আমার প্রিয় কবিতা

আমার প্রিয় কবিতা Poem, History, Story write, News

11/05/2025

রানার
সুকান্ত ভট্টচার্য

রানার ছুটেছে তাই ঝুম ঝুম ঘণ্টা বাজছে রাতে
রানার চলেছে খবরের বোঝা হাতে,
রানার রানার চলেছে,রানার!
রাত্রির পথে পথে চলে কোন নিষেধ জানে না মানার।
দিগন্ত থেকে দিগন্তে ছোটে রানার, রানার
কাজ নিয়েছে সে নতুন খবর আনার।।

রানার! রানার!
জানা-অজানার
বোঝা আজ তার কাঁধে,
বোঝাই জাহাজ রানার চলেছে চিঠি আর সংবাদে।

রানার চলেছে, বুঝি ভোর হয় হয়।

আরো জোরে, আরো জোরে, হে রানার দুর্বার দুর্জয়
তার জীবনের স্বপ্নের মত পিছে সরে যায় বন,
আরো পথ,আরো পথ-বুঝি হয় লাল ও-পূর্ব কোণ

অবাক রাতের তারারা আকাশে মিট্ মিট্ করে চায়;
কেমন করে এ রানার সবেগে হরিণের মত যায়।

কত গ্রাম, কত পথ যায় সরে সরে
শহরে রানার যাবেই পৌঁছে ভোরে।

হাতে লন্ঠন করে ঠন্ ঠন্, জোনাকিরা দেয় আলো
মাভৈঃ; রানার! এখনো রাতের কালো।

এমনি করেই জীবনের বহু বছরকে পিছু ফেলে,
পৃথিবীর বোঝা ক্ষুধিত রানার পৌঁছে দিয়েছে মেলে
ক্লান্তশ্বাস ছুঁয়েছে আকাশ, মাটি ভিজে গেছে ঘামে
জীবনের সব রাত্রিকে ওরা কিনেছে অল্প দামে
অনেক দুঃখে, বহু বেদনায়, অভিমানে, অনুরাগে,
ঘরে তার প্রিয়া একা শয্যায় বিনিদ্র রাত জাগে

রানার! রানার!
এ বোঝা টানার দিন কবে শেষ হবে?
রাত শেষ হয়ে সূর্য উঠবে কবে?
ঘরেতে অভাব, পৃথিবীটা তাই মনে হয় কালো ধোঁয়া,
পিঠেতে টাকার বোঝা তবু এই টাকাকে যাবে না ছোঁয়া,

রাত নির্জন, পথে কত ভয়, তবুও রানার ছোটে,
দস্যুর ভয়, তার চেয়ে ভয় কখন সূর্য ওঠে।

কত চিঠি লেখে লোকে-
কত সুখে, প্রেমে, আবেগে, স্মৃতিতে, কত দুঃখে ও শোকে।

এর দুঃখের চিঠি পড়বেনা জানি কেউ কোন দিনও
এর জীবনের দুঃখ কেবল জানবে পথের তৃণ।

এর দুঃখের কথা জানবে না কেউ শহরে ও গ্রামে
এর কথা ঢাকা পড়ে থাকবেই কালো রাত্রির খামে

দরদে তারার চোখ কাঁপে মিটিমিটি-
এ-কে যে ভোরের আকাশ পাঠাবে সহানুভূতির চিঠি।

রানার! রানার! কি হবে এ বোঝা বয়ে?
কি হবে ক্ষুধার ক্লান্তিতে ক্ষয়ে ক্ষয়ে? ।।

রানার! রানার! ভোর তো হয়েছে-আকাশ হয়েছে লাল
আলোর স্পর্শে কবে কেটে যাবে এই দুঃখের কাল? ।।

রানার ! গ্রামের রানার !
সময় হয়েছে নতুন খবর আনার;
শপথের চিঠি নিয়ে চলো আজ
ভীরুতা পিছনে ফেলে –
পৌঁছে দাও এ নতুন খবর,
অগ্রগতির ‘মেলে’,
দেখা দেবে বুঝি প্রভাত এখুনি –
নেই, দেরি নেই আর,
ছুটে চলো, ছুটে চলো আরো বেগে
দুর্দম, হে রানার ॥

11/05/2025

ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
কে?

