20/04/2025
পারভেজ হত্যাকাণ্ড শুধুমাত্র একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর সামাজিক প্রেক্ষাপটের প্রতিফলন—যার মূলে রয়েছে নারী সংস্কার কমিশনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন ও তার প্রভাব। প্রতিবেদনটি নারীর ক্ষমতায়ন এবং যৌনকর্মীদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সুপারিশ করে। এই সুপারিশের প্রেক্ষিতে সমাজে একধরনের নতুন ‘ক্ষমতা বোধ’ তৈরি হয়েছে—বিশেষ করে কিছু শ্রেণির নারীর মধ্যে।
এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুইজন যৌনকর্মী, যারা এই সংস্কারপ্রচেষ্টাকে নিজেদের রক্ষাকবচ বা শক্তির উৎস মনে করে, তারা পারভেজ নামের এক যুবককে নির্মমভাবে হত্যা করে। পারভেজ হত্যার কারণ ছিল অতি সাধারণ—তাদের দিকে তাকানো। কিন্তু এই ‘তাকানো’ই মৃত্যুদণ্ড হয়ে দাঁড়ায়, যেন সমাজে এখন কিছু কথা বলা বা চোখ তুলে তাকানোও অপরাধ।
প্রশ্ন জাগে—এই কি সেই বাংলাদেশ, যেখানে নারীর ক্ষমতায়ন মানে হবে অন্ধ প্রতিশোধ, যেখানে সংস্কারের নামে সৃষ্টি হবে নতুন ভয় আর বৈষম্য? পারভেজ হত্যার ঘটনাটি যেন এক অশুভ বার্তা দেয়—আজ সে খুন হয়েছে, কাল হয়তো আমি, আপনি, বা আমাদের কেউ। এই ঘটনাটি আমাদের বাধ্য করে ভাবতে, এই সংস্কার কাদের জন্য, কী উদ্দেশ্যে, আর এর শেষ কোথায়?
নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই সমাজ নিরাপদ হওয়া উচিত। কিন্তু সংস্কার যদি একতরফা শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে অপরাধকে আড়াল করে, তাহলে সেটি কোনো সভ্যতার দিকেই এগিয়ে নেয় না। পারভেজ হত্যার বিচার যেমন জরুরি, তেমনি জরুরি এই ঘটনার সামাজিক ও নীতিগত মূল বিশ্লেষণ।
✍️ মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল.!
©me