৪. Islamic lullaby
ঘুমপাড়ানি গানে দিন ঈমানি কথা:
“আল্লাহ তোমায় ভালোবাসে, মা করে দোয়া, জান্নাত হবে তোমার ঘর, যদি করো সওয়াব...”
৬৫. পাখি/গাছ/ফুল দেখিয়ে বলুন: “আল্লাহ বানিয়েছেন”🌸
সৃষ্টির প্রতি বিস্ময় থেকে সৃষ্টি কর্তার প্রতি ভালোবাসা।
৬৬. যেকোনো ভালো কাজ করে বলুন: “এইটা আমলনামায় চলে গেলো”🌸
শিশুরা ‘আমলনামা’ শব্দ শুনতে শুনতে আগ্রহী হবে।
৬৭. মুভমেন্ট আর যিকরের সমন্বয়🌸
যেমন: লাফ দিতে দিতে বলুন:
“আল্লাহু আকবার!”
শরীর আর মুখ দুইটাতেই যিকরের অভ্যাস।
৬৮. যখন গায়ে কিছু লাগে বা ব্যথা পায়, বলুন: “আল্লাহ তোমায় শিফা দেবেন”🌸
অসুস্থতা = আল্লাহর কুদরত ও রহমত শেখা হয়।
৬৯. Islamic reward stickers🌸
ভালো কাজ করলে একটা স্টিকার:
“আজ তুমি বলেছো আলহামদুলিল্লাহ”
“তুমি মায়ের কথা শুনেছো”
Reward-এর মাধ্যমে ঈমানি অভ্যাস গড়ে ওঠে।
৭০. কুরআন তিলাওয়াত চালিয়ে ঘর গোছানো🌸
ঘর গোছানোর সময় সুরা চালিয়ে রাখুন — শিশু শুনতে শুনতে আয়াত ধরবে ইন শা আল্লাহ।
৭১. “আল্লাহর নাম ধরে ডাকো” খেলা
জিজ্ঞেস করুন:
“তোমার খাওয়া কে দেয়?” → সে উত্তর দেবে: “আল্লাহ!”
“তুমি কাকে ভালোবাসো?” → “আল্লাহ!”
খেলতে খেলতে তাওহীদ গেঁথে যাবে।
৭২. Islamic high-five game
কিছু ভালো কাজ হলে বলুন:
“High five for saying Bismillah!”
খেলায় খেলায় ইসলাম শেখা।
৭৩. শব্দ শেখানোতে ইসলামিক উদাহরণ
যেমন: “মা” শেখানোর সময় বলুন:
“আমার মাকে নবীজী কত ভালোবাসতেন!”
মা শেখা + আদব শেখা একসাথে।
৭৪. জুতা পরাতে গিয়ে বলুন: “ডান পা আগে”
“নবীজি আগে ডান পা দিতেন।”
সুন্নাহ ছোট থেকেই অনুশীলন হবে।
৭৫. জান্নাত-ভিত্তিক পুরস্কার দেওয়া
বলুন: “তুমি জান্নাতি কাজ করেছো!”
আর একটা স্টিকার বা ছোট পুরস্কার দিন।
৭৬. পানি খাওয়ানোর সময় বলুন: “৩ বার করে খাই”
এক নিঃশ্বাসে না খেয়ে তিনবারে খাওয়ার সুন্নাহ শেখান।
৭৭. Islamic shadow play
টর্চের আলোতে বলুন:
“আলো কার?” → “আল্লাহর”
“ছায়া কার?” → “আল্লাহর সৃষ্টি”
মজা করেই তাওহীদ বোঝান।
৭৮. একসাথে তাসবীহ গোনা
তসবীহ হাতে দিয়ে বলুন:
“সুবহানাল্লাহ বলো, আমরা ৩টা বলবো!”
গোনার মাধ্যমে সংখ্যা শেখা + যিকর।
৭৯. ‘সোনা মেয়ে’, ‘জান্নাতি বাচ্চা’ — ঈমানি টাইটেল ব্যবহার
প্রশংসার সময় বলুন:
“আল্লাহর প্রিয় বান্দি!”
“জান্নাতের ফুল তুমি!”
৮০. শিখতে না পারলেও প্রশংসা দিয়ে উৎসাহ দিন
“তুমি চেষ্টা করেছো, আল্লাহ খুব খুশি হবেন।”
শুধু অর্জন না, নিয়্যত ও চেষ্টার মূল্য শেখা।
৮১. প্রতিদিন একবার বলুন: “আল্লাহ তোমাকে দেখছেন” (দয়া ও দৃষ্টি বোঝাতে)
ভয় নয়, ভালোবাসা দিয়ে এই বাক্য বলুন।
শিশুর হৃদয়ে গেঁথে যাবে: “আমার রব আছেন, তিনি দেখেন”
৮২. ঘুমাতে যাওয়ার সময় মাথায় হাত রেখে দোয়া করুন
ধীরে ধীরে উচ্চস্বরে বলুন:
“আল্লাহুম্মা নিই’জকা মিনাশ শাইতান...”