বল দেখি এ জগতে ধার্মিক কে হয়,
সর্ব জীবে দয়া যার, ধার্মিক সে হয়।
বল দেখি এ জগতে সুখী বলি কারে,
সতত আরোগী যেই, সুখী বলি তারে।
বল দেখি এ জগতে বিজ্ঞ বলি কারে,
হিতাহিত বোধ যার, বিজ্ঞ বলি তারে।
বল দেখি এ জগতে ধীর বলি কারে,
বিপদে যে স্থির থাকে, ধীর বলি তারে।
বল দেখি এ জগতে মূর্খ বলি কারে,
নিজ কার্য নষ্ট করে, মূর্খ বলি তারে।
বল দেখি এ জগতে সাধু বলি কারে,
পরের যে ভাল করে, সাধু বলি তারে।
বল দেখি এ জগতে জ্ঞানী বলি কারে,
নিজ বোধ আছে যার জ্ঞানী বলি তারে।

11/05/2025

কুটির......অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
ঝিকিমিকি দেখা যায় সোনালি নদীর,
ওইখানে আমাদের পাতার কুটির।
এলোমেলো হাওয়া বয়,
সারা বেলা কথা কয়,
কাশফুলে দুলে ওঠে নদীর দু’পার,
রূপসীর শাড়ি যেন তৈরি রূপার।
কুটিরের কোল ঘেঁষে একটু উঠোন,
নেচে নেচে খেলা করি ছোট দুটি বোন।
পরনে খড়কে-ডুরে,
বেণী নাচে ঘুরে ঘুরে,
পায়ে পায়ে- ‘রুনু ঝুনু’ হালকা খাড়ুর,
কেন নাচি নাই তার খেয়াল কারুর।
আকাশে গড়িয়া ওঠে মেঘের মিনার,
তারি ফাঁকে দেখা যায় চাঁদের কিনার।
গাছের পাতার ফাঁকে,
আকাশ যে চেয়ে থাকে,
গুনগুন গান গাই, চোখে নাই ঘুম।
চাঁদ যেন আমাদের নিকট কুটুম।…
নৌকারা আসে যায় পাটেতে বোঝাই,
দেখে কী যে খুশি লাগে কী করে বোঝাই।
কত দূর দেশ থেকে,
আসিয়াছে এঁকে বেঁকে,
বাদলে ‘বদর’ বলে তুলিয়া বাদাম,
হাল দিয়ে ধরে রাখে মেঘের লাগাম।…
দু কদম হেঁটে এস মোদের কুটির,
পিলসুজে বাতি জ্বলে মিটির মিটির।
চাল আছে ঢেঁকি ছাঁটা,
রয়েছে পানের বাটা,
কলাপাতা ভরে দেব ঘরে-পাতা দই,
এই দেখ আছে মোর আয়না কাঁকই।
যদি আস একবার, বলি –মিছা না,
মোদের উঠোনটুকু ঠিক বিছানা।
পিয়াল, পেয়ারা গাছে–
ছায়া করে রহিয়াছে,
ধুঁধুলের ঝাঁকা বেয়ে উঠিতেছে পুঁই,
খড়কুটো খুঁজে ফেরে দুষ্টু চড়ুই।
এস এস আমাদের সোনার কুটির,–
ঝিকিমিকি করে জল নিটোল নদীর।
ঝিঙের শাখার পরে
ফিঙে বসে খেলা করে,
বেলা যে পড়িয়া এল, গায়ে লাগে হিম,
আকাশে সাঁঝের তারা, উঠানে পিদিম।

