
27/04/2025
এক ছিল এক ছোট্ট গ্রাম — সবুজ ধানক্ষেত আর পাখির কুহুরিতে ভরা। ওই গ্রামে থাকতো ছোট্ট মেয়ে মিষ্টি। তার মা ছিলেন গ্রামের সেরা মিষ্টান্ন তৈরি কারিগর। সবাই বলতো, "মিষ্টির মায়ের হাতের বরফি একবার খেলে জীবন ভরে যায়।"
একদিন গ্রামের বড় উৎসব এল। মিষ্টির মা সিদ্ধান্ত নিলেন, এ বছর তিনি বানাবেন এমন এক নারিকেল বরফি, যেটা কেউ কখনো ভুলবে না। কিন্তু তার জন্য দরকার ছিল সেরা নারিকেল।
মিষ্টি হাঁটতে হাঁটতে গেল গ্রাম থেকে দূরের সেই পুরনো নারিকেল বাগানে, যেখানে একটা বিশেষ গাছ ছিল — যাকে সবাই ডাকতো "সোনালী নারিকেল গাছ"। কথিত ছিল, এই গাছের নারিকেল থেকে তৈরি খাবারে লুকিয়ে থাকে সুখ আর ভালোবাসার জাদু।
মিষ্টি গাছটার নিচে দাঁড়িয়ে মন দিয়ে প্রার্থনা করলো, "দয়া করে আমাকে একটুকরো সেরা নারিকেল দাও, যাতে মা বানাতে পারেন সেরা বরফি।" হঠাৎ, বাতাসে মৃদু মৃদু ঘ্রাণ এলো। তারপর আস্তে আস্তে গাছ থেকে পড়ে গেল এক চকচকে, সোনালি আভায় মোড়ানো নারিকেল।
মিষ্টি নারিকেল নিয়ে ছুটে গেল বাড়ি। মা সেটাকে সাবধানে কেটে, তার স্নিগ্ধ সাদা শাঁস বের করলেন। তারপর খাঁটি খেজুরের গুড়, একটু দুধ আর ঘি দিয়ে বানিয়ে ফেললেন সেরা নারিকেল বরফি — এমন বরফি, যা মুখে দিলেই গলে যেত, হৃদয় ভরে দিত আনন্দে।
উৎসবের দিনে যখন বরফি পরিবেশন করা হলো, গোটা গ্রাম অবাক হয়ে গেল। সবার মুখে হাসি, চোখে আনন্দের জল। সেদিন থেকে সবাই বলতো —
"যে বরফিতে থাকে ভালোবাসার স্পর্শ আর প্রকৃতির আশীর্বাদ, সেটাই হয় সত্যিকারের সেরা বরফি।"
আর মিষ্টির মা? তিনি নাম পেলেন, "বরফির রানী"।
মিষ্টি জানতো, সেই সোনালী নারিকেল আর তার ভালোবাসাই ছিল মায়ের সাফল্যের আসল রহস্য।