আপনার দোয়ার আওয়াজ শিশুর ঘুমের এক অংশ হয়ে যাবে।
৮৩. Islamic animal sounds game
বলুন: “বকরি কী করে?” → “ম্যাআআ”
তারপর বলুন: “এই বকরি আল্লাহ বানিয়েছেন”
খেলার ফাঁকে সৃষ্টিকর্তার পরিচয়।
৮৪. হাঁচি দিলে বলুন: “আলহামদুলিল্লাহ” — আর তাকে বলান “ইয়ারহামুকাল্লাহ”
হাঁচি দিয়েই ছোট্ট সুন্নাহ শেখা।
৮৫. Islamic matching puzzle বানিয়ে দিন
কা’বা + হাজ্জ
কুরআন + তিলাওয়াত
জান্নাত + ভালো কাজ
Matching করতে করতে ইসলামি ধারণা মজবুত হয়।
৮৬. একদিনের টার্গেট দিন: “আজ সারাদিন আলহামদুলিল্লাহ বলবো”
সে হয়তো ভুলে যাবে, কিন্তু আপনি বলুন,
“তুমি বলেছো, আল্লাহ শুনেছেন!”
৮৭. Islamic colors day
আজ শুধু সবুজ জিনিস খুঁজবো (জান্নাত)
কাল সাদা জিনিস (তাহারাত)
রঙ দিয়ে ঈমানি সংযোগ।
৮৮. Islamic rhymes with actions
যেমন:
“Raise your hands, say Bismillah,
Eat your food, and say Alhamdulillah!”
বাচ্চাদের প্রিয় রাইমসের জায়গায় ইসলাম বসিয়ে দিন।
৮৯. হাঁটার সময় ‘মনের দোয়া’ করতে শেখান
আপনি বলুন:
“আল্লাহ, আমার মেয়ে যেন পড়ে না যায়”
সে শেখে, হাঁটাও আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে।
৯০. “আল্লাহ আমাদের কোথায় রেখেছেন?” খেলা
ঘরের ভেতরে জিজ্ঞেস করুন:
“আমরা কোথায়?”
“আল্লাহর দুনিয়ায়”
সে বুঝবে, এই জগৎ আল্লাহরই সৃষ্টি ও নিয়ন্ত্রণে।
৯১. Islamic mirror play
আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে বলুন:
“আল্লাহ কত সুন্দর বানিয়েছেন তোমাকে!”
আত্মসম্মান + আল্লাহর শোকর দুটোই।
৯২. হাঁটার সময় “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” ধীরে ধীরে বলুন
প্রতিটি পা ফেলতে ফেলতে বলুন — সে হোক কোলে বা মাটিতে।
৯৩. দুধ খাওয়ার সময় বলুন: “রাব্বি যিদনি ইলমা”
যেন জ্ঞানের শুরু হয় সবচেয়ে নিরাপদ সময়ে — মায়ের কোলে।
৯৪. Islamic flashcards বানান
ছবি দিয়ে দেখান: কা'বা, কুরআন, চাঁদ, নামাজ...
দৈনিক একটা করে দেখান — আল্লাহর নামও শেখাতে পারেন।
৯৫. Islamic animal book
বইয়ে দেখিয়ে বলুন:
“উট? হজে যায়!”
“মক্কায় কি আছে? কা'বা!”
চেনা জগতে ইসলামকে বসানো।
৯৬. Islamic pretend play
নামাজে দাঁড়ায়, সেজদা করে, খিলখিল হাসে —
আপনি বলুন: “আল্লাহ খুব খুশি!”
৯৭. দাঁত ব্রাশ করার সময় বলুন: “পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ”
ব্রাশ করা = ঈমানের শিক্ষা।
৯৮. Islamic sensory play
পানি, বালি, তুলা দিয়ে খেলায় বলুন:
“আল্লাহ পানির মাঝে জীবন রেখেছেন।”
“এই তুলার মত সফট বানাক আল্লাহ তোমার অন্তর।”
৯৯. দোয়া শেখার সময় ‘আঙ্গুল দিয়ে গোনা’ খেলুন
যেমন:
আঙ্গুল ১ → “বিসমিল্লাহ”
২ → “আলহামদুলিল্লাহ”
৩ → “ইয়া আল্লাহ, জান্নাত দাও”
কল্পনার সাথে দ্বীনের বুনন।
১০০. ঘুমানোর আগে মাথায় হাত দিয়ে এই দোয়া করুন:
> “আল্লাহ, আমার এই Amanah (আকিফাহ) কে তুমি রক্ষা করো, হিদায়াহ দাও, জান্নাতের রাস্তায় চালাও — আমি তো শুধু চেষ্টা করছি, তাওফিক তোমারই।”
এই দোয়ার মধ্যেই লুকানো আছে আপনার মা হিসেবে সকল কষ্ট, চেষ্টা আর নিয়্যতের সারাংশ।
মনে রাখবেন:
একটি আমলও “ছোটো” নয় — নিয়্যতই বড়। আপনার দুরুদ, চোখের পানি, বাচ্চার কপালে চুমু দিয়ে করা দু'আ — আল্লাহর কাছে অনেক মূল্যবান।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সন্তানদের কুরআনের হিফায, দ্বীননদারিতা এবং নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রেমে বড় করার তাওফিক দিন। আমীন। ~ সিলভীয়া