11/05/2025

সুকুমার রায়
বিষম চিন্তা

মাথায় কত প্রশ্ন আসে, দিচ্ছে না কেউ জবাব তার
সবাই বলে, ''মিথ্যে বাজে বকিসনে আর খবরদার!''
অমন ধারা ধমক দিলে কেমন করে শিখব সব?
বলবে সবাই ''মুখ্য ছেলে'', বলবে আমায় ''গো গর্দভ!''
কেউ কি জানে দিনের বেলায় কোথায় পালায় ঘুমের ঘোর?
বর্ষা হলেই ব্যাঙের গলায় কোত্থেকে হয় এমন জোর?
গাধার কেন শিং থাকে না, হাতির কেন পালক নেই?
গরম তেলে ফোড়ন দিলে লাফায় কেন তা ধেই ধেই?
সোডার বোতল খুললে কেন ফসফসিয়ে রাগ করে?
কেমন করে রাখবে টিকি মাথার যাদের টাক পড়ে?
ভূত যদি না থাকবে তবে কোত্থেকে হয় ভূতের ভয়?
মাথায় যাদের গোল বেঁধেছে তাদের কেন ''পাগোল'' কয়?
কতই ভাবি এসব কথার জবাব দেবার মানুষ কই?
বয়স হলে কেতাব খুলে জানতে পাব সমস্তই।

11/05/2025

যতীন্দ্র মোহন বাগচী
কাজলা দিদি

বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই,
মাগো আমার শোলক-বলা কাজলা দিদি কই?
পুকুর ধারে লেবুর তলে থোকায় থোকায় জোনাক জ্বলে
ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না একলা জেগে রই-
মাগো আমার কোলের কাছে কাজলা দিদি কই?

সেদিন হতে কেন মা আর দিদিরে না ডাকো;-
দিদির কথায় আঁচল দিয়ে মুখটি কেন ঢাকো?
খাবার খেতে আসি যখন, দিদি বলে ডাকি তখন,
ওঘর থেকে কেন মা আর দিদি আসে নাকো?
আমি ডাকি তুমি কেন চুপটি করে থাকো?

বল মা দিদি কোথায় গেছে, আসবে আবার কবে?
কাল যে আমার নতুন ঘরে পুতুল-বিয়ে হবে!
দিদির মত ফাঁকি দিয়ে, আমিও যদি লুকাই গিয়ে
তুমি তখন একলা ঘরে কেমন করে রবে,
আমিও নাই-দিদিও নাই- কেমন মজা হবে।

ভুঁইচাপাতে ভরে গেছে শিউলি গাছের তল,
মাড়াস্ নে মা পুকুর থেকে আনবি যখন জল।
ডালিম গাছের ফাঁকে ফাঁকে বুলবুলিটি লুকিয়ে থাকে,
উড়িয়ে তুমি দিও না মা, ছিঁড়তে গিয়ে ফল,-
দিদি এসে শুনবে যখন, বলবি কি মা বল!

বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই-
এমন সময় মাগো আমার কাজলা দিদি কই?
লেবুর ধারে পুকুর পাড়ে ঝিঁঝিঁ ডাকে ঝোপে ঝাড়ে'
ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, তাইতে জেগে রই
রাত্রি হলো মাগো আমার কাজলা দিদি কই?

23/12/2024

যতীন্দ্র মোহন বাগচী
কাজলা দিদি
বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই,
মাগো আমার শোলক-বলা কাজলা দিদি কই?
পুকুর ধারে লেবুর তলে থোকায় থোকায় জোনাক জ্বলে
ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না একলা জেগে রই-
মাগো আমার কোলের কাছে কাজলা দিদি কই?
সেদিন হতে কেন মা আর দিদিরে না ডাকো;-
দিদির কথায় আঁচল দিয়ে মুখটি কেন ঢাকো?
খাবার খেতে আসি যখন, দিদি বলে ডাকি তখন,
ওঘর থেকে কেন মা আর দিদি আসে নাকো?
আমি ডাকি তুমি কেন চুপটি করে থাকো?
বল মা দিদি কোথায় গেছে, আসবে আবার কবে?
কাল যে আমার নতুন ঘরে পুতুল-বিয়ে হবে!
দিদির মত ফাঁকি দিয়ে, আমিও যদি লুকাই গিয়ে
তুমি তখন একলা ঘরে কেমন করে রবে,
আমিও নাই-দিদিও নাই- কেমন মজা হবে।
ভুঁইচাপাতে ভরে গেছে শিউলি গাছের তল,
মাড়াস্ নে মা পুকুর থেকে আনবি যখন জল।
ডালিম গাছের ফাঁকে ফাঁকে বুলবুলিটি লুকিয়ে থাকে,
উড়িয়ে তুমি দিও না মা, ছিঁড়তে গিয়ে ফল,-
দিদি এসে শুনবে যখন, বলবি কি মা বল!
বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই-
এমন সময় মাগো আমার কাজলা দিদি কই?
লেবুর ধারে পুকুর পাড়ে ঝিঁঝিঁ ডাকে ঝোপে ঝাড়ে'
ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, তাইতে জেগে রই
রাত্রি হলো মাগো আমার কাজলা দিদি কই?

