23/12/2023
আমি ব্যক্তিগত ভাবে যৌথ পরিবার অপছন্দ করি। এই লাইনটার পরের লাইন যেটা অনেকের মাথায় আসে সেটা হল, নিজের তো ছেলে। নিজে কী করবা ভবিষ্যতে?
একটা লাইন ফেসবুকে ঘুরঘুর করতে দেখি। অধিকাংশ মেয়ে যৌবনে একক পরিবারের জন্য আন্দোলন করে আর বুড়া বয়সে শাশুড়ির সেবা করার হাদীস শোনায়।
আমি যখন বলি ছেলেকে বিয়ে করেই আলাদা করে দিবো। প্রশ্ন আসে তখন আমাদের বুড়ো বয়সে সেবা করবে কে?
এই ব্যাপারগুলো নিয়ে আমার দারুণ একটা স্বপ্ন আছে। আমি জানি একটা নিজের সংসার, একফালি ব্যালকোনি, একটা কিচেন, কয়টা রঙিন মশলার কৌটা, একটা আলতা পরা অলস দিন, নতুন ট্রাই করা আনাড়ি রেসিপিটা, কয়টা চকচকে বাসন, প্লেট- রূপালি চামচ এসব একটা মেয়ের জন্য কী! এসবের মায়ায় একটা মেয়ে ঘর ছাড়ে।
বড় সংখ্যক ছেলের বউ শাশুড়ির মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকে। কারণ এরপর তার নিজের একটা সংসার হয়। অথচ এই সংসারটা বিয়ে করেই তার পাওনা ছিল।
আমরা ছেলেকে বিয়ের সাথে সাথেই আলাদা করে দেবো। পাশেই থাকুক না হয়। পাশের ফ্ল্যাটেই কিংবা বিল্ডিং এর আরেকটা ফ্লোর ওদের হোক। ছাদে ওরা খুনসুটি করে কাপড় মেলুক। পছন্দের রঙে ঘর সাজাক। এই মন না চাইলে চূলায় আগুন জ্বলে না, শরীর ম্যাজম্যাজ করলে আধা দিন বিছানায়ই- আমার এই স্বাধীন জীবনটা আমার ছেলের বউয়ের কেন হবে না? দু’জনার একটা রান্না ঘরে কত যে রূপকথার গল্প জমে রোজ! আমার ছেলে কেন সেই গল্প থেকে বঞ্চিত হবে?
এরপর রইলো বুড়ো বাপ-মার সেবা। আচ্ছা ছেলে যখন বিয়ে করায় তখন কি বাবা মা একদম বুড়ো হয়ে যায়? বিছানায় পরা? কই আশে পাশে তো তেমন দেখি না! ছেলের বাবার ইচ্ছা ছেলেকে দ্রুত বিয়ে করানো। আল্লাহ চান যদি তেমন হলে আমরা তখনই সেবার মুখাপেক্ষী না কিন্তু।
সংসার সুন্দর, বিয়ে সুন্দর। এই ঝগড়াঝাটি, হাজারটা দায়িত্ব, জাজমেন্ট এসব করে একটা মেয়ের সংসারের সৌন্দর্য নষ্ট করার অধিকার প্রচলিত সমাজের ছেলের মায়েদের কে দিল?
বিঃদ্রঃ একান্তই নিজের ছেলেকে নিয়ে নিজের ইচ্ছের কথা লিখলাম। যারা ছেলের বউ নিয়ে সুখে শান্তিতে একত্রে থাকছেন বা থাকতে চান তাদের বিরোধিতা করা হয় নি।
©নুফরাত জেরীন