19/04/2024
চোর সন্দেহে ভ্যান চালককে নির্যাতন
লিপু খন্দকারঃ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর জগন্নাথপুর ইউনিয়নে চোর সন্দেহে ভ্যান চালককে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে । বুধবার রাত আনুমানিক দশটার দিকে হোগলা মধ্যপাড়া গ্রামে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ভ্যান চালক নাঈম কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন মহেন্দ্রপুর হঠাৎপাড়া গ্রামের মৃত মানিক শেখের ছেলে ভ্যানচালক নাঈম শেখ (২২)। তিনি পেশায় ভ্যান চালক।
ভুক্তভোগী নাঈম জানান, বুধবার রাত আনুমানিক দশটার দিকে হোগলা গ্রামের ওয়াজ শেখের ছেলে তুহিন মোবাইলে ফোনে গোপগ্রাম বাজারে যাওয়ার কথা বলে চাঁপাইগাছি বাজারে ভ্যান আনতে বলে। সেখান থেকে তুহিন ভ্যানে উঠে তার দুই বন্ধু রামিম ও জহুরুল হোগলা মাঠপাড়া ব্রিজের কাছে অপেক্ষা করছে বলে জানায় এবং সেখানে যেতে বলে। হোগলা মাঠপাড়া ব্রিজ থেকে রামিম ও জহুরুল ভ্যানে ওঠার পর সামনের দিকে যেতে বলে। কিছু দূর যাওয়ার পর তারা ভ্যান দাঁড় করাতে বলে এবং তিনজনই ভ্যান থেকে নেমে মাঠের দিকে যায়। কিছু সময় পর তুহিনসহ রামিম ও জহুরুল দুইটি বস্তা মাথায় নিয়ে ভ্যানের কাছাকাছি পৌঁছালে মোটরসাইকেল আসতে দেখে তারা তিনজন ভ্যানে ওঠে দ্রুত এগুতে বলে। ভ্যান চালক নাঈম সামনের দিকে এগুলে তারা তিনজন ভ্যান থেকে নেমে পালিয়ে যায়। এসময় মোটরসাইকেল চালকদের চোর চোর চিৎকারে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে পৌঁছে চোর সন্দেহে তাকে আটক করে। তুহিন মোবাইল ফোনে তাকে ভাড়ায় যাবার জন্য ডেকেছে বললেও তার কথা না শুনে তাকে বেঁধে ফেলা হয়। এবং হোগলা-পশ্চিম পাড়ায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য খোকন উপস্থিত থাকা অবস্থায় নাঈম তার কাছে নিজেকে নির্দোষ বলে উদ্ধার করার আকুতি জানালেও ইউপি সদস্য তার কথা শোনেনি। এসময় গফুর মহাজনের ছেলে রওশন, শের আলী সর্দারের ছেলে সিরাজুল ও গফুর শেখের ছেলে রেজমত তাকে লাঠি দিয়ে নাঈমকে পাশবিক নির্যাতন করে। এবং সাংবাদিক পরিচয়দানকারী চাঁদ আলী সরদারের ছেলে রেজাউল কাঁচি দিয়ে তার চুল কেটে দেয়। পরবর্তীতে কুমারখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানান।
জগন্নাথপুর ইউনিয়ন এর ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য খোকন জানান, ভ্যান চালক নাঈমকে নির্যাতনের সময় তিনি পাশেই এক দোকানে অবস্থান করছিলেন। চোর সন্দেহে আটক ভ্যান চালক নাঈমকে নির্যাতনের বিষয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকিবুল ইসলাম জানান, চোর সন্দেহে ভ্যান চালককে নির্যাতনের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেননা। এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।