07/08/2024

এমন একটি সরকারের দাবী তলুন, যাদেরকে জনগণের নিকট জবাব দিহিতা থাকতে হবে। আর পুলিশ প্রশাসনকে সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দিতে হবে। পুলিশ কোন দলের হবে, হবে জনগণের। কোন নেতার পাহাদার হিসেবে কোন পুলিশ রাখা যাবে না।

06/08/2024

আজ ১৬ বছর পর বাংলার মানুষ বাক স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছি। আমাদের আচরণে সহনশীলতা থাকতে হবে। আমরাও যদি তাদের মত আচরণ করি তাহলে তাদের সাথে আমাদের কোন পার্থক্য থাকবে না। আমারও তাদের মত পশুতে রূপান্তরিত হব। আমাদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে, প্রতিশোধ নিতে ইচ্ছে করতে, কিন্তু মুসলিম হিসেবে কখনোও তাদের মত আচরণ করা যাবে না। যারা করছে, তাদেরকেও নিষেধ করতে হবে। আমরা মানুষ তাদের মত পশু, হিংস্র জানোয়ার না।

17/07/2024

যে বৈষম্য দূর করতে দেশ স্বাধীন করেছিলেন মহান মুক্তিযোদ্ধারা। সম্ভ্রম হারিয়ে ছিলেন লাখো মা বোন। হে মহান বীর আপনারা কি শুধু ভূ-খণ্ডের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিলেন? নাকি সকল প্রকার বৈষম্য, জলুম, দূঃসাশন বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ নামক একটি ভূ-খণ্ড এনে দিয়েছিলেন আমাদের জন্য। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও কেন মনে হচ্ছে আমাদের বৈষম্য দূর হয়নি। আমরা প্রকৃতি স্বাধীনতা পাইনি। আজ আমরা সত্য কথা বলতে, কোন অন্যায় হলে তার বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পাই, কেন? ছাত্ররা আজ যে কোটা বিরোধী আন্দোলন করছে, এটা কেন করা লাগবে। কেন আজও তাদের রক্ত দেওয়া লাগবে। কোটা রাখাকে আমার কাছে মনে হয় আপনাদের অপমান করা, কারণ আপনারা যে বৈষম্য দূর করার জন্য দেশকে স্বাধীন করেছিলেন, কিন্তু আজ আপনার সন্তানদের কোটা রাখাতে সাধারণ মানুষের চাকুরী ক্ষেত্রে বৈষম্য’র শিকার হচ্ছে। অথচ আপনারা সকল প্রকার বৈষম্য দূর করতেই, বাংলাদেশ নামক স্বাধীন ভূ-খন্ড আমাদের উপহার দিয়েছিলেন, আপনাদের রক্তের বিনিময়ে। আপনারাই পারেন এই বৈষম্য দূর করতে, আপনারা জানাতে পারেন, আমরা বৈমষ্য’র জন্য দেশ স্বাধীন করি নাই, বৈষম্য দূর করতে স্বাধীন করেছি। আপনারা যারা এখনও জীবিত আছেন, তারা ‍শুধু একটি স্মারকলিপির মাধ্যমে বৈষম্য দূর করতে পারেন। আর পারেন দেশের সমস্ত ছাত্রের তথা সমস্ত মানুষের মনে শান্তি স্থাপন করতে।

Address

Bheramara
Kushtia
7040

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when আমার প্রিয় কবিতা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to আমার প্রিয় কবিতা:

Share